চট্টগ্রাম জেলা প্রতিনিধি :
চট্টগ্রামে শুক্রবার (১৯ জানুয়ারি) সকাল থেকে যান্ত্রিক ত্রুটির কারণে আমদানিকৃত গ্যাস সরবরাহ বন্ধ হয়ে যাওয়ায় চট্টগ্রামে গ্যাস সরবরাহ পুরোপুরি বন্ধ হয়ে গেছে। হঠাৎ গ্যাস সরবরাহ বন্ধ হয়ে যাওয়ায় ব্যাপক ভোগান্তিতে পড়েছেন বাসা-বাড়ি ও কলকারখানার গ্রাহকেরা।
চট্টগ্রামে শুক্রবার (১৯ জানুয়ারি) সকাল থেকে গ্যাস সরবরাহ পুরোপুরি বন্ধ রয়েছে। কর্ণফুলী গ্যাস বিতরণ কোম্পানি লিমিটেড (কেজিডিসিএল) কর্তৃপক্ষ আগে থেকে কোনো বিজ্ঞপ্তি প্রচার না করায় গ্রাহকদের পোহাতে হচ্ছে ব্যাপক ভোগান্তি। গ্যাস বন্ধ থাকায় অনেকেই খাবারের দোকানে লাইন দিয়েছেন। কিন্তু বহু রেস্তোরাঁও মেলেনি খাবার।
গ্যাস না থাকায় বিপাকে পড়েছে চট্টগ্রাম কেন্দ্রীয় কারাগারের সাড়ে পাঁচ হাজার বন্দি। এ প্রসঙ্গে চট্টগ্রাম কেন্দ্রীয় কারাগারের সিনিয়র জেলা সুপার (ভারপ্রাপ্ত) মুহাম্মদ মঞ্জুর হেসেন বলেন, চট্টগ্রাম কারাগারে সকাল থেকে গ্যাস নেই। কারাগারে বন্দি আছে সাড়ে পাঁচ হাজার। গ্যাস না থাকায় বিকল্প উপায়ে লাকড়ির চুলা ব্যবহার করে রান্না করতে হচ্ছে।
নগরীর মুরাদপুর এলাকার বাসিন্দা মোরশেদ আলম জানান, সকালে ঘুম থেকে উঠে দেখি চুলা জ্বলছে না। দুপুরের খাবার হোটেল থেকে কিনে আনতে হয়েছে। রাতে কী হয় তা বুঝতে পারছি না। এমনিতেই গত কয়েক মাস ধরে নগরীতে গ্যাসের সমস্যা লেগেই আছে।
এদিকে হঠাৎ গ্যাস সরবরাহ বন্ধ হওয়ায় ফিলিং স্টেশনগুলোতেও মিলছে না গ্যাস। এ নিয়ে সংকট তৈরি হয়েছে সিএনজিচালিত অটোরিকশার চলাচলেও। সকাল ১০টায় চট্টগ্রামে পুরোপুরি গ্যাস সরবরাহ বন্ধ হয়ে যাওয়ার বিষয়টি গণমাধ্যমকে নিশ্চিত করেছেন কর্ণফুলী গ্যাস বিতরণ কোম্পানি লিমিটেডের (কেজিডিসিএল) মহাব্যবস্থাপক আমিনুর রহমান।
তিনি জানান, তরলীকৃত প্রাকৃতিক গ্যাস (এলএনজি) আমদানি করে চট্টগ্রামে সরবরাহ করা হয়। আমদানি করা এলএনজি রূপান্তর করে পাইপলাইনে সরবরাহের জন্য কক্সবাজারের মহেশখালীতে দুটি ভাসমান টার্মিনাল আছে। এর মধ্যে মার্কিন কোম্পানি এক্সিলারেট এনার্জির টার্মিনালটি গত ১ নভেম্বর থেকে বন্ধ রয়েছে। এটি গতকাল চালু হওয়ার কথা ছিল। কিন্তু চালু করা যায়নি। এছাড়া পেছনের গতি বা ব্যাক প্রেশার না থাকার কারণে সামিট এলএনজি টার্মিনালটিও গ্যাস সরবরাহ করতে পারছে না। এ কারণে চট্টগ্রামে গ্যাস সরবরাহ বন্ধ রয়েছে। আজ সারাদিন গ্যাস না পাওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে। কারণ, সামিটের টার্মিনালটি খালি করা হচ্ছিল। এটিও রক্ষণাবেক্ষণের কাজে যাওয়ার কথা আছে। সব মিলিয়ে কখন পরিস্থিতি ভালো হবে বলা যাচ্ছে না।
এছাড়া দেশের অন্যান্য এলাকায় শীতের কারণে গ্যাসের স্বল্প চাপ বিরাজ করছে বলেও জানায় পেট্রোবাংলা।
মহেশখালীর এলএনজি এফএসআরইউতে কারিগরি ত্রুটি দ্রুত মেরামতের লক্ষ্যে কাজ চলছে উল্লেখ করে ক্ষুদেবার্তায় পেট্রোবাংলা জানায়, জ্বালানি ও খনিজ সম্পদ বিভাগ, পেট্রোবাংলা এবং কোম্পানিসমূহ সার্বক্ষণিক তদারকি করছে। দেশীয় গ্যাস উৎপাদন ও সরবরাহ অব্যাহত রয়েছে।সম্মানিত গ্রাহকদের সাময়িক অসুবিধার জন্য আন্তরিকভাবে দুঃখিত।