Dhaka বৃহস্পতিবার, ১১ ডিসেম্বর ২০২৫, ২৬ অগ্রহায়ণ ১৪৩২ বঙ্গাব্দ
ব্রিফিংয়ে ডা. জাহিদ

চিকিৎসায় সাড়া দিচ্ছেন খালেদা জিয়া

নিজস্ব প্রতিবেদক :

এভারকেয়ার হাসপাতালে চিকিৎসাধীন বিএনপি চেয়ারপারসন বেগম খালেদা জিয়া চিকিৎসা গ্রহণ করতে পারছেন বলে জানিয়েছেন তার ব্যক্তিগত চিকিৎসক ও স্থায়ী কমিটি সদস্য ডা. এজেডএম জাহিদ হোসেন। তিনি জানান, চিকিৎসায় সাড়াও দিচ্ছেন খালেদা জিয়া।

বুধবার (১০ ডিসেম্বর) রাতে রাজধানীর এভারকেয়ার হাসপাতাল গেটে খালেদা জিয়ার চিকিৎসা সংক্রান্ত বিষয়ে ব্রিফিংয়ে এক প্রশ্নের জবাবে তিনি এসব বলেন।

ডা. জাহিদ বলেন, আমরা আশ্বস্ত করতে চাই খালেদা জিয়াকে যে চিকিৎসা দেওয়া হচ্ছে, তিনি আগের মতোই সেটি গ্রহণ করতে পারছেন এবং তিনি সত্যিকার অর্থে রেসপন্স করছেন। তার চিকিৎসার জন্য গঠিত মেডিকেল বোর্ড সার্বক্ষণিকভাবে চেষ্টা করে যাচ্ছেন যেন সর্বোত্তম সেবা নিশ্চিত করা যায়। পৃথিবীর মধ্যে সবচেয়ে ভালো চিকিৎসা যেন তিনি (খালেদা জিয়া) পেতে পারেন, সেজন্য চিকিৎসকদের পরামর্শক্রমে চিকিৎসা অব্যাহত রয়েছে।

তিনি বলেন, আমরা খুবই আশাবাদী, মেডিকেল বোর্ডের সদস্যরাও আশাবাদী যে তার সুচিকিৎসা নিশ্চিত করা যাবে এবং পরবর্তীতে প্রয়োজনে তাকে যে কোনো সময় দেশের বাইরেও নিয়ে যাওয়া হতে পারে।

সাংবাদিকদের এক প্রশ্নের উত্তরে বিএনপির স্থায়ী কমিটির এই সদস্য বলেন, দেশের মানুষের খালেদা জিয়ার প্রতি ভালোবাসা, উৎকণ্ঠা এবং শ্রদ্ধাবোধ রয়েছে।

দেশের মানুষ বেগম খালেদা জিয়ার সর্বশেষ শারীরিক অবস্থা জানতে চায়, সেই কারণেই আমরা এসেছি। তবে মনে রাখতে হবে, তিনি একজন রোগী; তার কিছু নিজস্ব ইথিক্যাল রাইটস বা নৈতিক অধিকার রয়েছে। আমি ইচ্ছা করলেই চিকিৎসক হিসেবে সব কিছু প্রকাশ্যে বলে দিতে পারি না, মেডিক্যাল সায়েন্স তা অনুমতি দেয় না।’

তিনি আরো বলেন, “আপনাদের আশ্বস্ত করতে চাই, তাকে (খালেদা জিয়া) যে চিকিৎসা দেওয়া হচ্ছে, তিনি তা আগের মতোই গ্রহণ করতে পারছেন। মেডিক্যাল সায়েন্সের ভাষায় বলতে গেলে, ‘শি ক্যান কন্টিনিউ অন মেনটেইন হার ট্রিটমেন্ট’ অর্থাৎ তিনি তার চিকিৎসা অব্যাহত রাখতে বা স্থিতিশীলভাবে চালিয়ে যেতে পারছেন।

বিএনপির চেয়ারপারসনের স্বাস্থ্যের বিষয়ে কোনো গুজবে কান না দেওয়ার আহ্বান জানান জাহিদ হোসেন।

চিকিৎসার জন্য খালেদা জিয়াকে বিদেশে নিতে না পারার কারণ হিসেবে জাহিদ হোসেন বলেন, ‘একদিকে মেডিকেল অ্যাম্বুলেন্সের (এয়ার অ্যাম্বুলেন্স) কারিগরি ত্রুটি, অন্যদিকে দেশনেত্রী বেগম খালেদা জিয়ার স্বাস্থ্যের অবস্থা ওই সময়ের জন্য ফ্লাই করার উপযুক্ত না থাকার কারণে সেই সময় আমরা উনাকে (খালেদা জিয়া) দেশের বাইরে স্থানান্তর করতে পারিনি।’

