Dhaka বুধবার, ৩০ জুলাই ২০২৫, ১৪ শ্রাবণ ১৪৩২ বঙ্গাব্দ

ছিনতাইকারীর হামলার ১৬ দিন পর কলেজছাত্রের মৃত্যু

রাজশাহী জেলা প্রতিনিধি : 

ছিনতাইকারীর হামলায় আহত রাজশাহী কলেজের (রামেক) ছাত্র নিশাদ আকরাম (২৪) অবশেষে হার মারলেন। ১৬ দিন ধরে চিকিৎসাধীন থাকার তার মৃত্যু হয়েছে।

মঙ্গলবার (৩ অক্টোবর) ভোরে রাজশাহী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের নিবিড় পরিচর্যা কেন্দ্রে (আইসিইউ) চিকিৎসাধীন অবস্থায় তার মৃত্যু হয়।

নিশাদ আকরাম নওগাঁর নিয়ামতপুর উপজেলার আড্ডা গ্রামের বাসিন্দা। তিনি রাজশাহী কলেজের পরিসংখ্যান বিভাগের তৃতীয় বর্ষের শিক্ষার্থী ছিলেন।

গত ১৭ সেপ্টেম্বর ভোরে ছিনতাইকারীর হামলায় আহত হন নিশাদ। এরপর থেকেই তিনি রামেকে চিকিৎসাধীন ছিলেন।

এ ঘটনায় তার চাচাতো ভাই রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্র আসাদুজ্জামান বাদী হয়ে নগরীর বোয়ালিয়া থানায় একটি মামলা করেন। এ মামলায় সেলিম (৫০) নামের একজনকে গ্রেফতার করেছে পুলিশ।

রাজশাহী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের নিবিড় পরিচর্যা কেন্দ্রের (আইসিইউ) ইনচার্জ ডা. আবু হেনা মোস্তফা কামাল ওই কলেজ ছাত্রের মৃত্যুর বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন।

তিনি বলেন, ছিনতাইকারীর হামলায় রিকশা থেকে পড়ে নিশাদ আকরামের মাথার খুলি ফেটে গিয়েছিল। ঘটনার পর থেকে তার কোনো সজ্ঞা ছিল না। অচেতন অবস্থায় হাসপাতালে ভর্তির পর থেকেই তাকে আইসিইউতে লাইফ সাপোর্টে রাখা হয়েছিল। ভোরে চিকিৎসাধীন অবস্থায় তার মৃত্যু হয়।

বোয়ালিয়া থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) সোহরাওয়ার্দী হোসেন বলেন, ছিনতাই ও হামলার ঘটনায় আগেই একটি মামলাটি হয়েছিল। এখন সেই মামলাটিই হত্যা মামলায় রূপ নেবে। এরইমধ্যে হামলাকারী সেলিমকে গ্রেফতার করা হয়েছে। তবে তিনি জানিয়েছেন একা নয় তারা দুইজন মিলে ছিনতাইয়ের উদ্দেশে এই হামলা করেছিলেন। তাই এই হামলার সঙ্গে জড়িত অন্যজনকেও গ্রেপ্তারের চেষ্টা চলছে। বর্তমানে নিহতের মরদেহ ময়নাতদন্তের প্রক্রিয়া চলছে। দুপুরে মধ্যে ময়নাতদন্ত শেষে নিশাদের মরদেহ তার পরিবারের কাছে হস্তান্তর করা হবে বলেও জানান এই পুলিশ কর্মকর্তা।

এ বিষয়ে রাজশাহী কলেজের অধ্যক্ষ মোহা. আব্দুল খালেক বলেন, ছিনতাইকারীর কবলে পড়ে একজন শিক্ষার্থী মারা যাবেন এটা মেনে নেওয়া যায় না। এটি শিক্ষার্থীদের নিরাপত্তার জন্য হুমকি। এ ঘটনার সঙ্গে জড়িতদের দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি চাই।

এর আগে ১৭ সেপ্টেম্বর নিশাদ তার এক অসুস্থ বান্ধবীকে হাসপাতালে রেখে রিকশায় করে ফিরছিলেন। তারা যখন নগরের রাজারহাতা এলাকা পার হচ্ছিলেন, তখন ছিনতাইকারীরা এসে নিশাদকে আঘাত করলে তিনি রিকশা থেকে পড়ে যান।

রিকশাচালক ভয়ে রিকশা নিয়ে দূরে গিয়ে চিৎকার দিলে লোকজন এগিয়ে আসেন। সবাই নিশাদকে অচেতন অবস্থায় উদ্ধার করে রাজশাহী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে পাঠান। পরে এই ছিনতাই ও হামলার ঘটনায় তার চাচাতো ভাই রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী আসাদুজ্জামান বাদী হয়ে ওই দিনই বোয়ালিয়া থানায় মামলা করেন। মামলার পর বোয়ালিয়া থানা পুলিশ মো. সেলিম (৫০) নামের একজনকে গ্রেপ্তার করে। তার বাড়ি নগরের পাঠানপাড়ায়। তিনি পেশাদার ছিনতাইকারী। হামলার পর ওই কলেজ শিক্ষার্থীর মোবাইলফোন, মানিব্যাগ ও হাতঘড়ি ছিনতাই হয়ে গিয়েছিল।

