নিজস্ব প্রতিবেদক :
জনগণ যদি আওয়ামী লীগকে চায় তারাই ক্ষমতায় থাকবে, যদি না চায়, তাহলে চলে যেতে হবে বলে মন্তব্য করেছেন বিএনপির যুগ্ম মহাসচিব ব্যারিস্টার এ এম মাহবুব উদ্দিন খোকন।
শনিবার (৩০ ডিসেম্বর) ঢাকা রিপোটার্স ইউনিটির সাগর-রুনি মিলনায়তনে ২৮ ডিসেম্বর জিয়াউর রহমান সমাজকল্যাণ পরিষদে (জিসপ) ২৪তম প্রতিষ্ঠাবার্ষিকী উপলক্ষে গণতন্ত্রের আড়ালে জনগণকে উপেক্ষা করে ভাগ বাটোয়ারার ডামি নির্বাচন এবং বর্তমান প্রেক্ষাপট শীর্ষক আলোচনা সভায় তিনি এ মন্তব্য করেন।
তিনি বলেন, জোর করে নির্বাচন করলে দেশের রাজনৈতিক পরিস্থিতি আরও খারাপ হবে। চলমান আন্দোলনের কারণে ভোট নিয়ে মানুষের মধ্যে কোনো উৎসাহ নেই। এ আন্দোলন চলছে, আগামীতেও চলবে। যতদিন পর্যন্ত নিরপেক্ষ তত্ত্বাবধায়ক সরকারের দাবি পূরণ না হবে এ আন্দোলন চলমান থাকবে। আমাদের এই আন্দোলন বাংলাদেশকে রক্ষার জন্য।
ভোট দিতে কাউকে বাধ্য না করতে আওয়ামী লীগ সরকারের প্রতি হুঁশিয়ারি উচ্চারণ করেন খোকন। তিনি বলেন, খবরদার গরিব মানুষকে জিম্মি করে ভোটকেন্দ্রে আনার কোনো ধরনের চেষ্টা করবেন না। আমি অবৈধ নির্বাচন কমিশনকে বলতে চাই, আপনারা খেয়াল রাখবেন ডিসি-ইউএনওদের বলে দেবেন, কোথাও যেন ভোটারদের জোর জবরদস্তি করে আওয়ামী লীগের নেতারা ভোট দিতে না নিয়ে যায়। নির্বাচন কমিশনকে আরও বলব আপনারা গরিব মানুষদের আশ্বাস দেন, আপনার পুলিশ আনসার বাহিনী কাউকে ডিস্টার্ব করবে না। মানুষের যেমন ভোট দেওয়ার অধিকার আছে তেমন বর্জন করারও অধিকার আছে। কাউকে আপনারা বাধ্য করবেন না।
মাহবুব উদ্দিন খোকন বলেন, ৭ তারিখের নির্বাচনকে জনগণ বর্জন করেছে। এতে জনগণের কোনো আগ্রহ নেই। এটা বর্তমান সরকার ভালোভাবেই জানে। সেখানে এই সরকার নির্বাচনকে অংশগ্রহণমূলক নির্বাচন দেখানোর জন্য নিজের দলের মধ্যে দুই ভাগ করেছে।
বিএনপির এই নেতা বলেন, স্বীকৃত স্বতন্ত্র, অস্বীকৃত স্বতন্ত্র। এমনকি দুইটা কিংস পার্টিও বানিয়েছে। বর্তমান চলমান এ আন্দোলন কোনো দলের একক আন্দোলন নয়। এটা জনগণের আন্দোলন। আজকে ১৫ বছর ধরে কোনো মানুষের ভোটাধিকার নেই। বর্তমান প্রেক্ষাপটে আওয়ামী লীগ কখনোই জনগণের ভোটে নির্বাচিত হওয়ার কথা নয়।
মাহবুব উদ্দিন খোকন বলেন, আওয়ামী লীগের কথা অনুযায়ী ৯৬ নির্বাচন ছিল ষড়যন্ত্রমূলক। তখন তত্ত্বাবধায়ক সরকার দিয়ে আপনারা নির্বাচন করেছিলেন। এরপর এটাকে অবৈধ ঘোষণা করলেন। ৯৬ সালের পর থেকে এ পর্যন্ত আপনারা দেশে কোনো নির্বাচনই করেননি। ১৪ সালের নির্বাচন করেছেন বিনা ভোটে। ১৮ সালে করেছেন রাতের ভোটে। ২৪ সালের নির্বাচনে আবার ষড়যন্ত্র করছেন। গণতন্ত্রের জন্যই দেশের মানুষ যুদ্ধ করেছে। আর সেই গণতন্ত্র আওয়ামী লীগ সরকার ধ্বংস করে দিয়েছে।
বিগত ১৫ বছর যাবত বাংলাদেশকে লুটপাট করেছে আওয়ামী লীগ এমন মন্তব্য করে বিএনপির শীর্ষ এই নেতা বলেন, আওয়ামী লীগ সরকারের এমপি মন্ত্রীদের হলফনামা দেখলেই বোঝা যায়; তারা কি পরিমাণ লুটপাট করেছেন। এর বাইরে যারা ইলেকশন করেননাই তাদের কাছে যে কত লাখ হাজার কোটি টাকা আছে; তা সৃষ্টিকর্তাই ভালো জানেন।
দুর্নীতি দমন কমিশনের (দুদক) সমালোচনা করে তিনি বলেন, দুদকের কোনো দাঁত নেই। তারা শুধু বিরোধীদের সাজা দিতে জানে। তারা বিএনপির চেয়ারপারসন খালেদা জিয়া ও তারেক জিয়াসহ বিএনপির নেতাদেরকেই চেনে।
আলোচনা সভায় সভাপতিত্ব করেন জিসপ-এর সভাপতি এম গিয়াসউদ্দিন খোকন। এছাড়া আরও বক্তব্য রাখেন জাতীয় পার্টির (কাজী জাফর) চেয়ারম্যান মোস্তফা জামাল হায়দার। ন্যাশনাল ডেমোক্রেটিক পার্টির (এনডিপি) সভাপতি কারী আবু তাহের পাটোয়ারী প্রমুখ।