Dhaka শনিবার, ১২ জুলাই ২০২৫, ২৮ আষাঢ় ১৪৩২ বঙ্গাব্দ

চালক অসুস্থ, বাস থামিয়ে সহপাঠীদের বাঁচালো ১৩ বছরের ছাত্র

আন্তর্জাতিক ডেস্ক : 

স্কুল শিক্ষার্থীদের বহনকারী চলন্ত বাসে সংজ্ঞা হারিয়ে ফেলেছেন চালক। বাসে রয়েছে ৬৬ জন ছাত্রছাত্রী। চালক চেতনা হারিয়ে ফেলায় বাসটি রাস্তায় এলোমেলোভাবে চলতে থাকে। বাসের যাত্রী ছোট্ট ছোট্ট শিক্ষার্থীদের অনেকেই তখন হাউমাউ করে কান্না শুরু করে। কিন্তু ১৩ বছরের এক ছাত্রের দ্রুত সিদ্ধান্তে প্রাণে বাঁচে বাসটিতে থাকা তার সহপাঠীর। বাসটির স্টিয়ারিংয়ের নিয়ন্ত্রণ নিয়ে নিরাপদ সেটিকে থামাতে সমর্থ হয় সে।

বুধবার (২৬ এপ্রিল) যুক্তরাষ্ট্রের মিশিগান অঙ্গরাজ্যে এ ঘটনা ঘটে। এ ঘটনার পর প্রশংসায় ভাসছে দিলন রিভস নামে ওই ছাত্র।

বাসটির পাঁচ সিট পিছনে বসা রিভস ড্রাইভারের অসুস্থতার বিষয়টি খেয়াল করে এবং দ্রুত ব্যবস্থা নেয়। ওয়ারেন এলাকার কার্টার মিডল স্কুলের ছাত্র রিভস ঘটনার পর সবার কাছে নায়ক বনে গেছে।

একপর্যায়ে রিভসই ৯১১ নম্বরে ফোন করে বিষয়টি পুলিশকে জানায়। পুলিশ ঘটনাস্থলে এসে বাসচালককে উদ্ধার করে হাসপাতালে ভর্তি করায়। বাসের ভেতরে ৬৬ জন শিক্ষার্থী ছিল বলে জানা যায়।

পুলিশ জানায়, বাসের সবাই আতঙ্কিত হয়ে পড়লেও নিজেকে স্থির রেখেছিল রিভস। তারপর সে ছুটে গিয়ে বাসের স্টিয়ারিং ধরে ও ব্রেকে পা দিয়ে বাসটিকে থামায়। তারপর ইঞ্জিন বন্ধ করে দেয়।

ওয়ারেনের কাউন্সিলম্যান জনাথন লাফার্তি এক ফেসবুক পোস্টে রিভসকে উদ্দেশ করে লিখেছেন, আমরা তোমার নায়কোচিত কাজের জন্য গর্বিত।

এক ভিডিওতে দেখা যায়, বাসটির ড্রাইভার তার কোম্পানির কর্মকর্তাদের কাছে ম্যাসেজ পাঠাচ্ছেন যে তিনি অসুস্থতা অনুভব করছেন।

https://youtu.be/_QTLWx0iqFA?t=4

স্থানীয় পুলিশ কর্মকর্তা রবার্ট লিভারনয়েস বলেন, বাস চালানোর সময় অসুস্থ বোধ করেন চালক। তিনি তৎক্ষণাৎ পরিবহণ সংস্থাকে বিষয়টি জানান। তারপরই জ্ঞান হারিয়ে ফেলেন।

লিভরনয়েস আরও বলেন, সপ্তম শ্রেণির ওই ছাত্র তাৎক্ষণিকভাবে স্টিয়ারিং ধরার সিদ্ধান্ত না নিলে বড় দুর্ঘটনা ঘটে যেতে পারতো। এদিকে, রিভসের এ সাহসী কাণ্ডে প্রশংসায় ভেসেছে তার গোটা স্কুল ও এলাকাবাসী।

