Dhaka সোমবার, ১৪ জুলাই ২০২৫, ৩০ আষাঢ় ১৪৩২ বঙ্গাব্দ

গোয়ালন্দে সেতুতে ঝুঁকি নিয়েই চলছে যানবাহন

রাজবাড়ী জেলা প্রতিনিধি : 

রাজবাড়ীর গোয়ালন্দ উপজেলার দেবগ্রাম ইউনিয়নের তেনাপচা খালের ওপর নির্মিত জরাজীর্ণ সেতুটি মাঝ বরাবর দেবে গেলেও এর ওপর দিয়ে ঝুঁকি নিয়েই চলছে যানবাহন। দেবে যাওয়া সেতুটি দিয়ে যানবাহন চলাচল অব্যাহত থাকায় যেকোনো সময় ঘটতে পারে বড় ধরনের দুর্ঘটনা।

সরেজমিনে দেখা যায়, সেতুটি মাঝ বরাবর দেবে গেছে। সেতুর দুইপাশে মাটি সরে বড় গর্তের সৃষ্টি হয়েছে। এর নিচের অংশে বিভিন্ন জায়গায় ফাটল দেখা দিয়েছে। এমতাবস্থায় ঝুঁকি নিয়ে ওই সেতু দিয়ে যানবাহন ও মানুষ চলাচল করছে।

জানা গেছে, ২০২১ সালের অক্টোবরের শেষের দিকে বর্ষার পানির স্রোতে সেতুর নীচ থেকে মাটি ধসে সেতুটি মাঝের অংশ দেবে গেলে ওই বছরের নভেম্বর থেকে যান চলাচল বন্ধ রাখতে বলে প্রশাসন।

সংশ্লিষ্ট সূত্র জানায়, ২০০২-২০০৩ অর্থ বছরে দুর্যোগ ও ত্রাণ মন্ত্রণালয়ের অর্থায়নে তেনাপচা খালের ওপর প্রায় ১৫ লাখ টাকা ব্যয়ে ১২ মিটার দৈর্ঘ্যের ২ ভেন্ট বক্স কালভার্ট বা ছোট সেতু নির্মাণ করা হয়। সেতুটি তেনাপচা আশ্রয়ণ ইউজেড-আরএইচডি (পিয়ার আলী মোড়) এলজিইডি সড়কের ৫২৩ মিটার চেইনেজে অবস্থিত।

পানি উন্নয়ন বোর্ড (পাউবো) রাজবাড়ী জেলা কার্যালয় জানায়, ৬৪ জেলার খাল খনন প্রকল্পের আওতায় গোয়ালন্দ-রাজবাড়ী-ফরিদপুরের ১৭ কিলোমিটার দৈর্ঘ্যের খাল খনন প্রকল্পের কাজ ২০১৮-২০১৯ থেকে শুরু করে ২০২০-২০২১ অর্থ বছরে শেষ হয়। প্রায় ২৫ ফুট চওড়া এবং ৪ ফুট গভীর খনন কাজের প্রাক্কলিত ব্যয় ধরা হয় ৭ কোটি ২৫ লাখ টাকা। চুক্তিমূল্য ধরা হয়েছিল ৬ কোটি ৫২ লাখ টাকা। পাউবো রাজবাড়ীর তত্ত্বাবধানে তেনাপচা পদ্মা নদী হতে ছোটভাকলা ইউপির কেউটিল হয়ে ফরিদপুর পর্যন্ত ১৭ কিলোমিটার দৈর্ঘ্যের কাজটি করে ঢাকার মতিঝিল টিটিএসএল-এসআর নামক প্রতিষ্ঠান। এর মধ্যে গোয়ালন্দ উপজেলা এলাকায় ছিল প্রায় ১১ কিলোমিটার।

স্থানীয় বাসিন্দা শামিম শেখ বলেন, খাল পাড় ভেঙে যাওয়ায় আমাদের বাড়ি-ঘর থাকছে না। দীর্ঘদিন সেতুটির মাঝ বরাবর দেবে গেছে। কবে জানি বড় ধরনের দুর্ঘটনা ঘটবে।

