Dhaka শুক্রবার, ২২ অগাস্ট ২০২৫, ৬ ভাদ্র ১৪৩২ বঙ্গাব্দ

গুলি ছুড়ে বিয়ে উদযাপন কনের!

আন্তর্জাতিক ডেস্ক : 

বিয়ের অনুষ্ঠানে ৫ সেকেন্ডে চার রাউন্ড গুলে ছুড়ে আনন্দ উদযাপনই কাল হলো কনের। এ ঘটনার পরই বিয়ের অনুষ্ঠান থেকে পালিয়ে যায় কনে। পুলিশ এখন ওই বর কনেকে খুঁজছে। ভারতের উত্তর প্রদেশে এক বিয়ের অনুষ্ঠানে এ ঘটনা ঘটে।

এ ঘটনার ভিডিও সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ভাইরাল হয়েছে। এতে দেখা যাচ্ছে বিয়ের অনুষ্ঠানে বর-কনে পাশাপাশি বসা। এর মধ্যে কনের হাতে একটি পিস্তল থেকে আকাশের দিকে একের পর এক গুলি ছুড়তে দেখা যাচ্ছে। এ সময় তার পেছনে এক ব্যক্তিকে দাঁড়িয়ে থাকতে ও হাসতে দেখা গেছে।

গত শুক্রবার সেলেমপুর গ্রামের হাথরাস জ্যাকশনের একটি গেস্ট হাউজে ওই বিয়ের আয়োজন করা হয়। ভিডিওটি সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ছড়িয়ে পড়ার পর তা পুলিশের নজরে আসে। এরপরই পুলিশ এ ঘটনার তদন্ত শুরু করে।

হাথরাসের অতিরিক্ত পুলিশ সুপার জানিয়েছেন, এ ঘটনায় একটি মামলা দায়ের করা হয়েছে। এ ঘটনার পর ওই পরিবারের সদস্যদেরকেও জিজ্ঞাসাবাদ করা হচ্ছে। এছাড়া অনুষ্ঠানে পিস্তল বহন করা ওই ব্যক্তিকেও খুঁজে বেড়াচ্ছে পুলিশ।

উত্তর ভারতের অনেক রাজ্যে বন্দুক চালিয়ে বিয়ে উদযাপন করা হয়। অনেক সময় এই বন্দুকের গুলিতেই কেউ আহত এবং এমনকি মৃত্যুও ঘটে। তবে এটা আইন বর্হিভূত কাজ। ২০১৯ সালের অস্ত্র আইন অনুযায়ী জনসমাগমে কোনো ব্যক্তি লাইলেন্সকৃত অস্ত্র বহন করতে পারবে না। যদি কেউ এ আইন ভঙ্গ করে তাহলে তাকে দুই বছরের জেল অথবা এক লাখ টাকা জরিমানা অথবা উভয় দণ্ডে দণ্ডিত করার বিধান আছে।

এর আগে ২০১৬ সালে উত্তর প্রদেশের রাজধানী লখনৌয়ের একটি আদালত আনন্দ উদযাপনের সময় গুলি চালানোর প্রতিটি ঘটনা তদন্ত করা উচিত বলে রায় দিয়েছিল। পুলিশের কাছে অভিযোগ দায়ের করা হয়েছে কিনা সেটি বিবেচনায় না নিয়ে এই ধরনের ঘটনা সেসময় তদন্তের নির্দেশ দেওয়া হয়।

ভারতীয় সংবাদমাধ্যম টাইমস অব ইন্ডিয়ার মতে, উত্তর প্রদেশের ওই কনের গুলি চালানোর ভিডিওটি এক আত্মীয় রেকর্ড করেছিলেন। পরে তিনি সোশ্যাল মিডিয়ায় ফুটেজটি পোস্টও করেন। পুলিশ এই সংবাদমাধ্যমটিকে জানিয়েছে, ঘটনাটির ভিডিও ভাইরাল হওয়ার পর গ্রেপ্তারের আশঙ্কায় ওই নববধূ এখন পালিয়ে বেড়াচ্ছেন।

