Dhaka বৃহস্পতিবার, ২১ অগাস্ট ২০২৫, ৬ ভাদ্র ১৪৩২ বঙ্গাব্দ

ঘূর্ণিঝড় রিমালে যত ঘর ভেঙেছে, সেগুলো আমি করে দেব : প্রধানমন্ত্রী

পটুয়াখালী জেলা প্রতিনিধি : 

প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেন, ঘূর্ণিঝড় রিমালে যত মানুষের ঘর ভেঙে গিয়েছে, ক্ষতি হয়েছে সেগুলো সব আমি করে দেব।

বৃহস্পতিবার (৩০ মে) দুপুর পটুয়াখালীর কলাপাড়া পৌর শহরের সরকারি মোজাহার উদ্দিন বিশ্বাস ডিগ্রি কলেজ মাঠে ঘূর্ণিঝড় রিমালে ক্ষতিগ্রস্ত মানুষের উদ্দেশে ভাষণে তিনি এ কথা বলেন।

প্রধানমন্ত্রী বলেন, এ অঞ্চলের যত বাঁধের ক্ষতি হয়েছে সেগুলো পুনর্র্নিমাণের জন্য ইতিমধ্যে কাজ শুরু করেছি। যত মানুষের ঘর ভেঙে গিয়েছে ক্ষতি হয়েছে সেগুলো সব আমি করে দেব। ক্ষতিগ্রস্ত সবার হিসাব করা হচ্ছে, আজ বিকেলে সবাইকে নিয়ে বসব।

শেখ হাসিনা বলেন, ঘূর্ণিঝড় রেমালে ক্ষতিগ্রস্ত ঘরবাড়ি, রাস্তাঘাট, বাঁধ দ্রুত মেরামতে আওয়ামী লীগ সরকার কাজ করছে। ইতোমধ্যে যে সমস্ত রাস্তাঘাট ভেঙে গেছে, সেগুলো মেরামত করার ব্যবস্থা নেওয়া হয়েছে। পাশাপাশি যে বাঁধগুলো ভেঙে গেছে, সেগুলোও মেরামতের কাজ ইতোমধ্যে আমরা শুরু করে দিয়েছি। যাতে বর্ষার আগেই আমরা বাঁধগুলো নির্মাণ করে জলোচ্ছ্বাস বা পানির হাত থেকে মানুষকে বাঁচাতে পারি।

এবারের ঝড়-জলোচ্ছ্বাস খুবই অস্বাভাবিক হয়েছে উল্লেখ করে তিনি বলেন, আমি সাইক্লোন শেল্টার করেছি, সেখানে মানুষ আশ্রয় পেয়েছে। যারা গৃহহীন, তাদের দুর্যোগ সহনীয় ঘর করে দিয়েছি। যে কারণে মানুষ অন্তত আশ্রয়ের জায়গা পেয়েছে। পশুপাখি আশ্রয়ের ব্যবস্থা পেয়েছে। আমরা চাই দুর্যোগ থেকে এই এলাকার মানুষ যেন মুক্তি পায়। আমরা জানি, এই এলাকা সবসময়ই দুর্যোগপ্রবণ।

শেখ হাসিনা বলেন, আজ ধারাবাহিকভাবে গণতন্ত্র আছে বলেই দুযোগ-দুর্বিপাকে মানুষের পাশে দাঁড়াতে পারি। মানুষের আর্থ সামাজিক উন্নতি হয়। দেশের আর্থসামাজিক অগ্রগতি আপনারা নিজেরাই দেখতে পাচ্ছেন। রাস্তাঘাট, স্কুল, কলেজ করে দিয়ে আপনাদের যোগাযোগের ব্যবস্থা… বিদ্যুতের ব্যবস্থা সব করে দিয়েছি।

সরকারপ্রধান বলেন, দেশে ধারাবাহিক গণতন্ত্র আছে বলেই দুগর্ত মানুষের পাশে দাঁড়াতে পারছি। আশ্রয়কেন্দ্র নির্মাণ করা হয়েছে, যেনো প্রাকৃতিক দুর্যোগ থেকে মানুষ রেহাই পায়। ভেঙে যাওয়া বাঁধ ইতোমধ্যেই পুনঃনির্মাণ শুরু করে দিয়েছি, যাতে বন্যার আগেই নির্মাণকাজ শেষ হয়। উপকূলে দুর্যোগ সহনীয়নীয় ঘর তৈরি করে দেওয়া হয়েছে। যেখানে যেখানে আপনাদের ঘরবাড়ি ভেঙে গেছে সেটুকুও নতুন করে তৈরি তৈরি করে দেবো, আমার ওপর আস্থা রাখুন।