এই ঘটনার একটি ভিডিও বৃহস্পতিবার প্রকাশ করা হয়েছে। এতে দেখা যায়, বাস ড্রাইভার রেডিও বার্তার মাধ্যমে কর্মকর্তাদের বলছেন, তিনি সুস্থ বোধ করছেন না এবং চালকের আসন থেকে তাকে সরিয়ে নেওয়ার প্রয়োজন হতে পারে। এর কিছুক্ষণ পরই তিনি জ্ঞান হারিয়ে ফেলেন এবং স্টিয়ারিং চাকার ওপর পড়ে যান। এতে বাসটি তার লেন থেকে আলাদা হয়ে পড়ে। এ ঘটনা দেখে বাসটিতে থাকা ছাত্ররা কান্নাকাটি শুরু করে দেয়।

তবে ড্রাইভারের অসুস্থতার কারণ জানা যায়নি। নারী ওই ড্রাইভারের এর আগে ড্রাইভিং অবস্থায় কোনো সমস্যার কথাও জানা যায়নি।

শহরের বাসিন্দারা এখন ওই স্কুলছাত্রকে ‘বীর’ আখ্যা দিয়ে অভিনন্দন জানাচ্ছে। ওয়ারেনের কাউন্সিলর জোনাথন লাফারটি সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম ফেসবুকে দেওয়া এক পোস্টে লিখেছেন, ‘তোমার বীরোচিত কর্মের জন্য আমরা অত্যন্ত গর্বিত!’

পরে স্থানীয় প্রশাসন স্কুলশিক্ষার্থী ডিলনকে পুরস্কৃত করেছে। ওয়ারেনের পুলিশ ডিলনের সাহসিকতার প্রশংসা করেছে। পুলিশ যখন ডিলনের বাবা-মাকে ডেকেছিল, তখন তার বাবা স্টিভ রিভস প্রথমে জিজ্ঞাসা করেছিলেন, ‘সে কী করেছিল?’ জবাবে কর্মকর্তারা বলেন, ‘না, আপনার ছেলে একজন বীর।’ সূত্র: সিএনএন

 

 

 

জনপ্রিয় খবর

আবহাওয়া

মব জাস্টিস সরকার কোনোভাবেই বরদাশত করে না : রিজওয়ানা হাসান

চালক অসুস্থ, বাস থামিয়ে সহপাঠীদের বাঁচালো ১৩ বছরের ছাত্র

প্রকাশের সময় : ০৭:৩৬:২৭ অপরাহ্ন, শনিবার, ২৯ এপ্রিল ২০২৩

আন্তর্জাতিক ডেস্ক : 

স্কুল শিক্ষার্থীদের বহনকারী চলন্ত বাসে সংজ্ঞা হারিয়ে ফেলেছেন চালক। বাসে রয়েছে ৬৬ জন ছাত্রছাত্রী। চালক চেতনা হারিয়ে ফেলায় বাসটি রাস্তায় এলোমেলোভাবে চলতে থাকে। বাসের যাত্রী ছোট্ট ছোট্ট শিক্ষার্থীদের অনেকেই তখন হাউমাউ করে কান্না শুরু করে। কিন্তু ১৩ বছরের এক ছাত্রের দ্রুত সিদ্ধান্তে প্রাণে বাঁচে বাসটিতে থাকা তার সহপাঠীর। বাসটির স্টিয়ারিংয়ের নিয়ন্ত্রণ নিয়ে নিরাপদ সেটিকে থামাতে সমর্থ হয় সে।

বুধবার (২৬ এপ্রিল) যুক্তরাষ্ট্রের মিশিগান অঙ্গরাজ্যে এ ঘটনা ঘটে। এ ঘটনার পর প্রশংসায় ভাসছে দিলন রিভস নামে ওই ছাত্র।

বাসটির পাঁচ সিট পিছনে বসা রিভস ড্রাইভারের অসুস্থতার বিষয়টি খেয়াল করে এবং দ্রুত ব্যবস্থা নেয়। ওয়ারেন এলাকার কার্টার মিডল স্কুলের ছাত্র রিভস ঘটনার পর সবার কাছে নায়ক বনে গেছে।

