নিজস্ব প্রতিবেদক :
নগরের উন্নয়ন পরিকল্পিতভাবেই হচ্ছে। গাছ কাটা দুঃখজনক, তবে প্রয়োজনে গাছ কাটতে হচ্ছে। এমন দাবি করেছেন ঢাকা দক্ষিণ সিটি করপোরেশনের মেয়র শেখ ফজলে নূর তাপস।
বুধবার (১০ মে) সকালে ঢাকেশ্বরী মন্দির এলাকায় হেরিটেজ বলয়-৫ সৃষ্টির লক্ষ্যে পরিদর্শনে গিয়ে এ কথা বলেন তিনি।
মেয়র তাপস বলেন, যে গাছ কাটতে হবে, সেগুলো অপসারণ করে সেখানে আবার নতুন করে তিনগুণ গাছ লাগাতে হবে। একটা গাছ কাটলে তিনটা গাছ লাগাতে হবে; এই লক্ষ্য নিয়ে আমরা এগোচ্ছি। ব্যক্তিগতভাবে আমিও গাছ পছন্দ করি। কিন্তু আমাদের উন্নয়ন কাজও তো করতে হবে। নগরীর সৌন্দর্যবর্ধন ও উন্নয়ন নিয়ে ঢালাও সমালোচনা করে লাভ নেই।
গত তিন বছরে দুই লাখ গাছ লাগানো হয়েছে দাবি করে তাপস বলেন, এই বর্ষায়ও দশ হাজার গাছ লাগানো হবে। পুরনো ঢাকা ঘিরে সাতটি পর্যটন বান্ধব বলয় গড়ে তোলা হবে।
রাজধানীর ধানমন্ডির সাত মসজিদ রোডে সড়ক বিভাজকে গাছ কাটার বিষয়ে তাপস বলেন, গাছ কাটলে কেউ মর্মাহত হতেই পারে, কষ্ট পেতেই পারে, এটা স্বাভাবিক। এটা তাদের আবেগের বিষয়। কিন্তু আমাদের তো কাজ চালিয়ে যেতে হবে।
রাজধানী ঢাকার ঐতিহাসিক ঐতিহ্যবাহী স্থাপনাগুলোকে সংরক্ষণ করে দেশি এবং বিদেশি পর্যটকদের জন্য দর্শনীয় ও আকর্ষণীয় স্থান হিসেবে গড়ে ঢাকামুখী পর্যটন শিল্প গড়ে তোলা হবে বলে জানিয়ে মেয়র বলেন, আমাদের প্রথম লক্ষ্য ঢাকার ঐতিহাসিক স্থাপনাগুলোকে সংরক্ষণ করা ও দ্বিতীয় লক্ষ্য, দেশি ও বিদেশি পর্যটকদের জন্য এমন ব্যবস্থা করা যাতে তারা ঢাকায় এসে এগুলো সুন্দরভাবে দেখতে ও উপভোগ করতে পারেন।
মেয়র বলেন, বহির্বিশ্বে যেমন দেখি ঐতিহ্যবাহী শহরকেন্দ্রিক পর্যটনকেন্দ্র ও পর্যটনশিল্প গড়ে ওঠে, তেমনি আমরা ঢাকামুখী পর্যটনশিল্প গড়ে তুলতে চাই। সেই উদ্দেশ্যেই ঢাকার চারপাশে সাতটি ঐতিহ্যবলয় গড়ে তোলা হচ্ছে। আমরা চাই ঢাকা শহর পর্যটনমুখী হোক, পর্যটনকেন্দ্রিক হোক। মহাপরিকল্পনার আওতায় আমরা পরামর্শকদের নিয়ে দীর্ঘদিন ধরে কাজ করছি। তারই প্রেক্ষিতে আজ আমরা ঐতিহ্যবলয় পাঁচ পরিদর্শনে এসেছি।
তিনি বলেন, একজন পর্যটক এলে সে কীভাবে আসবে, কী কী দেখবে, কীভাবে চলাচল করবে, সেই বিষয়গুলোর খুঁটিনাটি বিষয়গুলো নির্ণয় করে কীভাবে সুযোগ-সুবিধা নিশ্চিত করা যায় তা দেখা হবে। যাতে বিদেশ থেকে পর্যটকরা এলে স্থানগুলো দেখে সুন্দরভাবে উপভোগ করতে পারেন।
পুরান ঢাকার ঝুঁকিপূর্ণ স্থাপনাগুলোকে কী করা হবে জানতে চাইলে মেয়র বলেন, ঢাকেশ্বরী মন্দির, লালবাগ কেল্লা আমাদের ঐতিহ্যবলয় পাঁচের অংশ। দেশের সবচেয়ে বিখ্যাত স্থাপনা লালবাগ কেল্লার কিছু অংশ ভেঙে গেছে। এটাসহ পুরানো যেসব ঐতিহ্যবাহী স্থাপনা আছে সেগুলো কীভাবে সংস্কার করা যায় তা আমরা ভেবে দেখছি। আবার আহসান মঞ্জিলকেন্দ্রিক একটি, বড় কাটারা-ছোট কাটারা, রুপলাল হাউজকেন্দ্রিক আলাদা আলাদা বলয় রয়েছে। আজ আমরা একটি বলয় ধরে শুরু করছি। পরবর্তীতে ধাপে ধাপে অন্য বলয়গুলোতেও যাওয়া হবে। আমাদের লক্ষ্য একজন পর্যটক হেঁটে হেঁটে আধা ঘণ্টা বা এক ঘণ্টায় পুরো এলাকা ঘুরে দেখতে পারবেন। আমরা এর উপযোগী পরিবেশ তৈরি করে দেব। আমরা বুড়িগঙ্গা তীর ধরে খেলার মাঠ ও অন্যান্য স্থাপনা নির্মাণ করছি যাতে সেখানেও ঘুরতে যাওয়া যায়।
এ সময় বিশিষ্ট ইতিহাসবিদ মুনতাসীর মামুনসহ সিটি কর্পোরেশনের বিভিন্ন কর্মকর্তা, বেসরকারি প্রতিষ্ঠান, সুধীজন, কাউন্সিলর ও পরামর্শক উপস্থিত ছিলেন।