Dhaka রবিবার, ১৭ অগাস্ট ২০২৫, ২ ভাদ্র ১৪৩২ বঙ্গাব্দ

জনস্রোতে জনসমুদ্র শহীদ মিনার

নিজস্ব প্রতিবেদক : 

কোটা সংস্কার আন্দোলন ঘিরে সৃষ্ট সহিংসতায় রাজধানীসহ সারা দেশ বিক্ষোভে উত্তাল। আন্দোলনে শিক্ষার্থীদের পাশাপাশি যোগ দিয়েছে অভিভাবক, শিক্ষক ও বিভিন্ন শ্রেণিপেশার মানুষ। আন্দোলন কর্মসূচির অংশ হিসেবে শহীদ মিনার এলাকায় জড়ো হতে থাকে শিক্ষার্থীরা। বিকেল নাগাদ শহীদ মিনার এলাকা জনসমুদ্রে পরিণত হয়েছে।

শনিবার (৩ আগস্ট) বিকাল ৪টায় এ প্রতিবেদন লেখার সময় হাজারো শিক্ষার্থী একত্রিত হয়েছেন শহীদ মিনার এলাকায়। মুহুর্মুহু স্লোগানে প্রকম্পিত হচ্ছে পুরো এলাকা।

রাজধানীর বিভিন্ন স্থান থেকে দলে দলে মিছিল নিয়ে সরকারের পদত্যাগসহ নানা স্লোগান দিয়ে শহীদ মিনার এলাকায় জড়ো হচ্ছেন তারা। দুপুর আড়াইটার আগেই শহীদ এলাকা লোকারণ্য হয়ে যায়। আন্দোলনকারীদের স্লোগানে উত্তাল হয়ে ওঠেছে পুরো শহীদ মিনারসহ আশপাশ এলাকা। সেখানে রিকশা চালকদেরও স্লোগান দিতে দেখা গেছে।

শহীদ মিনার এলাকায় শিক্ষার্থীরা ‘আমার ভাই কবরে, খুনি কেন বাহিরে,’ ‘জাস্টিস জাস্টিস উই ওয়ান্ট জাস্টিস,’ ‘দিয়েছি তো রক্ত, আরও দিব রক্ত,’ ‘স্বৈরাচারের গতিতে আগুন জ্বালো একসাথে,’ ‘জ্বালো রে জ্বালো, আগুন জ্বালো,’ ‘বুকের ভেতর অনেক ঝড়, বুক পেতেছি গুলি কর,’ এসব স্লোগান দিচ্ছেন।
বৃষ্টি উপেক্ষা করে কেন্দ্রীয় শহীদ মিনারে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের ডাকা বিক্ষোভ সমাবেশে অংশ নিতে শিক্ষার্থী ও অভিভাবকদের পাশাপাশি জড়ো হচ্ছেন মুক্তিযোদ্ধারাও।

শহীদ মিনারের মূল বেদি এবং সংলগ্ন সড়কে শিক্ষার্থী ও অভিভাবকদের সঙ্গে গলা মিলিয়ে স্লোগান দিচ্ছেন তারাও।

এ সময় তারা ‘শিক্ষার্থীদের রক্ত বৃথা যেতে দেব না’, ‘উই ওয়ান্ট জাস্টিস,’ ইত্যাদি স্লোগান দিতে দেখা যায়।
ধানমন্ডি থেকে এসেছেন সায়লা আমিন। গৃহিনী হলেও শিক্ষার্থীদের আন্দোলনে যোগ দিতে এসেছেন। সায়লা আমিন বলেন, দেশের এমন অবস্থায় বসে থাকতে পারি না। ছাত্ররা আন্দোলন করতে গিয়ে গুলি খেয়ে শহীদ হচ্ছে। আর আমরা কী বসে থাকবো। এ সরকারের পতন চাই আমরা। না হলে এই জুলুমের শেষ হবে না। আমাদের এখন একটাই দাবি, সরকারকে হটাও। তাদের পদত্যাগ করতে হবে।

