Dhaka রবিবার, ১৩ জুলাই ২০২৫, ২৮ আষাঢ় ১৪৩২ বঙ্গাব্দ

ঘূর্ণিঝড় রিমাল: পায়রা ও মোংলায় ৭ নম্বর বিপদ সংকেত

নিজস্ব প্রতিবেদক : 

বঙ্গোপসাগরের সৃষ্ট গভীর নিম্নচাপটি ঘূর্ণিঝড়ে পরিণত হয়েছে। শনিবার (২৫ মে) সন্ধ্যা ৬টায় এটি ঘূর্ণিঝড় ‘রিমাল’ এ রূপ নেয়। এ অবস্থায় মোংলা ও পায়রা সমুদ্রবন্দরকে ৭ নম্বর বিপৎসংকেত দেখাতে বলা হয়েছে।

শনিবার (২৫ মে) সন্ধ্যা ছয়টার দিকে আবহাওয়া অধিদফতরের আবহাওয়াবিদ মো. তরিফুল নেওয়াজ কবির এই তথ্য জানিয়েছেন।

এই আবহাওয়াবিদ গণমাধ্যমকে বলেন, সন্ধ্যা ছয়টার দিকেই ঘূর্ণিঝড় রেমাল সৃষ্টি হয়। পায়রা ও মোংলা সমুদ্র বন্দরকে ৭ নম্বর বিপদ সংকেত দেখাতে বলা হয়েছে। চট্টগ্রাম ও কক্সবাজারকে ৬ নম্বর বিপদ সংকেত দেখাতে বলা হয়েছে।

তরিফুল নেওয়াজ কবির বলেন, ঘূর্ণিঝড়টি সন্ধ্যা ছয়টায় পায়রা সমুদ্র বন্দর থেকে ৩৬৫ কিলোমিটার, মোংলা থেকে ৪০৫ কিলোমিটার, কক্সবাজার থেকে ৪০০ কিলোমিটার এবং চট্টগ্রাম সমুদ্র বন্দর থেকে ৪৫৫ কিলোমিটার দূরে ছিল।

বিডব্লিউওটি জানিয়েছে, ঘূর্ণিঝড়টির সর্বোচ্চ শক্তিমাত্রা হতে পারে ক্যাটাগরি-১ এবং এটি ঘণ্টায় ১৩৫ কিলোমিটারের বেশি গতিবেগ পাবে না বলে ধারণা করা হচ্ছে। তবে আশঙ্কার ব্যাপার হচ্ছে এটি তার পূর্ণ শক্তিতে উপকূল অতিক্রম করতে পারে। যদিও দমকা বা ঝোড়ো বাতাসের বেগ আরও কিছুটা বেশি থাকতে পারে।

এদিকে আবহাওয়াবিদ ড. মুহাম্মদ আবুল কালাম মল্লিক জানিয়েছেন, ঝুঁকি বিবেচনায় পায়রা ও মোংলা সমুদ্রবন্দরকে ৭ নম্বর বিপৎসংকেত এবং চট্টগ্রাম সমুদ্রবন্দর ও কক্সবাজারকে ৬ নম্বর বিপৎসংকেত দেখাতে বলা হয়েছে।

তিনি জানান, পূর্বমধ্য বঙ্গোপসাগর ও তৎসংলগ্ন পশ্চিমমধ্য বঙ্গোপসাগর এলাকায় অবস্থানরত গভীর নিম্নচাপটি উত্তর দিকে অগ্রসর ও ঘনীভূত হয়ে বর্তমানে উত্তরপশ্চিম বঙ্গোপসাগর ও তৎসংলগ্ন এলাকায় ঘূর্ণিঝড় ‘রিমাল’ এ পরিণত হয়েছে। এটি আজ সন্ধ্যা ৬টায় চট্টগ্রাম সমুদ্রবন্দর থেকে ৪৫৫ কি.মি. দক্ষিণপশ্চিমে, কক্সবাজার সমুদ্রবন্দর থেকে ৪০০ কি.মি. দক্ষিণপশ্চিমে, মোংলা সমুদ্র বন্দর থেকে ৪০৫ কি.মি. দক্ষিণে এবং পায়রা সমুদ্রবন্দর থেকে ৩৬৫ কি.মি. দক্ষিণে অবস্থান করছিল। এটি আরও উত্তর দিকে অগ্রসর ও ঘনীভূত হতে পারে।

ঘূর্ণিঝড় কেন্দ্রের ৫৪ কি.মি. এর মধ্যে বাতাসের একটানা সর্বোচ্চ গতিবেগ ঘণ্টায় ৬২ কি.মি., যা দমকা অথবা ঝোড়ো হাওয়ার আকারে ৮৮ কি.মি. পর্যন্ত বৃদ্ধি পাচ্ছে। ঘূর্ণিঝড় কেন্দ্রের নিকটবর্তী এলাকায় সাগর খুবই উত্তাল রয়েছে।