টানা চারবারের সরকারপ্রধান বলেন, আজকে ধারাবাহিকভাবে গণতন্ত্র আছে বলেই দুর্যোগ-দুর্বিপাকে আমরা মানুষের পাশে দাঁড়াতে পারি। ধারাবাহিকভাবে গণতন্ত্র আছে বলেই মানুষের আর্থ-সামাজিক উন্নতি হয়। দেশের উন্নতির বিষয়ে আজকে বলার কিছু নেই; আপনারা নিজেরাই জানেন। আমরা রাস্তা-ঘাট, পুল-ব্রিজ করে দিয়ে আপনাদের যোগাযোগের ব্যবস্থা, বিদ্যুতের ব্যবস্থা—সব করে দিয়েছি।

তিনি বলেন, এবার খুবই অস্বাভাবিক জলোচ্ছ্বাস হয়েছে। আমরা সাইক্লোন শেল্টার করেছি, সেখানে মানুষ নিরাপদে আশ্রয় পেয়েছে, দুর্যোগ সহনীয় ঘর ভূমিহীন-গৃহহীনদের মধ্যে বিতরণ করেছি। যে কারণে অন্তত মানুষ আশ্রয়ের জায়গা পেয়েছে। পশু-পাখির আশ্রয়ের ব্যবস্থা আমরা করে দিয়েছি। আমরা চাই, এই দুর্যোগ থেকে আমাদের এই অঞ্চলের মানুষ যেন মুক্তি পায়। আমরা জানি, এই অঞ্চলটা সব সময় দুর্যোগপ্রবণ।

আওয়ামী লীগ সভাপতি বলেন, মানুষের জীবনে যা চাহিদা অন্ন, বস্ত্র, বাসস্থান, চিকিৎসা, শিক্ষা তার ব্যবস্থা করার জন্য যা যা করার দরকার আওয়ামী লীগ সরকার করে যাচ্ছে।

বর্তমানে সরকারের নানা উদ্যোগ তুলে ধরে তিনি বলেন, এই অঞ্চলের সার্বিক উন্নয়ন আওয়ামী লীগ সরকার এসেছে বলেই সম্ভব হয়েছে। এর আগে তো অনেকেই ছিল। কেউ তো এদিকে দৃষ্টি দেয়নি! এই অঞ্চলের মানুষ প্রতিনিয়ত প্রকৃতির সঙ্গে যুদ্ধ করে বেঁচে থাকে। প্রতিনিয়ত জীবন যুদ্ধে লিপ্ত হয়। প্রাকৃতিক দুর্যোগ আসবে কিন্তু সেটাকে মোকাবিলা করে মানুষের জানমাল রক্ষা করাই আমাদের লক্ষ্য। সেই কাজটাই আমরা করে যাচ্ছি।

কলাপাড়া আওয়ামী লীগের সহ-সভাপতি নির্মল নন্দীর সভাপতিত্বে ত্রাণ বিতরণ অনুষ্ঠানে অন্যান্যের মধ্যে বক্তব্য রাখেন দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা ও ত্রাণ প্রতিমন্ত্রী মো. মহিবুর রহমান, আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক আ ফ ম বাহাউদ্দিন নাছিম, সাংগঠনিক সম্পাদক অ্যাডভোকেট আফজাল হোসেন প্রমুখ।

এর আগে ঘূর্ণিঝড় রিমালে ক্ষতিগ্রস্ত পটুয়াখালীর কয়েকটি এলাকা পরিদর্শন করেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা।

বেলা ১১টায় ঢাকা থেকে হেলিকপ্টারে রওনা হয়ে দুপুরে পটুয়াখালীর কলাপাড়া আসেন তিনি। উপজেলার খেপুপাড়া সরকারি মডেল মাধ্যমিক বিদ্যালয় সংলগ্ন হেলিপ্যাডে অবতরণের আগে ভূমির কাছাকাছি থেকে দুর্যোগকবলিত এলাকা মঠবাড়ীয়া ও পাথরঘাটা প্রত্যক্ষ করেন সরকারপ্রধান।

ত্রাণ বিতরণের পর প্রধানমন্ত্রী শহীদ শেখ কামাল ব্রিজ পরিদর্শন করেন এবং পায়রা তাপবিদ্যুৎকেন্দ্রে বিভাগীয় পর্যায়ের কর্মকর্তাদের সঙ্গে মতবিনিময় করেন।

এখানে তিনি ঘূর্ণিঝড় রিমালের ক্ষয়ক্ষতি এবং দুর্যোগ পরবর্তী পরিস্থিতি মোকাবিলা বিষয়ে মাঠ পর্যায়ের কর্মকর্তাদের দিক-নির্দেশনা দেন।

