Dhaka শনিবার, ১৩ ডিসেম্বর ২০২৫, ২৯ অগ্রহায়ণ ১৪৩২ বঙ্গাব্দ

চোরাই তেলবাহী ট্যাঙ্কার জব্দ করল ইরান, বাংলাদেশিসহ ১৮ ক্রু আটক

আন্তর্জাতিক ডেস্ক : 

ওমান উপসাগরে বিপুল পরিমাণ চোরাই ডিজেলবাহী একটি ট্যাংকার জাহাজ জব্দ করেছে ইরানের কোস্টগার্ড বাহিনী। সেই সঙ্গে জাহাজটির ১৮ জন ক্রুদের সবাইকে আটকও করা হয়েছে। আটক ক্রুদের মধ্যে বাংলাদেশ, ভারত ও শ্রীলঙ্কার নাগরিকরা আছেন বলে জানিয়েছে ইরানের রাষ্ট্রায়ত্ত বার্তাসংস্থা ফার্স নিউজ।

জাহাজটি আটক করা হয়েছে ইরানের দক্ষিণাঞ্চলীয় প্রদেশ হরমোজগানের উপকূলে। প্রাদেশিক প্রশাসনের এক কর্মকর্তার বরাত দিয়ে ফার্স নিউজের প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, শুক্রবার ওমান উপসাগরে ৬০ লাখ লিটার ডিজেলবাহী একটি ট্যাঙ্কার জাহাজ জব্দ করা হয়েছে। নেভিগেশন সিস্টেম নষ্ট হয়ে যাওয়ায় সাগরে ভাসছিল জাহাজটি। জাহাজে ১৮ জন ক্রু ছিলেন। তাদের সবাইকে আটক করা হয়েছে। আটক এই ক্রুদের মধ্যে ভারতীয়, বাংলাদেশী এবং শ্রীলঙ্কার নাগরিকরা আছেন।

ইরানি কর্তৃপক্ষ দক্ষিণ হুরমুজগান প্রদেশের প্রধান বিচারপতি মুজতবা গাহরেমানিকে উদ্ধৃত করে জানিয়েছে, মূল জ্বালানি চোরাচালান চক্র এবং চোরাকারবারিদের মোকাবিলার প্রচেষ্টার অংশ হিসেবে গত বৃহস্পতিবার ইরানের দক্ষিণাঞ্চলীয় জাসক বন্দর শহরের কাছাকাছি জলসীমায় ইরানের বিচার বিভাগের কর্মকর্তারা ট্যাংকারটি বাজেয়াপ্ত করেন।

মুজতবা গাহরেমানি বলেন, জাহাজটির প্রয়োজনীয় সামুদ্রিক নথিপত্র এবং জ্বালানি চালানের ‘বিল অব ল্যাডিং’ ছিল না। তিনি আরও জানান, জাহাজটি সব নেভিগেশন ও দিকনির্দেশনা সহায়ক ব্যবস্থা বন্ধ করে রেখেছিল। তিনি উল্লেখ করেন, ট্যাংকারটিতে ১৮ জন ক্রু ছিলেন এবং তাঁরা ভারত, শ্রীলঙ্কা ও বাংলাদেশের নাগরিক।

ইরানি সংবাদমাধ্যমের খবরে বলা হয়েছে, চলমান তদন্তের অধীনে আটককৃতদের মধ্যে ট্যাংকারটির ক্যাপ্টেনও আছেন। আধা-সরকারি সংবাদ সংস্থা ফার্স জানিয়েছে, ক্রুরা ভারত, শ্রীলঙ্কা এবং বাংলাদেশের সাবেক নাগরিক। কর্তৃপক্ষ জানিয়েছে, ট্যাংকারটি একাধিক নিয়ম লঙ্ঘন করেছে, যার মধ্যে রয়েছে ‘থামার নির্দেশ অগ্রাহ্য করা, পালানোর চেষ্টা করা এবং নেভিগেশন ও কার্গোর নথিপত্র না থাকা।’

ব্যাপক ভর্তুকি এবং স্থানীয় মুদ্রার মান কমে যাওয়ার কারণে জ্বালানির দাম বিশ্বের সর্বনিম্নগুলোর মধ্যে অন্যতম। সেখানে স্থলপথে প্রতিবেশী দেশগুলোতে এবং জলপথে উপসাগরীয় আরব রাষ্ট্রগুলোতে ব্যাপক হারে জ্বালানি চোরাচালান ঠেকানোর লড়াই চলছে।

