Dhaka মঙ্গলবার, ২৬ অগাস্ট ২০২৫, ১১ ভাদ্র ১৪৩২ বঙ্গাব্দ

গাজা-লেবাননে অবিলম্বে ইসরায়েলের হামলা অবিলম্বে বন্ধের আহ্বান সৌদি যুবরাজের

আন্তর্জাতিক ডেস্ক : 

ফিলিস্তিনের গাজা এবং লেবাননে ইসরায়েলি বাহিনীর চলমান হামলাকে সামরিক আগ্রাসন” এবং “হত্যাযজ্ঞ” হিসেবে বর্ণনা করেছেন সৌদি আরবের যুবরাজ মোহাম্মদ বিন সালমান (এমবিএস)। তিনি ইসরায়েলি হামলা অবিলম্বে বন্ধ করার আহ্বান জানিয়েছেন এবং গাজার জনগণের পাশে দাঁড়ানোর জন্য আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়ের প্রতি ডাক দিয়েছেন।

সৌদি আরবের রাজধানী রিয়াদে সোমবার আরব লিগ ও ইসলামী সহযোগিতা সংস্থার (ওআইসি) যৌথ আয়োজনে শুরু হওয়া সম্মেলনের উদ্বোধনী বক্তব্যে যুবরাজ বিন সালমান এই মন্তব্য করেন। তিনি বলেন, ফিলিস্তিন এবং লেবাননের সাধারণ মানুষের ওপর হত্যাযজ্ঞ চালানো হচ্ছে, এটি অবিলম্বে বন্ধ করতে হবে।

এছাড়া, তিনি ইসরায়েলকে নতুন করে কোনো আগ্রাসন চালাতে নিষেধ করেন এবং ফিলিস্তিন রাষ্ট্রকে স্বীকৃতি দেওয়ার জন্য বিশ্বের অন্যান্য দেশের প্রতি আহ্বান জানান। সৌদি যুবরাজ আরও বলেন, আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়ের উচিত এই সংকটের সমাধানে সক্রিয় ভূমিকা রাখা।

আরব লিগের মহাসচিব আহমেদ আবৌল ঘেইত ফিলিস্তিনিদের দুর্দশা তুলে ধরে বলেন, এটি ভাষায় প্রকাশ করার মতো নয়। ইসরায়েলি সহিংসতায় বিশ্বসম্প্রদায়ের কোনো কার্যকর পদক্ষেপ নেওয়া উচিত।

সম্মেলনে লেবাননের প্রধানমন্ত্রী নাজিব মিকাতি বলেন, ইসরায়েল লেবাননে হিজবুল্লাহর বিরুদ্ধে যুদ্ধ করছে, কিন্তু এতে লেবানন আজ নজিরবিহীন সংকটের মুখোমুখি। এই যুদ্ধ দেশের অস্তিত্বের জন্য হুমকি হয়ে দাঁড়িয়েছে।

সম্মেলনে উপস্থিত ছিলেন ফিলিস্তিনের প্রেসিডেন্ট মাহমুদ আব্বাস, তুরস্কের প্রেসিডেন্ট রিসেপ তাইয়েপ এরদোয়ান, নাইজেরিয়ার প্রেসিডেন্ট বোলা তিনুবু এবং পাকিস্তানের প্রধানমন্ত্রী শাহবাজ শরিফসহ অন্যান্য বিশ্বনেতারা।

ইরানের প্রেসিডেন্ট মাসুদ পেজেশকিয়ান ‘রাষ্ট্রীয় কাজে ব্যস্ততার’ কারণে সম্মেলনে যোগ দিতে পারেননি। তবে তার পক্ষে দেশটির ফাস্ট ভাইস প্রেসিডেন্ট মোহাম্মদ রেজা আরেফ ইসরায়েলের সমালোচনা করে বলেন, “ইসরায়েল হামাস ও হিজবুল্লাহর নেতাদের হত্যা করে সংঘটিত সন্ত্রাসী কার্যক্রম চালাচ্ছে।”

