Dhaka শনিবার, ১২ জুলাই ২০২৫, ২৮ আষাঢ় ১৪৩২ বঙ্গাব্দ

গাবতলী বাস টার্মিনালে নেই যাত্রীর চাপ

  • নিজস্ব প্রতিবেদক
  • প্রকাশের সময় : ০২:৫৩:০০ অপরাহ্ন, বৃহস্পতিবার, ২০ এপ্রিল ২০২৩
  • ৩২৮ জন দেখেছেন

নিজস্ব প্রতিবেদক : 

দরজায় কড়া নাড়ছে পবিত্র ঈদুল ফিতর। এরই মধ্যে সরকারি ছুটি শুরু হয়ে গেছে। ঈদের বাকি আর দুই থেকে তিন দিন। এরই মধ্যে নাড়ির টানে বাড়ি ফিরতে শুরু করেছে ঘরমুখো মানুষ। এ সময়ে রাজধানীর বাস টার্মিনাল ও কাউন্টারগুলোতে যাত্রীর চাপ থাকার কথা থাকলেও তা দেখা যায়নি। গাবতলী এক রকম ফাঁকাই, ঘরমুখো মানুষের তেমন ভিড় নেই বাস কাউন্টারগুলোতে। আর কল্যাণপুরেও যাত্রীদের অপেক্ষা করতে দেখা গেছে নির্দিষ্ট বাসের জন্য।

বৃহস্পতিবার (২০ এপ্রিল) রাজধানীর টেকনিক্যাল, গাবতলী বাস টার্মিনাল ও গাবতলী রজব আলী মার্কেট স্টেশনে দেখা যায়, যাত্রীদের তেমন একটা ভিড় নেই। কাউন্টার থেকে গন্তব্যের উদ্দেশে বাস ছেড়ে যাচ্ছে শিডিউল মেনেই। রাস্তার অবস্থাও তুলনামূলক ভালো থাকায় যানজটের অজুহাতও নেই এবার। গাবতলী পর্বতা, আমিনবাজার পর্যন্ত দেখা গেছে ফাঁকা।

কাউন্টারের কর্মীরা জানান, বিভিন্ন কারণে এবার গাবতলীতে যাত্রী কম। আগে খুলনা, বরিশাল, গোপালগঞ্জ, নড়াইলের যাত্রীরা গাবতলী হয়েই বাড়ি ফিরতেন। পদ্মা সেতু চালু হওয়ায় এসব জেলার বাসিন্দারা এখন গাবতলীতে যান না। তারা সায়েদাবাদ বাস টার্মিনাল থেকে টিকিট কেনেন। অনেকে আবার ঈদের অনেক আগেই পরিবারের সদস্যদের গ্রামে পাঠিয়ে দিয়েছেন।

দিগন্ত পরিবহনের রাশেদুল হাসান বলেন, গাবতলী টার্মিনাল এখন প্রায় ফাঁকা। আজকে পোশাক কারখানা বন্ধ হয়ে যাচ্ছে। দেখা যাক, বড় একটা চাপ পড়ে কি না। বৃহস্পতিবার রাত থেকে শুক্রবার পর্যন্ত যাত্রীদের চাপ থাকবে বলে আশা করছি। এখন গাবতলী থেকে যাতায়াত সবচেয়ে স্বস্তির। কারণ পাটুরিয়া ফেরি ঘাট একেবারে ফাঁকা।

টেকনিক্যাল শ্যামলী পরিবহনের টিকিট বিক্রেতা সুমন বলেন, যাত্রীর চাপ ছিল মঙ্গলবার বিকেল থেকে। এখন তো অনেক যাত্রীতো কাউন্টারে মালামাল রেখে অফিস করতে যাচ্ছেন। কেউ কেউ শুধু হাজিরা দিয়েই গাড়িতে উঠেছেন। রাতে সবচেয়ে বেশি যাত্রী হয়। তবে অন্যান্য ঈদের ন্যায় এবার যাত্রীর ভিড়টা লক্ষ্য করা যায়নি।

ফরিদ হোসেন নামের এক বাস ড্রাইভার বলেন, রোদ ওঠার পর আর কোনো ট্রিপে কাঙ্খিত যাত্রী হচ্ছে না। কারণ প্রচণ্ড গরম। মানুষ এসি ছাড়া নন এসি বাসের টিকতে পারছে না।

