Dhaka রবিবার, ১৩ জুলাই ২০২৫, ২৮ আষাঢ় ১৪৩২ বঙ্গাব্দ

গ্রামীণ ব্যাংক ৮টি প্রতিষ্ঠান জবরদখল করেছে, অভিযোগ ড. ইউনূসের

  • নিজস্ব প্রতিবেদক
  • প্রকাশের সময় : ০৮:৫৮:৫৫ অপরাহ্ন, বৃহস্পতিবার, ১৫ ফেব্রুয়ারী ২০২৪
  • ১৮৭ জন দেখেছেন

নিজস্ব প্রতিবেদক : 

নোবেলজয়ী ড. মুহাম্মদ ইউনূস অভিযোগ করেছেন, গ্রামীণ ব্যাংক তাদের ৮টি প্রতিষ্ঠান জবরদখল করেছে। এগুলো তাদের মতো করে চালাচ্ছে। পুলিশের কাছেও সহযোগিতা পাননি।

বৃহস্পতিবার (১৫ ফেব্রুয়ারি) দুপুরে রাজধানীর মিরপুরে গ্রামীণ টেলিকম ভবনে আয়োজিত এক সংবাদ সম্মেলনে এ অভিযোগ করেন ড. ইউনূস।

তিনি বলেন, নিজের অফিসে ঢুকতে পারবো কিনা- এটা এখন বাইরের লোকের এখতিয়ার হয়ে গেছে। আমি দুঃখ-কষ্টে পড়ে গেছি। ভয়ঙ্কর পরিস্থিতিতে আছি।

নোবেলজয়ী এ অর্থনীতিবিদ বলেন, ভবনটা আমরা করেছি, এটা আমাদের স্বপ্নের বাস্তবায়ন। হঠাৎ ৪ দিন আগে বাইরের লোক এসে জবরদখল শুরু করে আর আমরা বাইরের লোক হয়ে গেলাম।

এ সময় ছিলেন গ্রামীণ টেলিকমের ব্যবস্থাপনা পরিচালক নাজমুল ইসলাম এবং গ্রামীণ কল্যাণের ব্যবস্থাপনা পরিচালক এ কে এম মঈনুদ্দিন চৌধুরী।

রাজধানীর মিরপুরের গ্রামীণ টেলিকম ভবনে ড. ইউনূসের ১৬টি কোম্পানি রয়েছে। এর প্রতিটির চেয়ারম্যান ড. ইউনূস। তার অভিযোগ, গত ১২ ফেব্রুয়ারি গ্রামীণ ব্যাংকের পক্ষ থেকে এ ভবনে অবস্থিত আটটি অফিস দখল করে নেওয়া হয়।

তিনি বলেন, ওই দিন থেকে তারা ভবনে তালা মেরে রেখেছে। নিজের বাড়িতে অন্য কেউ যদি তালা মারে, তখন কেমন লাগার কথা, আপনারাই বলেন। তাহলে দেশে আইন–আদালত আছে কিসের জন্য। তারা আদালতে যেতে চায় না। আমরা জীবনে বহু দুর্যোগ দেখেছি। এমন দুর্যোগ আর কখনো দেখিনি। পুলিশের কাছে সহযোগীতা চেয়েছেন উল্লেখ করে তিনি বলেন, তারা ঘুরে গিয়ে কোনো অসুবিধা দেখছেন না জানান!

নোবেলজয়ী এ অর্থনীতিবিদ বলেন, মামলা হোক। আদালতে আমাদের অনেক মামলা চলমান। সেভাবে আমরা মোকাবিলা করবো। কিন্তু জবরদখল কেন! দেশের মানুষের কাছে বিচারের ভার দিলাম।

