নিজস্ব প্রতিবেদক :
গণঅভ্যুত্থানকে নস্যাৎ করার যড়যন্ত্র রুখে দিতে সবাইকে ঐক্যবদ্ধ হওয়ার আহ্বান জানিয়েছেন অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক ড. মুহাম্মদ ইউনূস।
বুধবার (৪ ডিসেম্বর) বিকেলে বিএনপি, জামায়াতসহ বিভিন্ন রাজনৈতিক দলের নেতাদের সঙ্গে বৈঠকে বক্তৃতায় প্রধান উপদেষ্টা এ আহ্বান জানান। দেশের বর্তমান পরিস্থিতিতে জাতীয় ঐক্য গঠনের লক্ষ্যে এই বৈঠক বসেন প্রধান উপদেষ্টা।
তিনি বলেন, ছাত্র-জনতার অভ্যুত্থান যাদের পছন্দ হয়নি, তারা এটিকে মুছে দিয়ে আগের অবস্থায় ফেরানোর অপচেষ্টা চালাচ্ছে। তাদের এই অবস্থান মিথ্যা প্রমাণ করার জন্য এবং বাস্তবকে প্রতিষ্ঠিত করতে আমাদের সবাইকে এক জোট হতে হবে।
ড. মুহাম্মদ ইউনূস বলেন, ছাত্র-জনতার অভ্যুত্থানের মধ্য দিয়ে যে স্বাধীনতা আমরা পেয়েছি, তা হয়তো অনেকের পছন্দ হচ্ছে না। নানাভাবে এটাকে রুখে দেওয়ার চেষ্টা হচ্ছে। ৫ আগস্টের পর বাস্তবতার দিক থেকে আপনারা এগুলো দেখেছেন। আমরা নতুন যে বাংলাদেশ গড়ে তোলার চেষ্টা করছি, সেটাকে ধামাচাপা দিয়ে আরেক কাহিনি তারা রচনা করার চেষ্টা করছে।
তিনি বলেন, বিজয়ের অভ্যুত্থান যাদের পছন্দ হয়নি তারা এটা মুছে দিতে চায়। আড়াল করতে চায়। এটাকে নতুন ভঙ্গিতে দুনিয়ার সামনে পেশ করতে চায়। আমরা যে মুক্ত স্বাধীন বাংলাদেশ তৈরি করলাম অভ্যুত্থানের মাধ্যমে, সেটাকে তারা মুছে দিতে চায়। তার আগের ব্যবস্থায় ফিরে যেতে চায়। মুখে বলছে না। কিন্তু ভঙ্গি হলো যে, আগেরটা ভালো ছিল। এর আগেরটা কীভাবে তারা নিয়ে আসবে, সেই চেষ্টা চালাচ্ছে। সারাক্ষণ একটা রূপরেখা তারা দিয়ে যাচ্ছে। এটা যে এক দেশের মধ্যে সীমাবদ্ধ রয়েছে তা নয়, বিশেষ বিশেষ বড় বড় দেশের মধ্যে এটা ছড়িয়ে গেছে।
প্রধান উপদেষ্টা বলেন, ছাত্র-জনতার অভ্যুত্থানের মধ্য দিয়ে যে স্বাধীনতা আমরা পেয়েছি, তা হয়তো অনেকের পছন্দ হচ্ছে না। নানাভাবে এটাকে রুখে দেওয়ার চেষ্টা হচ্ছে। ৫ আগস্টের পর বাস্তবতার দিক থেকে আপনারা এগুলো দেখেছেন। আমরা নতুন যে বাংলাদেশ গড়ে তোলার চেষ্টা করছি, সেটাকে ধামাচাপা দিয়ে আরেক কাহিনি তারা রচনা করার চেষ্টা করছে। সারাক্ষণ একটা রূপরেখা তারা দিয়ে যাচ্ছে। এটা যে এক দেশের মধ্যে সীমাবদ্ধ রয়েছে তা নয়, বিশেষ বিশেষ বড় বড় দেশের মধ্যে এটা ছড়িয়ে গেছে।
