Dhaka বুধবার, ২৭ অগাস্ট ২০২৫, ১২ ভাদ্র ১৪৩২ বঙ্গাব্দ

গণঅভ্যুত্থানে প্রবাসীরা বড় ভূমিকা পালন করেছেন : প্রধান উপদেষ্টা

নিজস্ব প্রতিবেদক : 

অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক ড. মুহাম্মদ ইউনূস বলেছেন, আমাদের প্রবাসী শ্রমিকরা দেশ গড়ার কারিগর। জুলাই-আগস্টের গণঅভ্যুত্থানে তারা বড় ভূমিকা পালন করেছিল। আমরা তাদের কাছে সবসময় কৃতজ্ঞ।

সোমবার (১১ নভেম্বর) জলবায়ু সম্মেলনে যোগ দিতে আজারবাইজানের উদ্দেশে ঢাকা ত্যাগের আগে বিমানবন্দরে অভিবাসী শ্রমিকদের জন্য একটি বিশেষ লাউঞ্জ উদ্বোধনকালে এ কথা বলেন তিনি।
তিনি বলেন, প্রবাসীরা অনেক কষ্ট করে টাকা রোজগার করে বাংলাদেশে পাঠায়। তাদের যে প্রাপ্য ও সম্মান তা দেওয়ার জন্যই আমাদের আজকের এই প্রথম পদক্ষেপ।

অধ্যাপক ইউনূস বলেন, আমরা বিশ্বাস করি, এই লাউঞ্জ তাদের ভ্রমণকে সহজ করবে। হযরত শাহজালাল বিমানবন্দরে এটিই প্রথম প্রবাসী লাউঞ্জ। এখানে বাংলাদেশী অভিবাসী শ্রমিকদের বিশ্রামের জন্য জায়গা এবং সুলভ মূল্যে খাবার পাওয়া যাবে। সুলভ মূল্যে খাবার পরিবেশনের জন্য এতে ভর্তুকি দেবে সরকার।

বিগত আওয়ামী লীগ সরকারের সময় বিপুল পরিমাণ টাকা বিদেশে পাচার হওয়ার কথা উল্লেখ করে প্রধান উপদেষ্টা বলেন, প্রবাসীরা কষ্ট করে টাকা রোজগার করে আনেন, দুর্ভাগ্য হলো দেশের এই টাকা তারা পাচার করেছে।

ড. ইউনূস বলেন, আপনাদের দিয়ে তো দেশ চলে। আপনাদের মাথায় করে রাখা উচিত। অপরাধী করে রাখবে কেন? এইরকম ভাবখানা যে, তোমরা টাকা রোজগার করতেছ আমাদের কী? তোমাদের ব্যাপার, আমাদের কী? প্রবাসীরা টাকা যেটা রোজগার করছে, সেটা তো বাংলাদেশের জন্য রোজগার করছে।

প্রধান উপদেষ্টা বলেন, আপনারা কষ্ট করে টাকাটাও রোজগার করে আনেন, দুর্ভাগ্য হলো দেশের এই টাকা একজন পাচার করছে। এটাই হলো আমাদের দুর্ভাগ্য। সেখান থেকে তো আমাদের ফিরে আসতে হবে, আমাদের দেশের টাকা যেন দেশের কাজে লাগে।

এর আগে প্রবাসী শ্রমিকদের জন্য শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে একটি বিশেষ লাউঞ্জ উদ্বোধন করেন ড. মুহাম্মদ ইউনূস। উদ্বোধন শেষে তিনি বলেন, আমাদের প্রবাসী শ্রমিকরা দেশ গড়ার কারিগর। জুলাই-আগস্টের গণঅভ্যুত্থানে তারা বড় ভূমিকা পালন করেছিলেন। আমরা তাদের কাছে সবসময় কৃতজ্ঞ। আমরা বিশ্বাস করি, এই লাউঞ্জ তাদের ভ্রমণকে সহজ করবে।

ড. ইউনূস আরও বলেন, বহুদিন পরে আমরা নতুন যাত্রা শুরু করলাম। তিন মাস হয়ে গেছে আমাদের। আমাদের দুজনের মধ্যে প্রতিযোগিতা হচ্ছিল, আসিফ নজরুল ও আমার মধ্যে। কে এটা তাড়াতাড়ি করতে পারে। দুজন তাড়াতাড়ি করার জন্য আজকে এটা আমরা উদ্বোধন করতে পারলাম। এটার প্রধান কারণ, আমরা দুজনেই আসা-যাওয়ার পথে এটা অনুভব করেছি। বিমানবন্দর আমাদের সবাইকে ব্যবহার করতে হয়। আমাকেও প্রায় আসা-যাওয়া করতে হয়। খুব মনে কষ্ট হয় যখন দেখি প্রবাসীদের যাওয়া-আসা।

প্রধান উপদেষ্টা বলেন, আপনাদের যে প্রাপ্য, যে সম্মান, সেই সম্মান যেন জাতি দিতে পারে। সেই সম্মান দেয়ার জন্য আজকের প্রথম পদক্ষেপ হচ্ছে এটা। আমি আশা করি, আরও বহু রকমের পদক্ষেপ নেওয়া হবে, যাতে করে আপনারা এখানে এসে মনে করেন যে, আপনারা শান্তিতে আছেন, বাড়িতেই আছেন।

