আন্তর্জাতিক ডেস্ক :
গত সপ্তাহে বঙ্গোপসাগর উপকূলে আছড়ে পড়া অতিপ্রবল ঘূর্ণিঝড় মোখার আঘাতে বাংলাদেশে তেমন ক্ষতি না হলেও তছনছ হয়ে গেছে মিয়ানমার। দেশটিতে এ পর্যন্ত ১৪৫ জনের মৃত্যুর খবর স্বীকার করেছে সামরিক সরকার। তবে প্রকৃত প্রাণহানির সংখ্যা আরও বেশি বলে ধারণা করা হচ্ছে।
সামরিক বাহিনীর বিবৃতির বরাত দিয়ে জান্তা নিয়ন্ত্রিত টেলিভিশন চ্যানেল এমআরটিভি শুক্রবার (১৯ মে) জানিয়েছে, ঘূর্ণিঝড় মোখায় মিয়ানমারে প্রাণ হারিয়েছেন ১৪৫ জন মানুষ। ঘূর্ণিঝড় মোখার আঘাতে দেশটিতে মৃতদের বেশিরভাগই সংখ্যালঘু রোহিঙ্গা সম্প্রদায়ের মানুষ।
এর আগে ঝড়ের পরপর জান্তার পক্ষ থেকে বলা হয়েছিল, মোখায় মিয়ানমানমারে ৩ জনের মৃত্যু হয়েছে।
গত রোববার (১৩) তারিখ প্রবল শক্তি নিয়ে মিয়ানমারের পশ্চিমাঞ্চলীয় প্রদেশ রাখাইনে আছড়ে পড়ে বঙ্গোপসাগরে উদ্ভূত ঘূর্ণিঝড় মোখা। এসময় রাখাইনের বিভিন্ন এলাকায় বাতাসের বাতাসের গতিবেগ ঘন্টায় সর্বোচ্চ ২১০ কিলোমিটার পর্যন্ত উঠেছিল বলে জানাচ্ছে আবহাওয়া রেকর্ড। ঝড়-বৃষ্টি ও জলচ্ছাসে প্লাবিত হয়ে ওঠে রাখাইন প্রদেশের রাজধানী সিতওয়েসহ বিভিন্ন অঞ্চল।
সামরিক বাহিনীর বিবৃতির বরাত দিয়ে জান্তা জানিয়েছে, ঘূর্ণিঝড় মোখায় মিয়ানমারে প্রাণ হারিয়েছেন ১৪৫ জন মানুষ। নিহতদের মধ্যে ৯১ জনই রোহিঙ্গা সংখ্যালঘু। তারা রাখাইনের বিভিন্ন অঞ্চল থেকে বাস্তুচ্যুত হয়ে আশ্রয় শিবিরগুলোতে অবস্থান করছিলেন। এদের মধ্যে ২৪ জন স্থানীয় এবং ১১৭ জন রোহিঙ্গা। নিহতদের তালিকায় চারজন সেনা সদস্য রয়েছেন।
এই সংখ্যা সঠিক কিনা স্বাধীনভাবে যাচাই করতে পারেনি রয়টার্স। তবে রাখাইন প্রদেশের কয়েকজন বাসিন্দা রয়টার্সকে জানিয়েছেন, ঘুর্ণিঝড় মোখা সরে যাওয়ার পর রাখাইনের বিভিন্ন গ্রাম ও শহর থেকে ৪ শতাধিক মৃতদেহ উদ্ধার করা হয়েছে এবং এখনও নিখোঁজ আছেন বহু মানুষ। যারা বেঁচে গেছেন— খাবার ও ওষুধের অভাবে সীমাহীন ভোগান্তিতে রয়েছেন তাদের অধিকাংশ।
মিয়ানমারের জাতিগত সংখ্যালঘু রোহিঙ্গা মুসলিমদের একটি বড় কমিউনিটির বাস রাখাইনে। প্রায় ৬ লাখ রোহিঙ্গা বসবাস করেন মিয়ানমারে।
জান্তার বিবৃতির বরাত দিয়ে এমআরটিভির প্রতিবেদনে বলা হয়, সিভিল সোসাইটির অন্তর্ভুক্ত বিভিন্ন দাতব্য সংস্থার সঙ্গে যৌথভাবে উপদ্রুত প্রদেশগুলোতে উদ্ধার কাজ ও ত্রাণ তৎপরতা চালাচ্ছে সরকারি বাহিনী।
তবে জাতিসংঘসহ বিভিন্ন বিদেশি সংস্থা ও মিয়ানমারের দেশীয় বেসরকারি একাধিক সংস্থার কর্মকর্তারা রয়টার্সকে জানিয়েছেন, তারা ত্রাণ সামগ্রী নিয়ে অপেক্ষা করছেন, কিন্তু জান্তা এখনও কোনো দেশি-বিদেশি সংস্থাকে ত্রাণ কার্যক্রম পরিচালনার অনুমতি দেয়নি। সূত্র : বিবিসি।