ড. ইউনূস বলেন, ‘বিজয়ের অভ্যুত্থান যাদের পছন্দ হয়নি তারা এটা মুছে দিতে চায়। আড়াল করতে চায়। এটাকে নতুন ভঙ্গিতে দুনিয়ার সামনে পেশ করতে চায়। তাদের মতে, ‘আমাদের এখানে ভয়ঙ্কর একটা কাণ্ড ঘটে গিয়েছে, এটা থেকে আমাদের রক্ষা করতে হবে’। তাদের এই অবস্থান মিথ্যা প্রমাণ করার জন্য এবং বাস্তবকে প্রতিষ্ঠিত করতে আমাদের সবাইকে এক জোট হতে হবে। কারণ এখানে কোনো বিশেষ রাজনৈতিক মতবাদের বিষয় নয়, জাতি হিসেবে আমাদের অস্তিত্বের প্রশ্ন। আমরা যে মুক্ত স্বাধীন বাংলাদেশ তৈরি করলাম অভ্যুত্থানের মাধ্যমে, সেটাকে তারা মুছে দিতে চায়। তার আগের ব্যবস্থায় ফিরে যেতে চায়। মুখে বলছে না। কিন্তু ভঙ্গি হলো যে, আগেরটা ভালো ছিল। এর আগেরটা কীভাবে তারা নিয়ে আসবে, সেই চেষ্টা চালাচ্ছে।’
‘‘তাদের শক্তি এত বেশি, অর্থের শক্তি, আয়োজনের শক্তি, মানুষকে প্রলুব্ধ করতে পারছে। যে কল্পকাহিনি তারা তৈরি করছে, সেটাতে অনেকে সংশয়ে পড়ছে’’, যোগ করেন প্রধান উপদেষ্টা।
প্রধান উপদেষ্টা বলেন, অক্টোবরে সারাদেশে শান্তিপূর্ণভাবে দুর্গাপূজা পালন হয়েছে। আমরাও পূজার আনন্দে শরিক হয়েছিলাম। কোথাও কোনো ধরনের বিশৃঙ্খলা হয়নি। সেটাও অনেকের পছন্দ হয়নি। দেশকে নতুন করে অস্থির করার চেষ্টা চলছে।
তিনি বলেন, যে বাংলাদেশ আমরা গড়ে তোলার চেষ্টা করছি, সেটাকে ধামাচাপা দিয়ে আরেক বাংলাদেশের কাহিনী রচনা করে যাচ্ছে। সারাক্ষণ নানা রূপে তারা এটা করে যাচ্ছে। এটা যে এখন এক দেশের মধ্যে আছে তা নয়, বিশেষ বিশেষ বড় দেশের মধ্যে ছড়িয়ে গেছে।’
আমাদের এই অভ্যুত্থান যাদের পছন্দ হয়নি, তারা এটাকে মুছে দিতে চায়, এটাকে নতুন ভঙ্গীতে দুনিয়ার সামনে পেশ করতে চায়। আমাদের এখানে নাকি ভয়ঙ্কর কাণ্ড ঘটছে, তা থেকে বাংলাদেশকে রক্ষা করতে হবে। রক্ষার জন্য তারা এগিয়ে আসতে চায়। এখন সেগুলোকে মিথ্যা প্রমাণ করা বা বাস্তবতাকে প্রতিষ্ঠিত করার জন্য আমাদের সবাইকে একজোট হতে হবে। এটা কোনো বিশেষ রাজনৈতিক মতবাদের বিষয় না। জাতি হিসেবে আমাদের অস্তিত্বের বিষয়,’ যোগ করেন তিনি।
