Dhaka শুক্রবার, ১৮ জুলাই ২০২৫, ২ শ্রাবণ ১৪৩২ বঙ্গাব্দ

ঘন কুয়াশায় ঢাকা-রংপুর মহাসড়কে দুর্ঘটনার কবলে ৬ গাড়ি, আহত ২৫

রংপুর জেলা প্রতিনিধি : 

ঘন কুয়াশার কারণে উত্তরের জনপদে গাড়ি চালানো কঠিন হয়ে পড়েছে। ঢাকা-রংপুর মহাসড়কে একে একে ছয়টি গাড়ি দুর্ঘটনার কবলে পড়েছে। এতে অন্তত ২৫ জন আহত হয়েছেন।

শনিবার (১ ফেব্রুয়ারি) সকাল সাড়ে সাতটার দিকে মিঠাপুকুরের রংপুর-ঢাকা মহাসড়কে গড়ের মাথা মোড় এলাকায় এই দুর্ঘটনা ঘটে।

দুর্ঘটনাকবলিত পরিবহনগুলোর মধ্যে তিনটি যাত্রীবাহী বাসসহ ট্রাক, পিকআপ ও কাভার্ড ভ্যান রয়েছে। গাড়িগুলো ঘটনাস্থল থেকে সরিয়ে নেওয়ার কাজ চলছে বলে জানিয়েছে বড় দরগাহ হাইওয়ে পুলিশ।

হাইওয়ে পুলিশ ও স্থানীয়রা বলেন, ঢাকা থেকে ছেড়ে আসা এসব পরিবহন রংপুর-ঢাকা মহাসড়কের মিঠাপুকুর গড়ের মাথা মোড়ে কুয়াশার কারণে নিয়ন্ত্রণ হারিয়ে ফেলে। এ সময় চতুর্মুখী সড়কের এই মোড়ে তিনটি বাস, একটি ট্রাক ও পিকআপ এবং কাভার্ড ভ্যান একে অপরকে ধাক্কা দেয়। এতে কয়েকটি পরিবহনের সামনের গ্লাস ভেঙে গেছে এবং কিছুটা ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। এ দুর্ঘটনায় ২০-২৫ আহত হয়েছে। এদের মধ্যে কয়েকজন গুরুতর জখম হওয়ায় তাদের হাসপাতালে নেওয়া হয়েছে।

দুর্ঘটনার খবর শুনে বড়দরগা হাইওয়ে পুলিশ ঘটনাস্থলে গিয়ে আহতদের উদ্ধার করে প্রাথমিক চিকিৎসার ব্যবস্থা করে। সেই সঙ্গে ঘটনাস্থল থেকে পরিবহনগুলো সরিয়ে নেওয়ার কাজ শুরু করে।

বর্তমানে মহাসড়কে যানবাহন চলাচল স্বাভাবিক রয়েছে জানিয়ে বড়দরগা হাইওয়ে পুলিশের দায়িত্বপ্রাপ্ত কর্মকর্তা মো. মনিরুজ্জামান  বলেন, ‘দুর্ঘটনাকবলিত পরিবহনগুলো সরিয়ে নেওয়া হচ্ছে। খুব বড় ধরনের দুর্ঘটনা ঘটেনি। আহত কয়েকজন যাত্রীকে প্রাথমিক চিকিৎসা দেওয়া হয়েছে।’

তিনি আরও বলেন, ‘এই মহাসড়কে প্রতিদিন বালু ও মাটিবাহী ট্রাক চলাচল করে। ঘটনাস্থলে পড়ে থাকা মাটি ঘন কুয়াশার কারণে পিচ্ছিল হয়েছিল। সঙ্গে ঘন কুয়াশায় দৃষ্টিসীমা কমে আসায় হয়তো চালকেরা নিয়ন্ত্রণ হারিয়ে একে একে ধাক্কা লাগে।’

হাইওয়ে পুলিশ কর্মকর্তা মনিরুজ্জামান বলেন, ঘন কুয়াশা থাকায় রংপুর অঞ্চলের মহাসড়কে বেশ কিছু ছোট ছোট দুর্ঘটনা ঘটছে। কুয়াশার কারণে অনেক জায়গায় দৃষ্টিসীমা কমে যাচ্ছে। গাড়ির হেডলাইট জ্বালিয়ে চালক ও যাত্রীসাধারণকে ধীরে এবং সতর্কতার সঙ্গে চলাচলের জন্য পরামর্শ দেওয়া হচ্ছে।

শুক্রবার রংপুর-ঢাকা মহাসড়কের পীরগঞ্জসহ জেলার কয়েকটি স্থানে পৃথক পাঁচটি দুর্ঘটনায় সাতজনের মৃত্যু হয়েছে বলেও জানান তিনি।

