চাঁদপুর জেলা প্রতিনিধি :
চাঁদপুরে রেল যোগাযোগের ঐতিহ্য শত বছরেরও বেশি পুরানো। একসময় এই জেলা ছিল নদী ও রেল দুই পথেরই অন্যতম ব্যস্ত সংযোগস্থল। কিন্তু বর্তমানে যাত্রী চাহিদা থাকলেও ট্রেনের স্বল্পতা, পুরানো ইঞ্জিন ও মানহীন বগির কারণে ধীরে ধীরে গতি হারাচ্ছে চাঁদপুরের রেল যোগাযোগ ব্যবস্থা।
ব্রিটিশ আমল থেকেই চাঁদপুর ছিল রেল যোগাযোগের অন্যতম কেন্দ্র। একসময় চাঁদপুর থেকে ভৈরব, সিলেট ও চট্টগ্রাম পর্যন্ত একাধিক ট্রেন চলাচল করত। দেশভাগের পরও এই ধারা অব্যাহত ছিল। তবে এখন শুধুমাত্র চাঁদপুর-চট্টগ্রাম রুটে (লাকসাম হয়ে) প্রতিদিন সকালে ও বিকেলে দুটি ট্রেন চলাচল করছে।
চাঁদপুর থেকে লাকসাম পর্যন্ত ৫২ কিলোমিটার পথে রয়েছে ১২টি স্টেশন। এসব স্টেশনে প্রতিদিন শত শত যাত্রী উঠানামা করেন। কিন্তু মানসম্মত বগি না থাকায় যাত্রীরা ভোগান্তির শিকার হচ্ছেন। ট্রেনের সংখ্যা সীমিত হওয়ায় স্টেশনে ঘণ্টার পর ঘণ্টা অপেক্ষা করতে হচ্ছে অনেক যাত্রীকে।
একজন যাত্রী বলেন, চাঁদপুর থেকে চট্টগ্রাম বা সিলেটে যাতায়াতের জন্য রেলই সবচেয়ে নিরাপদ ও সাশ্রয়ী। কিন্তু ট্রেনের সংখ্যা এত কম যে, ভ্রমণের পরিকল্পনা করলেই সমস্যায় পড়তে হয়।
চাঁদপুর বড়স্টেশনের প্রধান স্টেশন মাস্টার মারুফ হোসেন বলেন, যাত্রীচাপ প্রতিদিনই বাড়ছে। চাঁদপুর-চট্টগ্রাম রুটের পাশাপাশি সিলেট রুটেও আবার ট্রেন চালুর দাবি উঠেছে। আলাদাভাবে এই দুটি রুটে ট্রেনের চাহিদা অনেক বেশি।
রেল সংকট ও যাত্রী দুর্ভোগের বিষয়টি স্বীকার করে জেলা প্রশাসন জানিয়েছে, রেল মন্ত্রণালয়কে ইতোমধ্যে চিঠি দেয়া হয়েছে।
চাঁদপুরের জেলা প্রশাসক মোহাম্মদ মোহসীন উদ্দিন বলেন, শুধু ট্রেনের সংখ্যা বাড়ানো নয়, পুরানো লাইন ও স্টেশনগুলো দ্রুত সংস্কারের জন্যও নির্দেশনা দেয়া হয়েছে। আশা করছি, শিগগিরই ইতিবাচক পরিবর্তন দেখা যাবে।
বর্তমানে চাঁদপুর-চট্টগ্রাম রুটে আন্তঃনগর মেঘনা এক্সপ্রেস (ভোর ৫টা) ও সাগরিকা কমিউটার (দুপুর ২টা) দুটি ট্রেন চলাচল করছে। তবে যাত্রীচাপ ও দূরপাল্লার চাহিদা বিবেচনায় স্থানীয়দের দাবি, চাঁদপুর থেকে সিলেট ও ভৈরবগামী ট্রেন পুনরায় চালু করা হোক।
রেললাইন সংস্কার, ইঞ্জিন ও কোচ উন্নয়ন এবং নতুন রুট চালু না হলে চাঁদপুরের শতবর্ষী রেল ঐতিহ্য আরও সংকটে পড়বে বলে আশঙ্কা করছেন স্থানীয়রা।