বাংলাদেশ নিয়ে সম্প্রতি ভারতের বিভিন্ন প্রোপাগান্ডার ইঙ্গিত করে প্রধান উপদেষ্টা বলেন, আমরা যে মুক্ত স্বাধীন বাংলাদেশ তৈরি করলাম, তারা এটাকে মুছে দিয়ে আগেরটায় ফিরে যেতে চায়। মুখে বলছে না যে আগেরটা, কিন্তু ভঙ্গী হলো আগেরটা ভালো ছিল। তাদের শক্তি এত বেশি যে তারা মানুষকে এর ভেতরে ভেড়াতে পারছে। তাদের কল্পকাহিনীর কারণে মানুষ সন্দেহ প্রকাশ করছে যে এটা কী ধরনের সরকার হলো।
ড. মুহাম্মদ ইউনূস বলেন, আমরা বারবার তাদের বলছি যে আপনারা আসেন এখানে, দেখেন, এখানে কোনো বাঁধা নেই। কিন্তু না, তারা ওখান থেকেই কল্পকাহিনী বানিয়ে যাচ্ছে। এখন আমাদের সাড়া দুনিয়াকে বলতে হবে যে, আমরা এক, আমরা যেটা পেয়েছি সেটা একজোট হয়ে পেয়েছি, কোনো মতবাদের কারণে পাইনি, ধাক্কাধাক্কি করে পাইনি, যারা আমাদের ওপর চেপে ছিল, তাদের উপড়ে ফেলেছি। এটাই সবার সামনে তুলে ধরতে হবে, সবাই মিলে যেন এটা করতে পারি। আমাদের নতুন বাংলাদেশের যাত্রাপথে এটা মস্ত বড় একটা বিষয় হয়ে দাঁড়িয়েছে, অস্তিত্বের বিষয় হয়ে দাঁড়িয়েছে।
রাজনৈতিক দলের নেতাদের উদ্দেশে ড. ইউনূস বলেন, আপনারা সবাই ভালো বোঝেন। সবাই মিলে আমরা একজোট হয়ে যেন কাজটা করতে পারি, সবাই একত্র হয়ে বললে একটা সমবেত শক্তি তৈরি হয়, এই সমবেত শক্তির জন্যই আপনাদের সঙ্গে বসা।
বিকেল ৪টায় ফরেন সার্ভিস একাডেমি রাজনৈতিক দলগুলোর সঙ্গে প্রধান উপদেষ্টার বৈঠক শুরু হয়।
এতে বিএনপির স্থায়ী কমিটি সদস্য ড. খন্দকার মোশাররফ হোসেনের নেতৃত্বে স্থায়ী কমিটির সদস্য ড. আব্দুল মঈন খান, নজরুল ইসলাম খান, আমীর খসরু মাহমুদ চৌধুরী, অধ্যাপক ডা. এ জেড এম জাহিদ হোসেন অংশ নেন। জামায়াতে ইসলামীর পক্ষে অংশ নেন দলের আমির ডা. শফিকুর রহমান, সেক্রেটারি জেনারেল অধ্যাপক মিয়া গোলাম পরওয়ার, নায়েবে আমির অধ্যাপক মুজিবুর রহমান, সহকারী সেক্রেটারি জেনারেল মাওলানা আব্দুল হালিম।
এছাড়া নাগরিক ঐক্যের সভাপতি মাহমুদুর রহমান মান্না, বিপ্লবী ওয়ার্কার্স পার্টির সাইফুল হক, গণসংহতি আন্দোলনের জেনায়েদ সাকি, গণঅধিকার পরিষদের নূরুল হক নূর ও রাশেদ খান, এবি পার্টির মজিবুর রহমান মঞ্জু ও আসাদুজ্জামান ফুয়াদ, ভাসানী অনুসারী পরিষদের রফিকুল ইসলাম বাবলু, বাংলাদেশ খেলাফত মসলিসের মামুনুল হক, খেলাফত মজলিসের আবদুল বাসিত আজাদ ও জাহাঙ্গীর হোসেন, জমিয়তে ওলামায়ে ইসলামের মঞ্জুরুল ইসলাম আফেন্দি, এনপিপি ড. ফরিদুজ্জামান ফরহাদ প্রমুখ বৈঠকে অংশ নেন।