গ্রামীণ ব্যাংকের কোনো টাকা এসব প্রতিষ্ঠানে নেই, দাবি করে ড. ইউনূস বলেন, তাদের সঙ্গে আমাদের যোগাযোগ নেই, তাদের একটি টাকাও এখানে নেই। গ্রামীণ ব্যাংকের যে সমস্ত দাবি-দাওয়া সেগুলো এখানে নেই। আমাদের আইন-বিধি পরিষ্কার। আইন মেনে বুঝে বুঝে সব কিছু করা হয়েছে। এমন একটা জটিল পরিস্থিতিতে আমাদের কাজ করতে হয়, আইন ভঙ্গ করলে আমাদের বিপদের চাইতে মহাবিপদের মধ্যে পড়তে হয়। সেজন্য আমরা সব কিছু আইন মেনেই করেছি। এখন যদি তাদের অন্য কোনো উদ্দেশ্য থেকে থাকে সেটা তাদের ব্যাপার।

পদ্মা সেতুর বিরোধিতা কি আইন মেনে করেছিলেন? জানতে চাইলে ড. ইউনূস বলেন, পদ্মা সেতুর বিরোধিতা করেছি এটা কী প্রমাণিত? সব জায়গায় সব কিছু যদি প্রমাণিতই হয়, তাহলে তো কথা শেষ! তাহলে কিছু করা বা বলাও যাবে না।

এখন এসব প্রতিষ্ঠানের ভবিষ্যৎ কী হবে? জানতে চাইলে তিনি বলেন, এটা পরিষ্কার যুদ্ধ। মামলার মধ্যে ঢুকিয়ে দিয়ে সর্বস্বান্ত করা হবে। এগুলো একটাও কাজ করতে পারবে না। এগুলোই মুশকিল ব্যাপার।

গ্রামীণ টেলিকম ভবনের বাইরে ঝাড়ু মিছিল হয়েছে। তাদের কেউ কেউ বলেছেন, আপনি এক লাখ টাকা তার কাছ থেকে নিয়েছেন, এক বছর আগে। আর গ্রামীণ ফোনে কথা বললে টাকা কাটে বেশি, কল রেট বেশি। আরেকজন বলেছেন, দুই লাখ টাকা নিয়েছিলেন গ্রামীণ ব্যাংক থেকে। সেই টাকাও সুদ বেশি। এসব ব্যাপারে জানতে চাইলে ড. ইউনূস হেসে বলেন, আমরা যাদের বিরুদ্ধে অভিযোগ করছি, ওনাদের অভিযোগ তাদের বিরুদ্ধে। আমরা একদল। দুই দল না। আমি তো বলেছিলাম ওদের থাকতে, যারা ঝাড়ু মিছিল করছিল, আমি ওদের সঙ্গে ছবি-সেলফি তুলতে চেয়েছিলাম।

তিনি বলেন, পদ্মা সেতুর প্রসঙ্গও যেমন দেশবাসীর ওপর ছেড়ে দিয়েছি, তেমনি এ ব্যাপারটিও দেশবাসীর ওপর ছেড়ে দিয়েছি।

পদ্মা সেতুর প্রসঙ্গে যেসব অভিযোগ প্রশ্ন উঠেছিল সেগুলোর সঙ্গে এর কোনো যোগসাজশ রয়েছে কি না, জানতে চাইলে তিনি বলেন, আপনারা তো বুদ্ধিমান, খুঁজেন, খুঁজে দেখেন, খুঁজে বের করেন কোনো সম্পর্ক রয়েছে কি না। আমরা তো পরিষ্কার বললাম।

‘সম্পর্ক না থাকলেও গ্রামীণ ব্যাংকের লোকজনই গ্রামীণ টেলিকম ভবন জবরদখলে এসেছে’ —ড. ইউনুস কর্তৃক উত্থাপিত অভিযোগের ব্যাপারে জানতে যোগাযোগ করা হলে গ্রামীণ ব্যাংক কর্তৃপক্ষের কোনো মন্তব্য পাওয়া যায়নি। সশরীরে মিরপুর গ্রামীণ ব্যাংক প্রধান কার্যালয়ে যোগাযোগ করা হলে সাংবাদিকদের ঢুকতে দেওয়া হয়নি। নিরাপত্তা কর্মীদের মাধ্যমে জানানো হয়েছে পরবর্তী সময়ে তারা এবিষয়ে কথা বলবেন।