স্থানীয় ভ্যানচালক সোহেল রানা বলেন, আর কতদিন আমরা যাত্রীসহ এভাবে ঝুঁকি নিয়ে ভাঙা সেতুটি ওপর দিয়ে চলাচল করব? কয়েকদিন আগে সেতু পার হতে গিয়ে এক ঝালমুড়ি বিক্রেতার ভ্যান সেতুর নিচে পড়ে তার অনেক টাকার ক্ষয়ক্ষতি হয়েছে, আমরা এখন নিরুপায় হয়ে গেছি। ভাঙা সেতুটি নতুন করে তৈরি করা হলে আমরা দুশ্চিন্তামুক্ত হব।

দেবগ্রাম ইউপি চেয়ারম্যান হাফিজুল ইসলাম বলেন, বর্ষাকালে প্রচণ্ড বেগে পানি প্রবাহিত হওয়ায় পাশের মাটি ধসে সেতুটি দেবে গেছে। দুর্ঘটনার ঝুঁকি থাকায় গত ২ বছর আগে ২০২১ সালের নভেম্বর মাসের শুরু থেকেই ভারি যান চলাচল বন্ধ রয়েছে। হালকা যান ও পথচারী চলাচল অব্যাহত থাকায় যেকোনো মুহূর্তে সেতুটি সম্পূর্ণ ভেঙে পড়ার আশঙ্কা রয়েছে।

গোয়ালন্দ উপজেলা এলজিইডি প্রকৌশলী বজলুর রহমান খান বলেন, সেতুটির ব্যাপারে আমরা পিডি মহোদয়ের সঙ্গে কথা বলেছি এবং কাগজপত্র পাঠিয়েছি। অনুমোদন পেলে কাজ শুরু করতে পারব।

জনপ্রিয় খবর

আবহাওয়া

যুক্তরাষ্ট্র গেলেন শাকিব খান

গোয়ালন্দে সেতুতে ঝুঁকি নিয়েই চলছে যানবাহন

প্রকাশের সময় : ০২:২১:১৩ অপরাহ্ন, মঙ্গলবার, ৫ সেপ্টেম্বর ২০২৩

রাজবাড়ী জেলা প্রতিনিধি : 

রাজবাড়ীর গোয়ালন্দ উপজেলার দেবগ্রাম ইউনিয়নের তেনাপচা খালের ওপর নির্মিত জরাজীর্ণ সেতুটি মাঝ বরাবর দেবে গেলেও এর ওপর দিয়ে ঝুঁকি নিয়েই চলছে যানবাহন। দেবে যাওয়া সেতুটি দিয়ে যানবাহন চলাচল অব্যাহত থাকায় যেকোনো সময় ঘটতে পারে বড় ধরনের দুর্ঘটনা।

সরেজমিনে দেখা যায়, সেতুটি মাঝ বরাবর দেবে গেছে। সেতুর দুইপাশে মাটি সরে বড় গর্তের সৃষ্টি হয়েছে। এর নিচের অংশে বিভিন্ন জায়গায় ফাটল দেখা দিয়েছে। এমতাবস্থায় ঝুঁকি নিয়ে ওই সেতু দিয়ে যানবাহন ও মানুষ চলাচল করছে।

জানা গেছে, ২০২১ সালের অক্টোবরের শেষের দিকে বর্ষার পানির স্রোতে সেতুর নীচ থেকে মাটি ধসে সেতুটি মাঝের অংশ দেবে গেলে ওই বছরের নভেম্বর থেকে যান চলাচল বন্ধ রাখতে বলে প্রশাসন।

