নিজস্ব প্রতিবেদক :
রাজধানীর সিদ্দিকবাজারে বিস্ফোরণের ঘটনায় ভবন মালিকসহ তিনজনকে গ্রেফতার করা হয়েছে।
বৃহস্পতিবার (৯ মার্চ) বেলা আড়াইটার দিকে ঢাকা মহানগর পুলিশের (ডিএমপি) অপরাধ বিভাগের অতিরিক্ত কমিশনার ড. খ মহিউদ্দিন।
গ্রেফতার ব্যক্তিরা হলেন- ভবন মালিক ওয়াহিদুর রহমান ও মতিউর রহমান, ব্যবসায়ী আ. মোতালেব মিন্টু। সিদ্দিকবাজারে বিস্ফোরণের ঘটনায় দায়ের করা মামলায় তাদের গ্রেফতার দেখানো হয়েছে।
ডিএমপির মিডিয়া সেন্টারে আয়োজিত সংবাদ সম্মেলনে এই কর্মকর্তা বলেন, ভবন মালিক ওয়াহিদুর রহমান (৪৬) এবং তার ভাই মতিউর রহমানকে (৩৬) গত সাত মার্চ ফুলবাড়িয়া এলাকা থেকে জিজ্ঞাসাবাদের জন্য আটক করা হয়। একইদিন রাতে ঢাকা মেডিকেল এলাকা থেকে মোতালেব মিন্টুকে (৩৬) জিজ্ঞাসাবাদের জন্য নিয়ে আসা হয়। পরবর্তীতে বিস্ফোরণের ঘটনায় অবহেলাজনিত কারণ হিসেবে ভবন মালিকের দায় থাকায় তাদের গ্রেফতার করা হয়।
সিদ্দিক বাজারে বিস্ফোরণের ঘটনায় এখন পর্যন্ত ২১ জন মারা গেছেন। এ প্রেক্ষিতে একটি অপমৃত্যুর মামলা দায়ের করে পুলিশ। সেই মামলায় এই তিন জনকে গ্রেফতার দেখানো হয়েছে।
গ্রেফতারের কারণ জানতে চাইলে এই পুলিশ কর্মকর্তা বলেন, এখন পর্যন্ত প্রাপ্ত তথ্যমতে ক্যাফে কুইন সেনেটারি মার্কেটের আন্ডারগ্রাউন্ড বিস্ফোরণের উৎসস্থল। বেজমেন্টের এই আন্ডারেগ্রাউন্ড স্পেসটি রাজউকের বিধান অনুসারে খোলামেলা থাকলে সেখানে কোন ত্রুটি দেখা দিলে তাৎক্ষণিক নিরসন করা যেত। বাড়ির মালিকরা টাকার লোভে আন্ডারগ্রাউন্ডকে এক সময় রান্নাঘর হিসেবে ব্যবহার করেছেন। সেই রান্নাঘরের গ্যাসের লাইন যথাযথভাবে অপসারণ না করে তার উপরেই সম্পূর্ণ এয়ারটাইট এসি করা নির্মাণ সামগ্রীর মার্কেট বানিয়েছেন। দোকানের মালিক বিল্ডিং কোডের বিধান না মেনে ভাড়া নিয়ে বেজমেন্টের ১ ইঞ্চি জায়গাও ফাঁকা না রেখে ডেকোরেশন করে দোকান বানিয়ে সেখানেই কর্মচারী ও ক্রেতা সাধারণের জীবনকে ঝুঁকির মধ্যে ফেলেছেন। এতগুলো প্রাণহানি ও সম্পদের ক্ষয়ক্ষতি তাই ভবনের মালিক এবং দোকানদারের স্বেচ্ছাচারিতা, লোভ এবং অবহেলারই ফল। জান এবং মালের এ ব্যাপক ক্ষতির অভিযোগে তাদের জিজ্ঞাসাবাদ শেষে গ্রেফতার করা হয়েছে।
উল্লেখ্য, মঙ্গলবার (৭ মার্চ) গুলিস্তানের সিদ্দিকবাজারে বিআরটিসি বাসস্ট্যান্ড কাউন্টারের পাশে একটি ভবনে বিস্ফোরণের ঘটনা ঘটে। বিকেল ৪টা ৫০ মিনিটে প্রথম বিস্ফোরণের খবর পায় ফায়ার সার্ভিস। এর সাত মিনিটের মাথায় ফায়ার সার্ভিসের প্রথম ইউনিট ঘটনাস্থলে পৌঁছে। বিস্ফোরণের ঘটনায় ফায়ার সার্ভিস ছাড়াও সেনাবাহিনী, র্যাব, পুলিশ, সিটিটিসি, বোম্ব ডিসপোজাল ইউনিট ও ডগ স্কোয়াড মোতায়েন করা হয়। সর্বশেষ ফায়ার সার্ভিসের দেওয়া তথ্যমতে, বিস্ফোরণের ঘটনায় এ পর্যন্ত ২২ জন মারা যান।