Dhaka সোমবার, ২৮ জুলাই ২০২৫, ১২ শ্রাবণ ১৪৩২ বঙ্গাব্দ

চামড়া সংরক্ষণে মাদরাসা-এতিমখানায় ৩০ হাজার টন লবণ ফ্রিতে দেবে সরকার : বাণিজ্য উপদেষ্টা

নিজস্ব প্রতিবেদক : 

এ বছর চামড়ার দাম যতক্ষণ ন্যায্য না হবে, ততক্ষণ সংরক্ষণের ব্যবস্থা করা হবে বলে জানিয়ে বাণিজ্য উপদেষ্টা শেখ বশিরউদ্দীন বলেন, এতিমদের হক চামড়ার সঠিক মূল্য নিশ্চিত করতে উচ্চ পর্যায়ের কমিটির বৈঠক করেছে। যেখানে বড় সিদ্ধান্ত হলো, মাদরাসা ও এতিমখানায় ৩০ হাজার টন লবণ দেবে সরকার। প্রতিষ্ঠানগুলো যতক্ষণ পর্যন্ত চামড়ার ন্যায্যমূল্য না পাবে, ততক্ষণ পর্যন্ত সংরক্ষণ করবে।

বুধবার (২১ মে) বাণিজ্য মন্ত্রণালয়ে কোরবানি সম্পর্কিত বিষয়াদির সুষ্ঠু ব্যবস্থাপনা নিশ্চিতকরণ কমিটির প্রথম সভা শেষে সংবাদ সম্মেলনে তিনি এসব কথা বলেন।

তিনি বলেন, মাদরাসা ও এতিমখানায় ব্যবস্থাপনা এবং সংরক্ষণের জন্য প্রশিক্ষণ দেওয়া হবে। একটি নির্দেশনামূলক ভিডিও তৈরি করব। সেগুলো ব্যাপকভাবে প্রচার করা হবে। ঈদের পরের দিন এ কমিটি আবার বসবে, দাম ঠিক রাখতে সব সময় কাজ করা হবে।

বাণিজ্য উপদেষ্টা বলেন, আগে সারাদেশে একসঙ্গে কাঁচা চামড়া আসতো। চামড়া পচে যাবে সে কারণে দাম না পেলেও বাধ্য হয়ে কম দামে বিক্রি করতে হয়েছে। এবার সেটা হবে না।

তিনি বলেন, আমরা চেষ্টা করছি গতবারের চেয়ে বেশি মূল্যে চামড়ার দাম নির্ধারণ করতে, তবে সেটা অবশ্যই যৌক্তিক হবে। এ বছর যেন কোনো সিন্ডিকেট কাজ করতে না পারে, সেজন্য আমরা মজুদের ওপর জোর দিচ্ছি।

তিনি আরো বলেন, আজকে আমাদের কয়েকটি মৌলিক উদ্দেশ্য ছিল। এর মধ্যে একটি ছিল চামড়ার উপযুক্ত মূল্য নির্ধারণ, যা বাজার ব্যবস্থাপনার মাধ্যমে মূল্য নিশ্চিত করতে সহায়ক হবে। কোরবানির পরবর্তী বর্জ্য ব্যবস্থাপনা এবং কোরবানির পূর্ববর্তী পশু ব্যবস্থাপনা নিয়েও আলোচনা হয়েছে। এসব বিষয় পর্যালোচনা করে সরকার সিদ্ধান্ত নিয়েছে, সারাদেশের মাদরাসা ও এতিমখানাগুলোয় বিনামূল্যে ৩০ হাজার টন লবণ সরবরাহ করা হবে।

শেখ বশিরউদ্দীন বলেন, একই সঙ্গে আমরা একটি প্রামাণ্যচিত্র তৈরি করছি, যেখানে চামড়া ব্যবস্থাপনা ও সংরক্ষণের পদ্ধতি তুলে ধরা হবে। যতক্ষণ পর্যন্ত উপযুক্ত মূল্য না পাওয়া যায়, ততক্ষণ যেন তারা চামড়া সংরক্ষণ করতে পারেন, সেই বিষয়টিও এতে থাকবে। এর পাশাপাশি সারাদেশে ৫ লাখ লিফলেট বিতরণ করা হবে।

বাজার ব্যবস্থাপনা প্রসঙ্গে তিনি বলেন, নির্ধারিত স্থানে যেন কোরবানির হাট বসে এবং তার বাইরে যেন কোনো পশু ক্রয়-বিক্রয় না হয়, সে বিষয়ে আমরা আলোচনা করেছি। পশুর হাটে যে হাসিল নেওয়া হয়, সেটি যেন ৫ শতাংশের নিচে থাকে, সে ব্যাপারেও উদ্যোগ নেওয়া হচ্ছে। সরবরাহ ও চাহিদার ভিত্তিতে যেসব পদক্ষেপ নেওয়া প্রয়োজন, তা নিয়ে বিস্তর আলোচনা করে কিছু সিদ্ধান্ত নিয়েছি।

