আন্তর্জাতিক ডেস্ক :
গ্রিসে অগ্নিনির্বাপক বিমান বিধ্বস্ত হয়ে আরোহী ২ পাইলট নিহত হয়েছেন। দাবানলের আগুন নেভানোর চেষ্টার সময় ওই বিমানটি বিধ্বস্ত হয় এবং এতে তারা প্রাণ হারান। নিহত দু’জনই গ্রিক বিমান বাহিনীর পাইলট ছিলেন।
স্থানীয় সময় মঙ্গলবার (২৬ জুলাই) দুপুর ২টা ৫২ মিনিটে অগ্নিনির্বাপণ অভিযানের সময় কানাডিয়ার সিএল-২১৫ বিমানটি বিধ্বস্ত হয়।
গ্রিসের বিমান বাহিনী জানিয়েছে, অনুসন্ধান ও উদ্ধার অভিযান চালাতে দুটি হেলিকপ্টার ঘটনাস্থলে যাচ্ছে। তবে প্লেনটিতে থাকা ক্রুদের ব্যাপারে এখনো কোনো তথ্য প্রকাশ করা হয়নি।
নিহত ওই দুই পাইলট হচ্ছেন ৩৪ বছর বয়সী সিডিআর ক্রিস্টোস মৌলাস এবং তার কো-পাইলট ২৭ বছর বয়সী পেরিক্লেস স্টেফানিডিস।
এক বিবৃতিতে গ্রিসের প্রতিরক্ষা মন্ত্রণালয় জানিয়েছে, বিমানবাহিনীর কর্মকর্তারা দুই জনের প্রাণহানির ঘটনায় সশস্ত্র বাহিনীতে তিন দিনের শোক ঘোষণা করেছে।
দেশটির রাষ্ট্রীয় সম্প্রচারমাধ্যম ইআরটি প্রকাশিত এক ভিডিওতে দেখা গেছে, বিমানটির আগুনের ওপর দিয়ে উড়ে উড়ে পানি ফেলছে। এক পর্যায়ে এটি একটি পাহাড়ের পাশে বিধ্বস্ত হয়। সঙ্গে সঙ্গে বিস্ফোরিত হয়ে আগুন জ্বলে ওঠে।
A CL-415 Amphibious-Firefighting Aircraft with the Hellenic Air Force has Crashed today while Fighting a Wildfire on the Greek Island of Evia, the Crash is reported to have resulting in the Immediate Death of the 2 Pilots. pic.twitter.com/Z62f0BLrn3
— OSINTdefender (@sentdefender) July 25, 2023
গ্রিসের প্রতিরক্ষামন্ত্রী নিকোস ডেনডিয়াস বলেছেন, পাইলটরা ‘দায়িত্ব পালন করতে গিয়ে… নাগরিকদের জীবন ও সম্পত্তির পাশাপাশি আমাদের দেশের পরিবেশ রক্ষা করার চেষ্টা করার সময়’ তাদের প্রাণ হারিয়েছেন।
গ্রিক সরকারের মন্ত্রী ভ্যাসিলিস কিকিলিয়াস বলেছেন, জরুরি কর্মীরা মঙ্গলবার বহু এলাকায় আগুন নেভানোর কাজে যুক্ত ছিলেন।
এছাড়া ভয়াবহ দাবানলের আগুনে পুড়ছে গ্রিসের রোডস দ্বীপ। আর ঝুঁকির আশঙ্কা থেকে দ্বীপের বাসিন্দাসহ কয়েক হাজার পর্যটককে সরিয়ে নেওয়া হয়েছে। নিয়ন্ত্রণের বাইরে চলে যাওয়া এ দাবানলে পুড়ে ছাই হওয়ার শঙ্কায় পড়েছে শত শত বাড়ি ও হোটেল।
রোডস দ্বীপটিতে গত এক সপ্তাহের বেশি সময় ধরেই আগুন জ্বলছে। তবে পাহাড়ি অঞ্চলগুলোতে পৌঁছানোর পর আগুনের তীব্রতা কমিয়ে আনতে সমর্থ হয়েছিলেন দমকল কর্মীরা। কিন্তু এরপর শক্তিশালী বাতাস, উচ্চ তাপমাত্রা, শুষ্ক আবহাওয়ার কারণে আগুন দ্বীপের মধ্য-পূর্বাঞ্চলীয় উপকূলের দিকে চলে আসে।
তাপপ্রবাহের মধ্যে ভূমধ্যসাগরীয় অঞ্চলের বেশিরভাগ অংশজুড়ে দাবানল ছড়িয়ে পড়েছে। যার ফলে লোকজনের প্রাণহানিও ঘটে। একাধিক অঞ্চলে জারি করা হয়েছে ‘লাল সতর্কতা’। বেশকিছু অঞ্চল থেকে স্থানীয় লোকজন ও পর্যটকদের উদ্ধার করে অন্যত্র সরিয়ে নিয়ে যাওয়া হয়েছে।
গ্রিসে গ্রীষ্মকালে দাবানল সাধারণ বিষয়। ২০১৮ সালে একটি দাবানলে এথেন্সের পূর্বাঞ্চলীয় সমুদ্রতীরবর্তী মাটি নামক গ্রামে দাবানলের ঘটনায় ১০১ জনের মৃত্যু হয়েছিল।
গত এক সপ্তাহ ধরে দক্ষিণ ইউরোপের অনেক দেশের মতো গ্রিসেও তাপমাত্রা বাড়ছে। মধ্য গ্রিসে তাপমাত্রা বেড়ে ৪৪ ডিগ্রি সেলসিয়াসে পৌঁছেছে। এর ফলে এথেন্সসহ বেশকিছু জায়গায় দাবানল সতর্কতা জারি করেছে গ্রিস সরকার।