প্রসঙ্গত, বিশ্বের অন্য যে কোনো দেশের চেয়ে ইরানে গ্রাহক বা খুচরা পর্যায়ে জ্বালানি তেলের দাম সবচেয়ে কম। নাগরিকদের জন্য সরকারের এই বদান্যতার সুযোগে জ্বালানি তেল চুরি ও পাচারকারী বেশ কিছু অভ্যন্তরীণ ও আন্তর্জাতিক চক্র গড়ে উঠেছে দেশটিতে। এসব চক্র সস্তায় ইরানের তেল কিনে অবৈধভাবে বিশ্বের বিভিন্ন দেশে পাচার ও বিক্রি করে।

এর আগে গত মাসে পারস্য উপসাগর থেকেও এমন একটি ট্যাঙ্কার জাহাজ জব্দ করেছিল ইরানের কোস্টগার্ড বাহিনী।

গত বুধবার ভেনেজুয়েলার উপকূল থেকে একটি তেলবাহী ট্যাংকার জাহাজ জব্দ করে যুক্তরাষ্ট্রের নৌবাহিনী। মার্কিন কর্মকর্তারা বলেছিলেন জাহাজটি মূলত ইরান ও ভেনেজুয়েলার মধ্যে তেল পরিবহনের জন্য ব্যবহার করা হয়।

যুক্তরাষ্ট্র সেই জাহাজ জব্দ করার তিন দিনের মাথায় নিজেদের জলসীমায় চোরাই ডিজেলবাহী জাহাজ জব্দ করল ইরান।

প্রসঙ্গত, ইরানে ক্ষমতাসীন ইসলামপন্থি সরকার এবং দেশটির প্রতিরক্ষা বাহিনীর সঙ্গে বন্ধুত্বপূর্ণ যোগাযোগ থাকায় ২০২২ সালে ভেনেজুয়েলার ওপর নিষেধাজ্ঞা জারি করেছে যুক্তরাষ্ট্রের ট্রেজারি বিভাগ।

আবহাওয়া

উপকূল বাঁচাতে কৃষিজমি সংরক্ষণের কোনো বিকল্প নেই : সৈয়দা রিজওয়ানা হাসান

চোরাই তেলবাহী ট্যাঙ্কার জব্দ করল ইরান, বাংলাদেশিসহ ১৮ ক্রু আটক

প্রকাশের সময় : ০৫:২৭:০৬ অপরাহ্ন, শনিবার, ১৩ ডিসেম্বর ২০২৫

আন্তর্জাতিক ডেস্ক : 

ওমান উপসাগরে বিপুল পরিমাণ চোরাই ডিজেলবাহী একটি ট্যাংকার জাহাজ জব্দ করেছে ইরানের কোস্টগার্ড বাহিনী। সেই সঙ্গে জাহাজটির ১৮ জন ক্রুদের সবাইকে আটকও করা হয়েছে। আটক ক্রুদের মধ্যে বাংলাদেশ, ভারত ও শ্রীলঙ্কার নাগরিকরা আছেন বলে জানিয়েছে ইরানের রাষ্ট্রায়ত্ত বার্তাসংস্থা ফার্স নিউজ।

জাহাজটি আটক করা হয়েছে ইরানের দক্ষিণাঞ্চলীয় প্রদেশ হরমোজগানের উপকূলে। প্রাদেশিক প্রশাসনের এক কর্মকর্তার বরাত দিয়ে ফার্স নিউজের প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, শুক্রবার ওমান উপসাগরে ৬০ লাখ লিটার ডিজেলবাহী একটি ট্যাঙ্কার জাহাজ জব্দ করা হয়েছে। নেভিগেশন সিস্টেম নষ্ট হয়ে যাওয়ায় সাগরে ভাসছিল জাহাজটি। জাহাজে ১৮ জন ক্রু ছিলেন। তাদের সবাইকে আটক করা হয়েছে। আটক এই ক্রুদের মধ্যে ভারতীয়, বাংলাদেশী এবং শ্রীলঙ্কার নাগরিকরা আছেন।

