নিজস্ব প্রতিবেদক :
ডিএনসিসির মেয়র মো. আতিকুল ইসলাম বলেন, চিপ হিট অফিসার বুশরা আফরিন ঢাকা উত্তর সিটি করপোরেশনের কেউ না। একই সঙ্গে ডিএনসিসির অফিসে তার জন্য নির্ধারিত বসার কোনো স্থানও নেই।
শনিবার (২৭ এপ্রিল) রাজধানীর আগারগাঁও বাংলাদেশ বেতারের সামনের সড়কে ‘বায়ু দূষণ রোধ ও তীব্র তাপদাহে শহরকে ঠান্ডা রাখতে ডিএনসিসি’র ওয়াটার স্প্রে (পানি ছিটানো) কার্যক্রম পরিদর্শন’ শেষে সাংবাদিকদের এক প্রশ্নের জবাবে তিনি এসব কথা বলেন।
চিপ হিট অফিসার বুশরা আফরিনকে নিয়োগ ও বেতনভাতা প্রসঙ্গে এক প্রশ্নের জবাবে আতিক বলেন, আমি দেখছি কয়েকদিন যাবত আমাদের চিফ হিট অফিসারকে নিয়ে অনেকে বলছেন সিটি করপোরেশন থেকে বেতন বেতন পাচ্ছেন। বলে রাথা ভালো, সিটি করপোরেশন থেকে একটি টাকাও সে পায় না।
মেয়র বলেন, চিফ হিট অফিসার কিন্তু একজন। তিনি আমাদের সাজেশন দেবেন। কাজ কিন্তু আমাদের সবাইকে করতে হবে। হিট অফিসার কিন্তু কোনো কাজ করবেন না। বলে রাখা ভালো, হিট অফিসার নিয়োগ পেয়েছেন যুক্তরাষ্ট্রভিত্তিক একটি কোম্পানি অ্যাড্রিয়েন আরশট-রকফেলার ফাউন্ডেশন রেসিলিয়েন্স সেন্টারের (আরশট-রক) মাধ্যমে। সারা বিশ্বে ৭ জন চিফ হিট অফিসার তারা নিয়োগ করেছে। চিফ হিট অফিসার আমাদের পরামর্শ দেবেন। তিনি কিন্তু কোনোদিন কাজ করবেন না।
মেয়র বলেন, আমি আগেও বলেছি, সিটি করপোরেশনে তার (হিট অফিসার) কোনো বসার ব্যবস্থাও নেই। তার কোনো চেয়ারও কিন্তু নেই। এটা সম্পূর্ণ ইন্টারন্যাশনাল মাল্টিন্যাশনাল কোম্পানি যারা আছে তারা শুধু বাংলাদেশে না, তারা বিশ্বের ৭টি দেশে নারী হিট অফিসার নিয়োগ করেছে। আমি তাদের জিজ্ঞেস করেছিলাম, মহিলা কেন নিয়োগ করা হচ্ছে? তারা বলেছে, গরমে নারীদের অনুভবটা বেশি হয়। এ জন্যই তারা নারী হিট অফিসার নিয়োগ করেছে।
অনুষ্ঠানে তিনি আরো বলেন, প্রায় এক মাস ধরে ঢাকাসহ সারাদেশে তীব্র তাপপ্রবাহ বিরাজ করছে। এ তাপপ্রবাহ থেকে নাগরিকদের কিছুটা স্বস্তি দিতে ‘কৃত্রিম বৃষ্টির’ ব্যবস্থা করার পরামর্শ দিয়েছেন ডিএনসিসিতে নিযুক্ত যুক্তরাষ্ট্রভিত্তিক গবেষণাপ্রতিষ্ঠান অ্যাড্রিয়েন আরশট-রকফেলার ফাউন্ডেশন রেজিলিয়েন্স সেন্টারের চিফ হিট অফিসার বুশরা আফরিন। তারই অংশ হিসেবে ডিএনসিসির দুইটি স্প্রে ক্যাননের মাধ্যমে ‘কৃত্রিম বৃষ্টির’ ব্যবস্থা করা হয়েছে।