কিশোরগঞ্জগামী উজান ভাটি পরিবহনের কাউন্টার ম্যানেজার লিটন মিয়া বলেন, ভোরে কিছু যাত্রী ছিল। এখন স্টেশন একদমই ফাকা। আমাদের প্রতিদিন ৪০টা গাড়ি যায়, যাত্রী কম থাকায় বাসগুলো ছাড়তে দেরি হচ্ছে।

কিশোরগঞ্জগামী জলসিঁড়ি এক্সপ্রেস পরিবহনের কাউন্টার ম্যানেজার মো. মিলন বলেন, যাত্রী চাপ কম থাকায় আগে যেখানে প্রতি ৫ থেকে ১০ মিনিট পর পর বাস ছাড়া হত। এখন সেখানে আধ ঘণ্টা, ৪০ মিনিট পর পর একটি বাস ছাড়তে হচ্ছে।

জেআর পরিবহনের কুষ্টিয়ার যাত্রী ইমরান হোসেন বলেন, মূলত বুধবার রাতেই চলে যাওয়ার পরিকল্পনা ছিল। কিন্তু টিকিট না পাওয়ায় বাড়ি যাওয়া পেছাতে হয়েছে একদিন।

সোহাগ পরিবহনের যাত্রী আসাদুজ্জামান বলেন, এবার ভাবছিলাম ঈদ যাত্রা খুবই নাজুক হবে। গরম আর যানজট মিলিয়ে শঙ্কা ছিল। তবে এসে দেখছি কাউন্টারে কোনো চাপ নেই। শিডিউল বিপর্যয়ও নেই। ৫/৬ ঘণ্টার মধ্যেই আশা করি পৌঁছে যাব মায়ের কাছে।

গাবতলী রজব আলী মার্কেটে গিয়ে দেখা যায়, অধিকাংশ কাউন্টারে যাত্রী নেই। অর্ধশত কাউন্টারের মধ্যে বেশ কিছু বন্ধ। আল হামরা পরিবহনের টিকিট বিক্রেতা আমিনুল ইসলাম বলেন, সকাল ৭টা, ৮টা, ৯টার বাস সময়মতো ছেড়ে গেছে গন্তব্যের উদ্দেশে। অন্য বছরের মতো এবার ভিড় নেই, পাইনি যানজটের খবরও।

যাত্রী কম থাকার পেছনে কারণ হিসেবে তিনি বলেন, এবার অনেকে আগেই পরিবার রেখে আসছেন। আবার ২০ এপ্রিল ছুটি ঘোষণা করায় ২৭ রমজান উপলক্ষ্যে একটা বড় অংশ আগেই চলে গেছেন।

আল হামরা পরিবহনের জেনারেল ম্যানেজার দেলোয়ার হোসেন যাত্রী কম হওয়ার কারণ সম্পর্কে বলেন, গাবতলীতে এবার দক্ষিণবঙ্গের যাত্রীর ভিড় নাই। দক্ষিণবঙ্গের যাত্রীরা যাচ্ছেন পদ্মা সেতু হয়ে। আবার পাবনা, কুষ্টিয়া, মেহেরপুরের অনেক যাত্রী এবার যানজট এড়াতে ও সময় বাঁচাতে আরিচা হয়ে যাচ্ছেন। অনেক বছর পর এবারই প্রথম খুবই সুন্দর ঈদযাত্রা হচ্ছে। শুধু গরমটাই বেশি। বাসের ভাড়াও গত বছরের মতো রয়ে গেছে, বাড়ানো হয়নি।

এদিকে বাড়তি ভাড়া নেওয়ার অভিযোগ করছেন যাত্রীরা। নাহিদ পরিবহনের টিকিট দেখিয়ে গার্মেন্টস কর্মী হারুনুর রশীদ জানান, আমি বকশীগঞ্জ যাবো। অন্যসময় ভাড়া ৫০০ টাকা হলেও ঈদ উপলক্ষে এখন ১ হাজার টাকা নিচ্ছে। আবার সময় মতো গাড়ি ছাড়ছে না। তবে বাড়তি ভাড়া নেওয়ার বিষয়টি অস্বীকার করেন নাহিদ পরিবহনের কাউন্টার ম্যানেজার লিটন। তিনি বলেন, আগের ভাড়াই নেওয়া হচ্ছে। যাত্রীদের কাছ থেকে কোন অভিযোগ পাওয়া যায়নি।