ইরানি কর্তৃপক্ষ দক্ষিণ হুরমুজগান প্রদেশের প্রধান বিচারপতি মুজতবা গাহরেমানিকে উদ্ধৃত করে জানিয়েছে, মূল জ্বালানি চোরাচালান চক্র এবং চোরাকারবারিদের মোকাবিলার প্রচেষ্টার অংশ হিসেবে গত বৃহস্পতিবার ইরানের দক্ষিণাঞ্চলীয় জাসক বন্দর শহরের কাছাকাছি জলসীমায় ইরানের বিচার বিভাগের কর্মকর্তারা ট্যাংকারটি বাজেয়াপ্ত করেন।

মুজতবা গাহরেমানি বলেন, জাহাজটির প্রয়োজনীয় সামুদ্রিক নথিপত্র এবং জ্বালানি চালানের ‘বিল অব ল্যাডিং’ ছিল না। তিনি আরও জানান, জাহাজটি সব নেভিগেশন ও দিকনির্দেশনা সহায়ক ব্যবস্থা বন্ধ করে রেখেছিল। তিনি উল্লেখ করেন, ট্যাংকারটিতে ১৮ জন ক্রু ছিলেন এবং তাঁরা ভারত, শ্রীলঙ্কা ও বাংলাদেশের নাগরিক।

ইরানি সংবাদমাধ্যমের খবরে বলা হয়েছে, চলমান তদন্তের অধীনে আটককৃতদের মধ্যে ট্যাংকারটির ক্যাপ্টেনও আছেন। আধা-সরকারি সংবাদ সংস্থা ফার্স জানিয়েছে, ক্রুরা ভারত, শ্রীলঙ্কা এবং বাংলাদেশের সাবেক নাগরিক। কর্তৃপক্ষ জানিয়েছে, ট্যাংকারটি একাধিক নিয়ম লঙ্ঘন করেছে, যার মধ্যে রয়েছে ‘থামার নির্দেশ অগ্রাহ্য করা, পালানোর চেষ্টা করা এবং নেভিগেশন ও কার্গোর নথিপত্র না থাকা।’

ব্যাপক ভর্তুকি এবং স্থানীয় মুদ্রার মান কমে যাওয়ার কারণে জ্বালানির দাম বিশ্বের সর্বনিম্নগুলোর মধ্যে অন্যতম। সেখানে স্থলপথে প্রতিবেশী দেশগুলোতে এবং জলপথে উপসাগরীয় আরব রাষ্ট্রগুলোতে ব্যাপক হারে জ্বালানি চোরাচালান ঠেকানোর লড়াই চলছে।

প্রসঙ্গত, বিশ্বের অন্য যে কোনো দেশের চেয়ে ইরানে গ্রাহক বা খুচরা পর্যায়ে জ্বালানি তেলের দাম সবচেয়ে কম। নাগরিকদের জন্য সরকারের এই বদান্যতার সুযোগে জ্বালানি তেল চুরি ও পাচারকারী বেশ কিছু অভ্যন্তরীণ ও আন্তর্জাতিক চক্র গড়ে উঠেছে দেশটিতে। এসব চক্র সস্তায় ইরানের তেল কিনে অবৈধভাবে বিশ্বের বিভিন্ন দেশে পাচার ও বিক্রি করে।

এর আগে গত মাসে পারস্য উপসাগর থেকেও এমন একটি ট্যাঙ্কার জাহাজ জব্দ করেছিল ইরানের কোস্টগার্ড বাহিনী।

গত বুধবার ভেনেজুয়েলার উপকূল থেকে একটি তেলবাহী ট্যাংকার জাহাজ জব্দ করে যুক্তরাষ্ট্রের নৌবাহিনী। মার্কিন কর্মকর্তারা বলেছিলেন জাহাজটি মূলত ইরান ও ভেনেজুয়েলার মধ্যে তেল পরিবহনের জন্য ব্যবহার করা হয়।

যুক্তরাষ্ট্র সেই জাহাজ জব্দ করার তিন দিনের মাথায় নিজেদের জলসীমায় চোরাই ডিজেলবাহী জাহাজ জব্দ করল ইরান।

প্রসঙ্গত, ইরানে ক্ষমতাসীন ইসলামপন্থি সরকার এবং দেশটির প্রতিরক্ষা বাহিনীর সঙ্গে বন্ধুত্বপূর্ণ যোগাযোগ থাকায় ২০২২ সালে ভেনেজুয়েলার ওপর নিষেধাজ্ঞা জারি করেছে যুক্তরাষ্ট্রের ট্রেজারি বিভাগ।