Dhaka মঙ্গলবার, ১৫ জুলাই ২০২৫, ৩১ আষাঢ় ১৪৩২ বঙ্গাব্দ

গাইবান্ধায় এলজিইডির ৮৯৫ কিমি রাস্তা কাঁচা: ভোগান্তি চরমে

গাইবান্ধায় এলজিইডির ৮৯৫ কিমি রাস্তা কাঁচা: ভোগান্তি চরমে

গাইবান্ধার সাদুল্লাপুর ও পলাশবাড়ী উপজেলা নিয়ে গঠিত গাইবান্ধা-৩ আসন। এ আসনে প্রায় ৩ শতাধিক গ্রাম রয়েছে। এসব গ্রামাঞ্চলের বিভিন্ন রুটে ৮৭৫ কিলোমিটার কাঁচা রাস্তার একদম নাজুক অবস্থায়। শুকনো মৌসুমে ধূলাবালির অভায়াশ্রম আর বর্ষা মৌসুমে হাঁটু কাদায় উপনীত হয়। এতে লক্ষাধিক মানুষ চলাচলে নানা ভোগান্তির শিকার হতে হচ্ছেন।

সরেজমিনে শুক্রবার (২ জুলাই) সাদুল্লাপুরের জামালপুর, ইদিলপুর এবং পলাশবাড়ীর মনোহরপুর ও কিশোরগাড়ী ইউনিয়নের বিভিন্ন গ্রামে দেখা যায় কাচা রাস্তাগুলোর হাঁটা কাদার দৃশ্য। এসময় অনেকে রিকশাভ্যান নিয়ে কেউ বা হেঁটে কাদার ভেতরে পা দিয়ে ছুটেছিলেন গন্তব্যস্থলে। যেন দুর্ভোগের অন্ত নেই পথচারিদের।

জানা যায়, গাইবান্ধা-৩ আসনটি জাতীয় পার্টির দুর্গ ছিল। যার ফলে টানা ৩৬ বছর জাপার এমপি ছিলেন মরহুম ড. টিআইএম ফজলে রাব্বী চৌধুরি। এসময় পর্যন্ত সাদুল্লাপুর-পলাশবাড়ী উপজেলায় তেমন কোন উন্নয়নের ছোঁয়া লাগেনি। এরপর আসনটি দখলে নেয় আওয়ামীলীগের প্রার্থী মরহুম ডা. ইউনুস আলী সরকার। তিনি টানা দুফায় ৬ বছর ক্ষমতায় থাকাকালীন অন্যান্য উন্নয়ন অব্যাহত রেখে কিছু সংখ্যক গ্রামীণ কাঁচা রাস্তা পাকাকরণ শুরু করছিলেন।এ অবস্থায় তাঁর মৃত্যুতে উপনির্বাচনে ক্ষমতাসীন দলের প্রার্থী অ্যাডভোকেট উম্মে কুলসুম স্মৃতি এমপি নির্বাচিত হয়েছেন। বর্তমানে তিনিই ক্ষমতায় রয়েছেন। চেষ্টা করেছেন শিক্ষা, স্বাস্থ্যসহ রাস্তাঘাট উন্নয়নের।

কিন্তু এলজিডি’র আইডিভূক্ত এক হাজার ২৩৩ কিলোমিটার রাস্তার মধ্যে অতীতে ৩৩৮ কিলোমিটার রাস্তা পাকাকরণ করা হলেও এখনো ৮৯৫ কিলোমিটার রাস্তা কাঁচা রয়েছে এখানে।

বিদ্যমান পরিস্থিতিতে সাদুল্লাপুর ও পলাশবাড়ীর উপজেলার লক্ষাধিক মানুষ কাঁচা রাস্তাগুলো দিয়ে বিভিন্ন শহরে প্রবেশে নানাবিধ দুর্ভোগের শিকার হচ্ছে। শুকনোকালে কাঁচা রাস্তাগুলোতে ধুলাবালিতে অন্ধকার আর বর্ষাকালে একটু বৃষ্টিতে কর্দমাক্ত সৃষ্টি হয়। মানুষের প্রয়োজনের তাগিদে হাঁটু সমান কাদা ভেঙে চলাচল করতে গিয়ে দুর্ঘটনার কবলে পড়ছে তারা। এছাড়াও শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের শিক্ষার্থীরা কাদার ভেতর পা দিয়ে চলতে গিয়ে উল্টে পড়ে নষ্ট হচ্ছে বই-খাতাসহ শিক্ষা উপকরণগুলো। এতে করে প্রতিষ্ঠানমুখে বিমুখ হচ্ছে অনেক শিক্ষার্থী। একই সঙ্গে কোন মুমূর্ষ রোগিকে যথাসময় হাসপাতালে পৌঁছাতে না পাড়ায় অনেকে পথে মৃত্যুবরণ করছে।

