আন্তর্জাতিক ডেস্ক :
ফিলিস্তিনের অবরুদ্ধ গাজা ভূখণ্ডের আল-মাগাজি শরণার্থী শিবিরে হামলা চালিয়েছে ইসরায়েল। এতে অন্তত ৫১ জন নিহত হয়েছেন বলে জানিয়েছে ফিলিস্তিনি বার্তা সংস্থা ওয়াফা। নিহতদের বেশিরভাগই নারী ও শিশু বলে জানা গেছে। আহত হয়েছেন আরো অনেকে।
শনিবার (৪ নভেম্বর) রাতে ইসরায়েলি বাহিনী এই হামলা চালায়।
রোববার (৫ নভেম্বর) ফিলিস্তিনের রাষ্ট্রীয় বার্তাসংস্থা ওয়াফার বরাত দিয়ে এ তথ্য জানিয়েছে সংবাদমাধ্যম আল-জাজিরা।
স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের মুখপাত্র আশরাফ আল-কুদরা এক বিবৃতিতে বলেছেন, মধ্য গাজা উপত্যকার আল-মাগাজি ক্যাম্পে দখলদারদের দ্বারা সংঘটিত গণহত্যায় দেইর আল-বালার আল-আকসা শহীদ হাসপাতালে ৩০টির বেশি মৃতদেহ পৌঁছেছে।
ওয়াফা বলছে, শনিবারের হামলায় হতাহতদের বেশিরভাগ নারী ও শিশু। এর আগে শনিবার রাতের হামলায় দুইটি বসতবাড়ির ব্যাপক ক্ষয়ক্ষতি হয়েছে। গত কয়েকদিনে গাজার শরণার্থী শিবিরকে লক্ষ্য করে পালাক্রমে বেশ কয়েকটি হামলা চালিয়েছে ইসরায়েল।
বোমা হামলার সত্যতা স্বীকার করে ইসরায়েলি সেনাবাহিনীর একজন মুখপাত্র বলেছেন, ওই শরণার্থী শিবিরে হামলা চালানো হয়েছে কিনা তারা তা খতিয়ে দেখছেন।
এর আগে গত বৃহস্পতিবার বুরেজ শরণার্থী শিবিরে বিমানহামলা চালায় ইসরায়েল। এতে ১৫ জন প্রাণ হারান।
একইদিনে জাবালিয়া শিবিরেও হামলা চালানো হয় ইসরায়েল।
ফিলিস্তিনি কর্তৃপক্ষ জানিয়েছে, টানা তিন দিনের ইসরায়েলি হামলায় জাবালিয়ায় এ পর্যন্ত ১৯৫ জন নিহত হয়েছেন এবং আরও ১২০ জন নিখোঁজ রয়েছেন।
গত বেশ কয়েকদিন ধরে গাজার শরণার্থী শিবিরগুলোতে একের পর এক হামলা চালিয়ে যাচ্ছে ইসরায়েল। এসব হামলায় ফিলিস্তিনের বেসামরিক নাগরিকই বেশি মারা পড়ছেন।
এ ধরনের হামলা যুদ্ধাপরাধ হিসেবে গণ্য হতে পারে বলে সতর্ক করে দিয়েছেন জাতিসংঘের মানবাধিকার বিষয়ক হাইকমিশনার।
তবে ইসরায়েল বলেছে, সশস্ত্র ফিলিস্তিনি গোষ্ঠী হামাসের কমান্ডারদের লক্ষ্যবস্তু করছে তারা।
গত ৭ অক্টোবর ইসরায়েলে আকস্মিক হামলা চালায় ফিলিস্তিনি স্বাধীনতাকামী সংগঠন হামাস। এরপরে গাজায় অভিযান শুরু করে ইসরায়েলি বাহিনী। এখন পর্যন্ত ইসরায়েলের হামলা অব্যাহত রয়েছে। প্রতিদিনই গাজার এখানে সেখানে বোমা মেরে নিরীহ ফিলিস্তিনিদের হত্যা করা হচ্ছে। এমনকি দখলদারদের হামলা থেকে রক্ষা পাচ্ছে না অ্যাম্বুলেন্স, স্কুল বা হাসপাতালও।
এদিকে গাজায় ইসরায়েলি হামলা অব্যাহত থাকায় সেখানে আর কোনো জায়গাই এখন নিরাপদ নেই বলে জানিয়েছে জাতিসংঘের ফিলিস্তিনি শরণার্থী বিষয়ক সংস্থা। এক বিবৃতিতে সংস্থাটির পরিচালক টমাস হোয়াইট জানান যে, সেখানকার বাসিন্দাদের বাঁচাতে জাতিসংঘের কোনো কিছুই করার নেই।
অপরদিকে তুরস্কের প্রেসিডেন্ট রিসেপ তাইয়্যেপ এরদোয়ান বলেছেন, হামাস-ইসরায়েল যুদ্ধ শেষ হলে গাজাকে অবশ্যই স্বাধীন ফিলিস্তিনের অংশ হতে হবে। ইতিহাস থেকে ফিলিস্তিনিদের মুছে ফেলার মডেলকে তুরস্ক কখনোই সমর্থন দেবে না। শুক্রবার (৩ নভেম্বর) কাজাখস্তান সফর শেষে দেশে ফিরে সাংবাদিকদের সঙ্গে আলাপকালে এমন মন্তব্য করেন তিনি।
হামাস-ইসরায়েল যুদ্ধে ইউরোপীয় ইউনিয়নের (ইইউ) ভূমিকাকেও সমালোচনা করেছেন এরদোয়ান। বলেছেন, গাজার বর্তমান পরিস্থিতি ও এই যুদ্ধে ইইউ ন্যায়ের পক্ষে অবস্থান নেয়নি। এ কারণে ইইউয়ের উপর মানুষের যে আস্থা ছিল, সেটা নষ্ট হয়ে গেছে।
আন্তর্জাতিক ডেস্ক 





