জনপ্রিয় খবর

আবহাওয়া

ঘূর্ণিঝড় রিমালে যত ঘর ভেঙেছে, সেগুলো আমি করে দেব : প্রধানমন্ত্রী

প্রকাশের সময় : ০২:৪০:৫৭ অপরাহ্ন, বৃহস্পতিবার, ৩০ মে ২০২৪

পটুয়াখালী জেলা প্রতিনিধি : 

প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেন, ঘূর্ণিঝড় রিমালে যত মানুষের ঘর ভেঙে গিয়েছে, ক্ষতি হয়েছে সেগুলো সব আমি করে দেব।

বৃহস্পতিবার (৩০ মে) দুপুর পটুয়াখালীর কলাপাড়া পৌর শহরের সরকারি মোজাহার উদ্দিন বিশ্বাস ডিগ্রি কলেজ মাঠে ঘূর্ণিঝড় রিমালে ক্ষতিগ্রস্ত মানুষের উদ্দেশে ভাষণে তিনি এ কথা বলেন।

প্রধানমন্ত্রী বলেন, এ অঞ্চলের যত বাঁধের ক্ষতি হয়েছে সেগুলো পুনর্র্নিমাণের জন্য ইতিমধ্যে কাজ শুরু করেছি। যত মানুষের ঘর ভেঙে গিয়েছে ক্ষতি হয়েছে সেগুলো সব আমি করে দেব। ক্ষতিগ্রস্ত সবার হিসাব করা হচ্ছে, আজ বিকেলে সবাইকে নিয়ে বসব।

শেখ হাসিনা বলেন, ঘূর্ণিঝড় রেমালে ক্ষতিগ্রস্ত ঘরবাড়ি, রাস্তাঘাট, বাঁধ দ্রুত মেরামতে আওয়ামী লীগ সরকার কাজ করছে। ইতোমধ্যে যে সমস্ত রাস্তাঘাট ভেঙে গেছে, সেগুলো মেরামত করার ব্যবস্থা নেওয়া হয়েছে। পাশাপাশি যে বাঁধগুলো ভেঙে গেছে, সেগুলোও মেরামতের কাজ ইতোমধ্যে আমরা শুরু করে দিয়েছি। যাতে বর্ষার আগেই আমরা বাঁধগুলো নির্মাণ করে জলোচ্ছ্বাস বা পানির হাত থেকে মানুষকে বাঁচাতে পারি।

এবারের ঝড়-জলোচ্ছ্বাস খুবই অস্বাভাবিক হয়েছে উল্লেখ করে তিনি বলেন, আমি সাইক্লোন শেল্টার করেছি, সেখানে মানুষ আশ্রয় পেয়েছে। যারা গৃহহীন, তাদের দুর্যোগ সহনীয় ঘর করে দিয়েছি। যে কারণে মানুষ অন্তত আশ্রয়ের জায়গা পেয়েছে। পশুপাখি আশ্রয়ের ব্যবস্থা পেয়েছে। আমরা চাই দুর্যোগ থেকে এই এলাকার মানুষ যেন মুক্তি পায়। আমরা জানি, এই এলাকা সবসময়ই দুর্যোগপ্রবণ।

শেখ হাসিনা বলেন, আজ ধারাবাহিকভাবে গণতন্ত্র আছে বলেই দুযোগ-দুর্বিপাকে মানুষের পাশে দাঁড়াতে পারি। মানুষের আর্থ সামাজিক উন্নতি হয়। দেশের আর্থসামাজিক অগ্রগতি আপনারা নিজেরাই দেখতে পাচ্ছেন। রাস্তাঘাট, স্কুল, কলেজ করে দিয়ে আপনাদের যোগাযোগের ব্যবস্থা… বিদ্যুতের ব্যবস্থা সব করে দিয়েছি।

সরকারপ্রধান বলেন, দেশে ধারাবাহিক গণতন্ত্র আছে বলেই দুগর্ত মানুষের পাশে দাঁড়াতে পারছি। আশ্রয়কেন্দ্র নির্মাণ করা হয়েছে, যেনো প্রাকৃতিক দুর্যোগ থেকে মানুষ রেহাই পায়। ভেঙে যাওয়া বাঁধ ইতোমধ্যেই পুনঃনির্মাণ শুরু করে দিয়েছি, যাতে বন্যার আগেই নির্মাণকাজ শেষ হয়। উপকূলে দুর্যোগ সহনীয়নীয় ঘর তৈরি করে দেওয়া হয়েছে। যেখানে যেখানে আপনাদের ঘরবাড়ি ভেঙে গেছে সেটুকুও নতুন করে তৈরি তৈরি করে দেবো, আমার ওপর আস্থা রাখুন।

