নিজস্ব প্রতিবেদক :
বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য মেজর (অব.) হাফিজ উদ্দিন আহমেদ বলেন, গণতন্ত্র বিরোধীদের ষড়যন্ত্র অব্যাহত রয়েছে। সব বাধা ও ষড়যন্ত্র দূর করতে ও তাদের প্রতিহত করতে নির্বাচনের বিকল্প নেই। সরকার সর্বশক্তি প্রয়োগ করে নির্বাচনের ব্যবস্থা করবে বলে আশা করি।
বৃহস্পতিবার (৬ ফেব্রুয়ারি) জাতীয় প্রেস ক্লাবের আবদুস সালাম হলে স্বাধীনতা ফোরাম কর্তৃক ‘বর্তমান রাজনৈতিক প্রেক্ষাপটে গণতন্ত্রের ভবিষ্যৎ’ শীর্ষক আলোচনা সভায় তিনি এসব কথা বলেন।
মেজর হাফিজ বলেন, শেখ হাসিনা দেশের সব বিশৃঙ্খলা উসকে দিচ্ছেন। গণতন্ত্রকে ধ্বংস করতে ও আগামী দিনের গণতন্ত্রের যাত্রার পথে বাধা হয়ে দাঁড়াতে পারে এ ধরনের কর্মকাণ্ড।
বিএনপির এই নেতা বলেন, হাসিনার পালনের পর বুদ্ধিজীবীরা নতুন নতুন মত দিচ্ছেন। নানা রকম প্রকলেমেশন, ডিক্লেমেশন শোনা যাচ্ছে। এই সরকারের প্রধান কাজ জনগণের সরকারের কাছে ক্ষমতা হস্তান্তর। কিন্তু মনে হচ্ছে তারা তাদের দায়িত্ব কি তা জানে না।
তিনি বলেন, ‘কোনো বুদ্ধিজীবী, কারো কোনো গুরু বা কোনো সৌখিন রাজনীতিবিদ বা বিদেশ থেকে আগত কোনো বুদ্ধিজীবীর পরামর্শে বাংলাদেশের সংবিধান নতুন করে লেখা বা সংশোধন করা যাবে না। সংবিধান সংযোজন বা সংশোধন একমাত্র অধিকার রাখে স্বাধীন পার্লামেন্ট। নিরপেক্ষভাবে একটি পার্লামেন্ট। যে সংস্কারের কথা বলা হচ্ছে, আমরা এখনো তা পুরোপুরি দেখিনি, আমরা এই সংস্কারের প্রস্তাবগুলো নিয়ে বিএনপি সর্বোচ্চ পর্যায়ে মনোভাব জানাবে।’
শেখ মুজিবুর রহমানের বাড়িসহ সারাদেশে গতকাল রাত থেকে চলা ঘটনার বিষয়ে হাফিজ উদ্দিন আহমেদ বলেন, ‘গতকাল যে ঘটনা ঘটেছে সেটি এখনো চলমান। সেটি এখনো শেষ হয়নি। এটি কারা করেছেন এই তথ্য আমাদের কাছে নেই। এতে সরকারের কি ভূমিকা ছিল সে তথ্যও আমাদের কাছে নেই। সুতরাং আর অল্প কিছু সময় আমরা অপেক্ষা করব। আজকের দিনের মধ্যেই আশা করি সব কিছু পরিষ্কার হবে। কারা এই ঘটনা ঘটিয়েছে, কারা এর জন্য দায়ী, তখন সকল পূর্ণাঙ্গ তথ্য পেলে আমরা এই সম্পর্কে বিএনপির পক্ষ থেকে মনোভাব মিডিয়ার সামনে জনগণের সামনে প্রকাশিত করব। অপূর্ণ তথ্য নিয়ে মন্তব্য করার সুযোগ নেই। তবে আমরা আশা করি, এগুলো গণতন্ত্রকে ধ্বংস করার জন্য হয়তো, আগামীদিনের গণতন্ত্রের পথে বাধা হয়ে দাঁড়াতে পারে এই জন্য কেউ কেউ হয়তো বিশৃঙ্খলা সৃষ্টি করার চেষ্টা করতে পারেন। বিশেষ করে এর মধ্যে প্রতিবেশী রাষ্ট্রের কোনো হস্তক্ষেপ আছে কি না সেটিও আমরা জানার চেষ্টা করব।
তিনি বলেন, ‘কুখ্যাত ছাত্রলীগ এবং যুবলীগ বিএনপি ও ছাত্রদের আন্দোলনকে দমন করার জন্য পেশী শক্তির বারংবার ব্যবহার করেছেন। আমাদের স্মরণ শক্তি অনেক কম, অনেকে ভুলে গেছেন, গাজীপুরের বিভিন্ন এলাকায়, টঙ্গীর পাশেই কিভাবে ১৫ জন সাধারণ মানুষ হত্যা করে ভ্যানে শুইয়ে রেখে আগুন লাগিয়ে পুড়িয়ে দেয়া হয়েছে। কল্পনা করা যায়? তারা আপনারা আমার ভাই, সন্তান। রাজপথে ন্যায্য দাবি করতে গিয়ে রাষ্ট্রীয় সাহায্যে জ্বালিয়ে দেয়া আমরা প্রত্যক্ষ করেছি। আমরা এর অবসান চাই। অবসান হতে পারে একমাত্র গণতন্ত্রের মাধ্যমে।’
শেখ হাসিনা দেশের সব বিশৃঙ্খলা উসকে দিচ্ছেন উল্লেখ করে তিনি আরো বলেন, গণতন্ত্রকে ধ্বংস করতে ও আগামী দিনের গণতন্ত্রের যাত্রার পথে বাধা হয়ে দাঁড়াতে পারে এ ধরনের কর্মকাণ্ড। ধানমন্ডি ৩২-এর ভবন ভাঙার ঘটনায় ভারতের ইন্ধন ও হস্তক্ষেপ থাকতে পারে।
মেজর হাফিজ বলেন, জুলাই বিপ্লবে ব্যানার ফেস্টুন নিয়ে আন্দোলন করেনি বিএনপি। পরিচিত মুখের কেউ সামনে যায়নি। যারা জুলাই বিপ্লবে আন্দোলনে করেছে বিএনপির পক্ষ থেকে তারা অপরিচিত মুখের কর্মী। তাই অনেকে বলেন, বিএনপি আন্দোলন করেনি।
স্বাধীনতা ফোরামের সভাপতি আবু নাসের মুহাম্মদ রহমতুল্লাহর সভাপতিত্বে এসময় আরো উপস্থিত ছিলেন বিএনপির চেয়ারপারসনের উপদেষ্টা হাবিবুর রহমান হাবিব, অ্যাডভোকেট সৈয়দ মোয়াজ্জেম হোসেন আলাল, যুগ্ম মহাসচিব এডভোকেট আব্দুস সালাম আজাদ, জাতীয়তাবাদী তাঁতী দলের যুগ্ম আহ্বায়ক মনিরুজ্জামান প্রমুখ।