Dhaka সোমবার, ১৪ জুলাই ২০২৫, ৩০ আষাঢ় ১৪৩২ বঙ্গাব্দ

গড়িয়াবুনিয়া খালের ওপর সেতুটি এখন মারণফাঁদ

নিজস্ব প্রতিবেদক : 

বরগুনার বেতাগী উপজেলার বিবিচিনি ইউনিয়নে পূর্ব গড়িয়াবুনিয়া গ্রামে খালের ওপর সেতুটি মারণফাঁদে পরিণত হয়েছে। গত তিন বছরের বেশি সময় ধরে ভেঙে আছে এই সড়কের সেতুটির মাঝের অংশ। কিন্তু দীর্ঘদিনেও ভাঙা জায়গায় মেরামত বা নতুন সেতু নির্মাণের কোনো উদ্যোগ দেখা যায়নি কর্তৃপক্ষের। গড়িয়াবুনিয়া বাজার থেকে পূর্ব গড়িয়াবুনিয়া সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় ও তালগাছিয়ার দেশান্তারকাঠি মাধ্যমিক বিদ্যালয়ে যেতে একমাত্র রাস্তা এটি। ফলে হাট-বাজারে যাওয়া মানুষ, পথচারী ও স্কুল-কলেজগামী শিক্ষার্থীসহ পাঁচটি গ্রামের সাত হাজার মানুষ বিপাকে পড়েছেন। বিকল্প সড়ক না থাকায় ঝুঁকি নিয়েই ব্রিজ ব্যবহার করতে হচ্ছে।

সরেজমিনে গিয়ে দেখা যায়, ৩০ ফুট দৈর্ঘ্য ও ১২ ফুট প্রস্থের সেতুটির তিন ভাগের প্রায় এক ভাগ ভেঙে পড়ে আছে। সড়কে অবৈধ চলাচলরত মাহিন্দ্রার ধাক্কায় অনেক আগে সেতুটি দেবে যায়। যেকোনো মুহূর্তে ভেঙে পড়ে দুর্ঘটনার শিকার হতে পারে পথচারী বা স্কুল-কলেজের শিক্ষার্থীরা। ভাঙা এই সেতুর দুই পাশে রয়েছে দুটি সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়, গড়িয়াবুনিয়া বাজার, কমিউনিটি ক্লিনিক, দেশান্তারকাঠি মাধ্যমিক বিদ্যালয়, গড়িয়াবুনিয়া এসহাকিয়া আলিম মাদরাসা ও গড়িয়াবুনিয়া দরবার শরীফ।

এলাকাবাসী সূত্রে জানা গেছে, উপজেলার বিবিচিনি ইউনিয়নের গড়িয়াবুনিয়া বাজার থেকে পূর্ব গড়িয়াবুনিয়া সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় ও দেশান্তারকাঠি মাধ্যমিক বিদ্যালয়ে যেতে সেতুটি প্রায় তিন বছর আগে পাটাতনের মাঝখান ভেঙে যায়।

এর পর থেকে ওই রাস্তা দিয়ে ভারী যানবাহন চলাচল বন্ধ হয়ে যায়। তবে মেরামত করে কিছুদিন অটোরিকশা, মোটরসাইকেলসহ ছোটখাটো যানবাহন চলাচল করত। এই ভাঙা অংশ বেড়ে যাওয়ায় কিছুই চলতে পারছে না এই সেতু দিয়ে। ওই এলাকার প্রায় তিনটি গ্রামের বাসিন্দাসহ স্থানীয় বাজারের ব্যবসায়ী স্কুল, কলেজগামী ছাত্র ও ছাত্রীদের দুর্ভোগ পোহাতে হচ্ছে চলাচলের জন্য।

দেশান্তারকাঠি মাধ্যমিক বিদ্যালয় সহকারী শিক্ষক মো. মনির হোসেন বলেন, এই সেতু দিয়ে আমাদের বিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরা স্কুলে যাওয়া-আসা করে। এই ভাঙা সেতু আমাদের একমাত্র ভরসা। শিক্ষার্থীসহ আমাদের যাতায়াতে চরম ভোগান্তি পোহাতে হয়।

