Dhaka শুক্রবার, ১৫ অগাস্ট ২০২৫, ৩১ শ্রাবণ ১৪৩২ বঙ্গাব্দ

চাটুকারিতা করলে মিডিয়া বন্ধ করে দেওয়া হবে : স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা

নিজস্ব প্রতিবেদক : 

চাটুকারিতা করলে মিডিয়া বন্ধ করে দেওয়া হবে বলে মন্তব্য করেছেন অন্তর্র্বতীকালীন সরকারের স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের উপদেষ্টা ব্রিগেডিয়ার জেনারেল (অব.) এম সাখাওয়াত হোসেন।

রোববার (১১ আগস্ট) দুপুরে রাজধানীর রাজারবাগ কেন্দ্রীয় পুলিশ হাসপাতালে সম্প্রতি সহিংসতায় আহত পুলিশ সদস্যদের দেখতে গিয়ে সাংবাদিকদের সামনে এমন মন্তব্য করেন তিনি।

তিনি বলেন, চাটুকারিতা করলে মিডিয়া বন্ধ করে দেওয়া হবে। আমি আপনাদের প্রমিজ করছি যদি মিডিয়া চাটুকারিতা করে তাহলে মিডিয়া বন্ধ করে দেওয়া হবে। মিডিয়ায় চাটুকারদের ডাকবেন না। মিডিয়া চাটুকার হবেন না। একটা দেশ ডুবে কখন, যখন মিডিয়া সত্য কথা বলে না।

ব্রিগেডিয়ার জেনারেল (অব.) এম সাখাওয়াত হোসেন বলেন, মিডিয়াগুলো ওই সময় যদি সত্যি ঘটনা তুলে ধরতো তাহলে পুলিশের এই অবস্থা হয় না। মিডিয়া বারবার বলেছে কিছুই হয়নি। কিন্তু বিবিসিতে আমি সব দেখেছি।

তিনি বলেন, টকশোতে জ্ঞান-গর্ভ কোনো আলোচনা হয় না। মিডিয়া সঠিক তথ্য তুলে ধরেন। একটা দেশ তখনই ডোবে যখন মিডিয়া সত্যি কথা বলে না।

স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা আরও বলেন, সাবেক তথ্যপ্রতিমন্ত্রী লেখাপড়া জানা লোক কিন্তু তিনি ছাত্রদের বললেন দুষ্কৃতকারী। এসবের বিচার হওয়া উচিত। মিডিয়ার মালিকদেরও বিচার হওয়া উচিত।

এখন থেকে পুলিশকে আর রাজনৈতিক কাজে ব্যবহারের কোনো সুযোগ নেই জানিয়ে স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা বলেন, পুলিশকে আর রাজনৈতিক কাজে ব্যবহার করতে পারবে না। পুলিশ চলবে পুলিশ কমিশনে। আপনি পুলিশ কমিশনকে অর্ডার দেবেন, সেটা তারা ভালো হলে করবে।

সাখাওয়াত হোসেন আরও বলেন, পুলিশকে যারা ব্যবহার করেছেন তাদেরকে ধরেন। আমি মনে করি যারা হুকুমদাতা তাদের ধরেন। তারা অবশ্যই শাস্তির আওতায় আনতে হবে।

যেসব শিক্ষার্থী রাস্তায় ট্রাফিকের কাজ করছে তাদের তালিকা করে সবাইকে পুলিশের পক্ষ থেকে সার্টিফিকেট দেওয়া হবে বলে জানিয়ে তিনি বলেন, এই সার্টিফিকেট চাকরির ক্ষেত্রে যেন মূল্যায়ন হয়। আমি আইজিপিকে অনুরোধ করব, যেসব শিক্ষার্থী রাস্তায় ট্রাফিকের কাজ করছে তাদের তালিকা করে সবাইকে পুলিশের পক্ষ থেকে সার্টিফিকেট দেবেন। এই সার্টিফিকেট চাকরি ক্ষেত্রে যেন মূল্যায়ন হয়।

পুলিশ সদস্যরা নির্দিষ্ট সময়ে যোগ না দিলে ব্যবস্থা নেয়া হবে
এ উপদেষ্টা বলেন, শিক্ষার্থীরা নিজেদের টাকা খরচ করে সড়কে কাজ করছে, সড়ক পরিষ্কার করছে, রঙ দিয়ে দেওয়াল সুন্দর করছে। এটা যদি সরকারি প্রজেক্ট হতো তাহলে হাজার কোটি টাকা লাগত। একটা দেশে এর চেয়ে ভালো উদাহরণ আর হতে পারে না।