জনপ্রিয় খবর

আবহাওয়া

মিটফোর্ড হত্যাকাণ্ড : আসামি টিটন গাজী ৫ দিনের রিমান্ডে

গাবতলী বাস টার্মিনালে নেই যাত্রীর চাপ

প্রকাশের সময় : ০২:৫৩:০০ অপরাহ্ন, বৃহস্পতিবার, ২০ এপ্রিল ২০২৩

নিজস্ব প্রতিবেদক : 

দরজায় কড়া নাড়ছে পবিত্র ঈদুল ফিতর। এরই মধ্যে সরকারি ছুটি শুরু হয়ে গেছে। ঈদের বাকি আর দুই থেকে তিন দিন। এরই মধ্যে নাড়ির টানে বাড়ি ফিরতে শুরু করেছে ঘরমুখো মানুষ। এ সময়ে রাজধানীর বাস টার্মিনাল ও কাউন্টারগুলোতে যাত্রীর চাপ থাকার কথা থাকলেও তা দেখা যায়নি। গাবতলী এক রকম ফাঁকাই, ঘরমুখো মানুষের তেমন ভিড় নেই বাস কাউন্টারগুলোতে। আর কল্যাণপুরেও যাত্রীদের অপেক্ষা করতে দেখা গেছে নির্দিষ্ট বাসের জন্য।

বৃহস্পতিবার (২০ এপ্রিল) রাজধানীর টেকনিক্যাল, গাবতলী বাস টার্মিনাল ও গাবতলী রজব আলী মার্কেট স্টেশনে দেখা যায়, যাত্রীদের তেমন একটা ভিড় নেই। কাউন্টার থেকে গন্তব্যের উদ্দেশে বাস ছেড়ে যাচ্ছে শিডিউল মেনেই। রাস্তার অবস্থাও তুলনামূলক ভালো থাকায় যানজটের অজুহাতও নেই এবার। গাবতলী পর্বতা, আমিনবাজার পর্যন্ত দেখা গেছে ফাঁকা।

কাউন্টারের কর্মীরা জানান, বিভিন্ন কারণে এবার গাবতলীতে যাত্রী কম। আগে খুলনা, বরিশাল, গোপালগঞ্জ, নড়াইলের যাত্রীরা গাবতলী হয়েই বাড়ি ফিরতেন। পদ্মা সেতু চালু হওয়ায় এসব জেলার বাসিন্দারা এখন গাবতলীতে যান না। তারা সায়েদাবাদ বাস টার্মিনাল থেকে টিকিট কেনেন। অনেকে আবার ঈদের অনেক আগেই পরিবারের সদস্যদের গ্রামে পাঠিয়ে দিয়েছেন।

দিগন্ত পরিবহনের রাশেদুল হাসান বলেন, গাবতলী টার্মিনাল এখন প্রায় ফাঁকা। আজকে পোশাক কারখানা বন্ধ হয়ে যাচ্ছে। দেখা যাক, বড় একটা চাপ পড়ে কি না। বৃহস্পতিবার রাত থেকে শুক্রবার পর্যন্ত যাত্রীদের চাপ থাকবে বলে আশা করছি। এখন গাবতলী থেকে যাতায়াত সবচেয়ে স্বস্তির। কারণ পাটুরিয়া ফেরি ঘাট একেবারে ফাঁকা।

টেকনিক্যাল শ্যামলী পরিবহনের টিকিট বিক্রেতা সুমন বলেন, যাত্রীর চাপ ছিল মঙ্গলবার বিকেল থেকে। এখন তো অনেক যাত্রীতো কাউন্টারে মালামাল রেখে অফিস করতে যাচ্ছেন। কেউ কেউ শুধু হাজিরা দিয়েই গাড়িতে উঠেছেন। রাতে সবচেয়ে বেশি যাত্রী হয়। তবে অন্যান্য ঈদের ন্যায় এবার যাত্রীর ভিড়টা লক্ষ্য করা যায়নি।

ফরিদ হোসেন নামের এক বাস ড্রাইভার বলেন, রোদ ওঠার পর আর কোনো ট্রিপে কাঙ্খিত যাত্রী হচ্ছে না। কারণ প্রচণ্ড গরম। মানুষ এসি ছাড়া নন এসি বাসের টিকতে পারছে না।