হাইওয়ে পুলিশ রংপুর অঞ্চলের সুপার মোহাম্মদ তরিকুল ইসলাম জানান, গত বছর (২০২৪ সাল) রংপুরে জাতীয় ও আঞ্চলিক মহাসড়কে ১৯৫টি সড়ক দুর্ঘটনায় ১৪৬ জনের মৃত্যু হয়েছে। এর মধ্যে পুরুষ ১২০, নারী ২২ ও শিশু ছিল চারজন। এসব দুর্ঘটনায় মামলা হয়েছিল ১৫২টি। শীত মৌসুমে ঘন কুয়াশায় সড়ক ও মহাসড়কে মৃত্যুঝুঁকিসহ দুর্ঘটনা এড়াতে চলাচলের সময় গতি নিয়ন্ত্রণ ও ট্রাফিক আইন মেনে চলতে সবার প্রতি অনুরোধ জানিয়েছেন তিনি।

এদিকে রংপুরে আজও হিমেল হাওয়ার বেড়েছে শীতের দাপট, সঙ্গে বৃষ্টির মতো ঝরছে কুয়াশা। শীতের কারণে মানুষ কাবু হয়ে পড়েছে।

রংপুর আবহাওয়া অফিস সূত্রে জানা গেছে, শনিবার সকাল ৬টায় রংপুরে সর্বনিম্ন তাপমাত্রা রেকর্ড করা হয় ১৪ দশমিক ৫ ডিগ্রি সেলসিয়াস। একই সময়ে রংপুর বিভাগের পঞ্চগড় জেলার তেঁতুলিয়ায় সর্বনিম্ন তাপমাত্রা ১০ ডিগ্রি সেলসিয়াস রেকর্ড করা হয়।

রংপুরের আবহাওয়াবিদ মোস্তাফিজুর রহমান বলেন, সূর্যের আলো না থাকায় এবং হিমেল হাওয়ার কারণে এমন পরিস্থিতি সৃষ্টি হয়েছে। এ ধরনের আবহাওয়া আরও কয়েক দিন থাকবে।

জনপ্রিয় খবর

আবহাওয়া

চলতি বর্ষা যশোরের বিভিন্ন সড়ক-মহাসড়ক চলাচলের অযোগ্য, দুর্ভোগে পথচারীরা

ঘন কুয়াশায় ঢাকা-রংপুর মহাসড়কে দুর্ঘটনার কবলে ৬ গাড়ি, আহত ২৫

প্রকাশের সময় : ১২:৫৭:২৫ অপরাহ্ন, শনিবার, ১ ফেব্রুয়ারী ২০২৫

রংপুর জেলা প্রতিনিধি : 

ঘন কুয়াশার কারণে উত্তরের জনপদে গাড়ি চালানো কঠিন হয়ে পড়েছে। ঢাকা-রংপুর মহাসড়কে একে একে ছয়টি গাড়ি দুর্ঘটনার কবলে পড়েছে। এতে অন্তত ২৫ জন আহত হয়েছেন।

শনিবার (১ ফেব্রুয়ারি) সকাল সাড়ে সাতটার দিকে মিঠাপুকুরের রংপুর-ঢাকা মহাসড়কে গড়ের মাথা মোড় এলাকায় এই দুর্ঘটনা ঘটে।

দুর্ঘটনাকবলিত পরিবহনগুলোর মধ্যে তিনটি যাত্রীবাহী বাসসহ ট্রাক, পিকআপ ও কাভার্ড ভ্যান রয়েছে। গাড়িগুলো ঘটনাস্থল থেকে সরিয়ে নেওয়ার কাজ চলছে বলে জানিয়েছে বড় দরগাহ হাইওয়ে পুলিশ।

হাইওয়ে পুলিশ ও স্থানীয়রা বলেন, ঢাকা থেকে ছেড়ে আসা এসব পরিবহন রংপুর-ঢাকা মহাসড়কের মিঠাপুকুর গড়ের মাথা মোড়ে কুয়াশার কারণে নিয়ন্ত্রণ হারিয়ে ফেলে। এ সময় চতুর্মুখী সড়কের এই মোড়ে তিনটি বাস, একটি ট্রাক ও পিকআপ এবং কাভার্ড ভ্যান একে অপরকে ধাক্কা দেয়। এতে কয়েকটি পরিবহনের সামনের গ্লাস ভেঙে গেছে এবং কিছুটা ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। এ দুর্ঘটনায় ২০-২৫ আহত হয়েছে। এদের মধ্যে কয়েকজন গুরুতর জখম হওয়ায় তাদের হাসপাতালে নেওয়া হয়েছে।