শিক্ষার্থীরা স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টার গাড়িও ধরেছে উল্লেখ করে এম সাখাওয়াত হোসেন বলেন, আমার গাড়ি থামিয়ে তারা বলেছে পতাকাওয়ালা গাড়ি। তারপর তারা বলছে পতাকা থাক আর যাই থাক গাড়ি চেক করব। এরপর আমাকে দেখে বললো, না স্যার আপনি চলে যান।

তিনি আরও বলেন, যেটা পুলিশ করতে পারত না সেটা তারা করছে। শিক্ষার্থীরা কোনো চাঁদা নেয় না। কোনো দোকানে গিয়ে বলে না খাবার দাও।

স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা আরও বলেন, আমি জনগণের কাছে এটুকু বলতে চাই- আপনারা কেউ পুলিশের গায়ে হাত দেবেন না। এখন আপনারাই ভুক্তভোগী হচ্ছেন। যদি ডাকাতি হয়, পুলিশ না থাকলে কি করার আছে? আমি বলব বৃহস্পতিবারের মধ্যে আপনারা (পুলিশ) কর্মস্থলে যোগদান করেন। এটা এখন আমার নাম্বার ওয়ান প্রায়োরিটি।

আমার দুই নাম্বার প্রায়োরিটি হচ্ছে, একটু আগে দেখলাম আনসারের একটি অংশ রাস্তা বন্ধ করে দিয়েছে। তাদেরও কিছু দাবি দেওয়া আছে। সবারই দাবি-দাওয়া আছে, আমারও কিছু দাবি দেওয়া আছে। আমার দাবী হচ্ছে, আপনারা ফিরে যান। আমি কথা দিচ্ছি, স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা হিসেবে আমার দায়িত্ব হচ্ছে আপনাদের কাছে আসা, আপনাদের কথা শোনা। আমার পক্ষে তাৎক্ষণিক যা করা সম্ভব আমি তা করব। আপনারা দয়া করে রাস্তা ছেড়ে দেন। অন্যান্য ফোর্স বা বাহিনী যারা আছে, প্রত্যেক বাহিনীর সাথে আমি কথা বলব। সবাই আমার পরিচিত, আমি যা বলব তাই করার চেষ্টা করব। আমি পলিটিশিয়ান না যে এখন এক কথা বলব বিকেলে আরেক কথা বলব।

জনপ্রিয় খবর

আবহাওয়া

চাটুকারিতা করলে মিডিয়া বন্ধ করে দেওয়া হবে : স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা

প্রকাশের সময় : ০১:৫৯:৩৬ অপরাহ্ন, রবিবার, ১১ অগাস্ট ২০২৪

নিজস্ব প্রতিবেদক : 

চাটুকারিতা করলে মিডিয়া বন্ধ করে দেওয়া হবে বলে মন্তব্য করেছেন অন্তর্র্বতীকালীন সরকারের স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের উপদেষ্টা ব্রিগেডিয়ার জেনারেল (অব.) এম সাখাওয়াত হোসেন।

রোববার (১১ আগস্ট) দুপুরে রাজধানীর রাজারবাগ কেন্দ্রীয় পুলিশ হাসপাতালে সম্প্রতি সহিংসতায় আহত পুলিশ সদস্যদের দেখতে গিয়ে সাংবাদিকদের সামনে এমন মন্তব্য করেন তিনি।

তিনি বলেন, চাটুকারিতা করলে মিডিয়া বন্ধ করে দেওয়া হবে। আমি আপনাদের প্রমিজ করছি যদি মিডিয়া চাটুকারিতা করে তাহলে মিডিয়া বন্ধ করে দেওয়া হবে। মিডিয়ায় চাটুকারদের ডাকবেন না। মিডিয়া চাটুকার হবেন না। একটা দেশ ডুবে কখন, যখন মিডিয়া সত্য কথা বলে না।

ব্রিগেডিয়ার জেনারেল (অব.) এম সাখাওয়াত হোসেন বলেন, মিডিয়াগুলো ওই সময় যদি সত্যি ঘটনা তুলে ধরতো তাহলে পুলিশের এই অবস্থা হয় না। মিডিয়া বারবার বলেছে কিছুই হয়নি। কিন্তু বিবিসিতে আমি সব দেখেছি।

তিনি বলেন, টকশোতে জ্ঞান-গর্ভ কোনো আলোচনা হয় না। মিডিয়া সঠিক তথ্য তুলে ধরেন। একটা দেশ তখনই ডোবে যখন মিডিয়া সত্যি কথা বলে না।