শেখ বশির উদ্দিন বলেন, আমাদের বাজার ব্যবস্থাপনা ও মূল্য নিশ্চিত করার উদ্দেশ্যে প্রয়োজনে কাঁচা চামড়া সরাসরি রপ্তানি করার বিষয়টি বিবেচনায় রাখা হয়েছে। যদিও আমরা তা চাই না। প্রধান উপদেষ্টা আমাদের নির্দেশ দিয়েছেন যেন আমরা চামড়ার উপযুক্ত মূল্য নির্ধারণ করতে পারি, যদিও সেটি অনেকাংশে বাজার ব্যবস্থাপনার ওপর নির্ভর করে। আমরা সম্মিলিতভাবে চেষ্টা করব যেন সঠিক মূল্য নির্ধারণ করা যায়।

বাণিজ্য উপদেষ্টা কমিটির কার্যপরিধি নিয়ে তিনি বলেন, চামড়া সঠিকভাবে সংগ্রহ ও সংরক্ষণের জন্য পর্যাপ্ত লবণ সরবরাহ নিশ্চিতকরণ, চামড়ার উপযুক্ত মূল্য নিশ্চিত করা এবং কোরবানির সঙ্গে সম্পর্কিত বিষয়সমূহের সুষ্ঠু ও দক্ষ ব্যবস্থাপনা নিশ্চিত করাই আমাদের লক্ষ্য। ধর্মীয় প্রতিষ্ঠানগুলোর স্বার্থ সংরক্ষণে চামড়া বিক্রয়লব্ধ অর্থ প্রাপ্তি নিশ্চিত করার নির্দেশনা প্রদান, কোরবানির হাট ও পশু পরিবহন, সেইসাথে পরিবহনের সময় পশুর প্রতি নিষ্ঠুরতা প্রতিরোধে নির্দেশনা জারি করাও এই কমিটির দায়িত্ব। পাশাপাশি সাভার চামড়া শিল্প নগরীসহ সারাদেশে দ্রুত ও যথাযথভাবে বর্জ্য ব্যবস্থাপনার জন্য একটি কর্মপরিকল্পনা প্রণয়ন করা হবে।

জনপ্রিয় খবর

আবহাওয়া

আড়াই বছরেও শেষ হয়নি সেতু নির্মাণ কাজ, দুর্ভোগে এলাকাবাসী

চামড়া সংরক্ষণে মাদরাসা-এতিমখানায় ৩০ হাজার টন লবণ ফ্রিতে দেবে সরকার : বাণিজ্য উপদেষ্টা

প্রকাশের সময় : ০৪:০৩:৩৫ অপরাহ্ন, বুধবার, ২১ মে ২০২৫

নিজস্ব প্রতিবেদক : 

এ বছর চামড়ার দাম যতক্ষণ ন্যায্য না হবে, ততক্ষণ সংরক্ষণের ব্যবস্থা করা হবে বলে জানিয়ে বাণিজ্য উপদেষ্টা শেখ বশিরউদ্দীন বলেন, এতিমদের হক চামড়ার সঠিক মূল্য নিশ্চিত করতে উচ্চ পর্যায়ের কমিটির বৈঠক করেছে। যেখানে বড় সিদ্ধান্ত হলো, মাদরাসা ও এতিমখানায় ৩০ হাজার টন লবণ দেবে সরকার। প্রতিষ্ঠানগুলো যতক্ষণ পর্যন্ত চামড়ার ন্যায্যমূল্য না পাবে, ততক্ষণ পর্যন্ত সংরক্ষণ করবে।

বুধবার (২১ মে) বাণিজ্য মন্ত্রণালয়ে কোরবানি সম্পর্কিত বিষয়াদির সুষ্ঠু ব্যবস্থাপনা নিশ্চিতকরণ কমিটির প্রথম সভা শেষে সংবাদ সম্মেলনে তিনি এসব কথা বলেন।

তিনি বলেন, মাদরাসা ও এতিমখানায় ব্যবস্থাপনা এবং সংরক্ষণের জন্য প্রশিক্ষণ দেওয়া হবে। একটি নির্দেশনামূলক ভিডিও তৈরি করব। সেগুলো ব্যাপকভাবে প্রচার করা হবে। ঈদের পরের দিন এ কমিটি আবার বসবে, দাম ঠিক রাখতে সব সময় কাজ করা হবে।

বাণিজ্য উপদেষ্টা বলেন, আগে সারাদেশে একসঙ্গে কাঁচা চামড়া আসতো। চামড়া পচে যাবে সে কারণে দাম না পেলেও বাধ্য হয়ে কম দামে বিক্রি করতে হয়েছে। এবার সেটা হবে না।