জাহিদ হোসেন বলেন, ‘আইসিইউতে উনি (খালেদা জিয়া) চিকিৎসাধীন আছেন। একটি সংকটাপন্ন মানুষের জন্য যেটি প্রয়োজন, সেই চিকিৎসার মধ্যেই উনি আছেন।’

দেশ-বিদেশের চিকিৎসকদের পরামর্শে খালেদা জিয়ার চিকিৎসা অব্যাহত রয়েছে উল্লেখ করে জাহিদ হোসেন আরও বলেন, ‘আমরা খুবই আশাবাদী, মেডিকেল বোর্ডের সম্মানিত সদস্যরাও আশাবাদী যে উনার (খালেদা জিয়া) সুচিকিৎসা নিশ্চিত করা যাবে এবং পরবর্তী সময়ে হয়তো উনাকে যেকোনো সময়ে প্রয়োজনে দেশের বাইরেও নিয়ে যাওয়া হতে পারে। এখনো এই জিনিসটি এই পর্যায়েই আপনাদের মাধ্যমে বলার সময় আসে নাই।’

বিএনপির চেয়ারপারসনের সুস্থতা কামনায় দোয়া করার আহ্বান জানিয়ে জাহিদ হোসেন বলেন, ‘যে শারীরিক সংকটময় অবস্থা উনি অতিক্রম করছেন, সেটি যাতে উনি সফলভাবে আল্লাহর রহমতে অতিক্রম করতে পারেন, সে জন্য আমরা সবার কাছে সহযোগিতা চাই।’

দলের ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমানের সার্বক্ষণিক তত্ত্বাবধানে মেডিকেল বোর্ডের চিকিৎসকেরা দায়িত্বশীলতার সঙ্গে খালেদা জিয়ার চিকিৎসা চালিয়ে যাচ্ছেন বলেও জানান জাহিদ হোসেন।

জাহিদ হোসেন বলেন, ‘উনার জন্য সর্বোত্তম সেবা নিশ্চিত করতে মেডিকেল বোর্ড কাজ করছে। পৃথিবীর মধ্য ভালো চিকিৎসা যাতে উনি পেতে পারেন, সে জন্য এখানে রেখেও দেশি-বিদেশি চিকিৎসকদের সমন্বয়ে উনার চিকিৎসা অব্যাহত রয়েছে। উনার চিকিৎসা নিশ্চিত করার বিষয়ে খুবই আশাবাদী মেডিকেল বোর্ডের চিকিৎসকেরা। এরপরেও মহান আল্লাহ রাব্বুল আলামিন উনার জন্য কী ধরনের ব্যবস্থা রেখেছেন, সেটি আমাদের ধরাছোঁয়ার মধ্যে নেই।’

খালেদা জিয়া ১৭ দিন ধরে রাজধানীর এভারকেয়ার হাসপাতালে চিকিৎসাধীন আছেন। তাঁর সংকটাপন্ন শারীরিক অবস্থা নিয়ে দেশের মানুষের মধ্যে উদ্বেগ রয়েছে।

অধ্যাপক শাহাবুদ্দিন তালুকদারের নেতৃত্বে দেশি-বিদেশি বিশেষজ্ঞদের সমন্বয়ে গঠিত মেডিকেল বোর্ডের অধীন খালেদা জিয়ার চিকিৎসা কার্যক্রম চলছে। তাঁর নানা শারীরিক জটিলতার মধ্যে ডায়াবেটিস, কিডনি, হৃদ্‌যন্ত্র ও ফুসফুসের সমস্যা ওঠানামা করছে বলে মেডিকেল বোর্ডের একটি সূত্র জানিয়েছে। তিনি জানিয়েছেন, কিডনির সমস্যার কারণে খালেদা জিয়ার শরীরে হিমোগ্লোবিন কমে গিয়েছিল, সেটি বেড়েছে। কিডনির কার্যকারিতা সামান্য বৃদ্ধি পেয়েছে, ফুসফুসেরও উন্নতি আছে। তবে তিনি এখনো আশঙ্কামুক্ত নন। এ ছাড়া নিয়মিত চিকিৎসার অংশ হিসেবে তাঁর কিছু শারীরিক পরীক্ষা-নিরীক্ষা নিয়মিত করা হচ্ছে। খালেদা জিয়ার স্বাস্থ্যের এমন পরিস্থিতিতে তাঁকে উন্নত চিকিৎসার জন্য বিদেশে নেওয়ার তারিখ পেছানো হয়।

 

 

 

