আন্তর্জাতিক ডেস্ক :
ফিলিস্তিনি ছিটমহল গাজার দক্ষিণাঞ্চলে খান ইউনিস শহরের নিকটবর্তী আবাসন আল-কাবিরা শহরে এক স্কুল সংলগ্ন শরণার্থী শিবিরে ইসরায়েলের বিমান হামলায় অন্তত ২৯ জন নিহত হয়েছেন। নিহতদের অধিকাংশই নারী ও শিশু বলে জানিয়েছেন ফিলিস্তিনি চিকিৎসা কর্মকর্তারা।
মঙ্গলবার (৯ জুলাই) হামাস নিয়ন্ত্রিত গাজার সরকারি মিডিয়া এক বিবৃতিতে এই তথ্য জানিয়েছে।
বিবৃতিতে বলা হয়েছে, খান ইউনিস শহরের পূর্বে অবস্থিত আবাসান আল-কাবিরা শহরের আল-আওদা স্কুলে বিমান হামলা চালিয়ে ইসরায়েল। জাতিসংঘ পরিচালিত স্কুলটি ফিলিস্তিনি উদ্বাস্তুদের আবাসস্থল হিসেবে ব্যবহার হয়ে আসছিল। হামলার ফলে সেখানে ব্যাপক ধ্বংসযজ্ঞ এবং নারী ও শিশুদের মৃত্যুও হয়েছে। হতাহতদের শরীরের অঙ্গ-প্রত্যঙ্গ সেখানে ছড়িয়ে-ছিটিয়ে ছিল এবং স্কুলের বাইরে তাঁবুতে থাকা বহু মানুষ ইসরায়েলি হামলায় আহত হয়েছেন।
গাজার স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয় জানিয়েছে, মঙ্গলবার খান ইউনিসের পূর্ব দিকের আবাসন শহরের আল-আওদা স্কুলের গেইটের পাশেই আঘাত হানে ইসরায়েলি বিমান।
আল জাজিরা জানিয়েছে, এই নিয়ে চার দিনের মধ্যে চতুর্থবারের মতো গাজার আরেকটি স্কুল ভবনে আঘাত হানল ইসরায়েল, যেটি একটি আশ্রয় শিবির হিসেবে ব্যবহৃত হচ্ছিল।
ইসরায়েলের সামরিক বাহিনী জানিয়েছে, ‘নির্ভুল অস্ত্র’ ব্যবহার করে ‘হামাসের সামরিক শাখার এক সন্ত্রাসীর’ অবস্থান লক্ষ্য করে হামলাটি চালানো হয়েছে। হামাসের এই যোদ্ধা গত বছরের ৭ অক্টোবর ইসরায়েলে চালানো হামলায় অংশ নিয়েছিল বলে দাবি করেছে তারা।
এক সপ্তাহ আগে ইসরায়েলি বাহিনী আবাসন আল-কাবিরা শহর ও খান ইউনিসের পূর্বাংশ থেকে বেসামরিকদের চলে যাওয়ার নির্দেশ দিয়েছিল। তাদের এ নির্দেশ পাওয়ার পর ওই এলাকাগুলো থেকে হাজার হাজার ফিলিস্তিনি পালিয়ে যায়।
গাজার হামাস পরিচালিত গণমাধ্যম দপ্তরের পরিচালক ইসমাইল আল-থাওয়াবতা জানান, ভূখণ্ডটির মধ্যাঞ্চলে ইসরায়েলের অন্য হামলাগুলোতে আরও কয়েক ডজন ফিলিস্তিনি নিহত হয়েছেন।
গত শনিবার মধ্য গাজার নুসিরাত শরণার্থী শিবিরে জাতিসংঘ-চালিত একটি স্কুলে হামলায় ১৬ জন নিহত হন। যেখানে প্রায় দুই হাজার বাস্তুচ্যুত ফিলিস্তিনি ছিল।
পরদিন রোববার গাজা শহরের একটি গির্জাচালিত স্কুলে হামলায় হামাসের একজন সিনিয়র সরকারি কর্মকর্তা এবং আরও তিনজন নিহত হয়েছেন।
পরদিন সোমবার রাতে নুসিরাতের জাতিসংঘ পরিচালিত আরেকটি স্কুলে হামলায় বেশ কয়েকজন আহত হয়েছে বলে জানা গেছে।
ইসরায়েলি সামরিক বাহিনী বলেছে, আশ্রয় কেন্দ্রগুলো হামাসের রাজনীতিবিদ, পুলিশ কর্মকর্তা এবং যোদ্ধারা তাদের ঘাঁটি হিসেবে ব্যবহার করছিল।
গাজার স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের দেওয়া তথ্য অনুসারে, গত বছরের ৭ অক্টোবর থেকে ইসরায়েলের যুদ্ধে গাজায় নিহতের সংখ্যা বেড়ে ৩৮ হাজার ২৪৩ জনে পৌঁছেছে। একইসময় আহতের সংখ্যা বেড়ে ৮৮ হাজার ৩৩ জনে পৌঁছেছে।