Dhaka শনিবার, ০৮ নভেম্বর ২০২৫, ২৪ কার্তিক ১৪৩২ বঙ্গাব্দ

গণভোট সংবিধানে নেই, কথায় কথায় রাস্তায় নামবেন না : আমীর খসরু

নিজস্ব প্রতিবেদক : 

বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য আমীর খসরু মাহমুদ চৌধুরী বলেন, বর্তমান সংবিধানের পরিপ্রেক্ষিতে অন্তর্বর্তীকালীন সরকার গঠন হয়েছে, তারা এই সংবিধানের অধীনে শপথ নিয়েছেন। এই সংবিধানে গণভোট নিয়ে কিছু নেই। আগামীতে নির্বাচনে পাস করে সংসদে গিয়ে সংবিধানে গণভোট যুক্ত করে এরপর গণভোটে আসতে পারে। এসময় গণভোটের দাবি নিয়ে কথায় কথায় রাস্তায় না নামার জন্য রাজনৈতিক দলগুলোর প্রতি আহ্বান জানান তিনি।

শনিবার (৮ নভেম্বর) দুপুরে রাজধানীর হোটেল ইন্টারকন্টিনেন্টালে ‘নির্বাচনী ইশতেহারে প্রযুক্তির ব্যবহার’ শীর্ষক সেমিনারে তিনি এ কথা বলেন।

আমীর খসরু বলেন, কথায় কথায় আপনি দাবি নিয়ে রাস্তায় যাবেন, সেটা হবে না। আপনাদের দাবি নিয়ে মাঠে যাবেন, এর বিপরীতে যদি দেশের সর্বোচ্চ রাজনৈতিক দল কর্মসূচি দেয় তাহলে সংঘর্ষ বাঁধবে না?

তিনি বলেন, দীর্ঘ আলোচনার পর যে বিষয়গুলোতে ঐকমত্য হয়েছে সেটিকে সম্মান করতে হবে। আলোচনা হতে হবে বাস্তবায়নের ক্ষেত্রেও। আর যেগুলোতে ঐকমত্য হয়নি তা জনগণ ঠিক করবে।

আমীর খসরু বলেন, সবার প্রতিবাদের অধিকার আছে। কিন্তু মানুষ সাংঘর্ষিক রাজনীতি দেখতে চায় না। কথায় কথায় রাস্তা যান, বৃহত্তর দল যদি রাস্তায় নামে, সংঘর্ষ হবে না? ৩১ দফার সব কিছু সনদে আসেনি। কিন্তু তা নিয়ে বিএনপি রাস্তায় যাচ্ছে না। জনগণের কাছে যাব। জনগণ ম্যান্ডেট দিলে সেসব বাস্তবায়ন করবো। এ সরকার সংবিধান মেনে হয়েছে। সংবিধানে কিন্তু গণভোট নেই। সংসদে যেয়ে এটি পাশ করতে হবে।

তিনি বলেন, ঐক্যমতের বাইরে যাওয়ার সুযোগ নেই। চ্যাপ্টার ক্লোজড। আপনার চিন্তাভাবনা জনগণের ওপর চাপিয়ে দেওয়ার চেষ্টা করবেন না। আপনি ক্ষমতায় আসেন, এরপরে আপনি পরিবর্তন করুন।

স্থায়ী কমিটির এ সদস্য বলেন, নির্বাচনের আগে ইশতেহার আসাটা গুরুত্বপূর্ণ নয়। নির্বাচনের আগে তৎপরতা থাকে ভোট নিয়ে। মানুষ ইশতেহার দেখে ভোট দেয়, আমার জানা নেই! গণতন্ত্রের মূল বিষয় আলোচনা অব্যাহত রাখতে হবে। জনগণের কথা সব সময় বলতে হবে। ৮ বছর আগে ভিশন ২০৩০ দিয়েছিলেন বেগম খালেদা জিয়া। পরবর্তীকালে অনেক পরিবর্তন মাথায় রেখে ২৭ দফা এবং পরবর্তীকালে ৩১ দফা সংস্কার প্রস্তাবনা দিয়েছে বিএনপি। সরাসরি সাধারণ মানুষের প্রস্তাবনা নিয়ে এটি তৈরি করা হয়েছে।

বিএনপির এ নেতা বলেন, দীর্ঘ আলোচনার পর ঐকমত্যের মাধ্যমে সনদ সই হয়েছে। এর বাইরে ভিন্ন মতের প্রতি সম্মান থাকতে হবে। ঐকমত্যের বাইরে যেয়ে নতুন ইস্যু সৃষ্টি করলে আপনি ঐকমত্যকে সম্মান করছেন না।

