Dhaka বৃহস্পতিবার, ১৭ জুলাই ২০২৫, ১ শ্রাবণ ১৪৩২ বঙ্গাব্দ

চিলমারীতে ব্রীজ নির্মাণে কয়েক হাজার মানুষের দুঃখ ঘুচবে

নিজস্ব প্রতিবেদক : 

কুড়িগ্রামের চিলমারীতে একযুগেরও বেশি সময় আগে নির্মাণ হওয়া সরু ব্রিজটি স্থানীয়দের জন্য আর্শিবাদ হলেও কয়েকবছর থেকে মরণ ফাঁদ হয়ে দাঁড়িয়েছে। চলাচলের অনুপযোগী ব্রিজটিতে প্রায়ই দূর্ঘটনার খবর পাওয়া যেতো। বর্তমানে ওই অঞ্চলের মানুষের দুঃখ-দূর্দশা লাঘব ও নির্বিঘ্নে যানবাহন চলাচলের জন্য স্থানীয় সরকার প্রকৌশলী অধিদপ্তরের আওতায় ৬৮ মিটার দৈর্ঘ্যরে একটি ব্রিজ নির্মাণ হচ্ছে। এতে কয়েক গ্রামের প্রায় কয়েক হাজার মানুষের দুঃখ ঘুচবে। উপজেলার রমনা মডেল ইউনিয়নের পাত্রখাতা খরখরিয়া স্লুইচ গেট হতে মদিরা পাড়া মন্ডলেরহাট সড়কে কোটি টাকা ব্যয়ে নির্মাণ হচ্ছে এই ব্রিজটি।

খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, রমনা মডেল ইউনিয়নের পাত্রখাতার ওই অঞ্চলটিতে ৫টি সরকারী প্রাথমিক বিদ্যালয়, একটি মাদ্রাসা ও একটি কমিউনিটি ক্লিনিক রয়েছে। ব্রিজটি ব্যবহার করে ওই পথে প্রতিদিন পাত্রখাতা, ডাঙারচর, কারেন্ট বাজার, মাদারীপাড়াসহ বেশ কিছু এলাকার মানুষ চলাচল করে। তাদের সমস্যা প্রয়োজনীয় কোন কিছু ট্রাক কিংবা ট্রলিতে করে নেয়া যায় না সরু ব্রিজটির কারণে। প্রায় ব্রীজের পাশে প্রয়োজনীয় মালামাল রেখে পরবর্তীতে ঘোড়ার গাড়ি কিংবা ছোট ভ্যানে বা রিকশায় করে ব্রিজটি পাড় করতে হয়। এত করে যাতায়াত ভাড়া দ্বিগুণ বেড়ে যায়।

স্থানীয়রা বলেন, দীর্ঘদিনের চাওয়া এ অঞ্চলের মানুষের এই ব্রিজটি। বর্তমানে যে ব্রিজ রয়েছে সেটি সরু হওয়ার কারণে বড় ধরণের গাড়ি চলাচল করতে পারে না। জরুরী প্রয়োজনে দমকল বাহিনী বা এম্বুলেন্স এ পথে আসতে পারে না। এতে এ এলাকার মানুষ জরুরী সেবা থেকে বঞ্চিত থাকতে হত। তবে বর্তমানে যে ব্রিজটি নির্মাণ করা হচ্ছে এতে করে সবধরণের সুযোগ সুবিধা পাবেন স্থানীয়রা।

স্থানীয় সরকার প্রকৌশলী দপ্তর (এলজিইডি) জানায়, চলতি বছরে ব্রিজটির কাজ শুরু হয়েছে। ৬৮ মিটার দৈর্ঘের ব্রিজটির নির্মাণ ব্যয় ধরা হয়েছে ৩ কোটি ৪০ লাখ ৩১ হাজার টাকা। কাজটি যৌথভাবে করছেন কুড়িগ্রামের ঠিকাদারী প্রতিষ্ঠান মেসার্স বসুন্ধরা এন্ড মেসার্স খাইরুল এন্টারপ্রাইজ। সবকিছু ঠিকঠাক থাকলে এ বছরের জুনেই ব্রিজটির কাজ শেষ হবে।

 

দীর্ঘদিনের আক্ষেপ ঘুচবে এ অঞ্চলের মানুষের বলে জানান পাত্রখাতা রিয়াজুল জান্নাহ দাখিল মাদ্রাসার সুপার মো. আব্দুল আজিজ। তিনি বলেন, এলাকা মানুষ যাতায়াতের সমস্যা নিয়ে দীর্ঘদিন থেকে চলাচল করে আসছেন। এই ব্রিজটি দিয়ে প্রতিদিন কয়েকশ শিক্ষার্থী চলাচল করে। প্রায়ই শোনা যেতো কেনো না কোন দূর্ঘটনার কথা। এবার নতুন এই ব্রিজ হলে যাতায়াতের সমস্যা থাকবে না। এতে সদর এলাকার সাথে যোগাযোগ ব্যবস্থার উন্নতি হবে।