পায়রা ও মোংলা সমুদ্রবন্দরকে ০৩ (তিন) নম্বর স্থানীয় সতর্ক সংকেত নামিয়ে তার পরিবর্তে ০৭ (সাত) নম্বর বিপৎসংকেত দেখাতে বলা হয়েছে।

চট্টগ্রাম ও কক্সবাজার সমুদ্রবন্দরকে ০৩ (তিন) নম্বর স্থানীয় সংকেত নামিয়ে তার পরিবর্তে ০৬ (ছয়) নম্বর বিপৎসংকেত দেখাতে বলা হয়েছে।

ঘূর্ণিঝড়ের প্রভাবে উপকূলীয় জেলা সাতক্ষীরা, খুলনা, বাগেরহাট, পিরোজপুর, ঝালকাঠী, বরগুনা, বরিশাল, ভোলা, পটুয়াখালী, নোয়াখালী, লক্ষ্মীপুর, ফেনী, কুমিল্লা, চট্টগ্রাম, কক্সবাজার এবং তাদের অদূরবর্তী দ্বীপ ও চরসমূহের নিম্নাঞ্চল স্বাভাবিক জোয়ারের চেয়ে ৩-৫ ফুট অধিক উচ্চতার বায়ু তাড়িত জলোচ্ছ্বাসে প্লাবিত হতে পারে।

ঘূর্ণিঝড়টির প্রভাবে রাজশাহী, রংপুর, ময়মনসিংহ, ঢাকা, খুলনা, বরিশাল, চট্টগ্রাম ও সিলেট বিভাগে দমকা/ঝোড়ো হাওয়াসহ ভারী (৪৪-৮৮ মিমি) থেকে অতিভারী (২৮৯ মিমি) বর্ষণ হতে পারে।

উত্তর বঙ্গোপসাগর ও গভীর সাগরে অবস্থানরত মাছ ধরার নৌকা ও ট্রলারসমূহকে পরবর্তী নির্দেশ না দেয়া পর্যন্ত নিরাপদ আশ্রয়ে থাকতে বলা হয়েছে।

জনপ্রিয় খবর

আবহাওয়া

মিটফোর্ড হত্যাকাণ্ড : আসামি টিটন গাজী ৫ দিনের রিমান্ডে

ঘূর্ণিঝড় রিমাল: পায়রা ও মোংলায় ৭ নম্বর বিপদ সংকেত

প্রকাশের সময় : ১০:৩৬:৪৪ অপরাহ্ন, শনিবার, ২৫ মে ২০২৪

নিজস্ব প্রতিবেদক : 

বঙ্গোপসাগরের সৃষ্ট গভীর নিম্নচাপটি ঘূর্ণিঝড়ে পরিণত হয়েছে। শনিবার (২৫ মে) সন্ধ্যা ৬টায় এটি ঘূর্ণিঝড় ‘রিমাল’ এ রূপ নেয়। এ অবস্থায় মোংলা ও পায়রা সমুদ্রবন্দরকে ৭ নম্বর বিপৎসংকেত দেখাতে বলা হয়েছে।

শনিবার (২৫ মে) সন্ধ্যা ছয়টার দিকে আবহাওয়া অধিদফতরের আবহাওয়াবিদ মো. তরিফুল নেওয়াজ কবির এই তথ্য জানিয়েছেন।

এই আবহাওয়াবিদ গণমাধ্যমকে বলেন, সন্ধ্যা ছয়টার দিকেই ঘূর্ণিঝড় রেমাল সৃষ্টি হয়। পায়রা ও মোংলা সমুদ্র বন্দরকে ৭ নম্বর বিপদ সংকেত দেখাতে বলা হয়েছে। চট্টগ্রাম ও কক্সবাজারকে ৬ নম্বর বিপদ সংকেত দেখাতে বলা হয়েছে।

তরিফুল নেওয়াজ কবির বলেন, ঘূর্ণিঝড়টি সন্ধ্যা ছয়টায় পায়রা সমুদ্র বন্দর থেকে ৩৬৫ কিলোমিটার, মোংলা থেকে ৪০৫ কিলোমিটার, কক্সবাজার থেকে ৪০০ কিলোমিটার এবং চট্টগ্রাম সমুদ্র বন্দর থেকে ৪৫৫ কিলোমিটার দূরে ছিল।