আমীর খসরু বলেন, কিছু রাজনৈতিক দল নিজেরা মালিক হতে চাচ্ছে। জোর করে দাবি আদায় করতে চায় তারা। শেখ হাসিনার শাসনের কারণে অনেকের মধ্যে স্বৈরাচারী মনোভাব চলে এসেছে। কিন্তু ঐকমত্যের মধ্য দিয়ে সনদ সই হয়েছে। বাস্তবায়নও ঐকমত্যের মাধ্যমে হতে হবে। জনগণের ম্যান্ডেট নিয়ে সংসদে আসেন, নিজেদের দাবি অন্য দলের ওপর চাপিয়ে দেয়ার চেষ্টা করবেন না।

তিনি বলেন, যারা নির্বাচন বিলম্বিত করতে চায়, বাধাগ্রস্ত করতে চায়, তারা কি এই ধরনের ঘটনা ঘটাতে চান? নানা ঘটনা ঘটিয়ে নির্বাচন বিলম্বিত করার চেষ্টা হচ্ছে কি না, এমন প্রশ্ন আছে।

নতুন প্রজন্মের কর্মসংস্থান নিয়ে খসরু বলেন, ১৮ মাসে এক কোটি মানুষের চাকরির ব্যবস্থা করবে বিএনপি। চাকরি কীভাবে দেব, তার সব প্রস্তুতি শেষ করেছি। নতুন ইকোনমিক মডেলে যেতে হবে।

তিনি বলেন, চট্টগ্রামে একটা হত্যার ঘটনা ঘটেছে। সেখানে একটি দলের ছাত্র সংগঠনের সাবেক নেতাকর্মীদের অন্তর্কোন্দলের মাধ্যমে ঘটেছে। যারা নির্বাচন পেছানোর চেষ্টা করছে তারা ঘটিয়েছে কি-না এই ঘটনা সেটা আমাদের সন্দেহ।

বিএনপির এই নেতা বলেন, বিএনপির সময়ে কখনো শেয়ারবাজারে ধ্বস নামেনি। অর্থনীতি চাঙ্গা ছিলো। আমরা প্রাইভেট সেক্টরকে গুরুত্ব দেব। বাড়িতে বসেই যেন লাইসেন্স পায়, আমরা সেটা করবো। যত বেশি জনগণকে ক্ষমতায়ন করতে পারবেন তত বেশি দেশের উন্নয়ন হবে। দলের ক্ষমতায়ন করলে জনগণ সুবিধা পাবে না। প্রাথমিক স্বাস্থ্যসেবা আমরা প্রত্যেকটি জনগণকে দেব।

আবহাওয়া

গণভোট সংবিধানে নেই, কথায় কথায় রাস্তায় নামবেন না : আমীর খসরু

প্রকাশের সময় : ০২:৩২:৪৫ অপরাহ্ন, শনিবার, ৮ নভেম্বর ২০২৫

নিজস্ব প্রতিবেদক : 

বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য আমীর খসরু মাহমুদ চৌধুরী বলেন, বর্তমান সংবিধানের পরিপ্রেক্ষিতে অন্তর্বর্তীকালীন সরকার গঠন হয়েছে, তারা এই সংবিধানের অধীনে শপথ নিয়েছেন। এই সংবিধানে গণভোট নিয়ে কিছু নেই। আগামীতে নির্বাচনে পাস করে সংসদে গিয়ে সংবিধানে গণভোট যুক্ত করে এরপর গণভোটে আসতে পারে। এসময় গণভোটের দাবি নিয়ে কথায় কথায় রাস্তায় না নামার জন্য রাজনৈতিক দলগুলোর প্রতি আহ্বান জানান তিনি।

শনিবার (৮ নভেম্বর) দুপুরে রাজধানীর হোটেল ইন্টারকন্টিনেন্টালে ‘নির্বাচনী ইশতেহারে প্রযুক্তির ব্যবহার’ শীর্ষক সেমিনারে তিনি এ কথা বলেন।

আমীর খসরু বলেন, কথায় কথায় আপনি দাবি নিয়ে রাস্তায় যাবেন, সেটা হবে না। আপনাদের দাবি নিয়ে মাঠে যাবেন, এর বিপরীতে যদি দেশের সর্বোচ্চ রাজনৈতিক দল কর্মসূচি দেয় তাহলে সংঘর্ষ বাঁধবে না?