পাত্রখাতা এলাকার বীর মুক্তিযোদ্ধা আইনুল মোল্লা বলেন, প্রায় ১৪ /১৫ বছর আগে এখানকার মানুষের চলাচলের জন্য সরু ব্রিজটি নির্মান হয়। কিন্তু তখন থেকে চলাচল করা গেলেও ভারী বা বড় ধরণের গাড়ি এ ব্রিজ দিয়ে পাড় হতে পারে না। আর পাত্রখাতা এলাকার বেশির ভাগ মানুষই কৃষির সাথে জড়িত। চিলমারীর মানুষের শাক সব্জির বড় একটি যোগান দেন এ এলাকার মানুষ। ফলে সরু ব্রিজটি দিয়ে খুব সহজেই পণ্য বাজারে নেয়া যায় না। ছোট অটো বা ভ্যানে করে মালামাল বা শাক সব্জিসহ সব কিছু পরিবহন করতে হয়। এতে দেখা যায় তাদের পরিবহন ব্যয়ও বেড়ে যায়। তবে বর্তমান সরকার এই ব্রিজটি করে দেয়াতে আমরা খুবই খুশি এবং আনন্দিত।

নাসির উদ্দিন নামে অপর এক স্থানীয় ব্যক্তি বলেন, ভঙ্গুর অবস্থায় দাঁড়িয়ে থাকা চিকন ব্রিজটির কারণে আমরা দ্রুত কোনো সেবা পাইনা। দেখা যায় যদি এই এলাকায় কোথাও আগুন লাগে তাহলে ফায়ার সার্ভিসের গাড়ি যাওয়ার মতো রাস্তা নেই শুধুমাত্র ব্রিজটি চিকন হওয়ার কারণে। এখন নতুন যে ব্রিজট হচ্ছে তাতে আর এমন দূর্ভোগে পড়তে হবে না। উপজেলা প্রকৌশলী কর্মকর্তা মো. ফিরোজুর রহমান বলেন, ব্রিজটির কাজ দ্রুত শেষ করার চেষ্টা করছি এবং শতভাগ সঠিক ভাবে কাজ করে নেয়া হচ্ছে। অফিস থেকে প্রতিনিয়ত তদারকি করা হচ্ছে কাজটি।

জনপ্রিয় খবর

আবহাওয়া

সাবেক মন্ত্রী দস্তগীরের ৪০০ কোটি টাকার সম্পত্তি জব্দ

চিলমারীতে ব্রীজ নির্মাণে কয়েক হাজার মানুষের দুঃখ ঘুচবে

প্রকাশের সময় : ০৪:২৬:৩৯ অপরাহ্ন, মঙ্গলবার, ১১ এপ্রিল ২০২৩

নিজস্ব প্রতিবেদক : 

কুড়িগ্রামের চিলমারীতে একযুগেরও বেশি সময় আগে নির্মাণ হওয়া সরু ব্রিজটি স্থানীয়দের জন্য আর্শিবাদ হলেও কয়েকবছর থেকে মরণ ফাঁদ হয়ে দাঁড়িয়েছে। চলাচলের অনুপযোগী ব্রিজটিতে প্রায়ই দূর্ঘটনার খবর পাওয়া যেতো। বর্তমানে ওই অঞ্চলের মানুষের দুঃখ-দূর্দশা লাঘব ও নির্বিঘ্নে যানবাহন চলাচলের জন্য স্থানীয় সরকার প্রকৌশলী অধিদপ্তরের আওতায় ৬৮ মিটার দৈর্ঘ্যরে একটি ব্রিজ নির্মাণ হচ্ছে। এতে কয়েক গ্রামের প্রায় কয়েক হাজার মানুষের দুঃখ ঘুচবে। উপজেলার রমনা মডেল ইউনিয়নের পাত্রখাতা খরখরিয়া স্লুইচ গেট হতে মদিরা পাড়া মন্ডলেরহাট সড়কে কোটি টাকা ব্যয়ে নির্মাণ হচ্ছে এই ব্রিজটি।

খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, রমনা মডেল ইউনিয়নের পাত্রখাতার ওই অঞ্চলটিতে ৫টি সরকারী প্রাথমিক বিদ্যালয়, একটি মাদ্রাসা ও একটি কমিউনিটি ক্লিনিক রয়েছে। ব্রিজটি ব্যবহার করে ওই পথে প্রতিদিন পাত্রখাতা, ডাঙারচর, কারেন্ট বাজার, মাদারীপাড়াসহ বেশ কিছু এলাকার মানুষ চলাচল করে। তাদের সমস্যা প্রয়োজনীয় কোন কিছু ট্রাক কিংবা ট্রলিতে করে নেয়া যায় না সরু ব্রিজটির কারণে। প্রায় ব্রীজের পাশে প্রয়োজনীয় মালামাল রেখে পরবর্তীতে ঘোড়ার গাড়ি কিংবা ছোট ভ্যানে বা রিকশায় করে ব্রিজটি পাড় করতে হয়। এত করে যাতায়াত ভাড়া দ্বিগুণ বেড়ে যায়।

