নিজস্ব প্রতিবেদক :
জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের (জাবি) এক ছাত্রীকে চলন্ত বাস থেকে ধাক্কা দিয়ে ফেলে দেওয়ার অভিযোগে ঢাকা-আরিচা মহাসড়কে চলাচলকারী ‘রাজধানী পরিবহনের’ ২৮টি বাস আটকে রেখেছে বিশ্ববিদ্যালয়ের একদল শিক্ষার্থী।
মঙ্গলবার (২ সেপ্টেম্বর) সন্ধ্যা ৭টার দিকে বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রধান ফটক (ডেইরি গেট) সংলগ্ন ঢাকা-আরিচা মহাসড়কে এ ঘটনা ঘটে।
ভুক্তভোগী শিক্ষার্থীর নাম হালিমা আক্তার। তিনি লোকপ্রশাসন বিভাগের ৫০তম ব্যাচের শিক্ষার্থী।
তিনি জানান, টিউশন শেষে সাভার থানা স্ট্যান্ড থেকে রাজধানী পরিবহনের একটি বাসে উঠতে গেলে হেলপার তাকে ওঠাতে চাননি। জোর করে বাসে ওঠার পর চালক ও হেলপার তাকে গালিগালাজ করেন। পরে বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রধান ফটক সংলগ্ন ডেইরি গেটে নামার সময় ওই হেলপার তাকে ধাক্কা দিলে তিনি রাস্তায় পড়ে গিয়ে গুরুতর আহত হন।
ঘটনার পর সহপাঠীরা তাকে প্রথমে বিশ্ববিদ্যালয় মেডিকেলে নিয়ে প্রাথমিক চিকিৎসা দেন। পরে উন্নত চিকিৎসার জন্য তাকে সাভারের এনাম মেডিকেলে নিয়ে যাওয়া হয়।
ভুক্তভোগী শিক্ষার্থী হালিমা খাতুন বলেন, গতকাল সন্ধ্যায় আমি টিউশনি শেষ করে পাকিজা থেকে বাস উঠতে চেয়েছিলাম। বাসের হেলপার আমাকে জিজ্ঞেস করে, কোথায় যাবো? আমি বলি, জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয় যাবো। জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের নাম শুনে আমাকে বাসে উঠাতে অস্বীকৃতি জানায়। এক পর্যায়ে বাসে উঠি কিন্তু নামার সময় চলমান বাস থেকে আমাকে ধাক্কা দিয়ে ফেলে দেয় হেলপার। রাস্তায় পড়ে গিয়ে আমি পায়ে প্রচণ্ড ব্যথা পেয়েছি। এ ঘটনায় আরও খারাপ কিছু ঘটতে পারতো।
এ বিষয়ে ভুক্তভোগীর এক সহপাঠী বলেন, যে হেলপার আপুকে ধাক্কা দিয়েছে তাকে ক্ষমা চাইতে হবে এবং পরিবহন কর্তৃপক্ষকে লিখিত মুচলেকা দিতে হবে যেন আর কোনো শিক্ষার্থীর সঙ্গে এ ধরনের আচরণ না করে। এছাড়া আমরা হালিমার চিকিৎসার জন্য ক্ষতিপূরণ দাবি করছি।
রাজধানী পরিবহনের এক কর্মকর্তা বলেন, শুনেছি আমাদের একটি বাস এক শিক্ষার্থীকে ধাক্কা দিয়েছে। এর পর শিক্ষার্থীরা কয়েকটি বাস আটকে রেখেছে। আমরা ঘটনার সঙ্গে জড়িত হেলপারকে শনাক্ত করার চেষ্টা করছি।
বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রক্টর অধ্যাপক রাশিদুল আলম বলেন, একজন মানুষকে বাস থেকে ধাক্কা দিয়ে ফেলে দেওয়া অত্যন্ত ন্যাক্কারজনক ঘটনা। গতকাল আমাদের শিক্ষার্থীদের সাথে হয়েছে সেটি অত্যন্ত অমানবিক। আমার সাথে এরইমধ্যে বাস মালিকের সাথে কথা হয়েছে। বুধবার (৩ সেপ্টেম্বর) বাসের মালিকপক্ষ আসবে বলে জেনেছি। তারা এলে আলোচনা করে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়া হবে।