সংশ্লিষ্ট সূত্র জানায়, ২০০২-২০০৩ অর্থ বছরে দুর্যোগ ও ত্রাণ মন্ত্রণালয়ের অর্থায়নে তেনাপচা খালের ওপর প্রায় ১৫ লাখ টাকা ব্যয়ে ১২ মিটার দৈর্ঘ্যের ২ ভেন্ট বক্স কালভার্ট বা ছোট সেতু নির্মাণ করা হয়। সেতুটি তেনাপচা আশ্রয়ণ ইউজেড-আরএইচডি (পিয়ার আলী মোড়) এলজিইডি সড়কের ৫২৩ মিটার চেইনেজে অবস্থিত।

পানি উন্নয়ন বোর্ড (পাউবো) রাজবাড়ী জেলা কার্যালয় জানায়, ৬৪ জেলার খাল খনন প্রকল্পের আওতায় গোয়ালন্দ-রাজবাড়ী-ফরিদপুরের ১৭ কিলোমিটার দৈর্ঘ্যের খাল খনন প্রকল্পের কাজ ২০১৮-২০১৯ থেকে শুরু করে ২০২০-২০২১ অর্থ বছরে শেষ হয়। প্রায় ২৫ ফুট চওড়া এবং ৪ ফুট গভীর খনন কাজের প্রাক্কলিত ব্যয় ধরা হয় ৭ কোটি ২৫ লাখ টাকা। চুক্তিমূল্য ধরা হয়েছিল ৬ কোটি ৫২ লাখ টাকা। পাউবো রাজবাড়ীর তত্ত্বাবধানে তেনাপচা পদ্মা নদী হতে ছোটভাকলা ইউপির কেউটিল হয়ে ফরিদপুর পর্যন্ত ১৭ কিলোমিটার দৈর্ঘ্যের কাজটি করে ঢাকার মতিঝিল টিটিএসএল-এসআর নামক প্রতিষ্ঠান। এর মধ্যে গোয়ালন্দ উপজেলা এলাকায় ছিল প্রায় ১১ কিলোমিটার।

স্থানীয় বাসিন্দা শামিম শেখ বলেন, খাল পাড় ভেঙে যাওয়ায় আমাদের বাড়ি-ঘর থাকছে না। দীর্ঘদিন সেতুটির মাঝ বরাবর দেবে গেছে। কবে জানি বড় ধরনের দুর্ঘটনা ঘটবে।

স্থানীয় ভ্যানচালক সোহেল রানা বলেন, আর কতদিন আমরা যাত্রীসহ এভাবে ঝুঁকি নিয়ে ভাঙা সেতুটি ওপর দিয়ে চলাচল করব? কয়েকদিন আগে সেতু পার হতে গিয়ে এক ঝালমুড়ি বিক্রেতার ভ্যান সেতুর নিচে পড়ে তার অনেক টাকার ক্ষয়ক্ষতি হয়েছে, আমরা এখন নিরুপায় হয়ে গেছি। ভাঙা সেতুটি নতুন করে তৈরি করা হলে আমরা দুশ্চিন্তামুক্ত হব।

দেবগ্রাম ইউপি চেয়ারম্যান হাফিজুল ইসলাম বলেন, বর্ষাকালে প্রচণ্ড বেগে পানি প্রবাহিত হওয়ায় পাশের মাটি ধসে সেতুটি দেবে গেছে। দুর্ঘটনার ঝুঁকি থাকায় গত ২ বছর আগে ২০২১ সালের নভেম্বর মাসের শুরু থেকেই ভারি যান চলাচল বন্ধ রয়েছে। হালকা যান ও পথচারী চলাচল অব্যাহত থাকায় যেকোনো মুহূর্তে সেতুটি সম্পূর্ণ ভেঙে পড়ার আশঙ্কা রয়েছে।

গোয়ালন্দ উপজেলা এলজিইডি প্রকৌশলী বজলুর রহমান খান বলেন, সেতুটির ব্যাপারে আমরা পিডি মহোদয়ের সঙ্গে কথা বলেছি এবং কাগজপত্র পাঠিয়েছি। অনুমোদন পেলে কাজ শুরু করতে পারব।