আরেক সংবাদমাধ্যম হিন্দুস্তান টাইমস বলছে, উত্তর-মধ্য ভারতের বিয়েবাড়িতে আনন্দ প্রকাশে গুলি চালানোর ঘটনা অবশ্য নতুন কিছু নয়। সেখানে প্রায়শই বিয়েবাড়িতে বর-কনেকে এভাবে শূন্যে গুলি ছুড়ে উদযাপন করতে দেখা যায়।

বিশেষজ্ঞদের মতে, সিনেমা, ভিডিওতে দেখে বন্দুক চালানো সহজ মনে হতে পারে। এছাড়া গুলি ছোড়ার মধ্যে একটা শক্তিশালী ভাব আছে বলে অনেকে মনে করেন। কিন্তু আদতে বন্দুক চালানো মোটেও সহজ নয়।

বন্দুক চালানোর জন্য রীতিমতো প্রশিক্ষণের প্রয়োজন নয়। প্রয়োজন নিয়মিত অভ্যেসেরও। এছাড়া বন্দুক ব্যবহারের নানা নিয়ম আছে। যার একটু ব্যতিক্রম হলেই যে কোনও সময়ে হতে পারে বিপদ।

সংবাদমাধ্যমটি বলছে, বন্দুক লাইসেন্স করা হলেও বিনা কারণে তা চালানো বেআইনি। সেই ক্ষমতা পুলিশ-সেনা সদস্যদেরও থাকে না। কিন্তু উত্তর-মধ্য ভারতের বেশ কিছু রাজ্যে এই ধরনের রীতি প্রায় ডালভাত। ফলে ঘটে দুর্ঘটনাও।

যদিও সম্প্রতি এ বিষয়ে সতর্ক হয়েছে ভারতের প্রশাসন। উত্তর প্রদেশের পুলিশ প্রশাসন এমন ঘটনা ঘটলে আইনি পদক্ষেপ নিচ্ছে। তবুও এখনও যে সাধারণ মানুষ, প্রভাবশালীরা সচেতন নন, তারই প্রমাণ এই ধরনের ঘটনাতেই পাওয়া যাচ্ছে।

জনপ্রিয় খবর

আবহাওয়া

অপতথ্যের বিরুদ্ধে লড়াইয়ে নামতে ভোটারদের প্রতি আহ্বান সিইসির

গুলি ছুড়ে বিয়ে উদযাপন কনের!

প্রকাশের সময় : ০৭:৫০:১৪ অপরাহ্ন, সোমবার, ১০ এপ্রিল ২০২৩

আন্তর্জাতিক ডেস্ক : 

বিয়ের অনুষ্ঠানে ৫ সেকেন্ডে চার রাউন্ড গুলে ছুড়ে আনন্দ উদযাপনই কাল হলো কনের। এ ঘটনার পরই বিয়ের অনুষ্ঠান থেকে পালিয়ে যায় কনে। পুলিশ এখন ওই বর কনেকে খুঁজছে। ভারতের উত্তর প্রদেশে এক বিয়ের অনুষ্ঠানে এ ঘটনা ঘটে।

এ ঘটনার ভিডিও সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ভাইরাল হয়েছে। এতে দেখা যাচ্ছে বিয়ের অনুষ্ঠানে বর-কনে পাশাপাশি বসা। এর মধ্যে কনের হাতে একটি পিস্তল থেকে আকাশের দিকে একের পর এক গুলি ছুড়তে দেখা যাচ্ছে। এ সময় তার পেছনে এক ব্যক্তিকে দাঁড়িয়ে থাকতে ও হাসতে দেখা গেছে।

গত শুক্রবার সেলেমপুর গ্রামের হাথরাস জ্যাকশনের একটি গেস্ট হাউজে ওই বিয়ের আয়োজন করা হয়। ভিডিওটি সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ছড়িয়ে পড়ার পর তা পুলিশের নজরে আসে। এরপরই পুলিশ এ ঘটনার তদন্ত শুরু করে।

হাথরাসের অতিরিক্ত পুলিশ সুপার জানিয়েছেন, এ ঘটনায় একটি মামলা দায়ের করা হয়েছে। এ ঘটনার পর ওই পরিবারের সদস্যদেরকেও জিজ্ঞাসাবাদ করা হচ্ছে। এছাড়া অনুষ্ঠানে পিস্তল বহন করা ওই ব্যক্তিকেও খুঁজে বেড়াচ্ছে পুলিশ।

