Dhaka শনিবার, ০২ অগাস্ট ২০২৫, ১৮ শ্রাবণ ১৪৩২ বঙ্গাব্দ

গৃহবধূ হত্যায় স্বামী-শাশুড়িসহ ৫ জনের ফাঁসি

হবিগঞ্জ জেলা প্রতিনিধি : 

হবিগঞ্জের চুনারুঘাট উপজেলার সাদেকপুর গ্রামের তাহেরা আক্তার আয়েশা নামে এক গৃহবধূকে সাত মাসের অন্তঃসত্ত্বা অবস্থায় যৌতুকের জন্য হত্যা করা হয়। এ হত্যার অভিযোগে ওই গৃহবধূর স্বামী, শাশুড়ি, ননদসহ পাঁচজনের মৃত্যুদণ্ড আদেশ দিয়েছেন আদালত।

বৃহস্পতিবার (২৬ অক্টোবর) দুপুরে হবিগঞ্জের নারী ও শিশু নির্যাতন দমন ট্রাইব্যুনাল-২-এর বিচারক জেলা ও দায়রা জজ জাহিদুল হক এই দণ্ডাদেশ দেন।

দণ্ডপ্রাপ্তরা হচ্ছেন চুনারুঘাট উপজেলার সাদেকপুর গ্রামের হরমুজ আলীর ছেলে নিহতের স্বামী মো. রাসেল মিয়া (২৫), নিহতের ভাসুর মো. কাউছার মিয়া (৩২), শাশুড়ি তাহেরা বেগম (৫০), ননদ হোছনা বেগম (২০) ও জা রোজি বেগম (২৭)। তাদের মধ্যে কাউছার মিয়া পলাতক রয়েছেন।

নিহতের বাবা মামলার বাদি আব্দুস সাত্তার বলেন, যৌতুকের জন্য মারপিট করে জামাই, শাশুড়ি, ননদ, ভাসুর মিলে আমার মেয়েকে নির্মমভাবে হত্যা করেছে। আমার মেয়ে সাত মাসের গর্ভবতী ছিল। আমি রায়ে সন্তুষ্ট। তবে দ্রুত রায় কার্যকর করার দাবি জানাই।

রায় ঘোষণাকালে কাউসার মিয়া পলাতক ছিল। অন্য সব আসামি আদালতে উপস্থিত ছিল। তাদের জেলহাজতে পাঠানো হয়েছে।

আদালত সূত্রে জানা যায়, ২০১৫ সালের জানুয়ারি মাসে চুনারুঘাট উপজেলার পঞ্চাশ গ্রামের আব্দুস সাত্তারের মেয়ে তাহেরা আক্তার আয়েশার বিয়ে হয়।

বিয়ের পর তাহেরা আক্তার আয়েশা সাত মাসের অন্তঃসত্ত্বা থাকা অবস্থায় ওই বছরের সেপ্টেম্বর মাসের ১৫ তারিখ রাতে তাকে পিটিয়ে হত্যা করা হয়। পরদিন তাহেরা আক্তার আয়েশার পিতা আব্দুস সাত্তার বাদী হয়ে উল্লিখিত পাঁচজনের বিরুদ্ধে চুনারুঘাট থানায় মামলা দায়ের করেন। আসামি রাসেল মিয়া আদালতে ১৬৪ ধারায় জবানবন্দি দিয়ে হত্যার দায় স্বীকার করে।

পরে চুনারুঘাট থানা পুলিশ শুধু রাসেল মিয়ার বিরুদ্ধে চার্জশিট দাখিল করে।

এ ব্যাপারে বাদীপক্ষের আইনজীবী নারাজি প্রদান করলে মামলাটি পিবিআই তদন্ত করে। পিবিআইও শুধু রাসেল মিয়াকে আসামি রেখে অন্য চারজনের নাম বাদ দিয়ে অভিযোগপত্র দাখিল করে। বাদীপক্ষ পুনরায় নারাজির আবেদন করলে বিজ্ঞ বিচারক পাঁচজনের নামেই আমলে গ্রহণ করেন। পরে ১২ জনের সাক্ষ্যগ্রহণ শেষে আজ বৃহস্পতিবার বিজ্ঞ বিচারক পাঁচজনের বিরুদ্ধে ফাঁসির আদেশ প্রদান করেন।
রায় ঘোষণাকালে তাহেরা আক্তার আয়েশার পিতা ও মামলার বাদী আব্দুস সাত্তার আদালতে উপস্থিত ছিলেন।

তিনি রায় শুনে কান্নায় ভেঙে পড়েন এবং এই রায়ে সন্তোষ প্রকাশ করেন। তিনি দ্রুত রায় বাস্তবায়নের দাবি জানান।

মামলার বাদীপক্ষের আইনজীবী অ্যাডভোকেট সেলিম আহমেদ ও রাষ্ট্রপক্ষের আইনজীবী স্পেশাল পিপি অ্যাডভোকেট আবুল মনসুর এই রায়ে সন্তোষ প্রকাশ করে বলেন, এর মাধ্যমে ন্যায়বিচার প্রতিষ্ঠিত হয়েছে। অপরাধীরা ভবিষ্যতে এ ধরনের অপরাধ করতে সাবধান হবে।

আসামিপক্ষের আইনজীবী অ্যাডভোকেট এম এ মজিদ বলেন, এই রায়ের বিরুদ্ধে তারা উচ্চ আদালতে আপিল দায়ের করবেন।

