নিজস্ব প্রতিবেদক :
ফিলিস্তিনের গাজায় চলমান সংঘাত নিয়ে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেন, এটা খুবই দুঃখজনক। আমাদের সবার উচিৎ তাদেরকে সহায়তা করা। গাজায় যা চলছে, আমি মনে করি এটি গণহত্যা। এর বিরোধিতা করতে হবে। এ ধরনের গণহত্যাকে আমি কখনও সমর্থন করি না।
প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা শনিবার (১৭ ফেব্রুয়ারি) তুরস্কের সংবাদ সংস্থা আনাদুলোকে দেওয়া এক সাক্ষাৎকারে এসব কথা বলেছেন। জার্মানিতে চলমান মিউনিখ নিরাপত্তা সম্মেলনের এক ফাঁকে সংবাদমাধ্যমটিকে তিনি সাক্ষাৎকার দেন।
শেখ হাসিনা বলেন, ‘গণহত্যা এই আগ্রাসন এবং যুদ্ধ থামানো প্রয়োজন। তাদের বাঁচার অধিকার রয়েছে।’
প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘এরই মধ্যে বাংলাদেশ ফিলিস্তিনি জনগণের জন্য কিছু সহায়তা পাঠিয়েছি। আমি বিশ্বের সবাইকে ফিলিস্তিনের শিশু, নারী ও সাধারণ জনগণকে সহায়তা করার আহ্বান জানাই।’
শেখ হাসিনা বলেন, ‘এটি স্পষ্ট যে, ফিলিস্তিনি জনগণ তাদের নিজস্ব রাষ্ট্র পাওয়ার অধিকার রাখে। ১৯৬৭ সালের জাতিসংঘের দ্বি-জাতি তত্ত্বের ভিত্তিতে ফিলিস্তিনের জন্য একটি রাষ্ট্র গঠন করা প্রয়োজন।’
গাজার জনগণের বেঁচে থাকার অধিকার আছে, রাষ্ট্র গঠনের অধিকার আছে উল্লেখ করে শেখ হাসিনা বলেন, ‘গাজার জনগণের বেঁচে থাকার অধিকার আছে, তাদের সঙ্গে যা ঘটছে তা খুবই দুঃখজনক। আমাদের উচিত তাদের পাশে দাঁড়ানো এবং এই আক্রমণ ও যুদ্ধ বন্ধ করা।’
বাংলাদেশ গাজাবাসীর জন্য সহায়তা পাঠিয়েছে উল্লেখ করে শেখ হাসিনা বিশ্ববাসীর প্রতি গাজার অধিবাসীদের জন্য সহায়তা পাঠানোর আহ্বান জানান। তিনি বলেন, ‘গাজার দুর্দশাগ্রস্ত শিশু, নারী ও ফিলিস্তিনি জনগণকে সহায়তা দেওয়া উচিত।’
এ সময় বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রীর কাছে রাফাহে ইসরায়েলি অভিযানের বিষয়ে জানতে চাওয়া হলে তিনি বলেন, বাংলাদেশ এ ধরনের অভিযানকে সমর্থন করে না। তিনি বলেন, ‘ফিলিস্তিনি জনগণের রাষ্ট্র গঠনের অধিকার আছে, এটি পরিষ্কার।’ এ সময় তিনি জাতিসংঘের রেজল্যুশন অনুসারে দ্বিরাষ্ট্রীয় সমাধান বাস্তবায়নের আহ্বান জানান।
এর আগে জার্মানির মিউনিখে ইউক্রেনের প্রেসিডেন্ট ভলোদিমির জেলেনস্কির সঙ্গে বৈঠক করেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। এ সময় রাশিয়া-ইউক্রেন যুদ্ধ বন্ধের উপায় খুঁজে বের করার আহ্বান জানান তিনি।
বৈঠকের পর পররাষ্ট্রমন্ত্রী ড. হাছান মাহমুদ বলেন, প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা সবসময় বলেন, আমরা সব ধরনের যুদ্ধের বিরুদ্ধে। জেলেনস্কির সঙ্গে আলোচনার সময় কীভাবে রাশিয়া-ইউক্রেন যুদ্ধ বন্ধ করা যায়, সে বিষয়েও তিনি বার বার আলোচনা করেছেন।
ড. হাছান মাহমুদ জানান, বৈঠকে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ও ইউক্রেনের প্রেসিডেন্ট ভলোদিমির জেলেনস্কি গাজায় নিরপরাধ নারী-পুরুষের ওপর হামলা কীভাবে বন্ধ করা যায়, তা নিয়েও আলোচনা করেছেন।
মিউনিখ নিরাপত্তা সম্মেলন ২০২৪-এ যোগ দিতে তিন দিনের সরকারি সফরে বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ১৫ ফেব্রুয়ারি সন্ধ্যায় মিউনিখে পৌঁছান। ১৯ ফেব্রুয়ারি প্রধানমন্ত্রীর ঢাকায় পৌঁছার কথা রয়েছে।