Dhaka মঙ্গলবার, ২৬ অগাস্ট ২০২৫, ১০ ভাদ্র ১৪৩২ বঙ্গাব্দ

গণ-অভ্যুত্থানে আহতরা পাবেন ইউনিক আইডি, ফ্রি চিকিৎসা

  • নিজস্ব প্রতিবেদক
  • প্রকাশের সময় : ০৯:৫৮:৩২ অপরাহ্ন, বৃহস্পতিবার, ১৪ নভেম্বর ২০২৪
  • ২৫৪ জন দেখেছেন

নিজস্ব প্রতিবেদক : 

গণ-অভ্যুত্থানে আহতদের চিকিৎসার জন্য প্রত্যেককে ইউনিক আইডি বা স্বতন্ত্র পরিচয়পত্র দেবে সরকার। ওই আইডি দেখিয়ে দেশের সব সরকারি হাসপাতালে বিনা মূল্যে চিকিৎসা পাওয়া যাবে। এ ছাড়া যেসব বেসরকারি হাসপাতালের সঙ্গে সরকারের চুক্তি থাকবে সেখানেও বিনা মূল্যে চিকিৎসা পাবেন তাঁরা বলে জানিয়েছেন স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের নির্বাহী দায়িত্ব পাওয়া প্রধান উপদেষ্টার বিশেষ সহকারী ড. সায়েদুর রহমান।

বৃহস্পতিবার (১৪ নভেম্বর) সন্ধ্যায় সচিবালয়ে স্বাস্থ্য ও পরিবার কল্যাণ মন্ত্রণালয়ের সম্মেলন কক্ষে জুলাই- আগস্ট গণঅভ্যুত্থানে আহত ছাত্র-জনতার সঙ্গে ৬ উপদেষ্টার বৈঠক শেষে তিনি এ কথা বলেন।

ডিসেম্বরের মধ্যে এসব প্রক্রিয়া শেষ করা হবে জানিয়ে ড. সায়েদুর রহমান বলেন, আগামী পাঁচ দিনের মধ্যে লিখিত রূপরেখা দেওয়া হবে। রূপরেখায় দেওয়ার টাইমলাইন অনুযায়ী সেগুলো বাস্তবায়ন করা হবে।

তিনি বলেন, আহতদের একটি ইউনিক আইডি কার্ড থাকবে। সেটি তৈরি হওয়ার পর সব সুবিধাপ্রাপ্তি নিশ্চিত হবে। চিকিৎসার ক্ষেত্রে সব সরকারি প্রতিষ্ঠান থেকে সারাজীবন বিনামূল্যে চিকিৎসা পাবেন। যেসব বেসরকারি হাসপাতালের সঙ্গে সরকারের চুক্তি হবে সেখানেও পুরো বা আংশিক খরচ সরকার দিবে।

তিনি আরও বলেন, এতদিন ব্যক্তিগতভাবে যত খরচ হয়েছে তার যথাযথ তথ্য দিলে ফেরত দেওয়া হবে। চোখ হারানোদের শিক্ষাগত যোগ্যতা ও সামর্থের সঙ্গে যথাযথ প্রশিক্ষিত করে উনাকে ও পরিবারকে সহায়তা করা হবে। পঙ্গুত্ব বরণকারীদের সাধ্যমতো চিকিৎসা দেওয়া হবে।

ড. সায়েদুর রহমান বলেন, ১৭ নভেম্বরের পর সাপোর্ট সেন্টার থাকবে। সেখান থেকে সব ধরনের সমাধান দেওয়ার চেষ্টা করা হবে। আহতদের চিকিৎসায় সব সরকারি হাসপাতালে বেড ডেডিকেটেড থাকবে। ঢাকার সব হাসপাতালকে একটি নেটওয়ার্কের আওতায় আনা হবে। ডিসেম্বরের মধ্যে সব প্রক্রিয়া শেষ করা হবে। এ বিষয়ে গাফিলতি কোনো ভাবেই সহ্য করা হবে না। প্রয়োজনে বিদেশে উন্নত চিকিৎসার ব্যবস্থা করা হবে।