জনপ্রিয় খবর

আবহাওয়া

রোববারের বৈঠকে দাবি না মানলে ফের ৭২ ঘণ্টার পরিবহন ধর্মঘটের হুমকি মালিক-শ্রমিকদের

গৃহবধূ হত্যায় স্বামী-শাশুড়িসহ ৫ জনের ফাঁসি

প্রকাশের সময় : ০৪:৪৭:৩৫ অপরাহ্ন, বৃহস্পতিবার, ২৬ অক্টোবর ২০২৩

হবিগঞ্জ জেলা প্রতিনিধি : 

হবিগঞ্জের চুনারুঘাট উপজেলার সাদেকপুর গ্রামের তাহেরা আক্তার আয়েশা নামে এক গৃহবধূকে সাত মাসের অন্তঃসত্ত্বা অবস্থায় যৌতুকের জন্য হত্যা করা হয়। এ হত্যার অভিযোগে ওই গৃহবধূর স্বামী, শাশুড়ি, ননদসহ পাঁচজনের মৃত্যুদণ্ড আদেশ দিয়েছেন আদালত।

বৃহস্পতিবার (২৬ অক্টোবর) দুপুরে হবিগঞ্জের নারী ও শিশু নির্যাতন দমন ট্রাইব্যুনাল-২-এর বিচারক জেলা ও দায়রা জজ জাহিদুল হক এই দণ্ডাদেশ দেন।

দণ্ডপ্রাপ্তরা হচ্ছেন চুনারুঘাট উপজেলার সাদেকপুর গ্রামের হরমুজ আলীর ছেলে নিহতের স্বামী মো. রাসেল মিয়া (২৫), নিহতের ভাসুর মো. কাউছার মিয়া (৩২), শাশুড়ি তাহেরা বেগম (৫০), ননদ হোছনা বেগম (২০) ও জা রোজি বেগম (২৭)। তাদের মধ্যে কাউছার মিয়া পলাতক রয়েছেন।

নিহতের বাবা মামলার বাদি আব্দুস সাত্তার বলেন, যৌতুকের জন্য মারপিট করে জামাই, শাশুড়ি, ননদ, ভাসুর মিলে আমার মেয়েকে নির্মমভাবে হত্যা করেছে। আমার মেয়ে সাত মাসের গর্ভবতী ছিল। আমি রায়ে সন্তুষ্ট। তবে দ্রুত রায় কার্যকর করার দাবি জানাই।

রায় ঘোষণাকালে কাউসার মিয়া পলাতক ছিল। অন্য সব আসামি আদালতে উপস্থিত ছিল। তাদের জেলহাজতে পাঠানো হয়েছে।

আদালত সূত্রে জানা যায়, ২০১৫ সালের জানুয়ারি মাসে চুনারুঘাট উপজেলার পঞ্চাশ গ্রামের আব্দুস সাত্তারের মেয়ে তাহেরা আক্তার আয়েশার বিয়ে হয়।

বিয়ের পর তাহেরা আক্তার আয়েশা সাত মাসের অন্তঃসত্ত্বা থাকা অবস্থায় ওই বছরের সেপ্টেম্বর মাসের ১৫ তারিখ রাতে তাকে পিটিয়ে হত্যা করা হয়। পরদিন তাহেরা আক্তার আয়েশার পিতা আব্দুস সাত্তার বাদী হয়ে উল্লিখিত পাঁচজনের বিরুদ্ধে চুনারুঘাট থানায় মামলা দায়ের করেন। আসামি রাসেল মিয়া আদালতে ১৬৪ ধারায় জবানবন্দি দিয়ে হত্যার দায় স্বীকার করে।

পরে চুনারুঘাট থানা পুলিশ শুধু রাসেল মিয়ার বিরুদ্ধে চার্জশিট দাখিল করে।

এ ব্যাপারে বাদীপক্ষের আইনজীবী নারাজি প্রদান করলে মামলাটি পিবিআই তদন্ত করে। পিবিআইও শুধু রাসেল মিয়াকে আসামি রেখে অন্য চারজনের নাম বাদ দিয়ে অভিযোগপত্র দাখিল করে। বাদীপক্ষ পুনরায় নারাজির আবেদন করলে বিজ্ঞ বিচারক পাঁচজনের নামেই আমলে গ্রহণ করেন। পরে ১২ জনের সাক্ষ্যগ্রহণ শেষে আজ বৃহস্পতিবার বিজ্ঞ বিচারক পাঁচজনের বিরুদ্ধে ফাঁসির আদেশ প্রদান করেন।
রায় ঘোষণাকালে তাহেরা আক্তার আয়েশার পিতা ও মামলার বাদী আব্দুস সাত্তার আদালতে উপস্থিত ছিলেন।

তিনি রায় শুনে কান্নায় ভেঙে পড়েন এবং এই রায়ে সন্তোষ প্রকাশ করেন। তিনি দ্রুত রায় বাস্তবায়নের দাবি জানান।

মামলার বাদীপক্ষের আইনজীবী অ্যাডভোকেট সেলিম আহমেদ ও রাষ্ট্রপক্ষের আইনজীবী স্পেশাল পিপি অ্যাডভোকেট আবুল মনসুর এই রায়ে সন্তোষ প্রকাশ করে বলেন, এর মাধ্যমে ন্যায়বিচার প্রতিষ্ঠিত হয়েছে। অপরাধীরা ভবিষ্যতে এ ধরনের অপরাধ করতে সাবধান হবে।

আসামিপক্ষের আইনজীবী অ্যাডভোকেট এম এ মজিদ বলেন, এই রায়ের বিরুদ্ধে তারা উচ্চ আদালতে আপিল দায়ের করবেন।