পাশে থাকা রোকসানা খাতুন জানান, আমার ট্যাক্সের টাকায় যারা চলে তারাই আমার সন্তানকে গুলি করে মারছে। এসব হত্যা নয়, স্পষ্ট গণহত্যা। এই গণহত্যার দায়ে সরকারের পদত্যাগ চাই। আমার দুই সন্তানকে তাদের দাদির কাছে রেখে এসেছি।’

এ সময় আন্দোলনকারীরা পুলিশ, সরকার ও আওয়ামী লীগ-ছাত্রলীগকে উদ্দেশ্য করে স্লোগান দেন।

আন্দোলনে অংশ নেওয়া কয়েকজন শিক্ষার্থী বলেন, আমার শত শত ভাই বোনকে মেরেছে। আমাদেরকে রাজাকার বলা হয়েছে। এমন দুঃসাহস রুখে দিয়ে আমরা তাদের দেখাতে চাই ছাত্রসমাজ জাগলে সব উল্টে যায়। এটা প্রমাণ করে ছাড়ব আমরা।

বাড্ডা থেকে এসেছেন ব্যবসায়ী রবিউল আমিন। তিনি বলেন, ব্যবসা তো জীবনে অনেক করছি। কিন্তু এবার দেশের যে অবস্থা তার অবসান হওয়া দরকার। তাই একাত্মতা ঘোষণা করতে এখানে এসেছি।

গতকাল শুক্রবার বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের অন্যতম সমন্বয়ক আব্দুল হান্নান মাসুদ এক ভিডিও বার্তায় এ কর্মসূচি ঘোষণা দেন। একইসঙ্গে রোববার থেকে ‘সর্বাত্মক অসহযোগ কর্মসূচি’ ঘোষণা দিয়েছেন আন্দোলনরত শিক্ষার্থীরা।

জনপ্রিয় খবর

আবহাওয়া

ইতিহাস থেকে শিক্ষা না নিলে বিদেশে-অনলাইনে পরে থাকতে হবে : তারেককে ইঙ্গিত করে পাটওয়ারী

জনস্রোতে জনসমুদ্র শহীদ মিনার

প্রকাশের সময় : ০৬:০২:০০ অপরাহ্ন, শনিবার, ৩ অগাস্ট ২০২৪

নিজস্ব প্রতিবেদক : 

কোটা সংস্কার আন্দোলন ঘিরে সৃষ্ট সহিংসতায় রাজধানীসহ সারা দেশ বিক্ষোভে উত্তাল। আন্দোলনে শিক্ষার্থীদের পাশাপাশি যোগ দিয়েছে অভিভাবক, শিক্ষক ও বিভিন্ন শ্রেণিপেশার মানুষ। আন্দোলন কর্মসূচির অংশ হিসেবে শহীদ মিনার এলাকায় জড়ো হতে থাকে শিক্ষার্থীরা। বিকেল নাগাদ শহীদ মিনার এলাকা জনসমুদ্রে পরিণত হয়েছে।

শনিবার (৩ আগস্ট) বিকাল ৪টায় এ প্রতিবেদন লেখার সময় হাজারো শিক্ষার্থী একত্রিত হয়েছেন শহীদ মিনার এলাকায়। মুহুর্মুহু স্লোগানে প্রকম্পিত হচ্ছে পুরো এলাকা।

রাজধানীর বিভিন্ন স্থান থেকে দলে দলে মিছিল নিয়ে সরকারের পদত্যাগসহ নানা স্লোগান দিয়ে শহীদ মিনার এলাকায় জড়ো হচ্ছেন তারা। দুপুর আড়াইটার আগেই শহীদ এলাকা লোকারণ্য হয়ে যায়। আন্দোলনকারীদের স্লোগানে উত্তাল হয়ে ওঠেছে পুরো শহীদ মিনারসহ আশপাশ এলাকা। সেখানে রিকশা চালকদেরও স্লোগান দিতে দেখা গেছে।

