দিনাজপুর জেলা প্রতিনিধি :
গণতান্ত্রিক যুদ্ধ শেষ হলেও ঐক্যের যুদ্ধে ব্যর্থতা রয়েছে বলে মন্তব্য করে বিএনপির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর বলেন, সবাইকে সংকীর্ণতার ঊর্ধ্বে উঠে একটি সত্য, সুন্দর, সুখী, সমৃদ্ধ, প্রেমময় বাংলাদেশ নির্মাণ করতে হবে। আমরা গণতন্ত্রের কথা বললেও গণতন্ত্রকে চর্চা করি না। এখানে পর পর গণতন্ত্রকে হত্যা করার চেষ্টা করা হয়েছে। গণতান্ত্রিক প্রতিষ্ঠান গড়ে ওঠেনি।
শুক্রবার (৩ জানুয়ারি) দিনাজপুর সরকারি কলেজের অর্থনীতি বিভাগের ৫০ বছর পূর্তি উপলক্ষে আয়োজিত সুবর্ণ জয়ন্তী ও গুণিজন সম্মাননা অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এসব কথা বলেন।
তিনি বলেন, আমরা রাজনৈতিক দলগুলো পরস্পর পরস্পরের বিরুদ্ধে বিরোধে লিপ্ত হয়েছি। আমরা গণতন্ত্রের কথা বলি কিন্তু গণতন্ত্র চর্চা করি না। নেতিবাচক চিন্তা করলে হবে না। বাংলাদেশে গণতান্ত্রিক প্রতিষ্ঠান গড়ে উঠেনি বরং দিনের পর দিন এখানে গণতন্ত্র হত্যা করা হয়েছে। গণতান্ত্রিক প্রতিষ্ঠান গড়ে তুলতে দেয়া হয়নি।।
আত্মসমালোচনা করে তিনি বলেন, রাজনৈতিক দলগুলো পরস্পর পরস্পরের সঙ্গে বিরোধে লিপ্ত হয়েছি। কিন্তু সহনশীলতার মধ্যদিয়ে গণতন্ত্রকে চর্চা করে যদি এগিয়ে যেতে পারি, তাহলে আমরা গণতন্ত্রকে লাভ করতে পারবো, অধিকারকে অর্জন করতে পারবো।
মির্জা ফখরুল বলেন, আমাদের ব্যর্থতা আমরা ৫২-৫৩ বছরেও বাংলাদেশকে একটি সুখী, শান্তিময়, প্রেমময়, ভালোবাসাময় এক দেশ গড়তে পারলাম না। আমরা রাজনীতি নিয়ে সংকীর্ণতায় ভুগি, আমরা নৈতিকতার সর্বনিম্ন পর্যায়ে চলে গেছি। আমরা আবার একটি স্বপ্ন দেখতে শুরু করেছি।
বিএনপির মহাসচিব বলেন, ফ্যাসিবাদ রাষ্ট্রের সমস্ত ক্ষমতা দখল করে সেটাকে নিরঙ্কুশ করতে চায়। তারপর দেশে ভয়ভীতির আরেক সিরিয়াস ফোবিয়া তৈরি করে যাতে করে কেউ কোনো কথা না বলতে পারে। আল্লাহর অশেষ রহমতে আমরা সেই জায়গা থেকে বের হয়ে আসতে পেরেছি। সেই জায়গা থেকে একটি নতুন সুযোগ সৃষ্টি হয়েছে। আমরা নতুন করে বাংলাদেশকে একটি গণতান্ত্রিক রাষ্ট্রে পরিণত করব।
আক্ষেপ করে মির্জা ফখরুল বলেন, কি করুন সময় গেছে, আমরা ভোট দিতে পারিনি। ১৫ বছরে প্রজন্মে পর প্রজন্ম জানে না ভোট কি। তারা ভোট দিতে পারেনি। পরপর ৩টি টার্ম ফ্যাসিবাদ ক্ষমতা দখল করে দেশের মধ্যে ভীতি তৈরি করে মানুষকে নির্যাতন নিপীড়ন চালায়। লুট করে দেশের সম্পদ। গত ১৫ বছরে ফ্যাসিস্টরা ২৮০ বিলিয়ন ডলার পাচার করেছে।
স্মৃতিচারণ করে তিনি বলেন, দিনাজপুর সরকারি কলেজ একটি গৌরবময় প্রতিষ্ঠান। এখান থেকে বহু শিক্ষক, অধ্যাপক, প্রকৌশলী, চিকিৎসক, সফল ব্যবসায়ী, নেতাকর্মীরা বের হয়ে এসেছি। বের হয়ে এসে এখন সুযোগ এসেছে দেশকে নতুনভাবে গড়ে তোলার।
সরকারি কলেজের অর্থনীতি বিভাগের প্রধান অধ্যাপক জাহেদা পারভীনের সভাপতিত্বে কলেজের অধ্যক্ষ অধ্যাপক এ কে এম আল আব্দুল্লাহ, জেলা বিএনপির সভাপতি মোফাজ্জল হোসেন দুলাল, ঠাকুরগাঁও সরকারি কলেজের অবসরপ্রাপ্ত অধ্যক্ষ আ ন ম গোলাম রব্বানী, যশোর এমএম কলেজের সাবেক অধ্যক্ষ তসলিম উদ্দিন, দিনাজপুর কেবিএম কলেজের সাবেক অধ্যক্ষ আমিনুল হকসহ অন্যরা উপস্থিত ছিলেন।