Dhaka শনিবার, ০৮ নভেম্বর ২০২৫, ২৪ কার্তিক ১৪৩২ বঙ্গাব্দ

চালু হলো টিটিপাড়ায় নির্মিত ছয় লেনের রেলওয়ে আন্ডারপাস

নিজস্ব প্রতিবেদক : 

চালু হলো টিটিপাড়ায় নির্মিত ছয় লেনের রেলওয়ে আন্ডারপাস। জনসাধারণের জন্য খুলে দেয়ার পর শুরু হয়েছে যান চলাচল। ফলে মানুষের দীর্ঘদিনের চরম দুর্ভোগ আর ট্রেন এলেই রেল ক্রসিংয়ে ঘণ্টার পর ঘণ্টা সময় নষ্টের অবসান হলো।

শনিবার (৮ নভেম্বর) সকালে আান্ডারপাসটি উদ্বোধন করেন প্রধান উপদেষ্টার প্রতিরক্ষা এবং জাতীয় সংহতি উন্নয়ন বিষয়ক বিশেষ সহকারী অবসরপ্রাপ্ত লেফটেন্যান্ট জেনারেল আব্দুল হাফিজ। এ সময় উপস্থিত ছিলেন আরেক বিশেষ সহকারী শেখ মইন উদ্দিন।

একপাশে অতিশী দীপঙ্কর রোড, আরেক পাশে কমলাপুর আউটার সার্কুলার রোড— মাঝখানে এই টিটিপাড়ার লেভেল ক্রসিং। সড়কপথের যানবাহন ও ট্রেন চলাচল নির্বিঘ্ন করতে লেভেল ক্রসিংটিকে আন্ডারপাসে রূপান্তর করা হয়। এ কারণে দীর্ঘদিন বন্ধ ছিল রাজধানীর ব্যস্ত এই সংযোগপথ। ফলে অফিসগামী, শিক্ষার্থী এবং শহরের এক প্রান্ত থেকে অন্য প্রান্তে যাতায়াতকারী লাখো মানুষকে ভোগান্তি পোহাতে হয়েছে।

পদ্মা সেতু রেল সংযোগ প্রকল্পের আওতায় প্রায় দুই বছরের কর্মযজ্ঞ শেষে তৈরি হয়েছে এই আন্ডারপাস। নিচ দিয়ে ছয় লেনের সড়কের মধ্যে চার লেন থাকবে যান্ত্রিক যানবাহনের জন্য। পাঁচ মিটার উচ্চতার গাড়ি নির্বিঘ্নে চলাচল করতে পারবে এই পথে। দুই পাশে রিকশা ও সাইকেলের জন্য আলাদা লেনের পাশাপাশি পথচারীদের জন্য রাখা হয়েছে প্রশস্ত ফুটপাত।

প্যাডেলচালিত যানবাহনের জন্য ঢাল কম রাখতে দুই পাশের লেন মাঝের চার লেনের তুলনায় কিছুটা উঁচু করা হয়েছে। এখন ওপরে ট্রেন আর নিচে অন্যান্য যানবাহনের চলাচল হবে বাধাহীনভাবে। রোড মার্কিং, মাঝের ডিভাইডারে ফুলের গাছ, সড়কের দুই পাশে ল্যাম্পপোস্ট— সব মিলিয়ে আন্ডারপাসটি এখন চোখে পড়ার মতো সৌন্দর্য পেয়েছে।

পদ্মা সেতু রেল সংযোগ প্রকল্পের ব্যবস্থাপক ব্রিগেডিয়ার জেনারেল আহমেদ জামিউল ইসলাম বলেন, আমাদের সমস্যা ছিল স্পেস লিমিটেশন। ডান পাশে কমলাপুর আইসিটি কর্তৃপক্ষের কিছু জায়গা আমরা পেয়েছিলাম, কিন্তু এর বাইরে আর জায়গা উন্মুক্ত করা সম্ভব হয়নি। ফলে এখানে কোনো বাইপাস নির্মাণ করাও সম্ভব ছিল না। এছাড়া আন্ডারপাসের গভীরতাও অনেক বেশি। তাই সামান্য বাইপাস রোড করলেও সেটা জনসাধারণের জন্য ঝুঁকিপূর্ণ হয়ে যেত।