স্থানীয়রা বলেন, দীর্ঘদিনের চাওয়া এ অঞ্চলের মানুষের এই ব্রিজটি। বর্তমানে যে ব্রিজ রয়েছে সেটি সরু হওয়ার কারণে বড় ধরণের গাড়ি চলাচল করতে পারে না। জরুরী প্রয়োজনে দমকল বাহিনী বা এম্বুলেন্স এ পথে আসতে পারে না। এতে এ এলাকার মানুষ জরুরী সেবা থেকে বঞ্চিত থাকতে হত। তবে বর্তমানে যে ব্রিজটি নির্মাণ করা হচ্ছে এতে করে সবধরণের সুযোগ সুবিধা পাবেন স্থানীয়রা।

স্থানীয় সরকার প্রকৌশলী দপ্তর (এলজিইডি) জানায়, চলতি বছরে ব্রিজটির কাজ শুরু হয়েছে। ৬৮ মিটার দৈর্ঘের ব্রিজটির নির্মাণ ব্যয় ধরা হয়েছে ৩ কোটি ৪০ লাখ ৩১ হাজার টাকা। কাজটি যৌথভাবে করছেন কুড়িগ্রামের ঠিকাদারী প্রতিষ্ঠান মেসার্স বসুন্ধরা এন্ড মেসার্স খাইরুল এন্টারপ্রাইজ। সবকিছু ঠিকঠাক থাকলে এ বছরের জুনেই ব্রিজটির কাজ শেষ হবে।

 

দীর্ঘদিনের আক্ষেপ ঘুচবে এ অঞ্চলের মানুষের বলে জানান পাত্রখাতা রিয়াজুল জান্নাহ দাখিল মাদ্রাসার সুপার মো. আব্দুল আজিজ। তিনি বলেন, এলাকা মানুষ যাতায়াতের সমস্যা নিয়ে দীর্ঘদিন থেকে চলাচল করে আসছেন। এই ব্রিজটি দিয়ে প্রতিদিন কয়েকশ শিক্ষার্থী চলাচল করে। প্রায়ই শোনা যেতো কেনো না কোন দূর্ঘটনার কথা। এবার নতুন এই ব্রিজ হলে যাতায়াতের সমস্যা থাকবে না। এতে সদর এলাকার সাথে যোগাযোগ ব্যবস্থার উন্নতি হবে।

পাত্রখাতা এলাকার বীর মুক্তিযোদ্ধা আইনুল মোল্লা বলেন, প্রায় ১৪ /১৫ বছর আগে এখানকার মানুষের চলাচলের জন্য সরু ব্রিজটি নির্মান হয়। কিন্তু তখন থেকে চলাচল করা গেলেও ভারী বা বড় ধরণের গাড়ি এ ব্রিজ দিয়ে পাড় হতে পারে না। আর পাত্রখাতা এলাকার বেশির ভাগ মানুষই কৃষির সাথে জড়িত। চিলমারীর মানুষের শাক সব্জির বড় একটি যোগান দেন এ এলাকার মানুষ। ফলে সরু ব্রিজটি দিয়ে খুব সহজেই পণ্য বাজারে নেয়া যায় না। ছোট অটো বা ভ্যানে করে মালামাল বা শাক সব্জিসহ সব কিছু পরিবহন করতে হয়। এতে দেখা যায় তাদের পরিবহন ব্যয়ও বেড়ে যায়। তবে বর্তমান সরকার এই ব্রিজটি করে দেয়াতে আমরা খুবই খুশি এবং আনন্দিত।

নাসির উদ্দিন নামে অপর এক স্থানীয় ব্যক্তি বলেন, ভঙ্গুর অবস্থায় দাঁড়িয়ে থাকা চিকন ব্রিজটির কারণে আমরা দ্রুত কোনো সেবা পাইনা। দেখা যায় যদি এই এলাকায় কোথাও আগুন লাগে তাহলে ফায়ার সার্ভিসের গাড়ি যাওয়ার মতো রাস্তা নেই শুধুমাত্র ব্রিজটি চিকন হওয়ার কারণে। এখন নতুন যে ব্রিজট হচ্ছে তাতে আর এমন দূর্ভোগে পড়তে হবে না। উপজেলা প্রকৌশলী কর্মকর্তা মো. ফিরোজুর রহমান বলেন, ব্রিজটির কাজ দ্রুত শেষ করার চেষ্টা করছি এবং শতভাগ সঠিক ভাবে কাজ করে নেয়া হচ্ছে। অফিস থেকে প্রতিনিয়ত তদারকি করা হচ্ছে কাজটি।