নিজস্ব প্রতিবেদক :
যুবলীগের চেয়ারম্যান শেখ ফজলে শামস পরশ বলেন, জনগণের ভোটের জন্য শেখ হাসিনা আজীবন সংগ্রাম করেছেন। বিএনপি নির্বাচনকে ভয় পায়, কারণ প্রথমত, তাদের বিদেশে থাকা নেতা দিয়ে তারা কীভাবে নির্বাচন করবে। দ্বিতীয়ত, তাদের নিজেদের মধ্যে আস্থার অভাব। কেউ কাউকে বিশ্বাস করে না। নেতাবিহীন রাজনৈতিক দলের যা হয়। বিএনপির তত্ত্বাবধায়ক দাবি মিথ্যা দাবি। বিএনপি নিজেও জানে একটি অসম্ভব দাবি কিন্দু তবুও তারা তাদের নেতাকর্মীদের বিভ্রান্ত করছে।
শনিবার (১৭ জুন) বিকেলে ঢাকা মহানগর দক্ষিণ যুবলীগের শ্যামপুর ও কদমতলী থানার অন্তর্গত ৪৭, ৫১, ৫২, ৫৩, ৫৪, ৫৮ ও ৫৯ নম্বর ওয়ার্ডের ইউনিটসমূহের ত্রি-বার্ষিক সম্মেলনে তিনি এসব কথা বলেন। কদমতলীর শ্যামপুর শিল্প এলাকায় (গাজী ট্যাংক ফ্যাক্টরির সামনে) এ সম্মেলন অনুষ্ঠিত হয়।
যুবলীগের চেয়ারম্যান বলেন, বঙ্গবন্ধু বলেছিলেন, আত্মশুদ্ধ যুবশক্তির উন্মোচন চাই। নিজেদের মধ্যে শৃঙ্খলা সুদৃঢ় করতে হবে। সাফল্যের শর্টকাট খুজলে হবে না। যোগ্যতা ও কঠোর পরিশ্রম দ্বারা সাফল্য খুজতে হবে। আমাদের নেত্রী যার জ্বলন্ত উদাহরণ। তিনি সাফল্যের শর্টকাট খুজেন নাই। কোনো বহিশক্তির রক্তচক্ষু শেখের বেটি ভয় পায় না। তিনি আরও বলেন-কোনো বহিশক্তির আমাদের দেশের অভ্যন্তরীণ বিষয়ে অনধিকার চর্চা করা উচিৎ হবে না। তত্ত্বাবধায়ক সরকারের বিষয়ে তারা চাপ প্রয়োগ করলে সেটা হবে রাজনৈতিক ও কুটনৈতিক শিষ্টাচার বর্হিভূত।
তিনি বলেন, যুবলীগ মাঠে-ঘাটে ওদের মোকাবিলা করতে জানে, আগেও করেছে। আন্দোলন-সংগ্রাম করে আপনারা (বিএনপি) আমাদের কি উৎখাত করবেন। এ দেশের গণতন্ত্র আমাদের সংগ্রামের ফসল। ভোট ও ভাতের অধিকার আমাদের আন্দোলনের ফসল। ভয় দেখিয়ে লাভ নেই। এ সকল থার্ডক্লাস আন্দোলন-সংগ্রাম করে আওয়ামী লীগকে উৎখাত করা যাবে না।
নেতাকর্মীদের উদ্দেশে যুবলীগের চেয়ারম্যান বলেন, সাংগঠনিক পদ শুধু সাংগঠনিক কাজে ব্যবহার করবেন। এটি কোনো ব্যক্তির পকেট ভারী করার বস্তু না। সাংগঠনিক পদ চাঁদাবাজি-টেন্ডারবাজি বা অবৈধ বাণিজ্যের জন্য ব্যবহার করবেন না। ব্যক্তির চেয়ে দল বড়, দলের চেয়ে দেশ বড়। ব্যক্তি স্বার্থের উর্ধ্বে যেয়ে রাজনীতি করতে হবে। দেশের মানুষের জন্য ত্যাগ শিকার করা ও মানুষের সেবা করার তাতপর্য বুকে ধারণ করে রাজনীতি করবে আওয়ামী যুবলীগ।
তিনি আরও বলেন, ১৯৭৪ সালের আওয়ামী যুবলীগের জাতীয় কংগ্রেসে বঙ্গবন্ধু বলেছিলেন, “আত্মসুদ্ধ যুবশক্তির উন্মেষ চাই।” যুব সমাজের উপর জাতির পিতার ছিল অগাধ বিশ্বাস। আমাদের বঙ্গবন্ধুর আদর্শ ও স্বপ্ন বাস্তবায়নে অতন্দ্র প্রহরীর মত ভূমিকা রাখতে হবে। বঙ্গবন্ধুর আদর্শ হচ্ছে দেশপ্রেম ভিত্তিক রাজনীতি। ও শোষণমুক্ত সমাজ ব্যবস্থা বিনির্মাণ। আর বঙ্গবন্ধুর স্বপ্ন হচ্ছে, অর্থনৈতিক মুক্তি তথা, আত্মনির্ভরশীল ও মর্যাদাশীল একটি সুখি সমৃদ্ধ বাংলাদেশ।
