চাঁদপুর জেলা প্রতিনিধি :
জাতীয় নাগরিক পার্টির (এনসিপি) কেন্দ্রীয় মুখ্য সংগঠক (দক্ষিণাঞ্চল) হাসনাত আবদুল্লাহ বলেন, যারা পাড়া মহল্লায় রমরমা চাঁদাবাজির সঙ্গে জড়িত, তাদের সঙ্গে জোট করে নির্বাচন করার চাইতে মরে যাওয়া অনেক ভালো। বিএনপি অনেক কষ্ট করে দলটা টিকিয়ে রেখেছে। বিএনপির অনেক নেতাকর্মী তাদের নেতাদের মাধ্যমে কোনঠাসা হয়ে রয়েছে। তারা অনেক সময় আমাদেরকে বলে তোমরা দেশটাকে সঠিক পথে নাও। আমাদের দলটাকে তারা ছিনতাই করে নিয়ে গেছে। আমরা রক্ত ও ঘাম দিয়ে আন্দোলন করেছি ভোটের অধিকার ও মানুষের স্বাধীনতার জন্য।
সোমবার (১০ নভেম্বর) রাতে চাঁদপুর জেলা শিল্পকলা একাডেমি মিলনায়তনে এনসিপি জেলা কমিটির সমন্বয় সভায় প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এসব কথা বলেন।
হাসনাত আবদুল্লাহ বলেন, বিএনপির মধ্যে অনেক ভালো মানুষ রয়েছে যারা কোন অপরাধমূলক কাজে জড়িত নেই। তাদেরকে আমরা আমাদের দলে নিয়ে নিব। যারা জিয়াউর রহমান আদর্শকে বিশ্বাস করে তারা কখনো চাঁদাবাজি করতে পারে না।
তিনি বলেন, সামনে নির্বাচন বানচালের জন্য নানা ধরনের চক্রান্ত চলছে। নির্বাচন সুষ্ঠু করার রাজনৈতিক দায় আমাদের আছে, তা এড়িয়ে যাওয়া সম্ভব নয়। তাই সবাইকে ঐক্যবদ্ধভাবে কাজ করতে হবে। এনসিপি একাধিকবার মিডিয়া প্রপাগান্ডার শিকার হয়েছে, তবে আমরা সবসময় সত্য তুলে ধরেছি। আমাদের বিরুদ্ধে প্রচার করা হয়েছিল, আমরা নাকি ২০টি আসনের মন্ত্রী পদে জোট করেছি। কিন্তু আমরা শুরু থেকেই বলেছি, এনসিপি স্বতন্ত্রভাবে নির্বাচন করবে। কেউ আমাদের সঙ্গে আসতে চাইলে তাকে অবশ্যই সংস্কারপন্থী হতে হবে। যারা সংস্কারে বিশ্বাস করে, বাংলাদেশে বিশ্বাস করে, জুলাই সনদে বিশ্বাস করে, চাঁদাবাজ ও সন্ত্রাসবাদের বিরুদ্ধে অবস্থান নেয় তাদের নিয়েই আমরা জোট করব।
নিজ দল সম্পর্কে হাসনাত বলেন, অনেকেই এখন চায়ের দোকানে বসে মশকরা করে এনসিপি করেন, ভোটের পর আর খবর থাকবে না। আমি তাদেরকে বলব- ভালো কাজ অল্প সংখ্যক লোক দিয়েই শুরু হয়। অনেক সময় বলা হয়- সমাজে যারা সংখ্যায় বেশি তারাই কল্যাণকামী, এটা ভুল। কল্যাণকামীরা সবসময়ই কম সংখ্যক হয়। হাসিনার সময় যারা লড়াই সংগ্রাম করেছেন, তাদের সংখ্যাও কম ছিল।
দলের নেতাকর্মীর উদ্দেশ্যে এনপিপির এই নেতা বলেন, আপনারা অনেকেই কোরাম করছেন। আজকে দেখা যাচ্ছে এই জেলার ৮ উপজেলায় যে জনপ্রতিনিধি দরকার সেই পরিমাণ লোক এখানে উপস্থিত হয়নি। তাহলে কিভাবে আপনারা কাজ করবেন। কোরাম করা লোকদেরকে আমাদের প্রয়োজন নেই। ভালো ১০ জন দিয়ে এনসিপির কমিটি হবে।
জাতীয় সংসদ নির্বাচন সম্পর্কে তিনি বলেন, আমরা দেখছি ভালো নির্বাচন হবে। তবে অনেকেই ব্যালট না নিয়ে বুলেট বেছে নিয়েছেন। তারা ভাবছেন বুলেটের ভয় দেখিয়ে দেশের মানুষকে ফ্যাসিবাদী শাসনের মত নিয়ে যেতে পারবে। ইতোমধ্যে এনসিপির বিষয়ে তারা বাড়ি বাড়ি গিয়ে বলছেন, যদি এনসিপিতে ভোট দেন, তাহলে নির্বাচনের পরে খবর আছে। আমরা জনগণকে আশ্বস্ত করতে চাই- যারা ভয় পায়, তারাই জনগণকে ভয় দেখান। যারা ভয় দেখায়, তারা অতি নিকটবর্তী ক্ষতির মধ্যে আছেন। যারা সাহসি মানুষ তারা ভয় দেখান না, তারা মানুষের সঙ্গে মিলেমিশে কাজ করেন। একটি দল এখন অস্তিত্ব সংকটে ভুগছে।
এদিন এ অনুষ্ঠানে বিশেষ অতিথি হিসেবে বক্তব্য দেন কেন্দ্রীয় যুগ্ম মুখ্য সংগঠক ও কুমিল্লা বিভাগীয় সাংগঠনিক সম্পাদক মো. আতাউল্লাহ, কেন্দ্রীয় যুগ্ম সদস্য সচিব মুহাম্মদ মিরাজ মিয়া, কেন্দ্রীয় যুগ্ম মুখ্য সংগঠক মো. আরিফ তালুকদার, কেন্দ্রীয় যুগ্ম মুখ্য সমন্বয়ক ও কুমিল্লা অঞ্চল তত্ত্বাবধায়ক নাভিদ নাওরোজ শাহ্, কেন্দ্রীয় যুগ্ম মুখ্য সমন্বয়ক মো. মাহবুব আলম এবং কেন্দ্রীয় সদস্য মো. সাইফুল ইসলাম।
সভায় সভাপতিত্ব করেন জেলা জাতীয় নাগরিক পার্টির প্রধান সমন্বয়কারী মো. মাহবুব আলম এবং সঞ্চালনায় ছিলেন জেলা জাতীয় ছাত্রশক্তি নেতা মো. সাগর হোসেন।
সভায় বক্তারা জাতীয় নাগরিক পার্টির সাংগঠনিক কার্যক্রম আরও গতিশীল করার আহ্বান জানান এবং দলের কর্মীদের ঐক্যবদ্ধভাবে কাজ করার ওপর গুরুত্বারোপ করেন।
চাঁদপুর জেলা প্রতিনিধি 





















