নিজস্ব প্রতিবেদক :
গণ অধিকার পরিষদের সভাপতি নির্বাচিত হয়েছেন নুরুল হক (নুর)। সাধারণ সম্পাদক হয়েছেন মুহাম্মদ রাশেদ খান।
সোমবার (১০ জুলাই) নির্বাচনের ফল ঘোষণা করেন প্রধান নির্বাচন কমিশন আরিফুল ইসলাম। এসময় উপস্থিত ছিলেন নির্বাচন কমিশনার তোফাজ্জল হোসেন ও তৌফিক শাহরিয়ার।
নির্বাচনে দলের উচ্চতর পরিষদ জয়লাভ করে। এরমধ্যে সর্বোচ্চ ভোট পেয়ে প্রথম হয়েছেন আবু হানিফ। এছাড়া নির্বাচিত বাকি সদস্যরা হলেন- শাকিলউজ্জামান, হানিফ খান সজিব, শহিদুল ইসলাম ফাহিম, ফাতেমা তাসনিম, আব্দুজ জাহের, অ্যাডভোকেট নুরে এরশাদ সিদ্দিকী ও জসিম উদ্দিন।
প্রধান নির্বাচন কমিশনার আরিফুল ইসলাম জানিয়েছেন, নির্বাচনে মোট ভোটার ছিল ২১৬ জন। এরমধ্যে এ পদে ভোট পড়েছে ১৫৪টি। আর মোট প্রার্থী ছিলেন ১৮ জন। এরমধ্যে উচ্চতর পরিষদে ভোটার সংখ্যা ১২৬ জন। আর ভোট পড়েছে ৮৩টি। এরমধ্যে মোট ভোট কাস্ট হয়েছে ৮১টি। বাকি দুইটি ভোট বাতিল হয়েছে।
ভোট গণনা শেষে রাত সাড়ে দশটার দিকে তা ঘোষণা করা হয়। সভাপতি পদে মোট তিনজন প্রতিদ্বন্দ্বিতা করেন। এতে নুরুল হক নুর ১৩৫ ভোট পেয়ে নির্বাচিত হন। তার প্রধান প্রতিদ্বন্দ্বী নাজমুল উস সাকিব পান ১৩ ভোট ও সহকারী আহ্বায়ক বায়েজিদ শাহেদ (৯ ভোট)।
সাধারণ সম্পাদক পদে পাঁচজন প্রার্থী ছিলেন। তারা হলেন- যুগ্ম আহ্বায়ক রাশেদ খান (১০৯ ভোট), মাহফুজুর রহমান খান (৩ ভোট), বিপ্লব কুমার পোদ্দার (৪ ভোট), হাসান আল মামুন (৪৩ ভোট) এবং যুগ্ম সদস্য সচিব জিল্লু খান (১ ভোট)। এ পদে ভোট পড়েছে ১৬৩টি।
অন্যদিকে দলের গঠনতন্ত্র অনুযায়ী উচ্চতর পরিষদের আটটি সদস্য পদেও ভোট হয়। আট সদস্য পদের বিপরীতে লড়েন ১৮ জন। তারা হলেন- আবু হানিফ, শাকিল উজ্জামান, হানিফ খান সজিব, ফিরোজ আহমেদ, সরকার নুরে এরশাদ সিদ্দিকী, জামান আহমেদ সিদ্দিকী, শহিদুল ইসলাম ফাহিম, আনিসুর রহমান মুন্না, ওয়াহিদুল রহমান মিল্কিওয়ে, শাফায়েত হোসেন, মঞ্জুর ইসলাম, সাদ্দাম হোসেন, আব্দুস জাহের, আনিসুর রহমান মুন্না, আবদুল্লাহ আল মামুন সুজন, মিনা আল আমিন, জসিম উদ্দিন ও ফাতেমা তাসনীম।
নুর সমর্থিত গণঅধিকার পরিষদের নবনির্বাচিত উচ্চতর পরিষদের সদস্য আবু হানিফ বলেন, দুই পক্ষের মধ্যে সমঝোতার সর্বোচ্চ চেষ্টা করা হয়েছে। হাসান আল মামুনের প্রার্থী হওয়ার বিষয়টি ইতিবাচক ছিল। বাকি যারা কাউন্সিলের বিরোধিতা করেছেন, তারাও দলে ফিরবেন বলে আমরা আশাবাদী। তাদের জন্য দরজা খোলা আছে, গুরুত্বপূর্ণ পদে রাখা হবে।
ড. রেজা কিবরিয়া নেতৃত্বাধীন গণঅধিকার পরিষদের সিনিয়র যুগ্ম আহ্বায়ক ফারুক হাসান বলেন, কিছু দলছুট নেতা দলীয় গঠনতন্ত্র লংঘন করে একটি ব্যাক্তিগত কাউন্সিল করেছে। এর সঙ্গে গণঅধিকার পরিষদের কোনো সম্পর্ক নেই। আমরা শুরু থেকেই নীতির প্রশ্নে আপসহীন। সুতরাং গণঅধিকার পরিষদ চলবে গঠনতন্ত্র অনুযায়ী। যে বা যারা দলীয় গঠনতন্ত্র লংঘন করে এ ধরনের কর্মকান্ডে জড়িত রয়েছে, আমরা তদন্ত সাপেক্ষ তাদের বিরুদ্ধে সাংগঠনিক ব্যবস্থা নিবো।
ফারুক হাসান আরও বলেন, দলের আহ্বায়ক ড. রেজা কিবরিয়া এই মুহূর্তে বিদেশে রয়েছেন। আমেরিকার একটি হাসপাতালে তিনি ভর্তি রয়েছেন। আগামী সপ্তাহে দেশে আসবেন। এরপরই আমাদের কেন্দ্রীয় কমিটির বৈঠক ডাকা হবে। সেখানে থেকেই কাউন্সিলের ঘোষণা আসতে পারে।
২০২১ সালে গণঅধিকার পরিষদ প্রতিষ্ঠা হয়। প্রতিষ্ঠার পর থেকেই আহ্বায়ক কমিটি দিয়ে চলেছে দলীয় কার্যক্রম। সোমবার কাউন্সিলের মধ্য দিয়ে দলটি প্রথম নেতৃত্ব নির্বাচন করতে পারলেও পূর্ণাঙ্গ কমিটি ঘোষণার আগেই দলের ভেতর বইছে ভাঙনের স্রোত।