উন্নয়শীল সরকারের প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা গ্রামকে শহরে পরিণত করার ঘোষণা দেওয়া বিভিন্ন সংসদীয় আসনের গ্রামাঞ্চলে উন্নয়ন ঘটলেও সাদুল্লাপুর-পলাশবাড়ী আসনের কাঁচা রাস্তাগুলোর তেমন উন্নয়ন হয়নি। কিছু সংখ্যক পাকাকরণ করা হলেও এখনো অধিকাংশ রাস্তা কাঁচায় রয়েছে। এডিপি, এলজিএসপি, টিআর-কাবিখা ও উপজেলা-ইউনিয়ন পরিষদের তহবিল থেকে জনদুর্ভোগের এসব রাস্তাগুলো পাকা করার কথা। কিন্তু এই দুই উপজেলার কাঁচা রাস্তাগুলো দেখে মনে হয় না সরকারের কোন উন্নয়নের ছোঁয়া লেগেছে।

ইদিলপুর এলাকার রিকশাভ্যান চালক ময়নুল হক জানান, যাত্রী ও মালামাল বহন করে জীবিকা নির্বাহ করা হয়। কিন্তু বর্ষাকালে ধাপেরহাট প্রবেশমুখের কাঁচা রাস্তাটি দিয়ে চলাচলের অনুপযোগি হয়। তবুও জীবিকার তাগিদে কাদা দিয়েই চলতে হচ্ছে।

কিশোরগাড়ী এলাকার পথচারি এন্তাজ আলী ব্যাপারী বলেন, একটু বৃষ্টি হলে কাদার ভেতরে পা দিয়ে চলতে হয়। এতে করে সময়ের অপচয়সহ নষ্ট হচ্ছে প্রয়োজনীয় পণ্যসামগ্রী। এমন দুর্ভোগ পোহাতে হলেও সেটি চোখে পড়ে না জনপ্রতিনিধিদের।

গাইবান্ধা এলজিইডি’র নির্বাহী প্রকৌলী বলেন, কাঁচা রাস্তাগুলোর মধ্যে কিছু সংখ্যক রাস্তা পাকাকরনের চাহিদা সংশ্লিষ্টদের দেয়া হয়েছে। বরাদ্দ পেলে কাজ শুরু করা হবে।

গাইবান্ধা-৩ (সাদুল্লাপুর-পলাশবাড়ী) আসনের সংসদ সদস্য অ্যাডভোকেট উম্মে কুলসুম স্মৃতি বলেন, এলজিডি’র আইডিভূক্ত কাঁচা রাস্তা পাকাকরণের বিষয়ে সংসদ অধিবেশনে বলা হয়েছে। চেষ্টা করা হচ্ছে ধীরে ধীরে রাস্তাগুলো পাকা করতে।

আবহাওয়া

ডিসেম্বরে বিয়ে করছেন মধুমিতা

গাইবান্ধায় এলজিইডির ৮৯৫ কিমি রাস্তা কাঁচা: ভোগান্তি চরমে

প্রকাশের সময় : ১২:৩৩:২৪ অপরাহ্ন, শুক্রবার, ২ জুলাই ২০২১

গাইবান্ধার সাদুল্লাপুর ও পলাশবাড়ী উপজেলা নিয়ে গঠিত গাইবান্ধা-৩ আসন। এ আসনে প্রায় ৩ শতাধিক গ্রাম রয়েছে। এসব গ্রামাঞ্চলের বিভিন্ন রুটে ৮৭৫ কিলোমিটার কাঁচা রাস্তার একদম নাজুক অবস্থায়। শুকনো মৌসুমে ধূলাবালির অভায়াশ্রম আর বর্ষা মৌসুমে হাঁটু কাদায় উপনীত হয়। এতে লক্ষাধিক মানুষ চলাচলে নানা ভোগান্তির শিকার হতে হচ্ছেন।

সরেজমিনে শুক্রবার (২ জুলাই) সাদুল্লাপুরের জামালপুর, ইদিলপুর এবং পলাশবাড়ীর মনোহরপুর ও কিশোরগাড়ী ইউনিয়নের বিভিন্ন গ্রামে দেখা যায় কাচা রাস্তাগুলোর হাঁটা কাদার দৃশ্য। এসময় অনেকে রিকশাভ্যান নিয়ে কেউ বা হেঁটে কাদার ভেতরে পা দিয়ে ছুটেছিলেন গন্তব্যস্থলে। যেন দুর্ভোগের অন্ত নেই পথচারিদের।

জানা যায়, গাইবান্ধা-৩ আসনটি জাতীয় পার্টির দুর্গ ছিল। যার ফলে টানা ৩৬ বছর জাপার এমপি ছিলেন মরহুম ড. টিআইএম ফজলে রাব্বী চৌধুরি। এসময় পর্যন্ত সাদুল্লাপুর-পলাশবাড়ী উপজেলায় তেমন কোন উন্নয়নের ছোঁয়া লাগেনি। এরপর আসনটি দখলে নেয় আওয়ামীলীগের প্রার্থী মরহুম ডা. ইউনুস আলী সরকার। তিনি টানা দুফায় ৬ বছর ক্ষমতায় থাকাকালীন অন্যান্য উন্নয়ন অব্যাহত রেখে কিছু সংখ্যক গ্রামীণ কাঁচা রাস্তা পাকাকরণ শুরু করছিলেন।এ অবস্থায় তাঁর মৃত্যুতে উপনির্বাচনে ক্ষমতাসীন দলের প্রার্থী অ্যাডভোকেট উম্মে কুলসুম স্মৃতি এমপি নির্বাচিত হয়েছেন। বর্তমানে তিনিই ক্ষমতায় রয়েছেন। চেষ্টা করেছেন শিক্ষা, স্বাস্থ্যসহ রাস্তাঘাট উন্নয়নের।