জনপ্রিয় খবর

আবহাওয়া

মিটফোর্ড হত্যাকাণ্ড : আসামি টিটন গাজী ৫ দিনের রিমান্ডে

গ্রামীণ ব্যাংক ৮টি প্রতিষ্ঠান জবরদখল করেছে, অভিযোগ ড. ইউনূসের

প্রকাশের সময় : ০৮:৫৮:৫৫ অপরাহ্ন, বৃহস্পতিবার, ১৫ ফেব্রুয়ারী ২০২৪

নিজস্ব প্রতিবেদক : 

নোবেলজয়ী ড. মুহাম্মদ ইউনূস অভিযোগ করেছেন, গ্রামীণ ব্যাংক তাদের ৮টি প্রতিষ্ঠান জবরদখল করেছে। এগুলো তাদের মতো করে চালাচ্ছে। পুলিশের কাছেও সহযোগিতা পাননি।

বৃহস্পতিবার (১৫ ফেব্রুয়ারি) দুপুরে রাজধানীর মিরপুরে গ্রামীণ টেলিকম ভবনে আয়োজিত এক সংবাদ সম্মেলনে এ অভিযোগ করেন ড. ইউনূস।

তিনি বলেন, নিজের অফিসে ঢুকতে পারবো কিনা- এটা এখন বাইরের লোকের এখতিয়ার হয়ে গেছে। আমি দুঃখ-কষ্টে পড়ে গেছি। ভয়ঙ্কর পরিস্থিতিতে আছি।

নোবেলজয়ী এ অর্থনীতিবিদ বলেন, ভবনটা আমরা করেছি, এটা আমাদের স্বপ্নের বাস্তবায়ন। হঠাৎ ৪ দিন আগে বাইরের লোক এসে জবরদখল শুরু করে আর আমরা বাইরের লোক হয়ে গেলাম।

এ সময় ছিলেন গ্রামীণ টেলিকমের ব্যবস্থাপনা পরিচালক নাজমুল ইসলাম এবং গ্রামীণ কল্যাণের ব্যবস্থাপনা পরিচালক এ কে এম মঈনুদ্দিন চৌধুরী।

রাজধানীর মিরপুরের গ্রামীণ টেলিকম ভবনে ড. ইউনূসের ১৬টি কোম্পানি রয়েছে। এর প্রতিটির চেয়ারম্যান ড. ইউনূস। তার অভিযোগ, গত ১২ ফেব্রুয়ারি গ্রামীণ ব্যাংকের পক্ষ থেকে এ ভবনে অবস্থিত আটটি অফিস দখল করে নেওয়া হয়।

তিনি বলেন, ওই দিন থেকে তারা ভবনে তালা মেরে রেখেছে। নিজের বাড়িতে অন্য কেউ যদি তালা মারে, তখন কেমন লাগার কথা, আপনারাই বলেন। তাহলে দেশে আইন–আদালত আছে কিসের জন্য। তারা আদালতে যেতে চায় না। আমরা জীবনে বহু দুর্যোগ দেখেছি। এমন দুর্যোগ আর কখনো দেখিনি। পুলিশের কাছে সহযোগীতা চেয়েছেন উল্লেখ করে তিনি বলেন, তারা ঘুরে গিয়ে কোনো অসুবিধা দেখছেন না জানান!

নোবেলজয়ী এ অর্থনীতিবিদ বলেন, মামলা হোক। আদালতে আমাদের অনেক মামলা চলমান। সেভাবে আমরা মোকাবিলা করবো। কিন্তু জবরদখল কেন! দেশের মানুষের কাছে বিচারের ভার দিলাম।

