নিজস্ব প্রতিবেদক :
প্রধানমন্ত্রীর নিরাপত্তাবিষয়ক উপদেষ্টা মেজর জেনারেল (অব.) তারিক আহমেদ সিদ্দিক বলেন, জনগণের শান্তি ও রোহিঙ্গাদের শৃঙ্খলাভাবে রাখতে কাজ করছে সরকার। শুধু সীমান্ত বা মিয়ানমার নয়, যেকোনো পরিস্থিতি মোকাবিলা করতে প্রস্তুত রয়েছে সেনাবাহিনী। প্রধানমন্ত্রী যে নির্দেশনা দেবেন, সেটা মানব। সেনাবাহিনী পেশাদারিত্বের সঙ্গে সবসময় প্রস্তুত থাকে। দেশের সংকটে সিভিল প্রশাসন ও সেনাবাহিনী একযোগে কাজ করবে।
মঙ্গলবার (৫ মার্চ) সকালে রাজধানীর ওসমানী স্মৃতি মিলনায়তনে ডিসি সম্মেলনের তৃতীয় দিনের প্রথম কার্য-অধিবেশন শেষে সাংবাদিকদের সঙ্গে আলাপকালে তিনি এসব কথা বলেন।
তিনি বলেন, ‘মিয়ানমারের পরিস্থিতি আস্তে আস্তে খারাপের দিকে যাচ্ছে। আমাদের ওপর আগ্রাসনের কোনো সম্ভাবনা দেখি না। তারপরও আমরা প্রস্তুত। আমাদের ওপর যদি কোনো রকম আক্রমণ আসে, আমরা ব্যবস্থা নেব।’
তারিক আহমেদ সিদ্দিক বলেন, ‘মিয়ানমার পরিস্থিতিতে বিভিন্ন বহিঃশক্তি সম্পৃক্ত হয়ে যাচ্ছে। কোথাও অস্থিতিশীল পরিস্থিতি হলে সবাই এখন নাক গলাতে চায়। আমরা ওই ব্যাপারে (মিয়ানমার পরিস্থিতি) মোটেও নাক গলাতে চাই না। আমাদের জনগণ যাতে শান্তিতে থাকে এবং রোহিঙ্গা যারা আছে তাদের নিরাপত্তার জন্য আমরা সজাগ থাকি। প্রধানমন্ত্রীর থেকে নির্দেশ আছে, আমরা বিশ্ব শান্তির জন্য কাজ করব, আমরা কখনও আগ্রাসী ভূমিকায় যাব না। এজন্য প্রতিবেশী দেশগুলোর সঙ্গে আমাদের খুবই ভালো সম্পর্ক।’
তিনি বলেন, ওখানে সিভিল প্রশাসন যেমন সম্পৃক্ত, তেমনি বিজিবিও সম্পৃক্ত। সেনাবাহিনী ততটা সম্পৃক্ত নয়। কারণ এখনও যুদ্ধ লাগেনি, যে সেনাবাহিনী সম্পৃক্ত হতে হবে।
ডিসিরা কী প্রস্তাব দিয়েছেন জানতে চাইলে প্রধানমন্ত্রীর নিরাপত্তা উপদেষ্টা বলেন, ‘ওনারা (ডিসি-বিভাগীয় কমিশনার) হেলিকপ্টার ব্যবহারের বিষয়ে প্রস্তাব দিয়েছেন। বর্তমান পরিস্থিতিতে আমরা হেলিকপ্টার ব্যবহার অনেক কমিয়ে দিয়েছি। বৈশ্বিক অর্থনৈতিক মন্দার কারণে তেলের ওপর প্রভাব পড়েছে। যার কারণে হেলিকপ্টার ব্যবহার কমিয়ে দেওয়া হয়েছে। ডিসিরা বলছিলেন, তারা চাহিদা অনুযায়ী পান না। এটা হয়তো সাময়িক। তবে যেকোনো সময় যে কারও অসুবিধা হলেই হেলিকপ্টার সাপোর্ট দেওয়া হবে।’
তিনি বলেন, ‘এ ছাড়া ইলিশ মাছ ধরার বিষয়ে আলোচনা হয়েছে। পার্শ্ববর্তী দেশ থেকে এসে ইলিশ মাছ ধরে নিয়ে যায়। ওটার ব্যাপারে নৌ-বাহিনীপ্রধান বলেছেন, কী কী ব্যবস্থা নেবেন।’
আপনাদের পক্ষ থেকে নির্দেশনা কী ছিল জানতে চাইলে তিনি বলেন, সামরিক বাহিনী তো স্বয়ংসম্পূর্ণ। আমরা চাচ্ছি ওনাদের সঙ্গে বিশেষ করে দুর্যোগপূর্ণ অবস্থায় একসঙ্গে কাজ করতে। আমাদের পক্ষ থেকে ডিসিদের অনুরোধ ছিল, আগুন ধরার বিষয়ে…। আজকেই দেখা যাবে বাজারে চিনির দাম বেড়ে যাবে। কোথায় কার চিনির গুদামে আগুন ধরেছে, এটার ইফেক্ট হয়তো আসবে কিছুটা বাজারে, সেটি খুবই সামান্য আসার কথা। সেটি আমাদের মজুদের তুলনায় এক শতাংশও না। কিন্তু দেখা যাবে অসাধু ব্যবসায়ীরা ওটার অজুহাত দিয়ে চিনির দাম বাড়িয়ে দিয়েছে। এ ব্যাপারে বলা হলো, ওনারা যাতে নজর রাখেন। আমরা আইনশৃঙ্খলা বাহিনীকেও বলবো এগুলো মনিটরিং করতে।