বিবিচিনি ইউনিয়ন পরিষদ সূত্রে জানা যায় সেতুটি দিয়ে যাতে সাধারণ মানুষ চলাচল করতে পারে, সে জন্য পরিষদ থেকে তারা ৫০ হাজার টাকা বরাদ্দও করেছিল। যে কাঠ দিয়ে পাটাতনের ব্যবস্থা করে দেওয়া হয়, কিন্তু এলাকার কিছু অসাধু ব্যক্তির কারণে সেটি আর সম্ভব হয়ে ওঠেনি।

সেতুটি দিয়ে ঝুঁকি নিয়ে দু-একটি মোটরসাইকেল পারাপার হলেও এ রাস্তা দিয়ে চলাচলরত গ্রামবাসীরা নিত্যপ্রয়োজনীয় জিনিসপত্র পরিবহন করতে পারছে না।

স্থানীয় একাধিক বাসিন্দা অভিযোগ করে বলেন, এই সেতু দিয়ে কিছু অসাধু ব্যক্তি ভেকু, ইট, বালুসহ মাহিন্দ্রায় ভারী মালামাল নিয়ে চলাচল করায় সেতুটি তাড়াতাড়ি ভেঙে গেছে। কিছু অসাধু ব্যক্তির কারণে সাধারণ মানুষের দুর্ভোগ পোহাতে হচ্ছে।

এলাকাবাসী একাধিকবার সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের কাছে আবেদন-নিবেদন করলে এবং তারা আশ্বাস দিলেও কোনো কাজ হচ্ছে না।

স্থানীয় সরকার প্রকৌশল অধিদপ্তরের (এলজিইডি) বেতাগী উপজেলা প্রকৌশলী মো. রাইসুল ইসলাম বলেন, বর্তমানে কোনো সেতু বা কালভার্টের বরাদ্দ নেই। তার ওপর সেতুটির অবস্থা যে করুণ, তা সাংবাদিকদের মাধ্যমে জানতে পেরেছি। ওপরের কর্মকর্তাকে জানাব যাতে খুব তাড়াতাড়ি এখানে নতুনভাবে একটি সেতু নির্মাণের জন্য তিনি প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ গ্রহণ করেন।

জনপ্রিয় খবর

আবহাওয়া

সংস্কার না হওয়ায় খানাখন্দে চলাচলে অনুপযোগী, দুর্ভোগ শিক্ষক-শিক্ষার্থীদের

গড়িয়াবুনিয়া খালের ওপর সেতুটি এখন মারণফাঁদ

প্রকাশের সময় : ০২:৫০:৪৫ অপরাহ্ন, রবিবার, ৯ এপ্রিল ২০২৩

নিজস্ব প্রতিবেদক : 

বরগুনার বেতাগী উপজেলার বিবিচিনি ইউনিয়নে পূর্ব গড়িয়াবুনিয়া গ্রামে খালের ওপর সেতুটি মারণফাঁদে পরিণত হয়েছে। গত তিন বছরের বেশি সময় ধরে ভেঙে আছে এই সড়কের সেতুটির মাঝের অংশ। কিন্তু দীর্ঘদিনেও ভাঙা জায়গায় মেরামত বা নতুন সেতু নির্মাণের কোনো উদ্যোগ দেখা যায়নি কর্তৃপক্ষের। গড়িয়াবুনিয়া বাজার থেকে পূর্ব গড়িয়াবুনিয়া সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় ও তালগাছিয়ার দেশান্তারকাঠি মাধ্যমিক বিদ্যালয়ে যেতে একমাত্র রাস্তা এটি। ফলে হাট-বাজারে যাওয়া মানুষ, পথচারী ও স্কুল-কলেজগামী শিক্ষার্থীসহ পাঁচটি গ্রামের সাত হাজার মানুষ বিপাকে পড়েছেন। বিকল্প সড়ক না থাকায় ঝুঁকি নিয়েই ব্রিজ ব্যবহার করতে হচ্ছে।