উত্তর ভারতের অনেক রাজ্যে বন্দুক চালিয়ে বিয়ে উদযাপন করা হয়। অনেক সময় এই বন্দুকের গুলিতেই কেউ আহত এবং এমনকি মৃত্যুও ঘটে। তবে এটা আইন বর্হিভূত কাজ। ২০১৯ সালের অস্ত্র আইন অনুযায়ী জনসমাগমে কোনো ব্যক্তি লাইলেন্সকৃত অস্ত্র বহন করতে পারবে না। যদি কেউ এ আইন ভঙ্গ করে তাহলে তাকে দুই বছরের জেল অথবা এক লাখ টাকা জরিমানা অথবা উভয় দণ্ডে দণ্ডিত করার বিধান আছে।

এর আগে ২০১৬ সালে উত্তর প্রদেশের রাজধানী লখনৌয়ের একটি আদালত আনন্দ উদযাপনের সময় গুলি চালানোর প্রতিটি ঘটনা তদন্ত করা উচিত বলে রায় দিয়েছিল। পুলিশের কাছে অভিযোগ দায়ের করা হয়েছে কিনা সেটি বিবেচনায় না নিয়ে এই ধরনের ঘটনা সেসময় তদন্তের নির্দেশ দেওয়া হয়।

ভারতীয় সংবাদমাধ্যম টাইমস অব ইন্ডিয়ার মতে, উত্তর প্রদেশের ওই কনের গুলি চালানোর ভিডিওটি এক আত্মীয় রেকর্ড করেছিলেন। পরে তিনি সোশ্যাল মিডিয়ায় ফুটেজটি পোস্টও করেন। পুলিশ এই সংবাদমাধ্যমটিকে জানিয়েছে, ঘটনাটির ভিডিও ভাইরাল হওয়ার পর গ্রেপ্তারের আশঙ্কায় ওই নববধূ এখন পালিয়ে বেড়াচ্ছেন।

আরেক সংবাদমাধ্যম হিন্দুস্তান টাইমস বলছে, উত্তর-মধ্য ভারতের বিয়েবাড়িতে আনন্দ প্রকাশে গুলি চালানোর ঘটনা অবশ্য নতুন কিছু নয়। সেখানে প্রায়শই বিয়েবাড়িতে বর-কনেকে এভাবে শূন্যে গুলি ছুড়ে উদযাপন করতে দেখা যায়।

বিশেষজ্ঞদের মতে, সিনেমা, ভিডিওতে দেখে বন্দুক চালানো সহজ মনে হতে পারে। এছাড়া গুলি ছোড়ার মধ্যে একটা শক্তিশালী ভাব আছে বলে অনেকে মনে করেন। কিন্তু আদতে বন্দুক চালানো মোটেও সহজ নয়।

বন্দুক চালানোর জন্য রীতিমতো প্রশিক্ষণের প্রয়োজন নয়। প্রয়োজন নিয়মিত অভ্যেসেরও। এছাড়া বন্দুক ব্যবহারের নানা নিয়ম আছে। যার একটু ব্যতিক্রম হলেই যে কোনও সময়ে হতে পারে বিপদ।

সংবাদমাধ্যমটি বলছে, বন্দুক লাইসেন্স করা হলেও বিনা কারণে তা চালানো বেআইনি। সেই ক্ষমতা পুলিশ-সেনা সদস্যদেরও থাকে না। কিন্তু উত্তর-মধ্য ভারতের বেশ কিছু রাজ্যে এই ধরনের রীতি প্রায় ডালভাত। ফলে ঘটে দুর্ঘটনাও।

যদিও সম্প্রতি এ বিষয়ে সতর্ক হয়েছে ভারতের প্রশাসন। উত্তর প্রদেশের পুলিশ প্রশাসন এমন ঘটনা ঘটলে আইনি পদক্ষেপ নিচ্ছে। তবুও এখনও যে সাধারণ মানুষ, প্রভাবশালীরা সচেতন নন, তারই প্রমাণ এই ধরনের ঘটনাতেই পাওয়া যাচ্ছে।