তথ্য ও সম্প্রচার উপদেষ্টা নাহিদ ইসলাম বলেন, ডিসেম্বরের মধ্যে অভ্যুত্থানে আহতদের চিকিৎসা ও পুনর্বাসনে স্বল্পমেয়াদি ব্যবস্থা নেওয়া হবে। পরবর্তীতে ধাপে ধাপে দীর্ঘমেয়াদি পদক্ষেপ নেওয়া হবে। রাষ্ট্রের অনেক সংকট মোকাবিলা করতে হচ্ছে। তবে অভ্যুত্থানে শহিদ ও আহতরা সরকারের সর্বোচ্চ অগ্রাধিকার। বুধবার ভুল বোঝাবুঝি হয়েছে। রাতে গিয়ে সেটি নিরসন করা হয়েছে। তাদের সঙ্গে এর আগেও বসা হয়েছে। ফরমালি-ইনফরমালি নানা সময়ই তাদের সঙ্গে যোগাযোগ হচ্ছে।

তথ্য উপদেষ্টা বলেন, শহিদ ও আহত সবাই রাষ্ট্র ও জাতির সঙ্গে সম্পর্কিত। রাজনৈতিক দলগুলোরও শহিদ আহতদের নিয়ে কাজ করা কর্তব্য। সবাই মিলে এ জাতীয় কর্তব্যে অবহেলা না করি। এই সরকারই আহত, শহিদ পরিবারদের সর্বোচ্চ সুযোগ সুবিধা নিশ্চিত করতে পারবে। এ বিশ্বাস তাদেরও আছে। যখন নির্বাচন নির্বাচন বলে রাজনৈতিক আলাপ আনা হয় তখন সবার মধ্যে অনাস্থা তৈরি করছে। এখনও হাসপাতালের বিছানায় অনেকে পড়ে আছে, আজকেও একজন শহিদ হয়েছেন। এমন অবস্থায় জাতীয় পরিসরে যেখানে শহিদ পরিবার ও আহতদের নিয়ে আলাপ থাকা দরকার ছিল সেখানে শুধু সরকারের ওপর দায় চাপিয়ে বাকিরা নির্বাচন, ওমক-তমুক বলার চেষ্টা করছে। সবার কাছে আহ্বান জানাব, জাতীয় ফোকাস শহিদ ও আহতদের প্রতি দেই।

স্বাস্থ্য উপদেষ্টা নূরজাহান বেগমের সভাপতিত্বে বৈঠকে সমাজকল্যাণ উপদেষ্টা শারমীন এস মুরশিদ, মৎস্য ও প্রাণিসম্পদ উপদেষ্টা ফরিদা আক্তার, উপদেষ্টা মাহফুজ আলম, ডাক টেলিযোগাযোগ ও তথ্যপ্রযুক্তি এবং তথ্য ও সম্প্রচার উপদেষ্টা মো. নাহিদ ইসলাম, যুব ও ক্রীড়া এবং স্থানীয় সরকার উপদেষ্টা আসিফ মাহমুদ সজীব ভূঁইয়া উপস্থিত ছিলেন। এ ছাড়া, ছাত্র আন্দোলনের অন্যতম সমন্বয়ক হাসনাত আবদুল্লাহ, জুলাই শহীদ স্মৃতি ফাউন্ডেশনের সাধারণ সম্পাদক সারজিস আলম, আন্দোলনে শহীদ মুগ্ধর জমজ ভাই ও জুলাই শহীদ স্মৃতি ফাউন্ডেশনের প্রধান নির্বাহী মীর মাহবুবুর রহমান স্নিগ্ধ অংশ নিয়েছেন। আর শতাধিক আহত ছাত্র-জনতা উপস্থিত ছিলেন।

