চুয়াডাঙ্গা জেলা প্রতিনিধি :
চুয়াডাঙ্গার দামুড়হুদা উপজেলার গোবিন্দহুদা গ্রামে জমিজমা সংক্রান্ত বিরোধের জেরে রক্তক্ষয়ী সংঘর্ষের ঘটনা ঘটেছে। এ সংঘর্ষে জয়নুর (৫৩) নামে এক ব্যক্তি নিহত হয়েছেন। আরও তিনজন গুরুতর আহত অবস্থায় হাসপাতালে চিকিৎসাধীন আছেন।
মঙ্গলবার (১৪ অক্টোবর) সকাল ৯টার দিকে দামুড়হুদার সদর ইউনিয়নের গোবিন্দহুদা গ্রামে এই ঘটনা ঘটে।
নিহত জয়নুল গোবিন্দহুদা গ্রামের মৃত নূর বক্স মন্ডল ওরফে ঝড় মন্ডলের ছেলে।
আহতরা হলেন- জয়নুরের ভাই খাজা আহমেদ (৫৫), জহির হোসেন (৫১) ও খাজা আহমেদের ছেলে দিপু (১৭)। তারা চুয়াডাঙ্গা সদর হাসপাতালে চিকিৎসাধীন।
স্থানীয় সূত্রে জানা যায়, দীর্ঘদিন ধরে নূরুল হক পেশকার গ্রুপ ও মাসুদ বিল্লাহ মন্টু গ্রুপের মধ্যে জমি নিয়ে বিরোধ চলছিল। মঙ্গলবার সকালে নিজ নিজ জমিতে কাজ করার সময় কথা কাটাকাটির একপর্যায়ে দুই পক্ষের মধ্যে সংঘর্ষ বাধে। এসময় উভয়পক্ষের মধ্যে ধারালো অস্ত্র নিয়ে হামলা-পাল্টা হামলা হয়। এতে এলাকায় আতঙ্ক ছড়িয়ে পড়ে। সংঘর্ষে পেশকার পক্ষের হামলায় মন্টু গ্রুপের জয়নুরসহ কয়েকজন গুরুতর আহত হন। পরে স্থানীয়রা আহতদের উদ্ধার করে চুয়াডাঙ্গা সদর হাসপাতালে ভর্তি করেন। সেখানে চিকিৎসাধীন অবস্থায় জয়নুর মারা যান।
আহত জাহিদ মন্ডলের ছেলে কামাল মন্ডল বলেন, প্রায় ৩০ বছর ধরে পৈতৃক জমি নিয়ে নুরুল হক পেশকারের সঙ্গে আমাদের বিরোধ চলে আসছে। কোর্টের পেশকার হওয়ায় সে আমাদের বিভিন্ন মিথ্যা মামলা দিয়ে হয়রানি করে আসছিল। এক মাস আগে পেশকারের দখলে থাকা একটি জমি সেনাবাহিনীর সদস্যরা আমাদের দখলে দেয়। আজ (মঙ্গলবার) সকালে জয়নুল চাচাসহ আমরা কাতলমারি মাঠে ঝালের খেতে কাজ করছিলাম। এ সময় হঠাৎ ১৫-২০ জনকে নিয়ে নুরুল পেশকার আমাদের ওপর দা, হাঁসুয়া, শাবল দিয়ে হামলা চালায়। আমরা চারজন গুরুতর জখম হয়েছি। স্থানীয় বাসিন্দারা জখম অবস্থায় হাসপাতালে নিলে জয়নুল চাচা মারা যায়। খাজা চাচার অবস্থাও খারাপ। তাঁকে রাজশাহী রেফার করা হয়েছে।
হাসপাতালের জরুরি বিভাগের চিকিৎসক শাপলা খাতুন বলেন, চারজনকে আহত অবস্থায় হাসপাতালে আনা হয়। এর মধ্যে একজন চিকিৎসাধীন অবস্থায় মারা যান। আরেকজনের শারীরিক অবস্থা আশঙ্কাজনক হওয়ায় তাকে রাজশাহী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে পাঠানো হয়েছে।
দামুড়হুদা মডেল থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) হুমায়ুন কবির ঘটনার সত্যতা নিশ্চিত করে বলেন, জমি সংক্রান্ত বিরোধের জের ধরেই এ সংঘর্ষের ঘটনা ঘটেছে। সংঘর্ষে জয়নুর নামে এক ব্যক্তি নিহত হয়েছেন। বর্তমানে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আছে এবং আইনগত প্রক্রিয়া চলমান আছে।
ঘটনার পর থেকে জড়িতরা পলাতক রয়েছেন জানিয়ে তিনি বলেন, এ ঘটনায় মামলা দায়েরের প্রক্রিয়াধীন রয়েছে।