চট্টগ্রাম জেলা প্রতিনিধি :
কোনো অপ্রীতিকর ঘটনা ছাড়াই চট্টগ্রাম-৮ আসনের উপ-নির্বাচনে ভোটগ্রহণ অনুষ্ঠিত হয়েছে। এ উপ-নির্বাচনে আওয়ামী লীগ মনোনীত প্রার্থী নোমান আল মাহমুদ (নৌকা) বেসরকারিভাবে নির্বাচিত হয়েছেন। তিনি পেয়েছেন ৬৭ হাজার ২০৫ ভোট। তার নিকটতম প্রতিদ্বন্দ্বী বাংলাদেশ ইসলামী ফ্রন্টের প্রার্থী স উ ম আবদুস সামাদ (মোমবাতি) পেয়েছেন ৫ হাজার ৮৭ ভোট।
বৃহস্পতিবার (২৭ এপ্রিল) রাত সোয়া আটটার দিকে নগরের এমএ আজিজ স্টেডিয়ামের জিমনেশিয়ামে স্থাপিত নির্বাচন কমিশনের অস্থায়ী নির্বাচনি ফলাফল সংগ্রহ ও তথ্য পরিবেশ কেন্দ্র থেকে রিটার্নিং কর্মকর্তা ও চট্টগ্রাম আঞ্চলিক নির্বাচন কর্মকর্তা মো. হাসানুজ্জামান ফল ঘোষণা করেন। এ আসনে ভোটার ৫ লাখ ১৭ হাজার ৯৫২ জন। কেন্দ্র ছিল ১৯০টি। এ আসনে আওয়ামী লীগের সংসদ সদস্য মোছলেম উদ্দিন আহমদ গত ৬ ফেব্রুয়ারি মারা গেলে আসনটি শূন্য হয়। তিনিও নৌকা প্রতীক নিয়ে জয়ী হয়েছিলেন।
একতারা প্রতীকের প্রার্থী মীর মোহাম্মদ রমজান আলী পেয়েছেন ৪৮০ ভোট, আম প্রতীকের প্রার্থী কামাল পাশা ৬৭৩ ভোট এবং চেয়ার প্রতীকে সৈয়দ মোহাম্মদ ফরিদ উদ্দিন ১ হাজার ৮৬০ ভোট।
ফল ঘোষণার সময় জিমনেশিয়ামে চট্টগ্রাম মহানগর আওয়ামী লীগের সহ-সভাপতি অ্যাডভোকেট ইব্রাহিম হোসেন বাবুলসহ নগর আওয়ামী লীগের শীর্ষ নেতারা উপস্থিত ছিলেন।
এদিকে নির্বাচনে অনিয়মের অভিযোগ এনে পুনরায় নির্বাচন দাবি করেছেন বাংলাদেশ ইসলামী ফ্রন্টের প্রার্থী স উ ম আবদুস সামাদ এবং ন্যাশনাল পিপলস পার্টির প্রার্থী কামাল পাশা।
ইসলামী ফ্রন্টের প্রার্থী স উ ম আবদুস সামাদ বলেন, অভিযোগ গ্রহণ করার পরও রিটার্নিং অফিসার কোনো কার্যকর পদক্ষেপ গ্রহণ করেননি। তাই এ নির্বাচনের ফলাফল স্থগিত রাখার দাবি জানাচ্ছি।
অপরদিকে ন্যাশনাল পিপলস পার্টির প্রার্থী কামাল পাশা বলেন, এ নির্বাচন সুষ্ঠু ও গ্রহণযোগ্য হয়নি। আমি নির্বাচন বর্জন করিনি। এ আসনে পুনরায় নির্বাচনের দাবি করছি।
রিটার্নিং কর্মকর্তা মোহাম্মদ হাসানুজ্জামান বলেন, নির্বাচনে ৭৫ হাজার ৩০৫ ভোট পড়েছে। যা মোট ভোটারের ১৪ দশমিক ৫৫ শতাংশ। কোনও ভোট বাতিল হয়নি।
তিনি বলেন, ১৯০ কেন্দ্রের এক হাজার ৪১৪ কক্ষে ভোটগ্রহণ অনুষ্ঠিত হয়। বড় ধরনের কোনও অপ্রীতিকর ঘটনা ঘটেনি। সুষ্ঠুভাবে ভোটগ্রহণ সম্পন্ন হয়েছে।
নির্বাচন অফিস সূত্র জানায়, এই আসনে মোট ভোটার পাঁচ লাখ ১৭ হাজার ৬৫২ জন। এর মধ্যে পুরুষ দুই লাখ ৬৩ হাজার ৫৪৩ এবং নারী ভোটার দুই লাখ ৫৪ হাজার ১০৯ জন।
গত ৫ ফেব্রুয়ারি সংসদ সদস্য মোছলেম উদ্দিন আহমদের মৃত্যুতে চট্টগ্রাম-৮ আসনটি শূন্য হয়। এর আগে ২০২০ সালে মঈন উদ্দীন খান বাদলের মৃত্যুতে আসনটি শূন্য হয়েছিল। সেবার উপনির্বাচনে মোছলেম উদ্দিন আহমদ সংসদ সদস্য নির্বাচিত হন।
এ আসনটি এর আগেও একবার শূন্য হয়েছে ২০১৯ সালে। মহাজোটের শরিক হিসেবে জাতীয় সমাজতান্ত্রিক দল (জাসদ) নেতা মইন উদ্দিন খান বাদল ২০১৮ সালে সংসদ সদস্য নির্বাচিত হন। তিনি ২০১৯ সালের ৭ নভেম্বর মৃত্যুবরণ করেন। পরে ২০২০ সালের ১৩ জানুয়ারির উপ-নির্বাচনে জয়ী হয়ে সংসদে এসেছিলেন মোছলেম উদ্দিন আহমদ।