কিন্তু এলজিডি’র আইডিভূক্ত এক হাজার ২৩৩ কিলোমিটার রাস্তার মধ্যে অতীতে ৩৩৮ কিলোমিটার রাস্তা পাকাকরণ করা হলেও এখনো ৮৯৫ কিলোমিটার রাস্তা কাঁচা রয়েছে এখানে।

বিদ্যমান পরিস্থিতিতে সাদুল্লাপুর ও পলাশবাড়ীর উপজেলার লক্ষাধিক মানুষ কাঁচা রাস্তাগুলো দিয়ে বিভিন্ন শহরে প্রবেশে নানাবিধ দুর্ভোগের শিকার হচ্ছে। শুকনোকালে কাঁচা রাস্তাগুলোতে ধুলাবালিতে অন্ধকার আর বর্ষাকালে একটু বৃষ্টিতে কর্দমাক্ত সৃষ্টি হয়। মানুষের প্রয়োজনের তাগিদে হাঁটু সমান কাদা ভেঙে চলাচল করতে গিয়ে দুর্ঘটনার কবলে পড়ছে তারা। এছাড়াও শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের শিক্ষার্থীরা কাদার ভেতর পা দিয়ে চলতে গিয়ে উল্টে পড়ে নষ্ট হচ্ছে বই-খাতাসহ শিক্ষা উপকরণগুলো। এতে করে প্রতিষ্ঠানমুখে বিমুখ হচ্ছে অনেক শিক্ষার্থী। একই সঙ্গে কোন মুমূর্ষ রোগিকে যথাসময় হাসপাতালে পৌঁছাতে না পাড়ায় অনেকে পথে মৃত্যুবরণ করছে।

উন্নয়শীল সরকারের প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা গ্রামকে শহরে পরিণত করার ঘোষণা দেওয়া বিভিন্ন সংসদীয় আসনের গ্রামাঞ্চলে উন্নয়ন ঘটলেও সাদুল্লাপুর-পলাশবাড়ী আসনের কাঁচা রাস্তাগুলোর তেমন উন্নয়ন হয়নি। কিছু সংখ্যক পাকাকরণ করা হলেও এখনো অধিকাংশ রাস্তা কাঁচায় রয়েছে। এডিপি, এলজিএসপি, টিআর-কাবিখা ও উপজেলা-ইউনিয়ন পরিষদের তহবিল থেকে জনদুর্ভোগের এসব রাস্তাগুলো পাকা করার কথা। কিন্তু এই দুই উপজেলার কাঁচা রাস্তাগুলো দেখে মনে হয় না সরকারের কোন উন্নয়নের ছোঁয়া লেগেছে।

ইদিলপুর এলাকার রিকশাভ্যান চালক ময়নুল হক জানান, যাত্রী ও মালামাল বহন করে জীবিকা নির্বাহ করা হয়। কিন্তু বর্ষাকালে ধাপেরহাট প্রবেশমুখের কাঁচা রাস্তাটি দিয়ে চলাচলের অনুপযোগি হয়। তবুও জীবিকার তাগিদে কাদা দিয়েই চলতে হচ্ছে।

কিশোরগাড়ী এলাকার পথচারি এন্তাজ আলী ব্যাপারী বলেন, একটু বৃষ্টি হলে কাদার ভেতরে পা দিয়ে চলতে হয়। এতে করে সময়ের অপচয়সহ নষ্ট হচ্ছে প্রয়োজনীয় পণ্যসামগ্রী। এমন দুর্ভোগ পোহাতে হলেও সেটি চোখে পড়ে না জনপ্রতিনিধিদের।

গাইবান্ধা এলজিইডি’র নির্বাহী প্রকৌলী বলেন, কাঁচা রাস্তাগুলোর মধ্যে কিছু সংখ্যক রাস্তা পাকাকরনের চাহিদা সংশ্লিষ্টদের দেয়া হয়েছে। বরাদ্দ পেলে কাজ শুরু করা হবে।

গাইবান্ধা-৩ (সাদুল্লাপুর-পলাশবাড়ী) আসনের সংসদ সদস্য অ্যাডভোকেট উম্মে কুলসুম স্মৃতি বলেন, এলজিডি’র আইডিভূক্ত কাঁচা রাস্তা পাকাকরণের বিষয়ে সংসদ অধিবেশনে বলা হয়েছে। চেষ্টা করা হচ্ছে ধীরে ধীরে রাস্তাগুলো পাকা করতে।