নিজস্ব প্রতিবেদক :
দেশের মানুষ বিগত ১৫ বছরের সংগ্রামের মাধ্যমে নিপীড়ক সরকারকে বিদায় করেছে উল্লেখ করে বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য নজরুল ইসলাম খান বলেছেন, জনগণ কোনো শক্তিকে নতুন করে ষড়যন্ত্র করতে দেবে না। অতীতে বিএনপির মাধ্যমে যেমন ইতিবাচক পরিবর্তন এসেছে আগামীতেও সেভাবে ইতিবাচক পরিবর্তন আসবে।
মঙ্গলবার (৮ ডিসেম্বর) রাজধানীর ফার্মগেটের কৃষিবিদ ইনস্টিটিউশন বাংলাদেশ (কেআইবি) মিলনায়তনে বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী দলের (বিএনপি) ‘দেশ গড়ার পরিকল্পনা’ শীর্ষক কর্মসূচি উদ্বোধনের পূর্বে এসব কথা বলেন তিনি। অনুষ্ঠানের প্রধান অতিথি বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমান বিকেল ৪টায় তিনি লন্ডন থেকে ভার্চুয়ালি যুক্ত হবেন।
তিনি বলেন, আজকে একটা জরিপের রিপোর্ট বের হয়েছে। সেখানে প্রশ্ন করা হয়েছিল যে, বেশি আসন এই নির্বাচনে কে পাবে? কোন দল? শতকরা ৬৬ ভাগ উত্তরদাতা বলেছে বিএনপি। আর শতকরা ২৬ ভাগ উত্তরদাতা বলেছে জামায়াতে ইসলামী। ডিফারেন্স হল ৪৪ ভাগ। আর অন্যান্য যারা তারা তো অনেক অনেক কম আর কি? এমনকি অনেক উল্লেখযোগ্য দল তারা শতকরা এক ভাগও না আর কি? চেয়েও কম। এতে হতাশ বা নিরাশ হয়ে কেউ ‘ষড়যন্ত্রের আশ্রয় নিতেই পারে’। কিন্তু যে জনগণ তাদের মন স্থির করে ফেলেছে তারাই ষড়যন্ত্রকে সফল হতে দেবে না…এটা মনে রাখতে হবে।
নজরুল ইসলাম বলেন, ফ্যাসিবাদের পতন ও একটা নির্দলীয় নিরপেক্ষ সরকারের অধীনে অবাধ সুষ্ঠ জাতীয় সংসদ নির্বাচনের মাধ্যমে গণতন্ত্র পুনঃপ্রতিষ্ঠার এক দফা…এই এক দফার আমরা অর্জন করেছি। ফ্যাসিবাদের পতন হয়েছে বাকি অংশটুকু পূরণ করার জন্যই অন্তবর্তীকালীন সরকার। কিন্তু এই বাংলাদেশের জনগণ মাত্র কিছুদিন আগে ১৫ বছর ধইরা সিন্দাবাদের দৈত্যের মত ঘাড়ে চেপে বসা একটা নিপীড়নকারী একটা খুনি একটা ফ্যাসিবাদী সরকারকে উৎখাত করেছে। সেই জনগণ কোনো ষড়যন্ত্র হতে দেবে না। কোনো ষড়যন্ত্র এই জনগণকে পরাজিত করতে পারেনি এবং পারবে না ইনশাআল্লাহ।
তিনি বলেন, আমরা দেশে উন্নয়ন দেখেছি। বড় বড় দালানকোঠা, বড় বড় এক্সপ্রেসওয়ে, নতুন নতুন ট্রেন ইত্যাদি। কিন্তু পাশাপাশি আমরা দেখেছি জনগণের মৌলিক নূন্যতম আকাঙ্ক্ষাগুলো অপূর্ণ থেকে যেতে।আমরা পত্রিকায় পড়েছি যে, কোটিপতি উৎপাদনের দেশ হিসাবে বাংলাদেশ শীর্ষে এদেশে জনসংখ্যার অনুপাতে সবচেয়ে বেশি কোটিপতি হয় প্রতিবছর। অথচ আমরা এটাও পড়েছি যে প্রতিবছর লক্ষ লক্ষ মানুষ দারিদ্র সীমার নিচে চলে যায়। একদিকে কিছু মানুষ কোটিপতি হয়, আরেক দিকে লক্ষ লক্ষ মানুষ দারিদ্রসীমার নিচে পড়ে যায়। এই অবস্থা, এই অবস্থা গ্রহণযোগ্য না। এটাকে উন্নয়ন বলে না।
তিনি আরো বলেন, একজন রাজনীতিবিদ বলেছিলেন যে দেশের মানুষ বেকার উপার্জনহীন বুভুক্ষ, দরিদ্র সেই দেশে বড় বড় অট্টালিকা, বড় বড় রাস্তাঘাট, বড় বড় পুল-কালভার্ট এসব হল গোরস্থানে আলোক সজ্জা করা। আপনি একটা গোরস্থানে আলোক সজ্জা করে দেখাতে পারেন বড় সুন্দর লাগছে। কিন্তু তার চারদিকে অন্ধকার। এটা উন্নয়ন না। আপনারা খানিকক্ষণ পরেই শুনবেন যে কেমন উন্নয়নের স্বপ্ন দেখে বিএনপি। কিভাবে সে উন্নয়নের আকাঙ্ক্ষা পূরণ করতে চাই আমরা। খালি বললেই তো হবে না যে আমরা দেশের মানুষকে শিক্ষিত করতে চাই। কীভাবে শিক্ষিত করবেন? আমরা দেশের মানুষের উপার্জন বাড়াতে চাই। কীভাবে করবেন? আমরা কর্মসংস্থান সৃষ্টি করতে চাই। কীভাবে করবেন? আমরা নারীদের অধিকার সুনিশ্চিত করতে চাই। কীভাবে করবেন? আমরা স্বাস্থ্য সেবা নিশ্চিত করতে চাই জনগণের জন্য কীভাবে?”
‘দেশ গড়া পরিকল্পনা’ শীর্ষক কর্মসূচির বাস্তবায়ন কমিটির আহ্বায়ক দলের জ্যেষ্ঠ যুগ্ম মহাসচিব রুহুল কবির রিজভীর সভাপতিত্বে ও যুগ্ম মহাসচিব হাবিব উন নবী খান সোহেলের সঞ্চালনায় জাতীয়তাবাদী ছাত্র দলের নেতা-কর্মীরা অংশ নেন।
বিএনপির সিনিয়র যুগ্ম মহাসচিব রুহুল কবির রিজভীর সভাপতিত্বে ও যুগ্ম মহাসচিব হাবিব উন নবী খান সোহেলের সঞ্চালনায় জাতীয়তাবাদী স্বেচ্ছাসেবক ও অলামা দলের জেলা পর্যায়ের নেতারা উপস্থিত ছিলেন। আজ বিকেলে এই অনুষ্ঠানে বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমানের বক্তব্য দেওয়ার কথা রয়েছে।
নিজস্ব প্রতিবেদক 






















