গাজীপুর জেলা প্রতিনিধি :
বকেয়া বেতন ও ঈদ বোনাসের দাবিতে গাজীপুরের স্টাইলক্রাফট নামের একটি তৈরি পোশাক কারখানায় শ্রমিক অসন্তোষ দেখা দিয়েছে। উত্তেজিত শ্রমিকেরা বুধবার (২ আগস্ট) সকালে ঢাকা-জয়দেবপুর সড়ক অবরোধ করে বিক্ষোভ করছেন। সড়ক অবরোধের কারণে ওই সড়কে যান চলাচল বন্ধ থাকায় ভোগান্তিতে পড়েছেন যাত্রী ও পথচারীরা। বেলা ১১টায় শেষ খবর পাওয়া পর্যন্ত পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে কাজ করছে পুলিশ।
আন্দোলনরত শ্রমিকদের অভিযোগ, মালিকপক্ষের স্বেচ্ছাচারিতা ও দায়িত্বহীনতার কারণে স্টাইল ক্রাফট নামের তৈরি পোশাক কারখানাটিতে কয়েক মাস পরপরই বেতন নিয়ে জটিলতা তৈরি হয়। কারখানাটিতে প্রায় তিন হাজার শ্রমিক কাজ করেন। মালিকপক্ষের কাছে জুন ও জুলাই মাসের বকেয়া বেতন ও ঈদ বোনাস পাওনা রয়েছে। এর প্রেক্ষিতে গত ২৬ জুলাই মালিকপক্ষের সঙ্গে শ্রমিকদের সমঝোতা চুক্তি হয়। চুক্তি অনুযায়ী ১ আগস্ট তাদের বেতন পরিশোধ করার কথা। কিন্তু মালিকপক্ষ এক তারিখে বেতন পরিশোধ না করে কারখানা থেকে চলে যায়। পাওনা বকেয়া না পেয়ে গতকাল শ্রমিকরা অসন্তুষ্ট হয়ে বাড়ি ফিরে যান। কিন্তু আজ বুধবার সকালে কারখানায় কাজে যোগদান করতে এসে শ্রমিকরা কারখানার গেটে কারখানা বন্ধের নোটিশ দেখতে পান। বকেয়া পরিশোধ না করে কোনো কিছু না জানিয়ে এভাবে হঠাৎ রাতের আঁধারে কারখানা বন্ধের নোটিশ দেওয়ায় সকালে শ্রমিকরা আন্দোলনে নামেন।
কারখানার শ্রমিক সজল হোসেন বলেন, কারখানা কর্তৃপক্ষ গত জুন ও জুলাই মাসের বেতন দেয়নি এবং গত দুই বছরের ছুটির টাকাও দেয়নি। দোকানের বাকি টাকা পরিশোধ করতে গিয়ে তাঁরা হিমশিম খাচ্ছেন। অনেকেই মানবেতর জীবন যাপন করছেন। তাই দ্রুত বেতন–ভাতা পরিশোধে সরকার ও প্রশাসনের সহযোগিতা চাইছেন শ্রমিকেরা।
শ্রমিক আবদুর রহমান বলেন, মঙ্গলবার মাইক দিয়ে ঘোষণা দিল বেতন দিবে। পরে বিকেলে তারা পালিয়েছে। আমরা আজ সকালে এসে দেখি, কারখানার গেট বন্ধ, নোটিশ দেওয়া আছে। সেখানে লেখা কারখানা সাত দিনের জন্য বন্ধ।
শিল্প পুলিশের পরিদর্শক রেজাউল করিম বলেন, বেতন–ভাতা পরিশোধের জন্য কলকারখানা ও প্রতিষ্ঠান পরিদর্শন অধিদপ্তরের শ্রমিকদের সঙ্গে কারখানার মালিকের সমঝোতা চুক্তি হয়। চুক্তি অনুযায়ী ১ আগস্ট জুন মাসের বেতন এবং ৮ আগস্ট শ্রমিকদের ঈদ বোনাস দেওয়ার কথা। কিন্তু মালিকপক্ষ বেতনাদি পরিশোধ না করেই কারখানা সাত দিনের জন্য বন্ধ ঘোষণা করেন। আজ সকালে শ্রমিকেরা কাজে এসে বন্ধের নোটিশ দেখতে পেয়ে উত্তেজিত হয়ে রাস্তায় নামে। পুলিশ মালিকপক্ষের সঙ্গে কথা বলেছে। মালিকপক্ষ জানিয়েছে, বেতনের টাকা জোগাড় করতে না পেরে কারখানা বন্ধের সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে।
এ ব্যাপারে গাজীপুরের জেলা প্রশাসক আবুল ফাতে মোহাম্মদ শফিকুল ইসলাম বলেন, বিষয়টি আমাদের নজরে এসেছে। এ বিষয়ে মালিক এবং শ্রমিকপক্ষের সঙ্গে আলোচনা করে সমাধানের চেষ্টা চলছে।