সরেজমিনে গিয়ে দেখা যায়, ৩০ ফুট দৈর্ঘ্য ও ১২ ফুট প্রস্থের সেতুটির তিন ভাগের প্রায় এক ভাগ ভেঙে পড়ে আছে। সড়কে অবৈধ চলাচলরত মাহিন্দ্রার ধাক্কায় অনেক আগে সেতুটি দেবে যায়। যেকোনো মুহূর্তে ভেঙে পড়ে দুর্ঘটনার শিকার হতে পারে পথচারী বা স্কুল-কলেজের শিক্ষার্থীরা। ভাঙা এই সেতুর দুই পাশে রয়েছে দুটি সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়, গড়িয়াবুনিয়া বাজার, কমিউনিটি ক্লিনিক, দেশান্তারকাঠি মাধ্যমিক বিদ্যালয়, গড়িয়াবুনিয়া এসহাকিয়া আলিম মাদরাসা ও গড়িয়াবুনিয়া দরবার শরীফ।

এলাকাবাসী সূত্রে জানা গেছে, উপজেলার বিবিচিনি ইউনিয়নের গড়িয়াবুনিয়া বাজার থেকে পূর্ব গড়িয়াবুনিয়া সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় ও দেশান্তারকাঠি মাধ্যমিক বিদ্যালয়ে যেতে সেতুটি প্রায় তিন বছর আগে পাটাতনের মাঝখান ভেঙে যায়।

এর পর থেকে ওই রাস্তা দিয়ে ভারী যানবাহন চলাচল বন্ধ হয়ে যায়। তবে মেরামত করে কিছুদিন অটোরিকশা, মোটরসাইকেলসহ ছোটখাটো যানবাহন চলাচল করত। এই ভাঙা অংশ বেড়ে যাওয়ায় কিছুই চলতে পারছে না এই সেতু দিয়ে। ওই এলাকার প্রায় তিনটি গ্রামের বাসিন্দাসহ স্থানীয় বাজারের ব্যবসায়ী স্কুল, কলেজগামী ছাত্র ও ছাত্রীদের দুর্ভোগ পোহাতে হচ্ছে চলাচলের জন্য।

দেশান্তারকাঠি মাধ্যমিক বিদ্যালয় সহকারী শিক্ষক মো. মনির হোসেন বলেন, এই সেতু দিয়ে আমাদের বিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরা স্কুলে যাওয়া-আসা করে। এই ভাঙা সেতু আমাদের একমাত্র ভরসা। শিক্ষার্থীসহ আমাদের যাতায়াতে চরম ভোগান্তি পোহাতে হয়।

বিবিচিনি ইউনিয়ন পরিষদ সূত্রে জানা যায় সেতুটি দিয়ে যাতে সাধারণ মানুষ চলাচল করতে পারে, সে জন্য পরিষদ থেকে তারা ৫০ হাজার টাকা বরাদ্দও করেছিল। যে কাঠ দিয়ে পাটাতনের ব্যবস্থা করে দেওয়া হয়, কিন্তু এলাকার কিছু অসাধু ব্যক্তির কারণে সেটি আর সম্ভব হয়ে ওঠেনি।

সেতুটি দিয়ে ঝুঁকি নিয়ে দু-একটি মোটরসাইকেল পারাপার হলেও এ রাস্তা দিয়ে চলাচলরত গ্রামবাসীরা নিত্যপ্রয়োজনীয় জিনিসপত্র পরিবহন করতে পারছে না।

স্থানীয় একাধিক বাসিন্দা অভিযোগ করে বলেন, এই সেতু দিয়ে কিছু অসাধু ব্যক্তি ভেকু, ইট, বালুসহ মাহিন্দ্রায় ভারী মালামাল নিয়ে চলাচল করায় সেতুটি তাড়াতাড়ি ভেঙে গেছে। কিছু অসাধু ব্যক্তির কারণে সাধারণ মানুষের দুর্ভোগ পোহাতে হচ্ছে।

এলাকাবাসী একাধিকবার সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের কাছে আবেদন-নিবেদন করলে এবং তারা আশ্বাস দিলেও কোনো কাজ হচ্ছে না।

স্থানীয় সরকার প্রকৌশল অধিদপ্তরের (এলজিইডি) বেতাগী উপজেলা প্রকৌশলী মো. রাইসুল ইসলাম বলেন, বর্তমানে কোনো সেতু বা কালভার্টের বরাদ্দ নেই। তার ওপর সেতুটির অবস্থা যে করুণ, তা সাংবাদিকদের মাধ্যমে জানতে পেরেছি। ওপরের কর্মকর্তাকে জানাব যাতে খুব তাড়াতাড়ি এখানে নতুনভাবে একটি সেতু নির্মাণের জন্য তিনি প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ গ্রহণ করেন।