নিজস্ব প্রতিবেদক :
মঙ্গল শোভাযাত্রা বন্ধে উড়ো চিঠিটি আসলে কোনো জঙ্গি সংগঠনের হুমকি না বরং আতঙ্ক ছড়াতে তৃতীয় কোনো ব্যক্তি এটা করেছেন বলে জানিয়েছেন র্যাপিড অ্যাকশন ব্যাটালিয়নের (র্যাব) মহাপরিচালক (ডিজি) এম খুরশীদ হোসেন।
বৃহস্পতিবার (১৩ এপ্রিল) সকালে রাজধানীর রমনার বটমূলে পহেলা বৈশাখ উপলক্ষে গৃহীত নিরাপত্তা ব্যবস্থা পরিদর্শন শেষে সাংবাদিকদের সঙ্গে আলাপকালে তিনি এ কথা বলেন।
তিনি বলেন, পহেলা বৈশাখ উপলক্ষে সুনির্দিষ্ট জঙ্গি হামলার কোনো তথ্য নেই। মঙ্গল শোভাযাত্রায় হুমকি দিয়ে যে চিঠি দেওয়া হয়েছে তা তৃতীয় কোনো পক্ষের কাজ। আমরা সেটি নিয়ে তদন্ত করছি। তদন্তে আশা করি চিঠি বা এটা কারা দিয়েছে তা বেরিয়ে আসবে। তবে পয়লা বৈশাখে কেউ যেন কোনো ধরনের নাশকতা করতে না পারে সেজন্য আমরা সব ধরনের প্রস্তুতি রেখেছি। রমনার বটমূলসহ আশপাশের এলাকায় র্যাব সদস্য মোতায়েন থাকবে। এছাড়া ডগ স্কোয়াড দিয়ে পুরো এলাকার নিরাপত্তা পর্যবেক্ষণ করা হয়েছে। অপ্রীতিকর বা অনাকাঙ্ক্ষিত পরিস্থিতি মোকাবিলায় পুরো এলাকায় সিসি ক্যামেরা বসানো হয়েছে।
র্যাব মহাপরিচালক বলেন, বাংলা নববর্ষ উদযাপন অনুষ্ঠানে যেকোনও ধরনের উদ্ভুত পরিস্থিতি মোকাবিলায় প্রস্তুত রাখা হয়েছে র্যাবের কমান্ডো টিম। দেশব্যাপী বিশেষ গোয়েন্দা নজরদারি শুরু করেছে র্যাবের প্রতিটি ব্যাটালিয়ান। ০১৭৭৭৭২০০২৯ এর মাধ্যমে নিরাপত্তা ব্যবস্থা সমন্বয় করা হবে।
তিনি বলেন, পহেলা বৈশাখে কেন্দ্র করে প্রতিবছরের মতো এবারও বিশেষ ব্যবস্থা নেওয়া হয়েছে র্যাবের পক্ষ থেকে। নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে দেশব্যাপী গোয়েন্দা নজরদারি বাড়ানো হয়েছে। আজ থেকে নববর্ষের অনুষ্ঠান শেষ না হওয়া পর্যন্ত নিরাপত্তা জোরদার করতে সারাদেশে র্যাবের সব ব্যাটালিয়ান মোতায়েন থাকবে। বাংলা নববর্ষ উদযাপন উপলক্ষে টিএসসি, শাহবাগ, সোহরাওয়ার্দী উদ্যান, রমনা বটমূলসহ রাজধানীর যেসব স্থানে বর্ষবরণ অনুষ্ঠান আয়োজন করা হয় সেসব স্থানে নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে পর্যাপ্ত চেকপোস্ট টহল, অবজারভেশন পোস্ট স্থাপন করে বিশেষ নিরাপত্তা ব্যবস্থা গ্রহণ করা হয়েছে। রাজধানীর গুরুত্বপূর্ণ স্থানগুলোয় বোম্ব ডিসপোজাল ইউনিটের ডগ স্কোয়াড দিয়ে সুইপিং করানো হবে।
র্যাব মহাপরিচালক বলেন, সাইবার মনিটরিংসহ বিভিন্ন গোয়েন্দা তথ্য পর্যালোচনা করে বাংলা নববর্ষকে কেন্দ্র করে কোনও ধরনের জঙ্গি হামলার সুনির্দিষ্ট তথ্য পাওয়া যায়নি। তবুও আত্মতুষ্টিতে ভুগছি না। জঙ্গিদের যেকোনও ধরনের নাশকতা পরিকল্পনা নস্যাৎ করতে প্রস্তুত রয়েছে। যেকোনও ধরনের গুজব, মিথ্যা তথ্য প্রতিরোধে সাইবার টিম সক্রিয় রয়েছে।
এম খুরশিদ হোসেন বলেন, সারাদেশে নববর্ষের উদযাপন উপলক্ষে সার্বিক নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে র্যাবের স্ট্রাইকিং রিজার্ভ, মোটরসাইকেল পেট্রোল, বোট পেট্রোল ও সিসিটিভি মনিটরিং রয়েছে। যেকোনো পরিস্থিতি মোকাবিলায় র্যাবের রিজার্ভ ফোর্স মোতায়েন রয়েছেন। এছাড়া যেকোনো হামলার ঘটনা মোকাবিলায় র্যাবের স্পেশাল কমান্ডো টিম প্রস্তুত রয়েছে। নাশকতার কোনো ঘটনা মোকাবিলায় র্যাবের টহল ও সাদা পোশাকে গোয়েন্দা নজরদারি রয়েছে।
তিনি আরও বলেন, বাংলা নববর্ষ উপলক্ষে সুনির্দিষ্ট কোনো জঙ্গি হামলার তথ্য নেই। গোয়েন্দা নজরদারি ও সাইবার মনিটরিং বৃদ্ধির মাধ্যমে জঙ্গিদের যেকোনো নাশকতার পরিকল্পনা নস্যাৎ করতে আমরা প্রস্তুত রয়েছি। ভার্চুয়াল জগতে নববর্ষকে কেন্দ্র করে যেকোনো গুজব ঠেকাতে আমাদের সাইবার মনিটরিং অব্যাহত রয়েছে। নববর্ষে অংশ নিতে আসা নারীদের উত্ত্যক্ত প্রতিরোধে ভ্রাম্যমাণ আদালত পরিচালনা করা হবে। কেউ কোনও ধরনের হেনস্থার শিকার হলে সংশ্লিষ্ট সদস্যদের জানানোর আহ্বান জানান।