নারায়ণগঞ্জ জেলা প্রতিনিধি :
নারায়ণগঞ্জের আড়াইহাজার উপজেলায় চাঁদা তুলতে গিয়ে গণপিটুনিতে সোহেল আহমেদ (৩২) নামের এক ইউনিয়ন পরিষদ (ইউপি) সদস্য নিহত হয়েছেন।
সোমবার (২৯ সেপ্টেম্বর) সকাল সাড়ে ৯টার দিকে উপজেলার ব্রাহ্মন্দী ইউনিয়নের বালিয়াপাড়া স্ট্যান্ড বটতলা এলাকায় এ ঘটনা ঘটে।
নিহত সোহেল ব্রাক্ষন্দী ইউনিয়নের ৩ নম্বর ওয়ার্ডের সদস্য এবং বালিয়াপাড়া গ্রামের বাসিন্দা মকবুল হোসেনের ছেলে। তিনি স্থানীয়ভাবে আওয়ামী লীগের রাজনীতির সঙ্গে জড়িত ছিলেন। তার বিরুদ্ধে হত্যা, চাঁদাবাজি, ডাকাতি, অস্ত্রসহ প্রায় ১২-১৩টি মামলা রয়েছে।
স্থানীয় সূত্রে জানা গেছে, সকালে সোহেল অজ্ঞাত তিনজন সহযোগীকে নিয়ে বালিয়াপাড়া এলাকার মৃত হাফেজ সাহেবের ছেলে শরিফের বাড়িতে চাঁদা আদায়ের জন্য যায়। এ সময় শরিফের পরিবারের লোকজনের সঙ্গে সোহেলের বাগবিতণ্ডা হয়। একপর্যায়ে শরিফের পরিবার স্থানীয়দের সহায়তায় সোহেলকে আটক করে এবং গ্রামবাসীকে খবর দেয়। খবর ছড়িয়ে পড়লে উত্তেজিত গ্রামবাসী ঘটনাস্থলে জড়ো হয়ে সোহেলকে হাত-পা বেঁধে মারধর শুরু করে। এতে তিনি গুরুতর আহত হন এবং ঘটনাস্থলেই মারা যান। এ সময় তার সঙ্গে থাকা তিন সহযোগী পালিয়ে যায়। সংবাদ পেয়ে আড়াইহাজার থানা পুলিশ ঘটনাস্থলে পৌঁছে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনে এবং লাশের সুরতহাল রিপোর্ট তৈরি করে। মরদেহ নারায়ণগঞ্জ সরকারি ভিক্টোরিয়া হাসপাতালের মর্গে পাঠানো হয়েছে।
আড়াইহাজার থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) খন্দকার নাসিরউদ্দিন বলেন, বিগত দিনে ইউপি সদস্য সোহেল স্থানীয় এলাকাবাসীর ওপর অনেক অত্যাচার-নির্যাতন করেছিল। এতে এলাকাবাসী ক্ষিপ্ত ছিল। তার বিরুদ্ধে হত্যা, ডাকাতি, চাঁদাবাজি, অস্ত্রসহ নানা অভিযোগে একাধিক মামলা রয়েছে। কয়েকদিন আগেও বিক্ষুব্ধ এলাকাবাসী তার বাড়িতে আগুন ধরিয়ে দেয়।
তিনি আরও বলেন, আমরা সংবাদ পেয়ে ঘটনাস্থলে গিয়ে নিহতের মরদেহ উদ্ধার করি। তবে কি কারণে তাকে মারা হলো বিষয়টা এখনও জানা যায়নি। প্রাথমিকভাবে ধারণা করা হচ্ছে, চাঁদাবাজির অভিযোগকে কেন্দ্র করে এ হত্যাকাণ্ড ঘটেছে। পরিস্থিতি বর্তমানে শান্ত রয়েছে এবং আইনশৃঙ্খলা বাহিনী এলাকায় টহল দিচ্ছে। এ বিষয়ে স্থানীয়দের সঙ্গে কথা বলে বিস্তারিত জানা হচ্ছে এবং ঘটনার পেছনে অন্য কোনো কারণ আছে কিনা তা খতিয়ে দেখা হচ্ছে। এ ঘটনায় আইনগত ব্যবস্থা প্রক্রিয়াধীন রয়েছে।
প্রসঙ্গত, সোহেল আড়াইহাজারের শীর্ষ সন্ত্রাসী ও মাদক কারবারি হিসেবে পরিচিত ছিলেন। র্যাবের তথ্য অনুযায়ী, তার বিরুদ্ধে সন্ত্রাস, মাদক, অপহরণ, চুরি ও হত্যা চেষ্টাসহ অন্তত ১৪-১৫টি মামলা রয়েছে। গত ১৩ জুন কুমিল্লার দাউদকান্দি ব্রিজ টোল প্লাজা এলাকায় অভিযান চালিয়ে র্যাব-১১ তাকে সহযোগী ফজলুল হক ফজুসহ গ্রেপ্তার করেছিল।