গ্রামীণ ব্যাংকের কোনো টাকা এসব প্রতিষ্ঠানে নেই, দাবি করে ড. ইউনূস বলেন, তাদের সঙ্গে আমাদের যোগাযোগ নেই, তাদের একটি টাকাও এখানে নেই। গ্রামীণ ব্যাংকের যে সমস্ত দাবি-দাওয়া সেগুলো এখানে নেই। আমাদের আইন-বিধি পরিষ্কার। আইন মেনে বুঝে বুঝে সব কিছু করা হয়েছে। এমন একটা জটিল পরিস্থিতিতে আমাদের কাজ করতে হয়, আইন ভঙ্গ করলে আমাদের বিপদের চাইতে মহাবিপদের মধ্যে পড়তে হয়। সেজন্য আমরা সব কিছু আইন মেনেই করেছি। এখন যদি তাদের অন্য কোনো উদ্দেশ্য থেকে থাকে সেটা তাদের ব্যাপার।

পদ্মা সেতুর বিরোধিতা কি আইন মেনে করেছিলেন? জানতে চাইলে ড. ইউনূস বলেন, পদ্মা সেতুর বিরোধিতা করেছি এটা কী প্রমাণিত? সব জায়গায় সব কিছু যদি প্রমাণিতই হয়, তাহলে তো কথা শেষ! তাহলে কিছু করা বা বলাও যাবে না।

এখন এসব প্রতিষ্ঠানের ভবিষ্যৎ কী হবে? জানতে চাইলে তিনি বলেন, এটা পরিষ্কার যুদ্ধ। মামলার মধ্যে ঢুকিয়ে দিয়ে সর্বস্বান্ত করা হবে। এগুলো একটাও কাজ করতে পারবে না। এগুলোই মুশকিল ব্যাপার।

গ্রামীণ টেলিকম ভবনের বাইরে ঝাড়ু মিছিল হয়েছে। তাদের কেউ কেউ বলেছেন, আপনি এক লাখ টাকা তার কাছ থেকে নিয়েছেন, এক বছর আগে। আর গ্রামীণ ফোনে কথা বললে টাকা কাটে বেশি, কল রেট বেশি। আরেকজন বলেছেন, দুই লাখ টাকা নিয়েছিলেন গ্রামীণ ব্যাংক থেকে। সেই টাকাও সুদ বেশি। এসব ব্যাপারে জানতে চাইলে ড. ইউনূস হেসে বলেন, আমরা যাদের বিরুদ্ধে অভিযোগ করছি, ওনাদের অভিযোগ তাদের বিরুদ্ধে। আমরা একদল। দুই দল না। আমি তো বলেছিলাম ওদের থাকতে, যারা ঝাড়ু মিছিল করছিল, আমি ওদের সঙ্গে ছবি-সেলফি তুলতে চেয়েছিলাম।

তিনি বলেন, পদ্মা সেতুর প্রসঙ্গও যেমন দেশবাসীর ওপর ছেড়ে দিয়েছি, তেমনি এ ব্যাপারটিও দেশবাসীর ওপর ছেড়ে দিয়েছি।

পদ্মা সেতুর প্রসঙ্গে যেসব অভিযোগ প্রশ্ন উঠেছিল সেগুলোর সঙ্গে এর কোনো যোগসাজশ রয়েছে কি না, জানতে চাইলে তিনি বলেন, আপনারা তো বুদ্ধিমান, খুঁজেন, খুঁজে দেখেন, খুঁজে বের করেন কোনো সম্পর্ক রয়েছে কি না। আমরা তো পরিষ্কার বললাম।

‘সম্পর্ক না থাকলেও গ্রামীণ ব্যাংকের লোকজনই গ্রামীণ টেলিকম ভবন জবরদখলে এসেছে’ —ড. ইউনুস কর্তৃক উত্থাপিত অভিযোগের ব্যাপারে জানতে যোগাযোগ করা হলে গ্রামীণ ব্যাংক কর্তৃপক্ষের কোনো মন্তব্য পাওয়া যায়নি। সশরীরে মিরপুর গ্রামীণ ব্যাংক প্রধান কার্যালয়ে যোগাযোগ করা হলে সাংবাদিকদের ঢুকতে দেওয়া হয়নি। নিরাপত্তা কর্মীদের মাধ্যমে জানানো হয়েছে পরবর্তী সময়ে তারা এবিষয়ে কথা বলবেন।