একপর্যায়ে রিভসই ৯১১ নম্বরে ফোন করে বিষয়টি পুলিশকে জানায়। পুলিশ ঘটনাস্থলে এসে বাসচালককে উদ্ধার করে হাসপাতালে ভর্তি করায়। বাসের ভেতরে ৬৬ জন শিক্ষার্থী ছিল বলে জানা যায়।

পুলিশ জানায়, বাসের সবাই আতঙ্কিত হয়ে পড়লেও নিজেকে স্থির রেখেছিল রিভস। তারপর সে ছুটে গিয়ে বাসের স্টিয়ারিং ধরে ও ব্রেকে পা দিয়ে বাসটিকে থামায়। তারপর ইঞ্জিন বন্ধ করে দেয়।

ওয়ারেনের কাউন্সিলম্যান জনাথন লাফার্তি এক ফেসবুক পোস্টে রিভসকে উদ্দেশ করে লিখেছেন, আমরা তোমার নায়কোচিত কাজের জন্য গর্বিত।

এক ভিডিওতে দেখা যায়, বাসটির ড্রাইভার তার কোম্পানির কর্মকর্তাদের কাছে ম্যাসেজ পাঠাচ্ছেন যে তিনি অসুস্থতা অনুভব করছেন।

https://youtu.be/_QTLWx0iqFA?t=4

স্থানীয় পুলিশ কর্মকর্তা রবার্ট লিভারনয়েস বলেন, বাস চালানোর সময় অসুস্থ বোধ করেন চালক। তিনি তৎক্ষণাৎ পরিবহণ সংস্থাকে বিষয়টি জানান। তারপরই জ্ঞান হারিয়ে ফেলেন।

লিভরনয়েস আরও বলেন, সপ্তম শ্রেণির ওই ছাত্র তাৎক্ষণিকভাবে স্টিয়ারিং ধরার সিদ্ধান্ত না নিলে বড় দুর্ঘটনা ঘটে যেতে পারতো। এদিকে, রিভসের এ সাহসী কাণ্ডে প্রশংসায় ভেসেছে তার গোটা স্কুল ও এলাকাবাসী।

এই ঘটনার একটি ভিডিও বৃহস্পতিবার প্রকাশ করা হয়েছে। এতে দেখা যায়, বাস ড্রাইভার রেডিও বার্তার মাধ্যমে কর্মকর্তাদের বলছেন, তিনি সুস্থ বোধ করছেন না এবং চালকের আসন থেকে তাকে সরিয়ে নেওয়ার প্রয়োজন হতে পারে। এর কিছুক্ষণ পরই তিনি জ্ঞান হারিয়ে ফেলেন এবং স্টিয়ারিং চাকার ওপর পড়ে যান। এতে বাসটি তার লেন থেকে আলাদা হয়ে পড়ে। এ ঘটনা দেখে বাসটিতে থাকা ছাত্ররা কান্নাকাটি শুরু করে দেয়।

তবে ড্রাইভারের অসুস্থতার কারণ জানা যায়নি। নারী ওই ড্রাইভারের এর আগে ড্রাইভিং অবস্থায় কোনো সমস্যার কথাও জানা যায়নি।

শহরের বাসিন্দারা এখন ওই স্কুলছাত্রকে ‘বীর’ আখ্যা দিয়ে অভিনন্দন জানাচ্ছে। ওয়ারেনের কাউন্সিলর জোনাথন লাফারটি সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম ফেসবুকে দেওয়া এক পোস্টে লিখেছেন, ‘তোমার বীরোচিত কর্মের জন্য আমরা অত্যন্ত গর্বিত!’

পরে স্থানীয় প্রশাসন স্কুলশিক্ষার্থী ডিলনকে পুরস্কৃত করেছে। ওয়ারেনের পুলিশ ডিলনের সাহসিকতার প্রশংসা করেছে। পুলিশ যখন ডিলনের বাবা-মাকে ডেকেছিল, তখন তার বাবা স্টিভ রিভস প্রথমে জিজ্ঞাসা করেছিলেন, ‘সে কী করেছিল?’ জবাবে কর্মকর্তারা বলেন, ‘না, আপনার ছেলে একজন বীর।’ সূত্র: সিএনএন