জনপ্রিয় খবর

আবহাওয়া

ছিনতাইকারীর হামলার ১৬ দিন পর কলেজছাত্রের মৃত্যু

প্রকাশের সময় : ০৩:৪৮:৫৫ অপরাহ্ন, মঙ্গলবার, ৩ অক্টোবর ২০২৩

রাজশাহী জেলা প্রতিনিধি : 

ছিনতাইকারীর হামলায় আহত রাজশাহী কলেজের (রামেক) ছাত্র নিশাদ আকরাম (২৪) অবশেষে হার মারলেন। ১৬ দিন ধরে চিকিৎসাধীন থাকার তার মৃত্যু হয়েছে।

মঙ্গলবার (৩ অক্টোবর) ভোরে রাজশাহী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের নিবিড় পরিচর্যা কেন্দ্রে (আইসিইউ) চিকিৎসাধীন অবস্থায় তার মৃত্যু হয়।

নিশাদ আকরাম নওগাঁর নিয়ামতপুর উপজেলার আড্ডা গ্রামের বাসিন্দা। তিনি রাজশাহী কলেজের পরিসংখ্যান বিভাগের তৃতীয় বর্ষের শিক্ষার্থী ছিলেন।

গত ১৭ সেপ্টেম্বর ভোরে ছিনতাইকারীর হামলায় আহত হন নিশাদ। এরপর থেকেই তিনি রামেকে চিকিৎসাধীন ছিলেন।

এ ঘটনায় তার চাচাতো ভাই রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্র আসাদুজ্জামান বাদী হয়ে নগরীর বোয়ালিয়া থানায় একটি মামলা করেন। এ মামলায় সেলিম (৫০) নামের একজনকে গ্রেফতার করেছে পুলিশ।

রাজশাহী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের নিবিড় পরিচর্যা কেন্দ্রের (আইসিইউ) ইনচার্জ ডা. আবু হেনা মোস্তফা কামাল ওই কলেজ ছাত্রের মৃত্যুর বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন।

তিনি বলেন, ছিনতাইকারীর হামলায় রিকশা থেকে পড়ে নিশাদ আকরামের মাথার খুলি ফেটে গিয়েছিল। ঘটনার পর থেকে তার কোনো সজ্ঞা ছিল না। অচেতন অবস্থায় হাসপাতালে ভর্তির পর থেকেই তাকে আইসিইউতে লাইফ সাপোর্টে রাখা হয়েছিল। ভোরে চিকিৎসাধীন অবস্থায় তার মৃত্যু হয়।

বোয়ালিয়া থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) সোহরাওয়ার্দী হোসেন বলেন, ছিনতাই ও হামলার ঘটনায় আগেই একটি মামলাটি হয়েছিল। এখন সেই মামলাটিই হত্যা মামলায় রূপ নেবে। এরইমধ্যে হামলাকারী সেলিমকে গ্রেফতার করা হয়েছে। তবে তিনি জানিয়েছেন একা নয় তারা দুইজন মিলে ছিনতাইয়ের উদ্দেশে এই হামলা করেছিলেন। তাই এই হামলার সঙ্গে জড়িত অন্যজনকেও গ্রেপ্তারের চেষ্টা চলছে। বর্তমানে নিহতের মরদেহ ময়নাতদন্তের প্রক্রিয়া চলছে। দুপুরে মধ্যে ময়নাতদন্ত শেষে নিশাদের মরদেহ তার পরিবারের কাছে হস্তান্তর করা হবে বলেও জানান এই পুলিশ কর্মকর্তা।

এ বিষয়ে রাজশাহী কলেজের অধ্যক্ষ মোহা. আব্দুল খালেক বলেন, ছিনতাইকারীর কবলে পড়ে একজন শিক্ষার্থী মারা যাবেন এটা মেনে নেওয়া যায় না। এটি শিক্ষার্থীদের নিরাপত্তার জন্য হুমকি। এ ঘটনার সঙ্গে জড়িতদের দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি চাই।

এর আগে ১৭ সেপ্টেম্বর নিশাদ তার এক অসুস্থ বান্ধবীকে হাসপাতালে রেখে রিকশায় করে ফিরছিলেন। তারা যখন নগরের রাজারহাতা এলাকা পার হচ্ছিলেন, তখন ছিনতাইকারীরা এসে নিশাদকে আঘাত করলে তিনি রিকশা থেকে পড়ে যান।

রিকশাচালক ভয়ে রিকশা নিয়ে দূরে গিয়ে চিৎকার দিলে লোকজন এগিয়ে আসেন। সবাই নিশাদকে অচেতন অবস্থায় উদ্ধার করে রাজশাহী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে পাঠান। পরে এই ছিনতাই ও হামলার ঘটনায় তার চাচাতো ভাই রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী আসাদুজ্জামান বাদী হয়ে ওই দিনই বোয়ালিয়া থানায় মামলা করেন। মামলার পর বোয়ালিয়া থানা পুলিশ মো. সেলিম (৫০) নামের একজনকে গ্রেপ্তার করে। তার বাড়ি নগরের পাঠানপাড়ায়। তিনি পেশাদার ছিনতাইকারী। হামলার পর ওই কলেজ শিক্ষার্থীর মোবাইলফোন, মানিব্যাগ ও হাতঘড়ি ছিনতাই হয়ে গিয়েছিল।