দুর্ঘটনার খবর শুনে বড়দরগা হাইওয়ে পুলিশ ঘটনাস্থলে গিয়ে আহতদের উদ্ধার করে প্রাথমিক চিকিৎসার ব্যবস্থা করে। সেই সঙ্গে ঘটনাস্থল থেকে পরিবহনগুলো সরিয়ে নেওয়ার কাজ শুরু করে।

বর্তমানে মহাসড়কে যানবাহন চলাচল স্বাভাবিক রয়েছে জানিয়ে বড়দরগা হাইওয়ে পুলিশের দায়িত্বপ্রাপ্ত কর্মকর্তা মো. মনিরুজ্জামান  বলেন, ‘দুর্ঘটনাকবলিত পরিবহনগুলো সরিয়ে নেওয়া হচ্ছে। খুব বড় ধরনের দুর্ঘটনা ঘটেনি। আহত কয়েকজন যাত্রীকে প্রাথমিক চিকিৎসা দেওয়া হয়েছে।’

তিনি আরও বলেন, ‘এই মহাসড়কে প্রতিদিন বালু ও মাটিবাহী ট্রাক চলাচল করে। ঘটনাস্থলে পড়ে থাকা মাটি ঘন কুয়াশার কারণে পিচ্ছিল হয়েছিল। সঙ্গে ঘন কুয়াশায় দৃষ্টিসীমা কমে আসায় হয়তো চালকেরা নিয়ন্ত্রণ হারিয়ে একে একে ধাক্কা লাগে।’

হাইওয়ে পুলিশ কর্মকর্তা মনিরুজ্জামান বলেন, ঘন কুয়াশা থাকায় রংপুর অঞ্চলের মহাসড়কে বেশ কিছু ছোট ছোট দুর্ঘটনা ঘটছে। কুয়াশার কারণে অনেক জায়গায় দৃষ্টিসীমা কমে যাচ্ছে। গাড়ির হেডলাইট জ্বালিয়ে চালক ও যাত্রীসাধারণকে ধীরে এবং সতর্কতার সঙ্গে চলাচলের জন্য পরামর্শ দেওয়া হচ্ছে।

শুক্রবার রংপুর-ঢাকা মহাসড়কের পীরগঞ্জসহ জেলার কয়েকটি স্থানে পৃথক পাঁচটি দুর্ঘটনায় সাতজনের মৃত্যু হয়েছে বলেও জানান তিনি।

হাইওয়ে পুলিশ রংপুর অঞ্চলের সুপার মোহাম্মদ তরিকুল ইসলাম জানান, গত বছর (২০২৪ সাল) রংপুরে জাতীয় ও আঞ্চলিক মহাসড়কে ১৯৫টি সড়ক দুর্ঘটনায় ১৪৬ জনের মৃত্যু হয়েছে। এর মধ্যে পুরুষ ১২০, নারী ২২ ও শিশু ছিল চারজন। এসব দুর্ঘটনায় মামলা হয়েছিল ১৫২টি। শীত মৌসুমে ঘন কুয়াশায় সড়ক ও মহাসড়কে মৃত্যুঝুঁকিসহ দুর্ঘটনা এড়াতে চলাচলের সময় গতি নিয়ন্ত্রণ ও ট্রাফিক আইন মেনে চলতে সবার প্রতি অনুরোধ জানিয়েছেন তিনি।

এদিকে রংপুরে আজও হিমেল হাওয়ার বেড়েছে শীতের দাপট, সঙ্গে বৃষ্টির মতো ঝরছে কুয়াশা। শীতের কারণে মানুষ কাবু হয়ে পড়েছে।

রংপুর আবহাওয়া অফিস সূত্রে জানা গেছে, শনিবার সকাল ৬টায় রংপুরে সর্বনিম্ন তাপমাত্রা রেকর্ড করা হয় ১৪ দশমিক ৫ ডিগ্রি সেলসিয়াস। একই সময়ে রংপুর বিভাগের পঞ্চগড় জেলার তেঁতুলিয়ায় সর্বনিম্ন তাপমাত্রা ১০ ডিগ্রি সেলসিয়াস রেকর্ড করা হয়।

রংপুরের আবহাওয়াবিদ মোস্তাফিজুর রহমান বলেন, সূর্যের আলো না থাকায় এবং হিমেল হাওয়ার কারণে এমন পরিস্থিতি সৃষ্টি হয়েছে। এ ধরনের আবহাওয়া আরও কয়েক দিন থাকবে।