স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা আরও বলেন, সাবেক তথ্যপ্রতিমন্ত্রী লেখাপড়া জানা লোক কিন্তু তিনি ছাত্রদের বললেন দুষ্কৃতকারী। এসবের বিচার হওয়া উচিত। মিডিয়ার মালিকদেরও বিচার হওয়া উচিত।

এখন থেকে পুলিশকে আর রাজনৈতিক কাজে ব্যবহারের কোনো সুযোগ নেই জানিয়ে স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা বলেন, পুলিশকে আর রাজনৈতিক কাজে ব্যবহার করতে পারবে না। পুলিশ চলবে পুলিশ কমিশনে। আপনি পুলিশ কমিশনকে অর্ডার দেবেন, সেটা তারা ভালো হলে করবে।

সাখাওয়াত হোসেন আরও বলেন, পুলিশকে যারা ব্যবহার করেছেন তাদেরকে ধরেন। আমি মনে করি যারা হুকুমদাতা তাদের ধরেন। তারা অবশ্যই শাস্তির আওতায় আনতে হবে।

যেসব শিক্ষার্থী রাস্তায় ট্রাফিকের কাজ করছে তাদের তালিকা করে সবাইকে পুলিশের পক্ষ থেকে সার্টিফিকেট দেওয়া হবে বলে জানিয়ে তিনি বলেন, এই সার্টিফিকেট চাকরির ক্ষেত্রে যেন মূল্যায়ন হয়। আমি আইজিপিকে অনুরোধ করব, যেসব শিক্ষার্থী রাস্তায় ট্রাফিকের কাজ করছে তাদের তালিকা করে সবাইকে পুলিশের পক্ষ থেকে সার্টিফিকেট দেবেন। এই সার্টিফিকেট চাকরি ক্ষেত্রে যেন মূল্যায়ন হয়।

পুলিশ সদস্যরা নির্দিষ্ট সময়ে যোগ না দিলে ব্যবস্থা নেয়া হবে
এ উপদেষ্টা বলেন, শিক্ষার্থীরা নিজেদের টাকা খরচ করে সড়কে কাজ করছে, সড়ক পরিষ্কার করছে, রঙ দিয়ে দেওয়াল সুন্দর করছে। এটা যদি সরকারি প্রজেক্ট হতো তাহলে হাজার কোটি টাকা লাগত। একটা দেশে এর চেয়ে ভালো উদাহরণ আর হতে পারে না।

শিক্ষার্থীরা স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টার গাড়িও ধরেছে উল্লেখ করে এম সাখাওয়াত হোসেন বলেন, আমার গাড়ি থামিয়ে তারা বলেছে পতাকাওয়ালা গাড়ি। তারপর তারা বলছে পতাকা থাক আর যাই থাক গাড়ি চেক করব। এরপর আমাকে দেখে বললো, না স্যার আপনি চলে যান।

তিনি আরও বলেন, যেটা পুলিশ করতে পারত না সেটা তারা করছে। শিক্ষার্থীরা কোনো চাঁদা নেয় না। কোনো দোকানে গিয়ে বলে না খাবার দাও।

স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা আরও বলেন, আমি জনগণের কাছে এটুকু বলতে চাই- আপনারা কেউ পুলিশের গায়ে হাত দেবেন না। এখন আপনারাই ভুক্তভোগী হচ্ছেন। যদি ডাকাতি হয়, পুলিশ না থাকলে কি করার আছে? আমি বলব বৃহস্পতিবারের মধ্যে আপনারা (পুলিশ) কর্মস্থলে যোগদান করেন। এটা এখন আমার নাম্বার ওয়ান প্রায়োরিটি।

আমার দুই নাম্বার প্রায়োরিটি হচ্ছে, একটু আগে দেখলাম আনসারের একটি অংশ রাস্তা বন্ধ করে দিয়েছে। তাদেরও কিছু দাবি দেওয়া আছে। সবারই দাবি-দাওয়া আছে, আমারও কিছু দাবি দেওয়া আছে। আমার দাবী হচ্ছে, আপনারা ফিরে যান। আমি কথা দিচ্ছি, স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা হিসেবে আমার দায়িত্ব হচ্ছে আপনাদের কাছে আসা, আপনাদের কথা শোনা। আমার পক্ষে তাৎক্ষণিক যা করা সম্ভব আমি তা করব। আপনারা দয়া করে রাস্তা ছেড়ে দেন। অন্যান্য ফোর্স বা বাহিনী যারা আছে, প্রত্যেক বাহিনীর সাথে আমি কথা বলব। সবাই আমার পরিচিত, আমি যা বলব তাই করার চেষ্টা করব। আমি পলিটিশিয়ান না যে এখন এক কথা বলব বিকেলে আরেক কথা বলব।