জনপ্রিয় খবর

আবহাওয়া

ব্রিফিংয়ে ডা. জাহিদ

চিকিৎসায় সাড়া দিচ্ছেন খালেদা জিয়া

প্রকাশের সময় : ১০:৫৯:৫৭ অপরাহ্ন, বুধবার, ১০ ডিসেম্বর ২০২৫

নিজস্ব প্রতিবেদক :

এভারকেয়ার হাসপাতালে চিকিৎসাধীন বিএনপি চেয়ারপারসন বেগম খালেদা জিয়া চিকিৎসা গ্রহণ করতে পারছেন বলে জানিয়েছেন তার ব্যক্তিগত চিকিৎসক ও স্থায়ী কমিটি সদস্য ডা. এজেডএম জাহিদ হোসেন। তিনি জানান, চিকিৎসায় সাড়াও দিচ্ছেন খালেদা জিয়া।

বুধবার (১০ ডিসেম্বর) রাতে রাজধানীর এভারকেয়ার হাসপাতাল গেটে খালেদা জিয়ার চিকিৎসা সংক্রান্ত বিষয়ে ব্রিফিংয়ে এক প্রশ্নের জবাবে তিনি এসব বলেন।

ডা. জাহিদ বলেন, আমরা আশ্বস্ত করতে চাই খালেদা জিয়াকে যে চিকিৎসা দেওয়া হচ্ছে, তিনি আগের মতোই সেটি গ্রহণ করতে পারছেন এবং তিনি সত্যিকার অর্থে রেসপন্স করছেন। তার চিকিৎসার জন্য গঠিত মেডিকেল বোর্ড সার্বক্ষণিকভাবে চেষ্টা করে যাচ্ছেন যেন সর্বোত্তম সেবা নিশ্চিত করা যায়। পৃথিবীর মধ্যে সবচেয়ে ভালো চিকিৎসা যেন তিনি (খালেদা জিয়া) পেতে পারেন, সেজন্য চিকিৎসকদের পরামর্শক্রমে চিকিৎসা অব্যাহত রয়েছে।

তিনি বলেন, আমরা খুবই আশাবাদী, মেডিকেল বোর্ডের সদস্যরাও আশাবাদী যে তার সুচিকিৎসা নিশ্চিত করা যাবে এবং পরবর্তীতে প্রয়োজনে তাকে যে কোনো সময় দেশের বাইরেও নিয়ে যাওয়া হতে পারে।

সাংবাদিকদের এক প্রশ্নের উত্তরে বিএনপির স্থায়ী কমিটির এই সদস্য বলেন, দেশের মানুষের খালেদা জিয়ার প্রতি ভালোবাসা, উৎকণ্ঠা এবং শ্রদ্ধাবোধ রয়েছে।

দেশের মানুষ বেগম খালেদা জিয়ার সর্বশেষ শারীরিক অবস্থা জানতে চায়, সেই কারণেই আমরা এসেছি। তবে মনে রাখতে হবে, তিনি একজন রোগী; তার কিছু নিজস্ব ইথিক্যাল রাইটস বা নৈতিক অধিকার রয়েছে। আমি ইচ্ছা করলেই চিকিৎসক হিসেবে সব কিছু প্রকাশ্যে বলে দিতে পারি না, মেডিক্যাল সায়েন্স তা অনুমতি দেয় না।’

তিনি আরো বলেন, “আপনাদের আশ্বস্ত করতে চাই, তাকে (খালেদা জিয়া) যে চিকিৎসা দেওয়া হচ্ছে, তিনি তা আগের মতোই গ্রহণ করতে পারছেন। মেডিক্যাল সায়েন্সের ভাষায় বলতে গেলে, ‘শি ক্যান কন্টিনিউ অন মেনটেইন হার ট্রিটমেন্ট’ অর্থাৎ তিনি তার চিকিৎসা অব্যাহত রাখতে বা স্থিতিশীলভাবে চালিয়ে যেতে পারছেন।

বিএনপির চেয়ারপারসনের স্বাস্থ্যের বিষয়ে কোনো গুজবে কান না দেওয়ার আহ্বান জানান জাহিদ হোসেন।

চিকিৎসার জন্য খালেদা জিয়াকে বিদেশে নিতে না পারার কারণ হিসেবে জাহিদ হোসেন বলেন, ‘একদিকে মেডিকেল অ্যাম্বুলেন্সের (এয়ার অ্যাম্বুলেন্স) কারিগরি ত্রুটি, অন্যদিকে দেশনেত্রী বেগম খালেদা জিয়ার স্বাস্থ্যের অবস্থা ওই সময়ের জন্য ফ্লাই করার উপযুক্ত না থাকার কারণে সেই সময় আমরা উনাকে (খালেদা জিয়া) দেশের বাইরে স্থানান্তর করতে পারিনি।’