টানা চারবারের সরকারপ্রধান বলেন, আজকে ধারাবাহিকভাবে গণতন্ত্র আছে বলেই দুর্যোগ-দুর্বিপাকে আমরা মানুষের পাশে দাঁড়াতে পারি। ধারাবাহিকভাবে গণতন্ত্র আছে বলেই মানুষের আর্থ-সামাজিক উন্নতি হয়। দেশের উন্নতির বিষয়ে আজকে বলার কিছু নেই; আপনারা নিজেরাই জানেন। আমরা রাস্তা-ঘাট, পুল-ব্রিজ করে দিয়ে আপনাদের যোগাযোগের ব্যবস্থা, বিদ্যুতের ব্যবস্থা—সব করে দিয়েছি।

তিনি বলেন, এবার খুবই অস্বাভাবিক জলোচ্ছ্বাস হয়েছে। আমরা সাইক্লোন শেল্টার করেছি, সেখানে মানুষ নিরাপদে আশ্রয় পেয়েছে, দুর্যোগ সহনীয় ঘর ভূমিহীন-গৃহহীনদের মধ্যে বিতরণ করেছি। যে কারণে অন্তত মানুষ আশ্রয়ের জায়গা পেয়েছে। পশু-পাখির আশ্রয়ের ব্যবস্থা আমরা করে দিয়েছি। আমরা চাই, এই দুর্যোগ থেকে আমাদের এই অঞ্চলের মানুষ যেন মুক্তি পায়। আমরা জানি, এই অঞ্চলটা সব সময় দুর্যোগপ্রবণ।

আওয়ামী লীগ সভাপতি বলেন, মানুষের জীবনে যা চাহিদা অন্ন, বস্ত্র, বাসস্থান, চিকিৎসা, শিক্ষা তার ব্যবস্থা করার জন্য যা যা করার দরকার আওয়ামী লীগ সরকার করে যাচ্ছে।

বর্তমানে সরকারের নানা উদ্যোগ তুলে ধরে তিনি বলেন, এই অঞ্চলের সার্বিক উন্নয়ন আওয়ামী লীগ সরকার এসেছে বলেই সম্ভব হয়েছে। এর আগে তো অনেকেই ছিল। কেউ তো এদিকে দৃষ্টি দেয়নি! এই অঞ্চলের মানুষ প্রতিনিয়ত প্রকৃতির সঙ্গে যুদ্ধ করে বেঁচে থাকে। প্রতিনিয়ত জীবন যুদ্ধে লিপ্ত হয়। প্রাকৃতিক দুর্যোগ আসবে কিন্তু সেটাকে মোকাবিলা করে মানুষের জানমাল রক্ষা করাই আমাদের লক্ষ্য। সেই কাজটাই আমরা করে যাচ্ছি।

কলাপাড়া আওয়ামী লীগের সহ-সভাপতি নির্মল নন্দীর সভাপতিত্বে ত্রাণ বিতরণ অনুষ্ঠানে অন্যান্যের মধ্যে বক্তব্য রাখেন দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা ও ত্রাণ প্রতিমন্ত্রী মো. মহিবুর রহমান, আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক আ ফ ম বাহাউদ্দিন নাছিম, সাংগঠনিক সম্পাদক অ্যাডভোকেট আফজাল হোসেন প্রমুখ।

এর আগে ঘূর্ণিঝড় রিমালে ক্ষতিগ্রস্ত পটুয়াখালীর কয়েকটি এলাকা পরিদর্শন করেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা।

বেলা ১১টায় ঢাকা থেকে হেলিকপ্টারে রওনা হয়ে দুপুরে পটুয়াখালীর কলাপাড়া আসেন তিনি। উপজেলার খেপুপাড়া সরকারি মডেল মাধ্যমিক বিদ্যালয় সংলগ্ন হেলিপ্যাডে অবতরণের আগে ভূমির কাছাকাছি থেকে দুর্যোগকবলিত এলাকা মঠবাড়ীয়া ও পাথরঘাটা প্রত্যক্ষ করেন সরকারপ্রধান।

ত্রাণ বিতরণের পর প্রধানমন্ত্রী শহীদ শেখ কামাল ব্রিজ পরিদর্শন করেন এবং পায়রা তাপবিদ্যুৎকেন্দ্রে বিভাগীয় পর্যায়ের কর্মকর্তাদের সঙ্গে মতবিনিময় করেন।

এখানে তিনি ঘূর্ণিঝড় রিমালের ক্ষয়ক্ষতি এবং দুর্যোগ পরবর্তী পরিস্থিতি মোকাবিলা বিষয়ে মাঠ পর্যায়ের কর্মকর্তাদের দিক-নির্দেশনা দেন।