আন্তর্জাতিক ডেস্ক :
নতুন বছরে ফিলিস্তিনের গাজায় ইসরায়েলের হামলার তীব্রতা বেড়েছে। অবরুদ্ধ উপত্যকায় দেশটির নির্বিচার হামলায় নিহতের সংখ্যা ২৫ হাজার ছাড়িয়েছে।
রোববার (২১ জানুয়ারি) গাজার স্বাস্থ্যমন্ত্রণায় জানিয়েছে, অবরুদ্ধ উপাত্যকাটিতে নিহতের সংখ্যা বেড়ে ২৫ হাজার ১০৫ জনে দাঁড়িয়েছে। পাশাপাশি আহত হয়েছে আরও ৬২ হাজার ৬৮১ জন। অনেক মানুষ এখনো ধ্বংসস্তূপের নিচে এবং রাস্তায় আটকে আছে। কারণ উদ্ধারকারীরা তাদের কাছে পৌঁছতে পারছেন না।
গত ২৪ ঘন্টায় প্রায় ১৭৮ ফিলিস্তিনি নিহত এবং ২৯৩ জন আহত হয়েছে।
অন্যদিকে পশ্চিমতীরে হামলা, অভিযান ও গ্রেফতার অব্যাহত রেখেছে ইসরায়েলি বাহিনী। গাজার মতো সেখানেও প্রতিদিন হতাহতের ঘটনা ঘটছে।
জাতিসংঘের হিসাব অনুযায়ী, তিন মাসের বেশি সময় ধরে চলা ইসরায়েলি হামলার কারণে গাজার মোট জনসংখ্যার ৮৫ শতাংশই বাস্তুচ্যুত হয়েছেন। গাদাগাদি করে আশ্রয়কেন্দ্রে থাকা এসব মানুষকে খাবার, পানি, জ্বালানি ও স্বাস্থ্যসেবা পেতে হিমশিম খেতে হচ্ছে।
বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার মহাপরিচালক তেদরোস আধানোম গেব্রেয়াসুস বলেছেন, গাজার বাসিন্দারা এখন ‘নরকে বসবাস করছেন’। অবরুদ্ধ এ উপত্যকায় অত্যাসন্ন দুর্ভিক্ষ নিয়ে এর আগে জাতিসংঘের দেওয়া হুঁশিয়ারিই তাঁর বক্তব্যে প্রতিধ্বনিত হয়েছে।
রোববার এক যৌথ বিবৃতিতে ডব্লিউএইচওর পাশাপাশি বিশ্ব খাদ্য সংস্থা (ডব্লিউএফপি) ও ইউনিসেফ বলেছে, গাজায় মানবিক সহায়তার প্রবাহ ঠিক রাখতে মৌলিক পদক্ষেপে একটি পরিবর্তন আনা জরুরিভাবে প্রয়োজন। নিরাপদ ও দ্রুততার সঙ্গে ত্রাণ প্রবেশ নিশ্চিতে সীমান্তপথ খুলে দেওয়ার আহ্বান জানিয়েছে সংস্থাগুলো।
গত ৭ অক্টোবর ইসরায়েলের অভ্যন্তরে হামলা চালায় হামাস। এর জবাবে গাজায় অনবরত বোমা হামলা শুরু করে ইসরায়েল। দখলদার বাহিনীর নৃশংসতা থেকে বাদ যাচ্ছে না নারী ও শিশুরাও। গাজায় এরই মধ্যে নিহতের সংখ্যা বেড়ে ২৫ হাজার ছাড়িয়েছে।
যদিও এই যুদ্ধের উত্তাপ ছড়িয়ে পড়েছে মধ্যপ্রাচ্যজুড়ে। হামলা-পাল্টা হামলার ঘটনা ঘটছে লেবানন সীমান্তে। হামলা হচ্ছে সিরিয়া ও ইরাকেও।
তাছাড়া ফিলিস্তিনিদের পক্ষে অবস্থান নিয়েছে ইয়েমেনের হুথি বিদ্রোহীরা। লোহিত সাগরে ইসরায়েলগামী জাহাজ লক্ষ্য হামলা চালানো হচ্ছে। মার্কিন পদক্ষেপেও বন্ধ হচ্ছে না হুথিদের হামলা।
এদিকে সিরিয়ার রাজধানী দামেস্কে ইরানের বিপ্লবী গার্ডের একটি ঘাঁটিতে হামলা চালিয়ে পাঁচ সদস্যকে হত্যা করেছে ইসরায়েল। সিরিয়ায় নিযুক্ত ইরানের ইসলামিক রেভোল্যুশনারি গার্ড কর্পসের ইন্টেলিজেন্স প্রধান নিহত হয়েছেন। তাছাড়া হামলায় তার দুই সহকারী ও অন্য দুই গার্ডও নিহত হয়েছেন।
এই ঘটনায় প্রতিশোধমূলক হামলা চালানোর প্রতিশ্রুতি দিয়েছে তেহরান। ইসরায়েলের ওই ক্ষেপণাস্ত্র হামলায় সিরিয়ার বেশ কয়েকজন সেনা সদস্যও নিহত হয়েছে বলে জানা গেছে। তবে ওই হামলার দায় স্বীকার করেনি ইসরায়েল।