জনপ্রিয় খবর

আবহাওয়া

সংসদ নির্বাচনে কালো টাকার ছড়াছড়ি হলে ব্যবস্থা নেবে দুদক : দুদক চেয়ারম্যান

গণ-অভ্যুত্থানে আহতরা পাবেন ইউনিক আইডি, ফ্রি চিকিৎসা

প্রকাশের সময় : ০৯:৫৮:৩২ অপরাহ্ন, বৃহস্পতিবার, ১৪ নভেম্বর ২০২৪

নিজস্ব প্রতিবেদক : 

গণ-অভ্যুত্থানে আহতদের চিকিৎসার জন্য প্রত্যেককে ইউনিক আইডি বা স্বতন্ত্র পরিচয়পত্র দেবে সরকার। ওই আইডি দেখিয়ে দেশের সব সরকারি হাসপাতালে বিনা মূল্যে চিকিৎসা পাওয়া যাবে। এ ছাড়া যেসব বেসরকারি হাসপাতালের সঙ্গে সরকারের চুক্তি থাকবে সেখানেও বিনা মূল্যে চিকিৎসা পাবেন তাঁরা বলে জানিয়েছেন স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের নির্বাহী দায়িত্ব পাওয়া প্রধান উপদেষ্টার বিশেষ সহকারী ড. সায়েদুর রহমান।

বৃহস্পতিবার (১৪ নভেম্বর) সন্ধ্যায় সচিবালয়ে স্বাস্থ্য ও পরিবার কল্যাণ মন্ত্রণালয়ের সম্মেলন কক্ষে জুলাই- আগস্ট গণঅভ্যুত্থানে আহত ছাত্র-জনতার সঙ্গে ৬ উপদেষ্টার বৈঠক শেষে তিনি এ কথা বলেন।

ডিসেম্বরের মধ্যে এসব প্রক্রিয়া শেষ করা হবে জানিয়ে ড. সায়েদুর রহমান বলেন, আগামী পাঁচ দিনের মধ্যে লিখিত রূপরেখা দেওয়া হবে। রূপরেখায় দেওয়ার টাইমলাইন অনুযায়ী সেগুলো বাস্তবায়ন করা হবে।

তিনি বলেন, আহতদের একটি ইউনিক আইডি কার্ড থাকবে। সেটি তৈরি হওয়ার পর সব সুবিধাপ্রাপ্তি নিশ্চিত হবে। চিকিৎসার ক্ষেত্রে সব সরকারি প্রতিষ্ঠান থেকে সারাজীবন বিনামূল্যে চিকিৎসা পাবেন। যেসব বেসরকারি হাসপাতালের সঙ্গে সরকারের চুক্তি হবে সেখানেও পুরো বা আংশিক খরচ সরকার দিবে।

তিনি আরও বলেন, এতদিন ব্যক্তিগতভাবে যত খরচ হয়েছে তার যথাযথ তথ্য দিলে ফেরত দেওয়া হবে। চোখ হারানোদের শিক্ষাগত যোগ্যতা ও সামর্থের সঙ্গে যথাযথ প্রশিক্ষিত করে উনাকে ও পরিবারকে সহায়তা করা হবে। পঙ্গুত্ব বরণকারীদের সাধ্যমতো চিকিৎসা দেওয়া হবে।

ড. সায়েদুর রহমান বলেন, ১৭ নভেম্বরের পর সাপোর্ট সেন্টার থাকবে। সেখান থেকে সব ধরনের সমাধান দেওয়ার চেষ্টা করা হবে। আহতদের চিকিৎসায় সব সরকারি হাসপাতালে বেড ডেডিকেটেড থাকবে। ঢাকার সব হাসপাতালকে একটি নেটওয়ার্কের আওতায় আনা হবে। ডিসেম্বরের মধ্যে সব প্রক্রিয়া শেষ করা হবে। এ বিষয়ে গাফিলতি কোনো ভাবেই সহ্য করা হবে না। প্রয়োজনে বিদেশে উন্নত চিকিৎসার ব্যবস্থা করা হবে।