এই সম্মেলনটির মূল উদ্দেশ্য ছিল ফিলিস্তিন সংকটের সমাধান, যেখানে ফিলিস্তিন ও ইসরায়েলের মধ্যে দুটি রাষ্ট্র গঠনের মাধ্যমে শান্তি প্রতিষ্ঠার পক্ষে আলোচনা করা হয়।

উল্লেখ্য, গত ৭ অক্টোবর হামাসের নজিরবিহীন আন্তঃসীমান্ত হামলার পর থেকে ইসরায়েল গাজা উপত্যকায় অবিরাম বিমান ও স্থল হামলা চালিয়ে যাচ্ছে। ইসরায়েলি এই হামলায় হাসপাতাল, স্কুল, শরণার্থী শিবির, মসজিদ, গির্জাসহ হাজার হাজার ভবন ক্ষতিগ্রস্ত বা ধ্বংস হয়ে গেছে।

গাজা স্বাস্থ্য কর্তৃপক্ষের মতে, গাজায় এখন পর্যন্ত ৪৩ হাজার ৬০০ জনেরও বেশি লোক নিহত হয়েছেন। যাদের বেশিরভাগই নারী ও শিশু। এছাড়া আহত হয়েছেন আরও লক্ষাধিক ফিলিস্তিনি।

ফিলিস্তিনি স্বাস্থ্য কর্তৃপক্ষ মনে করছে, গাজা উপত্যকা জুড়ে ধ্বংস হওয়া বাড়ির ধ্বংসস্তূপের নিচে এখনও ১০ হাজারেরও বেশি লোক নিখোঁজ রয়েছেন। মূলত গাজায় অবিলম্বে যুদ্ধবিরতির দাবি জানিয়ে জাতিসংঘের নিরাপত্তা পরিষদের প্রস্তাব সত্ত্বেও ইসরায়েল অবরুদ্ধ এই ভূখণ্ডে তার নৃশংস আক্রমণ অব্যাহত রেখেছে।

ইসরায়েল ইতোমধ্যেই আন্তর্জাতিক বিচার আদালতে গণহত্যার অভিযোগে অভিযুক্ত হয়েছে।

জনপ্রিয় খবর

আবহাওয়া

আপস করলে খালেদা জিয়া অনেক আগেই ক্ষমতায় বসতে পারতেন : সেলিমা রহমান

গাজা-লেবাননে অবিলম্বে ইসরায়েলের হামলা অবিলম্বে বন্ধের আহ্বান সৌদি যুবরাজের

প্রকাশের সময় : ০১:৪৭:১৫ অপরাহ্ন, মঙ্গলবার, ১২ নভেম্বর ২০২৪

আন্তর্জাতিক ডেস্ক : 

ফিলিস্তিনের গাজা এবং লেবাননে ইসরায়েলি বাহিনীর চলমান হামলাকে সামরিক আগ্রাসন” এবং “হত্যাযজ্ঞ” হিসেবে বর্ণনা করেছেন সৌদি আরবের যুবরাজ মোহাম্মদ বিন সালমান (এমবিএস)। তিনি ইসরায়েলি হামলা অবিলম্বে বন্ধ করার আহ্বান জানিয়েছেন এবং গাজার জনগণের পাশে দাঁড়ানোর জন্য আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়ের প্রতি ডাক দিয়েছেন।

সৌদি আরবের রাজধানী রিয়াদে সোমবার আরব লিগ ও ইসলামী সহযোগিতা সংস্থার (ওআইসি) যৌথ আয়োজনে শুরু হওয়া সম্মেলনের উদ্বোধনী বক্তব্যে যুবরাজ বিন সালমান এই মন্তব্য করেন। তিনি বলেন, ফিলিস্তিন এবং লেবাননের সাধারণ মানুষের ওপর হত্যাযজ্ঞ চালানো হচ্ছে, এটি অবিলম্বে বন্ধ করতে হবে।

এছাড়া, তিনি ইসরায়েলকে নতুন করে কোনো আগ্রাসন চালাতে নিষেধ করেন এবং ফিলিস্তিন রাষ্ট্রকে স্বীকৃতি দেওয়ার জন্য বিশ্বের অন্যান্য দেশের প্রতি আহ্বান জানান। সৌদি যুবরাজ আরও বলেন, আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়ের উচিত এই সংকটের সমাধানে সক্রিয় ভূমিকা রাখা।