শহীদ মিনার এলাকায় শিক্ষার্থীরা ‘আমার ভাই কবরে, খুনি কেন বাহিরে,’ ‘জাস্টিস জাস্টিস উই ওয়ান্ট জাস্টিস,’ ‘দিয়েছি তো রক্ত, আরও দিব রক্ত,’ ‘স্বৈরাচারের গতিতে আগুন জ্বালো একসাথে,’ ‘জ্বালো রে জ্বালো, আগুন জ্বালো,’ ‘বুকের ভেতর অনেক ঝড়, বুক পেতেছি গুলি কর,’ এসব স্লোগান দিচ্ছেন।
বৃষ্টি উপেক্ষা করে কেন্দ্রীয় শহীদ মিনারে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের ডাকা বিক্ষোভ সমাবেশে অংশ নিতে শিক্ষার্থী ও অভিভাবকদের পাশাপাশি জড়ো হচ্ছেন মুক্তিযোদ্ধারাও।

শহীদ মিনারের মূল বেদি এবং সংলগ্ন সড়কে শিক্ষার্থী ও অভিভাবকদের সঙ্গে গলা মিলিয়ে স্লোগান দিচ্ছেন তারাও।

এ সময় তারা ‘শিক্ষার্থীদের রক্ত বৃথা যেতে দেব না’, ‘উই ওয়ান্ট জাস্টিস,’ ইত্যাদি স্লোগান দিতে দেখা যায়।
ধানমন্ডি থেকে এসেছেন সায়লা আমিন। গৃহিনী হলেও শিক্ষার্থীদের আন্দোলনে যোগ দিতে এসেছেন। সায়লা আমিন বলেন, দেশের এমন অবস্থায় বসে থাকতে পারি না। ছাত্ররা আন্দোলন করতে গিয়ে গুলি খেয়ে শহীদ হচ্ছে। আর আমরা কী বসে থাকবো। এ সরকারের পতন চাই আমরা। না হলে এই জুলুমের শেষ হবে না। আমাদের এখন একটাই দাবি, সরকারকে হটাও। তাদের পদত্যাগ করতে হবে।

পাশে থাকা রোকসানা খাতুন জানান, আমার ট্যাক্সের টাকায় যারা চলে তারাই আমার সন্তানকে গুলি করে মারছে। এসব হত্যা নয়, স্পষ্ট গণহত্যা। এই গণহত্যার দায়ে সরকারের পদত্যাগ চাই। আমার দুই সন্তানকে তাদের দাদির কাছে রেখে এসেছি।’

এ সময় আন্দোলনকারীরা পুলিশ, সরকার ও আওয়ামী লীগ-ছাত্রলীগকে উদ্দেশ্য করে স্লোগান দেন।

আন্দোলনে অংশ নেওয়া কয়েকজন শিক্ষার্থী বলেন, আমার শত শত ভাই বোনকে মেরেছে। আমাদেরকে রাজাকার বলা হয়েছে। এমন দুঃসাহস রুখে দিয়ে আমরা তাদের দেখাতে চাই ছাত্রসমাজ জাগলে সব উল্টে যায়। এটা প্রমাণ করে ছাড়ব আমরা।

বাড্ডা থেকে এসেছেন ব্যবসায়ী রবিউল আমিন। তিনি বলেন, ব্যবসা তো জীবনে অনেক করছি। কিন্তু এবার দেশের যে অবস্থা তার অবসান হওয়া দরকার। তাই একাত্মতা ঘোষণা করতে এখানে এসেছি।

গতকাল শুক্রবার বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের অন্যতম সমন্বয়ক আব্দুল হান্নান মাসুদ এক ভিডিও বার্তায় এ কর্মসূচি ঘোষণা দেন। একইসঙ্গে রোববার থেকে ‘সর্বাত্মক অসহযোগ কর্মসূচি’ ঘোষণা দিয়েছেন আন্দোলনরত শিক্ষার্থীরা।