তিনি আরও বলেন, স্থাপনাটির সঠিক রক্ষণাবেক্ষণের দিকেও গুরুত্ব দিতে হবে। রক্ষণাবেক্ষণ শুধু একক কোনো গোষ্ঠীর নয়, বরং একাধিক স্টেকহোল্ডারকে একসঙ্গে কাজ করতে হবে। বিশেষ করে পাম্প হাউসটি যাতে দুর্যোগকালেও সঠিকভাবে কাজ করে তা নিশ্চিত করতে রেলওয়েকে দায়িত্ব নিতে হবে।

মূল সড়ক থেকে ১১ মিটার নিচ দিয়ে তৈরি এই আন্ডারপাসে বর্ষাকালে যেন পানি না জমে— এমন আধুনিক নিষ্কাশন ব্যবস্থা রাখা হয়েছে।

প্রকল্পের প্রকৌশলী নীলাকর বিশ্বাস বলেন, টিটিপাড়া আন্ডারপাসের জন্য আলাদা একটি ‘রেইনওয়াটার পাম্প ওয়েল’ করা হয়েছে। আন্ডারপাসের সব পানি স্বয়ংক্রিয়ভাবে ওই ওয়েলে যাবে, যেখানে ৭৫ কিলোওয়াটের চারটি পাম্প রয়েছে। পানির স্তর অনুযায়ী পাম্পগুলো স্বয়ংক্রিয়ভাবে চালু হয়ে পানি পার্শ্ববর্তী সিটি কর্পোরেশনের ক্যানেলে পাঠিয়ে দেবে।

বিষয়টি নিয়ে জানতে চাইলে বাংলাদেশ রেলওয়ের মহাপরিচালক মো. আফজাল হোসেন বলেন, আজকে আমাদের উপদেষ্টা মহোদয়ের বিশেষ সহকারী আসছেন। উনি দেখে গেছেন এবং বলেছেন যে এটি খুলে দেওয়ার জন্য। এটার জন্য কোনো আনুষ্ঠানিকতার প্রয়োজন নেই বলে উনি জানিয়েছেন। এটি ইতোমধ্যে খুলে দেওয়া হয়েছে। সকাল ১০টা থেকে সর্বসাধারণের জন্য উন্মুক্ত করা হয়েছে।

আবহাওয়া

চালু হলো টিটিপাড়ায় নির্মিত ছয় লেনের রেলওয়ে আন্ডারপাস

প্রকাশের সময় : ১২:৪৩:৩০ অপরাহ্ন, শনিবার, ৮ নভেম্বর ২০২৫

নিজস্ব প্রতিবেদক : 

চালু হলো টিটিপাড়ায় নির্মিত ছয় লেনের রেলওয়ে আন্ডারপাস। জনসাধারণের জন্য খুলে দেয়ার পর শুরু হয়েছে যান চলাচল। ফলে মানুষের দীর্ঘদিনের চরম দুর্ভোগ আর ট্রেন এলেই রেল ক্রসিংয়ে ঘণ্টার পর ঘণ্টা সময় নষ্টের অবসান হলো।

শনিবার (৮ নভেম্বর) সকালে আান্ডারপাসটি উদ্বোধন করেন প্রধান উপদেষ্টার প্রতিরক্ষা এবং জাতীয় সংহতি উন্নয়ন বিষয়ক বিশেষ সহকারী অবসরপ্রাপ্ত লেফটেন্যান্ট জেনারেল আব্দুল হাফিজ। এ সময় উপস্থিত ছিলেন আরেক বিশেষ সহকারী শেখ মইন উদ্দিন।

একপাশে অতিশী দীপঙ্কর রোড, আরেক পাশে কমলাপুর আউটার সার্কুলার রোড— মাঝখানে এই টিটিপাড়ার লেভেল ক্রসিং। সড়কপথের যানবাহন ও ট্রেন চলাচল নির্বিঘ্ন করতে লেভেল ক্রসিংটিকে আন্ডারপাসে রূপান্তর করা হয়। এ কারণে দীর্ঘদিন বন্ধ ছিল রাজধানীর ব্যস্ত এই সংযোগপথ। ফলে অফিসগামী, শিক্ষার্থী এবং শহরের এক প্রান্ত থেকে অন্য প্রান্তে যাতায়াতকারী লাখো মানুষকে ভোগান্তি পোহাতে হয়েছে।