আরব লিগের মহাসচিব আহমেদ আবৌল ঘেইত ফিলিস্তিনিদের দুর্দশা তুলে ধরে বলেন, এটি ভাষায় প্রকাশ করার মতো নয়। ইসরায়েলি সহিংসতায় বিশ্বসম্প্রদায়ের কোনো কার্যকর পদক্ষেপ নেওয়া উচিত।

সম্মেলনে লেবাননের প্রধানমন্ত্রী নাজিব মিকাতি বলেন, ইসরায়েল লেবাননে হিজবুল্লাহর বিরুদ্ধে যুদ্ধ করছে, কিন্তু এতে লেবানন আজ নজিরবিহীন সংকটের মুখোমুখি। এই যুদ্ধ দেশের অস্তিত্বের জন্য হুমকি হয়ে দাঁড়িয়েছে।

সম্মেলনে উপস্থিত ছিলেন ফিলিস্তিনের প্রেসিডেন্ট মাহমুদ আব্বাস, তুরস্কের প্রেসিডেন্ট রিসেপ তাইয়েপ এরদোয়ান, নাইজেরিয়ার প্রেসিডেন্ট বোলা তিনুবু এবং পাকিস্তানের প্রধানমন্ত্রী শাহবাজ শরিফসহ অন্যান্য বিশ্বনেতারা।

ইরানের প্রেসিডেন্ট মাসুদ পেজেশকিয়ান ‘রাষ্ট্রীয় কাজে ব্যস্ততার’ কারণে সম্মেলনে যোগ দিতে পারেননি। তবে তার পক্ষে দেশটির ফাস্ট ভাইস প্রেসিডেন্ট মোহাম্মদ রেজা আরেফ ইসরায়েলের সমালোচনা করে বলেন, “ইসরায়েল হামাস ও হিজবুল্লাহর নেতাদের হত্যা করে সংঘটিত সন্ত্রাসী কার্যক্রম চালাচ্ছে।”

এই সম্মেলনটির মূল উদ্দেশ্য ছিল ফিলিস্তিন সংকটের সমাধান, যেখানে ফিলিস্তিন ও ইসরায়েলের মধ্যে দুটি রাষ্ট্র গঠনের মাধ্যমে শান্তি প্রতিষ্ঠার পক্ষে আলোচনা করা হয়।

উল্লেখ্য, গত ৭ অক্টোবর হামাসের নজিরবিহীন আন্তঃসীমান্ত হামলার পর থেকে ইসরায়েল গাজা উপত্যকায় অবিরাম বিমান ও স্থল হামলা চালিয়ে যাচ্ছে। ইসরায়েলি এই হামলায় হাসপাতাল, স্কুল, শরণার্থী শিবির, মসজিদ, গির্জাসহ হাজার হাজার ভবন ক্ষতিগ্রস্ত বা ধ্বংস হয়ে গেছে।

গাজা স্বাস্থ্য কর্তৃপক্ষের মতে, গাজায় এখন পর্যন্ত ৪৩ হাজার ৬০০ জনেরও বেশি লোক নিহত হয়েছেন। যাদের বেশিরভাগই নারী ও শিশু। এছাড়া আহত হয়েছেন আরও লক্ষাধিক ফিলিস্তিনি।

ফিলিস্তিনি স্বাস্থ্য কর্তৃপক্ষ মনে করছে, গাজা উপত্যকা জুড়ে ধ্বংস হওয়া বাড়ির ধ্বংসস্তূপের নিচে এখনও ১০ হাজারেরও বেশি লোক নিখোঁজ রয়েছেন। মূলত গাজায় অবিলম্বে যুদ্ধবিরতির দাবি জানিয়ে জাতিসংঘের নিরাপত্তা পরিষদের প্রস্তাব সত্ত্বেও ইসরায়েল অবরুদ্ধ এই ভূখণ্ডে তার নৃশংস আক্রমণ অব্যাহত রেখেছে।

ইসরায়েল ইতোমধ্যেই আন্তর্জাতিক বিচার আদালতে গণহত্যার অভিযোগে অভিযুক্ত হয়েছে।