তিনি বলেন, বাঙ্গবন্ধুকন্যা এ দেশের মানুষের ভাগ্য উন্নয়নে যুগান্তকারী ভূমিকা রেখে চলেছেন। যুগান্তকারী উন্নয়নমূলক কাজ করে চলেছেন, যেটা বিশ্বোর ইতিহাসে বিস্ময়কর ঘটনা। বঙ্গবন্ধুর স্বপ্ন বাস্তবায়নে দক্ষ “যুবশক্তি” হয়ে যুবলীগ ভূমিকা রাখবে। তাই দক্ষতা বৃদ্ধির উপর গুরুত্ব আরোপ করতে সকল যুবলীগের ভাই-বোনদের তাগিদ দিচ্ছি। সম্প্রতি আমরা দেখেছি শেখ হাসিনার সরকার অপরিসীম দক্ষতার সাথে করোনা মোকাবিলা করেছে। পৃথিবীর খুব কম সংখ্যক সরকার এই রকম দক্ষতার সাথে করোনা মোকাবিলা করতে পেরেছে। বঙ্গবন্ধুকন্যার কৃতিত্বে ও রাজনৈতিক দূরদর্শিতার কারণে আমরা প্রায় ১৫ বছর রাষ্ট্রীয় দায়িত্বে রয়েছি। তিনি আরও বলেন-পরিতাপের বিষয় ১৫ বছর কিছু তথাকথিত নেতৃবৃন্দ ব্যক্তি স্বার্থে দলের মধ্যে অনুপ্রবেশকারিদের জায়গা দিয়ে আমাদের পরিক্ষিত, দুরসময়ের নেতা-কর্মীদের বঞ্চিত করছে। এটা সংগঠনের জন্য অপরিসীম ক্ষতিকর। এর মাধ্যমে বিএনপি-জামাত শিবিরের সন্ত্রাসী ও দুষ্কৃতকারীরা পুনর্বাসিত হচ্ছে ও দলের ভীতরে ঢুকে আমাদের চরম ক্ষতিসাধণ করছে। আমি মনে তকরি এটা স্বাধীনতা বিরোধীচক্র, জামা-শিবির ও বিএনপির সুপরিকল্পিত নীলনক্সা আমাদের সংগঠনকে দুর্বল করে আমাদের মধ্যে ফাটল ধরানোর জন্য।
তিনি যুবলীগের নেতা-কর্মীদের উদ্দেশ্যে বলেন, আজকে একটা মহল, স্বাধীনতা বিরোধী চক্র এদেশের শ্রমজীবী খেটে খাওয়া মানুষের ভাগ্য নিয়ে ছিনিমিনি খেলতে ষড়যন্ত্রে লিপ্ত। ঠিক যেসময় আমাদের মাথাপিছু আয় বৃদ্ধি পেয়ে ২৫০০ ডলারেও বেশি; ঠিক যখন এ দেশের মেহনতি মানুষের মৌলিক চাহিদাগুলো নিশ্চিত হয়েছে, ঠিক তখন ঐ দেশবিরোধী চক্র সাধারণ মানুষের উন্নত ভবিষ্যতের স্বপ্ন ধুলিসসাত করতে উদ্যত হয়েছে। এই বঞ্চনার রাজনীতি প্রতিহত করবে যুবলীগ। যুবলীগ মাঠে-ঘাটে-রাজপথে ওদেরকে মোকাবিালা করতে জানে, আগেও করেছে। আন্দোলন-সংগ্রাম করে আপনারা আমাদের কি উৎখাত করবেন? এদেশের গণতন্ত্র আমাদের সংগ্রামের ফসল, ভোট ও ভাতের অধিকারও আমাদের আন্দোলনের ফসল। সুতরাং ঐ ভয় আমাদেরকে দেখিয়ে লাভ নাই।
ঢাকা মহানগর যুবলীগ উত্তরের ভারপ্রাপ্ত সভাপতি মাইন উদ্দিন রানার সভাপতিত্বে অনুষ্ঠানে আরও বক্তব্য রাখেন আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক বাহাউদ্দিন নাছিম, আওয়ামী লীগের কেন্দ্রীয় কার্যনির্বাহী সদস্য সানজিদা খানম, ঢাকা মহানগর দক্ষিণ আওয়ামী লীগের সভাপতি আবু আহমেদ মন্নাফী, যুবলীগের চেয়ারম্যান শেখ ফজলে শামস্ পরশ, সাধারণ সম্পাদক মাইনুল হোসেন খান নিখিল, ঢাকা মহানগর উত্তর যুবলীগের ভারপ্রাপ্ত সাধারণ সম্পাদক এইচ এম রেজাউল করিম রেজা প্রমুখ।