তথ্য ও সম্প্রচার উপদেষ্টা নাহিদ ইসলাম বলেন, ডিসেম্বরের মধ্যে অভ্যুত্থানে আহতদের চিকিৎসা ও পুনর্বাসনে স্বল্পমেয়াদি ব্যবস্থা নেওয়া হবে। পরবর্তীতে ধাপে ধাপে দীর্ঘমেয়াদি পদক্ষেপ নেওয়া হবে। রাষ্ট্রের অনেক সংকট মোকাবিলা করতে হচ্ছে। তবে অভ্যুত্থানে শহিদ ও আহতরা সরকারের সর্বোচ্চ অগ্রাধিকার। বুধবার ভুল বোঝাবুঝি হয়েছে। রাতে গিয়ে সেটি নিরসন করা হয়েছে। তাদের সঙ্গে এর আগেও বসা হয়েছে। ফরমালি-ইনফরমালি নানা সময়ই তাদের সঙ্গে যোগাযোগ হচ্ছে।

তথ্য উপদেষ্টা বলেন, শহিদ ও আহত সবাই রাষ্ট্র ও জাতির সঙ্গে সম্পর্কিত। রাজনৈতিক দলগুলোরও শহিদ আহতদের নিয়ে কাজ করা কর্তব্য। সবাই মিলে এ জাতীয় কর্তব্যে অবহেলা না করি। এই সরকারই আহত, শহিদ পরিবারদের সর্বোচ্চ সুযোগ সুবিধা নিশ্চিত করতে পারবে। এ বিশ্বাস তাদেরও আছে। যখন নির্বাচন নির্বাচন বলে রাজনৈতিক আলাপ আনা হয় তখন সবার মধ্যে অনাস্থা তৈরি করছে। এখনও হাসপাতালের বিছানায় অনেকে পড়ে আছে, আজকেও একজন শহিদ হয়েছেন। এমন অবস্থায় জাতীয় পরিসরে যেখানে শহিদ পরিবার ও আহতদের নিয়ে আলাপ থাকা দরকার ছিল সেখানে শুধু সরকারের ওপর দায় চাপিয়ে বাকিরা নির্বাচন, ওমক-তমুক বলার চেষ্টা করছে। সবার কাছে আহ্বান জানাব, জাতীয় ফোকাস শহিদ ও আহতদের প্রতি দেই।

স্বাস্থ্য উপদেষ্টা নূরজাহান বেগমের সভাপতিত্বে বৈঠকে সমাজকল্যাণ উপদেষ্টা শারমীন এস মুরশিদ, মৎস্য ও প্রাণিসম্পদ উপদেষ্টা ফরিদা আক্তার, উপদেষ্টা মাহফুজ আলম, ডাক টেলিযোগাযোগ ও তথ্যপ্রযুক্তি এবং তথ্য ও সম্প্রচার উপদেষ্টা মো. নাহিদ ইসলাম, যুব ও ক্রীড়া এবং স্থানীয় সরকার উপদেষ্টা আসিফ মাহমুদ সজীব ভূঁইয়া উপস্থিত ছিলেন। এ ছাড়া, ছাত্র আন্দোলনের অন্যতম সমন্বয়ক হাসনাত আবদুল্লাহ, জুলাই শহীদ স্মৃতি ফাউন্ডেশনের সাধারণ সম্পাদক সারজিস আলম, আন্দোলনে শহীদ মুগ্ধর জমজ ভাই ও জুলাই শহীদ স্মৃতি ফাউন্ডেশনের প্রধান নির্বাহী মীর মাহবুবুর রহমান স্নিগ্ধ অংশ নিয়েছেন। আর শতাধিক আহত ছাত্র-জনতা উপস্থিত ছিলেন।