তিনি বলেন, আমরা চেষ্টা করছি গতবারের চেয়ে বেশি মূল্যে চামড়ার দাম নির্ধারণ করতে, তবে সেটা অবশ্যই যৌক্তিক হবে। এ বছর যেন কোনো সিন্ডিকেট কাজ করতে না পারে, সেজন্য আমরা মজুদের ওপর জোর দিচ্ছি।

তিনি আরো বলেন, আজকে আমাদের কয়েকটি মৌলিক উদ্দেশ্য ছিল। এর মধ্যে একটি ছিল চামড়ার উপযুক্ত মূল্য নির্ধারণ, যা বাজার ব্যবস্থাপনার মাধ্যমে মূল্য নিশ্চিত করতে সহায়ক হবে। কোরবানির পরবর্তী বর্জ্য ব্যবস্থাপনা এবং কোরবানির পূর্ববর্তী পশু ব্যবস্থাপনা নিয়েও আলোচনা হয়েছে। এসব বিষয় পর্যালোচনা করে সরকার সিদ্ধান্ত নিয়েছে, সারাদেশের মাদরাসা ও এতিমখানাগুলোয় বিনামূল্যে ৩০ হাজার টন লবণ সরবরাহ করা হবে।

শেখ বশিরউদ্দীন বলেন, একই সঙ্গে আমরা একটি প্রামাণ্যচিত্র তৈরি করছি, যেখানে চামড়া ব্যবস্থাপনা ও সংরক্ষণের পদ্ধতি তুলে ধরা হবে। যতক্ষণ পর্যন্ত উপযুক্ত মূল্য না পাওয়া যায়, ততক্ষণ যেন তারা চামড়া সংরক্ষণ করতে পারেন, সেই বিষয়টিও এতে থাকবে। এর পাশাপাশি সারাদেশে ৫ লাখ লিফলেট বিতরণ করা হবে।

বাজার ব্যবস্থাপনা প্রসঙ্গে তিনি বলেন, নির্ধারিত স্থানে যেন কোরবানির হাট বসে এবং তার বাইরে যেন কোনো পশু ক্রয়-বিক্রয় না হয়, সে বিষয়ে আমরা আলোচনা করেছি। পশুর হাটে যে হাসিল নেওয়া হয়, সেটি যেন ৫ শতাংশের নিচে থাকে, সে ব্যাপারেও উদ্যোগ নেওয়া হচ্ছে। সরবরাহ ও চাহিদার ভিত্তিতে যেসব পদক্ষেপ নেওয়া প্রয়োজন, তা নিয়ে বিস্তর আলোচনা করে কিছু সিদ্ধান্ত নিয়েছি।

শেখ বশির উদ্দিন বলেন, আমাদের বাজার ব্যবস্থাপনা ও মূল্য নিশ্চিত করার উদ্দেশ্যে প্রয়োজনে কাঁচা চামড়া সরাসরি রপ্তানি করার বিষয়টি বিবেচনায় রাখা হয়েছে। যদিও আমরা তা চাই না। প্রধান উপদেষ্টা আমাদের নির্দেশ দিয়েছেন যেন আমরা চামড়ার উপযুক্ত মূল্য নির্ধারণ করতে পারি, যদিও সেটি অনেকাংশে বাজার ব্যবস্থাপনার ওপর নির্ভর করে। আমরা সম্মিলিতভাবে চেষ্টা করব যেন সঠিক মূল্য নির্ধারণ করা যায়।

বাণিজ্য উপদেষ্টা কমিটির কার্যপরিধি নিয়ে তিনি বলেন, চামড়া সঠিকভাবে সংগ্রহ ও সংরক্ষণের জন্য পর্যাপ্ত লবণ সরবরাহ নিশ্চিতকরণ, চামড়ার উপযুক্ত মূল্য নিশ্চিত করা এবং কোরবানির সঙ্গে সম্পর্কিত বিষয়সমূহের সুষ্ঠু ও দক্ষ ব্যবস্থাপনা নিশ্চিত করাই আমাদের লক্ষ্য। ধর্মীয় প্রতিষ্ঠানগুলোর স্বার্থ সংরক্ষণে চামড়া বিক্রয়লব্ধ অর্থ প্রাপ্তি নিশ্চিত করার নির্দেশনা প্রদান, কোরবানির হাট ও পশু পরিবহন, সেইসাথে পরিবহনের সময় পশুর প্রতি নিষ্ঠুরতা প্রতিরোধে নির্দেশনা জারি করাও এই কমিটির দায়িত্ব। পাশাপাশি সাভার চামড়া শিল্প নগরীসহ সারাদেশে দ্রুত ও যথাযথভাবে বর্জ্য ব্যবস্থাপনার জন্য একটি কর্মপরিকল্পনা প্রণয়ন করা হবে।