জাহিদ হোসেন বলেন, ‘আইসিইউতে উনি (খালেদা জিয়া) চিকিৎসাধীন আছেন। একটি সংকটাপন্ন মানুষের জন্য যেটি প্রয়োজন, সেই চিকিৎসার মধ্যেই উনি আছেন।’

দেশ-বিদেশের চিকিৎসকদের পরামর্শে খালেদা জিয়ার চিকিৎসা অব্যাহত রয়েছে উল্লেখ করে জাহিদ হোসেন আরও বলেন, ‘আমরা খুবই আশাবাদী, মেডিকেল বোর্ডের সম্মানিত সদস্যরাও আশাবাদী যে উনার (খালেদা জিয়া) সুচিকিৎসা নিশ্চিত করা যাবে এবং পরবর্তী সময়ে হয়তো উনাকে যেকোনো সময়ে প্রয়োজনে দেশের বাইরেও নিয়ে যাওয়া হতে পারে। এখনো এই জিনিসটি এই পর্যায়েই আপনাদের মাধ্যমে বলার সময় আসে নাই।’

বিএনপির চেয়ারপারসনের সুস্থতা কামনায় দোয়া করার আহ্বান জানিয়ে জাহিদ হোসেন বলেন, ‘যে শারীরিক সংকটময় অবস্থা উনি অতিক্রম করছেন, সেটি যাতে উনি সফলভাবে আল্লাহর রহমতে অতিক্রম করতে পারেন, সে জন্য আমরা সবার কাছে সহযোগিতা চাই।’

দলের ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমানের সার্বক্ষণিক তত্ত্বাবধানে মেডিকেল বোর্ডের চিকিৎসকেরা দায়িত্বশীলতার সঙ্গে খালেদা জিয়ার চিকিৎসা চালিয়ে যাচ্ছেন বলেও জানান জাহিদ হোসেন।

জাহিদ হোসেন বলেন, ‘উনার জন্য সর্বোত্তম সেবা নিশ্চিত করতে মেডিকেল বোর্ড কাজ করছে। পৃথিবীর মধ্য ভালো চিকিৎসা যাতে উনি পেতে পারেন, সে জন্য এখানে রেখেও দেশি-বিদেশি চিকিৎসকদের সমন্বয়ে উনার চিকিৎসা অব্যাহত রয়েছে। উনার চিকিৎসা নিশ্চিত করার বিষয়ে খুবই আশাবাদী মেডিকেল বোর্ডের চিকিৎসকেরা। এরপরেও মহান আল্লাহ রাব্বুল আলামিন উনার জন্য কী ধরনের ব্যবস্থা রেখেছেন, সেটি আমাদের ধরাছোঁয়ার মধ্যে নেই।’

খালেদা জিয়া ১৭ দিন ধরে রাজধানীর এভারকেয়ার হাসপাতালে চিকিৎসাধীন আছেন। তাঁর সংকটাপন্ন শারীরিক অবস্থা নিয়ে দেশের মানুষের মধ্যে উদ্বেগ রয়েছে।

অধ্যাপক শাহাবুদ্দিন তালুকদারের নেতৃত্বে দেশি-বিদেশি বিশেষজ্ঞদের সমন্বয়ে গঠিত মেডিকেল বোর্ডের অধীন খালেদা জিয়ার চিকিৎসা কার্যক্রম চলছে। তাঁর নানা শারীরিক জটিলতার মধ্যে ডায়াবেটিস, কিডনি, হৃদ্‌যন্ত্র ও ফুসফুসের সমস্যা ওঠানামা করছে বলে মেডিকেল বোর্ডের একটি সূত্র জানিয়েছে। তিনি জানিয়েছেন, কিডনির সমস্যার কারণে খালেদা জিয়ার শরীরে হিমোগ্লোবিন কমে গিয়েছিল, সেটি বেড়েছে। কিডনির কার্যকারিতা সামান্য বৃদ্ধি পেয়েছে, ফুসফুসেরও উন্নতি আছে। তবে তিনি এখনো আশঙ্কামুক্ত নন। এ ছাড়া নিয়মিত চিকিৎসার অংশ হিসেবে তাঁর কিছু শারীরিক পরীক্ষা-নিরীক্ষা নিয়মিত করা হচ্ছে। খালেদা জিয়ার স্বাস্থ্যের এমন পরিস্থিতিতে তাঁকে উন্নত চিকিৎসার জন্য বিদেশে নেওয়ার তারিখ পেছানো হয়।