পদ্মা সেতু রেল সংযোগ প্রকল্পের আওতায় প্রায় দুই বছরের কর্মযজ্ঞ শেষে তৈরি হয়েছে এই আন্ডারপাস। নিচ দিয়ে ছয় লেনের সড়কের মধ্যে চার লেন থাকবে যান্ত্রিক যানবাহনের জন্য। পাঁচ মিটার উচ্চতার গাড়ি নির্বিঘ্নে চলাচল করতে পারবে এই পথে। দুই পাশে রিকশা ও সাইকেলের জন্য আলাদা লেনের পাশাপাশি পথচারীদের জন্য রাখা হয়েছে প্রশস্ত ফুটপাত।

প্যাডেলচালিত যানবাহনের জন্য ঢাল কম রাখতে দুই পাশের লেন মাঝের চার লেনের তুলনায় কিছুটা উঁচু করা হয়েছে। এখন ওপরে ট্রেন আর নিচে অন্যান্য যানবাহনের চলাচল হবে বাধাহীনভাবে। রোড মার্কিং, মাঝের ডিভাইডারে ফুলের গাছ, সড়কের দুই পাশে ল্যাম্পপোস্ট— সব মিলিয়ে আন্ডারপাসটি এখন চোখে পড়ার মতো সৌন্দর্য পেয়েছে।

পদ্মা সেতু রেল সংযোগ প্রকল্পের ব্যবস্থাপক ব্রিগেডিয়ার জেনারেল আহমেদ জামিউল ইসলাম বলেন, আমাদের সমস্যা ছিল স্পেস লিমিটেশন। ডান পাশে কমলাপুর আইসিটি কর্তৃপক্ষের কিছু জায়গা আমরা পেয়েছিলাম, কিন্তু এর বাইরে আর জায়গা উন্মুক্ত করা সম্ভব হয়নি। ফলে এখানে কোনো বাইপাস নির্মাণ করাও সম্ভব ছিল না। এছাড়া আন্ডারপাসের গভীরতাও অনেক বেশি। তাই সামান্য বাইপাস রোড করলেও সেটা জনসাধারণের জন্য ঝুঁকিপূর্ণ হয়ে যেত।

তিনি আরও বলেন, স্থাপনাটির সঠিক রক্ষণাবেক্ষণের দিকেও গুরুত্ব দিতে হবে। রক্ষণাবেক্ষণ শুধু একক কোনো গোষ্ঠীর নয়, বরং একাধিক স্টেকহোল্ডারকে একসঙ্গে কাজ করতে হবে। বিশেষ করে পাম্প হাউসটি যাতে দুর্যোগকালেও সঠিকভাবে কাজ করে তা নিশ্চিত করতে রেলওয়েকে দায়িত্ব নিতে হবে।

মূল সড়ক থেকে ১১ মিটার নিচ দিয়ে তৈরি এই আন্ডারপাসে বর্ষাকালে যেন পানি না জমে— এমন আধুনিক নিষ্কাশন ব্যবস্থা রাখা হয়েছে।

প্রকল্পের প্রকৌশলী নীলাকর বিশ্বাস বলেন, টিটিপাড়া আন্ডারপাসের জন্য আলাদা একটি ‘রেইনওয়াটার পাম্প ওয়েল’ করা হয়েছে। আন্ডারপাসের সব পানি স্বয়ংক্রিয়ভাবে ওই ওয়েলে যাবে, যেখানে ৭৫ কিলোওয়াটের চারটি পাম্প রয়েছে। পানির স্তর অনুযায়ী পাম্পগুলো স্বয়ংক্রিয়ভাবে চালু হয়ে পানি পার্শ্ববর্তী সিটি কর্পোরেশনের ক্যানেলে পাঠিয়ে দেবে।

বিষয়টি নিয়ে জানতে চাইলে বাংলাদেশ রেলওয়ের মহাপরিচালক মো. আফজাল হোসেন বলেন, আজকে আমাদের উপদেষ্টা মহোদয়ের বিশেষ সহকারী আসছেন। উনি দেখে গেছেন এবং বলেছেন যে এটি খুলে দেওয়ার জন্য। এটার জন্য কোনো আনুষ্ঠানিকতার প্রয়োজন নেই বলে উনি জানিয়েছেন। এটি ইতোমধ্যে খুলে দেওয়া হয়েছে। সকাল ১০টা থেকে সর্বসাধারণের জন্য উন্মুক্ত করা হয়েছে।