কিশোরগঞ্জগামী উজান ভাটি পরিবহনের কাউন্টার ম্যানেজার লিটন মিয়া বলেন, ভোরে কিছু যাত্রী ছিল। এখন স্টেশন একদমই ফাকা। আমাদের প্রতিদিন ৪০টা গাড়ি যায়, যাত্রী কম থাকায় বাসগুলো ছাড়তে দেরি হচ্ছে।

কিশোরগঞ্জগামী জলসিঁড়ি এক্সপ্রেস পরিবহনের কাউন্টার ম্যানেজার মো. মিলন বলেন, যাত্রী চাপ কম থাকায় আগে যেখানে প্রতি ৫ থেকে ১০ মিনিট পর পর বাস ছাড়া হত। এখন সেখানে আধ ঘণ্টা, ৪০ মিনিট পর পর একটি বাস ছাড়তে হচ্ছে।

জেআর পরিবহনের কুষ্টিয়ার যাত্রী ইমরান হোসেন বলেন, মূলত বুধবার রাতেই চলে যাওয়ার পরিকল্পনা ছিল। কিন্তু টিকিট না পাওয়ায় বাড়ি যাওয়া পেছাতে হয়েছে একদিন।

সোহাগ পরিবহনের যাত্রী আসাদুজ্জামান বলেন, এবার ভাবছিলাম ঈদ যাত্রা খুবই নাজুক হবে। গরম আর যানজট মিলিয়ে শঙ্কা ছিল। তবে এসে দেখছি কাউন্টারে কোনো চাপ নেই। শিডিউল বিপর্যয়ও নেই। ৫/৬ ঘণ্টার মধ্যেই আশা করি পৌঁছে যাব মায়ের কাছে।

গাবতলী রজব আলী মার্কেটে গিয়ে দেখা যায়, অধিকাংশ কাউন্টারে যাত্রী নেই। অর্ধশত কাউন্টারের মধ্যে বেশ কিছু বন্ধ। আল হামরা পরিবহনের টিকিট বিক্রেতা আমিনুল ইসলাম বলেন, সকাল ৭টা, ৮টা, ৯টার বাস সময়মতো ছেড়ে গেছে গন্তব্যের উদ্দেশে। অন্য বছরের মতো এবার ভিড় নেই, পাইনি যানজটের খবরও।

যাত্রী কম থাকার পেছনে কারণ হিসেবে তিনি বলেন, এবার অনেকে আগেই পরিবার রেখে আসছেন। আবার ২০ এপ্রিল ছুটি ঘোষণা করায় ২৭ রমজান উপলক্ষ্যে একটা বড় অংশ আগেই চলে গেছেন।

আল হামরা পরিবহনের জেনারেল ম্যানেজার দেলোয়ার হোসেন যাত্রী কম হওয়ার কারণ সম্পর্কে বলেন, গাবতলীতে এবার দক্ষিণবঙ্গের যাত্রীর ভিড় নাই। দক্ষিণবঙ্গের যাত্রীরা যাচ্ছেন পদ্মা সেতু হয়ে। আবার পাবনা, কুষ্টিয়া, মেহেরপুরের অনেক যাত্রী এবার যানজট এড়াতে ও সময় বাঁচাতে আরিচা হয়ে যাচ্ছেন। অনেক বছর পর এবারই প্রথম খুবই সুন্দর ঈদযাত্রা হচ্ছে। শুধু গরমটাই বেশি। বাসের ভাড়াও গত বছরের মতো রয়ে গেছে, বাড়ানো হয়নি।

এদিকে বাড়তি ভাড়া নেওয়ার অভিযোগ করছেন যাত্রীরা। নাহিদ পরিবহনের টিকিট দেখিয়ে গার্মেন্টস কর্মী হারুনুর রশীদ জানান, আমি বকশীগঞ্জ যাবো। অন্যসময় ভাড়া ৫০০ টাকা হলেও ঈদ উপলক্ষে এখন ১ হাজার টাকা নিচ্ছে। আবার সময় মতো গাড়ি ছাড়ছে না। তবে বাড়তি ভাড়া নেওয়ার বিষয়টি অস্বীকার করেন নাহিদ পরিবহনের কাউন্টার ম্যানেজার লিটন। তিনি বলেন, আগের ভাড়াই নেওয়া হচ্ছে। যাত্রীদের কাছ থেকে কোন অভিযোগ পাওয়া যায়নি।