তিনি বলেন, দীর্ঘ আলোচনার পর যে বিষয়গুলোতে ঐকমত্য হয়েছে সেটিকে সম্মান করতে হবে। আলোচনা হতে হবে বাস্তবায়নের ক্ষেত্রেও। আর যেগুলোতে ঐকমত্য হয়নি তা জনগণ ঠিক করবে।

আমীর খসরু বলেন, সবার প্রতিবাদের অধিকার আছে। কিন্তু মানুষ সাংঘর্ষিক রাজনীতি দেখতে চায় না। কথায় কথায় রাস্তা যান, বৃহত্তর দল যদি রাস্তায় নামে, সংঘর্ষ হবে না? ৩১ দফার সব কিছু সনদে আসেনি। কিন্তু তা নিয়ে বিএনপি রাস্তায় যাচ্ছে না। জনগণের কাছে যাব। জনগণ ম্যান্ডেট দিলে সেসব বাস্তবায়ন করবো। এ সরকার সংবিধান মেনে হয়েছে। সংবিধানে কিন্তু গণভোট নেই। সংসদে যেয়ে এটি পাশ করতে হবে।

তিনি বলেন, ঐক্যমতের বাইরে যাওয়ার সুযোগ নেই। চ্যাপ্টার ক্লোজড। আপনার চিন্তাভাবনা জনগণের ওপর চাপিয়ে দেওয়ার চেষ্টা করবেন না। আপনি ক্ষমতায় আসেন, এরপরে আপনি পরিবর্তন করুন।

স্থায়ী কমিটির এ সদস্য বলেন, নির্বাচনের আগে ইশতেহার আসাটা গুরুত্বপূর্ণ নয়। নির্বাচনের আগে তৎপরতা থাকে ভোট নিয়ে। মানুষ ইশতেহার দেখে ভোট দেয়, আমার জানা নেই! গণতন্ত্রের মূল বিষয় আলোচনা অব্যাহত রাখতে হবে। জনগণের কথা সব সময় বলতে হবে। ৮ বছর আগে ভিশন ২০৩০ দিয়েছিলেন বেগম খালেদা জিয়া। পরবর্তীকালে অনেক পরিবর্তন মাথায় রেখে ২৭ দফা এবং পরবর্তীকালে ৩১ দফা সংস্কার প্রস্তাবনা দিয়েছে বিএনপি। সরাসরি সাধারণ মানুষের প্রস্তাবনা নিয়ে এটি তৈরি করা হয়েছে।

বিএনপির এ নেতা বলেন, দীর্ঘ আলোচনার পর ঐকমত্যের মাধ্যমে সনদ সই হয়েছে। এর বাইরে ভিন্ন মতের প্রতি সম্মান থাকতে হবে। ঐকমত্যের বাইরে যেয়ে নতুন ইস্যু সৃষ্টি করলে আপনি ঐকমত্যকে সম্মান করছেন না।

আমীর খসরু বলেন, কিছু রাজনৈতিক দল নিজেরা মালিক হতে চাচ্ছে। জোর করে দাবি আদায় করতে চায় তারা। শেখ হাসিনার শাসনের কারণে অনেকের মধ্যে স্বৈরাচারী মনোভাব চলে এসেছে। কিন্তু ঐকমত্যের মধ্য দিয়ে সনদ সই হয়েছে। বাস্তবায়নও ঐকমত্যের মাধ্যমে হতে হবে। জনগণের ম্যান্ডেট নিয়ে সংসদে আসেন, নিজেদের দাবি অন্য দলের ওপর চাপিয়ে দেয়ার চেষ্টা করবেন না।

তিনি বলেন, যারা নির্বাচন বিলম্বিত করতে চায়, বাধাগ্রস্ত করতে চায়, তারা কি এই ধরনের ঘটনা ঘটাতে চান? নানা ঘটনা ঘটিয়ে নির্বাচন বিলম্বিত করার চেষ্টা হচ্ছে কি না, এমন প্রশ্ন আছে।

নতুন প্রজন্মের কর্মসংস্থান নিয়ে খসরু বলেন, ১৮ মাসে এক কোটি মানুষের চাকরির ব্যবস্থা করবে বিএনপি। চাকরি কীভাবে দেব, তার সব প্রস্তুতি শেষ করেছি। নতুন ইকোনমিক মডেলে যেতে হবে।

তিনি বলেন, চট্টগ্রামে একটা হত্যার ঘটনা ঘটেছে। সেখানে একটি দলের ছাত্র সংগঠনের সাবেক নেতাকর্মীদের অন্তর্কোন্দলের মাধ্যমে ঘটেছে। যারা নির্বাচন পেছানোর চেষ্টা করছে তারা ঘটিয়েছে কি-না এই ঘটনা সেটা আমাদের সন্দেহ।

বিএনপির এই নেতা বলেন, বিএনপির সময়ে কখনো শেয়ারবাজারে ধ্বস নামেনি। অর্থনীতি চাঙ্গা ছিলো। আমরা প্রাইভেট সেক্টরকে গুরুত্ব দেব। বাড়িতে বসেই যেন লাইসেন্স পায়, আমরা সেটা করবো। যত বেশি জনগণকে ক্ষমতায়ন করতে পারবেন তত বেশি দেশের উন্নয়ন হবে। দলের ক্ষমতায়ন করলে জনগণ সুবিধা পাবে না। প্রাথমিক স্বাস্থ্যসেবা আমরা প্রত্যেকটি জনগণকে দেব।