বিডব্লিউওটি জানিয়েছে, ঘূর্ণিঝড়টির সর্বোচ্চ শক্তিমাত্রা হতে পারে ক্যাটাগরি-১ এবং এটি ঘণ্টায় ১৩৫ কিলোমিটারের বেশি গতিবেগ পাবে না বলে ধারণা করা হচ্ছে। তবে আশঙ্কার ব্যাপার হচ্ছে এটি তার পূর্ণ শক্তিতে উপকূল অতিক্রম করতে পারে। যদিও দমকা বা ঝোড়ো বাতাসের বেগ আরও কিছুটা বেশি থাকতে পারে।

এদিকে আবহাওয়াবিদ ড. মুহাম্মদ আবুল কালাম মল্লিক জানিয়েছেন, ঝুঁকি বিবেচনায় পায়রা ও মোংলা সমুদ্রবন্দরকে ৭ নম্বর বিপৎসংকেত এবং চট্টগ্রাম সমুদ্রবন্দর ও কক্সবাজারকে ৬ নম্বর বিপৎসংকেত দেখাতে বলা হয়েছে।

তিনি জানান, পূর্বমধ্য বঙ্গোপসাগর ও তৎসংলগ্ন পশ্চিমমধ্য বঙ্গোপসাগর এলাকায় অবস্থানরত গভীর নিম্নচাপটি উত্তর দিকে অগ্রসর ও ঘনীভূত হয়ে বর্তমানে উত্তরপশ্চিম বঙ্গোপসাগর ও তৎসংলগ্ন এলাকায় ঘূর্ণিঝড় ‘রিমাল’ এ পরিণত হয়েছে। এটি আজ সন্ধ্যা ৬টায় চট্টগ্রাম সমুদ্রবন্দর থেকে ৪৫৫ কি.মি. দক্ষিণপশ্চিমে, কক্সবাজার সমুদ্রবন্দর থেকে ৪০০ কি.মি. দক্ষিণপশ্চিমে, মোংলা সমুদ্র বন্দর থেকে ৪০৫ কি.মি. দক্ষিণে এবং পায়রা সমুদ্রবন্দর থেকে ৩৬৫ কি.মি. দক্ষিণে অবস্থান করছিল। এটি আরও উত্তর দিকে অগ্রসর ও ঘনীভূত হতে পারে।

ঘূর্ণিঝড় কেন্দ্রের ৫৪ কি.মি. এর মধ্যে বাতাসের একটানা সর্বোচ্চ গতিবেগ ঘণ্টায় ৬২ কি.মি., যা দমকা অথবা ঝোড়ো হাওয়ার আকারে ৮৮ কি.মি. পর্যন্ত বৃদ্ধি পাচ্ছে। ঘূর্ণিঝড় কেন্দ্রের নিকটবর্তী এলাকায় সাগর খুবই উত্তাল রয়েছে।

পায়রা ও মোংলা সমুদ্রবন্দরকে ০৩ (তিন) নম্বর স্থানীয় সতর্ক সংকেত নামিয়ে তার পরিবর্তে ০৭ (সাত) নম্বর বিপৎসংকেত দেখাতে বলা হয়েছে।

চট্টগ্রাম ও কক্সবাজার সমুদ্রবন্দরকে ০৩ (তিন) নম্বর স্থানীয় সংকেত নামিয়ে তার পরিবর্তে ০৬ (ছয়) নম্বর বিপৎসংকেত দেখাতে বলা হয়েছে।

ঘূর্ণিঝড়ের প্রভাবে উপকূলীয় জেলা সাতক্ষীরা, খুলনা, বাগেরহাট, পিরোজপুর, ঝালকাঠী, বরগুনা, বরিশাল, ভোলা, পটুয়াখালী, নোয়াখালী, লক্ষ্মীপুর, ফেনী, কুমিল্লা, চট্টগ্রাম, কক্সবাজার এবং তাদের অদূরবর্তী দ্বীপ ও চরসমূহের নিম্নাঞ্চল স্বাভাবিক জোয়ারের চেয়ে ৩-৫ ফুট অধিক উচ্চতার বায়ু তাড়িত জলোচ্ছ্বাসে প্লাবিত হতে পারে।

ঘূর্ণিঝড়টির প্রভাবে রাজশাহী, রংপুর, ময়মনসিংহ, ঢাকা, খুলনা, বরিশাল, চট্টগ্রাম ও সিলেট বিভাগে দমকা/ঝোড়ো হাওয়াসহ ভারী (৪৪-৮৮ মিমি) থেকে অতিভারী (২৮৯ মিমি) বর্ষণ হতে পারে।

উত্তর বঙ্গোপসাগর ও গভীর সাগরে অবস্থানরত মাছ ধরার নৌকা ও ট্রলারসমূহকে পরবর্তী নির্দেশ না দেয়া পর্যন্ত নিরাপদ আশ্রয়ে থাকতে বলা হয়েছে।