প্রধানমন্ত্রীর নিরাপত্তাবিষয়ক উপদেষ্টা বলেন, মিয়ানমারের পরিস্থিতি খারাপের দিকেই যাচ্ছে আস্তে আস্তে। আমাদের ওপর আগ্রাসনের কোনো সম্ভাবনা দেখি না। তারপরও আমরা প্রস্তুত। কিন্তু ওখানে বিভিন্ন বহিঃশক্তি সম্পৃক্ত হয়ে যাচ্ছে। কোথাও অস্থিতিশীল পরিস্থিতি হলে সবাই এখন নাক গলাতে চায়। আমরা ওই ব্যাপারে (মিয়ানমার পরিস্থিতি) মোটেও নাক গলাতে চাই না। আমাদের জনগণ যাতে শান্তিতে থাকে এবং রোহিঙ্গা যারা আছে তাদের নিরাপত্তার জন্য আমরা সজাগ থাকি। প্রধানমন্ত্রীর নির্দেশ আছে, আমরা বিশ্ব শান্তির জন্য কাজ করবো, আমরা কখনোই আগ্রাসী ভূমিকায় যাবো না। এজন্য প্রতিবেশী দেশগুলোর সঙ্গে আমাদের খুবই ভালো সম্পর্ক।
হেলিকপ্টার ব্যবহারের বিষয়ে জানতে চাইলে তিনি বলেন, বর্তমান পরিস্থিতিতে আমরা হেলিকপ্টার ব্যবহার অনেক কমিয়ে দিয়েছি। বৈশ্বিক অর্থনৈতিক মন্দার কারণে তেলের ওপর প্রভাব পড়েছে। যার কারণে হেলিকপ্টার ব্যবহার কমিয়ে দেওয়া হয়েছে। ডিসিরা বলছিলেন, তারা চাহিদা অনুযায়ী পান না। এটা হয়তো সাময়িক। তবে যেকোনো সময় যে কারো অসুবিধা হলেই হেলিকপ্টার সাপোর্ট দেওয়া হবে।
ক্রস বর্ডার কিলিংয়ের বিষয়ে জানতে চাইলে তিনি বলেন, ‘এটা তো পরিকল্পিত কিছু না। এখানে দুই পক্ষেরই দোষ থাকে। আমাদেরও দোষ, বর্ডারের ওপারে যারা থাকে তাদেরও দোষ। এটাকে কিলিং না বলে ইনসিডেন্ট বলা যায়। চোরাচালনাকারীরা এতটাই ফেরসাস হয় যে, মাঝে মাঝে তারা বিএসএফকে আক্রমণ করে বসে। তখন তারা গুলি করে বাধ্য হয়ে। আমাদের তরফ থেকেও গুলি হয় মাঝে মাঝে।’
তিনি প্রধানমন্ত্রীর নিরাপত্তা উপদেষ্টা বলেন, ‘যেসব ঘটনা অর্থনীতির ওপর প্রভাব ফেলবে, সেদিকে আমরা বেশি সজাগ আছি। যেমন আগুন লাগা, এই লাগা, ওই লাগা এগুলো প্রত্যক্ষ ও পরোক্ষভাবে অর্থনীতির ওপর প্রভাব ফেলে। আবার অস্থিতিশীল পরিবেশ হয়, তখন বিনিয়োগকারীরা আসবে না। এসব ব্যাপারে আমরা সজাগ আছি। এ ছাড়া আর কোনো সমস্যা দেখি না। তবে আমাদের বৈদেশিক মুদ্রার যে সংকট হয়েছে, বাংলাদেশ ব্যাংক সেটি মোটামুটি নিয়ন্ত্রণ করেছে। আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি খুবই ভালো। আমরা সবাই যৌথভাবে কাজ করছি।’
তিনি বলেন, ‘আমাদের সিভিল মিলিটারি রিলেশনশিপ (সিএমআর) এটা যেনো আরও উন্নত হয় সেজন্য আলোচনা হয়েছে। এই আলোচনা খুবই ফলপ্রসূ ছিল। ডিসি সাহেব ও বিভাগীয় কমিশনারদের পক্ষ থেকে বেশ কিছু প্রস্তাব এসেছে। এটা আমরা প্রধানমন্ত্রীর সঙ্গে আলোচনা করে পদক্ষেপ নিব। ওনারাও (ডিসি-বিভাগীয় কমিশনার) চাচ্ছে আমাদের কাছাকাছি আসতে, আমরাও চাচ্ছি ওনাদের কাছাকাছি যেতে। আমাদের মধ্যে সৌহার্দ্য অনেক বেশি। ওনারা আমাদের এখানে ট্রেনিং করতে আসেন, আমরাও যাই। এতে আমাদের বন্ধুত্ব অনেক বেড়ে গেছে।’
বারবার অগ্নিকাণ্ড, এটা কী আপনারা ষড়যন্ত্র হিসেবে নিচ্ছেন কি না? জবাবে মেজর জেনারেল বলেন, এটাই আমি বলেছি ডিসি সাহেবদের। আমরা এসব ব্যাপারে ইনভল্ভ হই না, আমরা শুধু উদ্ধার কাজে ইনভল্ভ হই। ওই যে খুঁজে বের করা, খতিয়ে দেখা, উড়িয়ে দেওয়া যায় না। যদিও এ মৌসুমটা শুকনো মৌসুম সেজন্যই সাধারণত হয়।
‘তবু এটা দেখা উচিত। খতিয়ে দেখা মানে কি এটা ষড়যন্ত্রের জন্য শুধু না, যে শিথিল জায়গাগুলো আছে, ওগুলোকে শক্ত করা, যাতে করে ওটা আর না হতে পারে।’
নিজস্ব প্রতিবেদক 





