মেয়র বলেন, দুটি গাড়ি দিয়ে প্রতিদিন চার লাখ লিটার পানি আমরা ছিটাবো। বেলা ১১টা থেকে বিকেল ৪টা পর্যন্ত নগরের গুরুত্বপূর্ণ সড়কে পানি দেওয়া হবে। তবে গাড়িগুলো অলিতে গলিতে যেতে পারবে না, মেইন রোডে থাকবে। আর সড়কে পানি ছিটানোর জন্য ১০টি ব্রাউজারের ব্যবস্থা করা হয়েছে। একেক ব্রাউজারে ১৫ হাজার লিটার করে পানি ধরে।
আগামী সাত দিনের মধ্যে উত্তর সিটির বিভিন্ন পার্কে ব্যবস্থা করা হবে জানিয়ে মেয়র আতিকুল ইসলাম বলেন, আমাদের পার্কগুলোতে ‘কৃত্রিম বৃষ্টির’ ব্যবস্থা করার জন্য সংশ্লিষ্টদের বলেছি। আমরা আশা করি আগামী সাত দিনের মধ্যে পার্কগুলোতে কৃত্রিম পানির ব্যবস্থা করতে পারবো। এছাড়া আমাদের প্রতিটি ওয়ার্ডে তিনটি করে বিশুদ্ধ পানির ভ্যান থাকবে। ছোট ছোট ভ্যানগুলো নিয়ে অলিগলিতে পানির ব্যবস্থা করা হয়েছে। নগরের মানুষ ভ্যান থেকে বিশুদ্ধ পানি সংগ্রহ করতে পারবেন। এগুলোও আমাদের চিফ হিট অফিসারের পরামর্শে করা হয়েছে।
নগরের দোকানদার এবং শপিংমলগুলোর সামনে বিশুদ্ধ পানির ব্যবস্থা করতে অবশিষ্টদের আহ্বান জানিয়ে মেয়র আতিকুল ইসলাম বলেন, প্রতিটি দোকান বা শপিংমলে পানির ব্যবস্থা রাখুন। যাতে নগরবাসী তৃষ্ণা মেটাতে পারে।
গত বছর নগরের বিভিন্ন এলাকায় ৮০ হাজার গাছ লাগানো হয়েছে জানিয়ে আতিকুল ল ইসলাম বলেন, গত বছর আমরা চিফ হিট অফিসারের পরামর্শে নগরের বিভিন্ন এলাকায় ৮০ হাজার গাছ লাগিয়েছি। এবার আমরা আরও ১ লাখ ২০ হাজার গাছ লাগানোর প্রস্তুতি নিচ্ছি। বর্ষা মৌসুম শুরু হওয়ার পরপরই আমরা এ কার্যক্রম শুরু করবো। পাশাপাশি এসব কাজ রক্ষণাবেক্ষণে আমরা বেশ গুরুত্ব দিচ্ছি। যে এলাকায় গাছগুলো লাগানো হচ্ছে সংশ্লিষ্ট কমিউনিটিকে আমরা যুক্ত করছি।
এর আগে, ডিএনসিসির দুটি স্প্রে ক্যানন এবং ১০টি ব্রাউজারের মাধ্যমে প্রতিদিন সকাল ১০টা থেকে বিকেল ৪ টা পর্যন্ত পানি ছিটানো হয়। প্রতিটি গাড়িতে ১৫ হাজার লিটার পানি ধরে এবং একটানা ৫ ঘণ্টা স্প্রে করা পরিদর্শন করেন মেয়র আতিকুল ইসলাম। এছাড়াও পথচারীদের পানি পান করার জন্য সড়কে নামানো হয়েছে ২৫০টি ভ্যানগাড়ি।
নিজস্ব প্রতিবেদক 






