পাসপোর্ট বিষয়ে তিনি বলেন, পাসপোর্ট ছাপানোর কথা বলছেন, পাসপোর্ট ছাপাতে হবে কেন? এখন ই-পাসপোর্ট হবে। ছাপার দরকার নেই। পাসপোর্ট আপনার টেলিফোনে চলে আসবে। অফিসে যেতে হবে না। আমরা এখন সরকারি অফিসে যেতে চাই না। আমাদের বাড়িতে এসে দিয়ে যাবে। সরকারি অফিস মানে হলো যন্ত্রণা। এই যন্ত্রণার মধ্যে আমি কেন যাব।
অনুষ্ঠানে আইন ও প্রবাসী কল্যাণ উপদেষ্টা আসিফ নজরুল এবং আন্তর্জাতিক অভিবাসন সংস্থার (আইওএম) ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তারা উপস্থিত ছিলেন।

জনপ্রিয় খবর

আবহাওয়া

আপস করলে খালেদা জিয়া অনেক আগেই ক্ষমতায় বসতে পারতেন : সেলিমা রহমান

গণঅভ্যুত্থানে প্রবাসীরা বড় ভূমিকা পালন করেছেন : প্রধান উপদেষ্টা

প্রকাশের সময় : ০৪:০২:৩৯ অপরাহ্ন, সোমবার, ১১ নভেম্বর ২০২৪

নিজস্ব প্রতিবেদক : 

অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক ড. মুহাম্মদ ইউনূস বলেছেন, আমাদের প্রবাসী শ্রমিকরা দেশ গড়ার কারিগর। জুলাই-আগস্টের গণঅভ্যুত্থানে তারা বড় ভূমিকা পালন করেছিল। আমরা তাদের কাছে সবসময় কৃতজ্ঞ।

সোমবার (১১ নভেম্বর) জলবায়ু সম্মেলনে যোগ দিতে আজারবাইজানের উদ্দেশে ঢাকা ত্যাগের আগে বিমানবন্দরে অভিবাসী শ্রমিকদের জন্য একটি বিশেষ লাউঞ্জ উদ্বোধনকালে এ কথা বলেন তিনি।
তিনি বলেন, প্রবাসীরা অনেক কষ্ট করে টাকা রোজগার করে বাংলাদেশে পাঠায়। তাদের যে প্রাপ্য ও সম্মান তা দেওয়ার জন্যই আমাদের আজকের এই প্রথম পদক্ষেপ।

অধ্যাপক ইউনূস বলেন, আমরা বিশ্বাস করি, এই লাউঞ্জ তাদের ভ্রমণকে সহজ করবে। হযরত শাহজালাল বিমানবন্দরে এটিই প্রথম প্রবাসী লাউঞ্জ। এখানে বাংলাদেশী অভিবাসী শ্রমিকদের বিশ্রামের জন্য জায়গা এবং সুলভ মূল্যে খাবার পাওয়া যাবে। সুলভ মূল্যে খাবার পরিবেশনের জন্য এতে ভর্তুকি দেবে সরকার।

বিগত আওয়ামী লীগ সরকারের সময় বিপুল পরিমাণ টাকা বিদেশে পাচার হওয়ার কথা উল্লেখ করে প্রধান উপদেষ্টা বলেন, প্রবাসীরা কষ্ট করে টাকা রোজগার করে আনেন, দুর্ভাগ্য হলো দেশের এই টাকা তারা পাচার করেছে।

ড. ইউনূস বলেন, আপনাদের দিয়ে তো দেশ চলে। আপনাদের মাথায় করে রাখা উচিত। অপরাধী করে রাখবে কেন? এইরকম ভাবখানা যে, তোমরা টাকা রোজগার করতেছ আমাদের কী? তোমাদের ব্যাপার, আমাদের কী? প্রবাসীরা টাকা যেটা রোজগার করছে, সেটা তো বাংলাদেশের জন্য রোজগার করছে।

প্রধান উপদেষ্টা বলেন, আপনারা কষ্ট করে টাকাটাও রোজগার করে আনেন, দুর্ভাগ্য হলো দেশের এই টাকা একজন পাচার করছে। এটাই হলো আমাদের দুর্ভাগ্য। সেখান থেকে তো আমাদের ফিরে আসতে হবে, আমাদের দেশের টাকা যেন দেশের কাজে লাগে।

এর আগে প্রবাসী শ্রমিকদের জন্য শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে একটি বিশেষ লাউঞ্জ উদ্বোধন করেন ড. মুহাম্মদ ইউনূস। উদ্বোধন শেষে তিনি বলেন, আমাদের প্রবাসী শ্রমিকরা দেশ গড়ার কারিগর। জুলাই-আগস্টের গণঅভ্যুত্থানে তারা বড় ভূমিকা পালন করেছিলেন। আমরা তাদের কাছে সবসময় কৃতজ্ঞ। আমরা বিশ্বাস করি, এই লাউঞ্জ তাদের ভ্রমণকে সহজ করবে।

ড. ইউনূস আরও বলেন, বহুদিন পরে আমরা নতুন যাত্রা শুরু করলাম। তিন মাস হয়ে গেছে আমাদের। আমাদের দুজনের মধ্যে প্রতিযোগিতা হচ্ছিল, আসিফ নজরুল ও আমার মধ্যে। কে এটা তাড়াতাড়ি করতে পারে। দুজন তাড়াতাড়ি করার জন্য আজকে এটা আমরা উদ্বোধন করতে পারলাম। এটার প্রধান কারণ, আমরা দুজনেই আসা-যাওয়ার পথে এটা অনুভব করেছি। বিমানবন্দর আমাদের সবাইকে ব্যবহার করতে হয়। আমাকেও প্রায় আসা-যাওয়া করতে হয়। খুব মনে কষ্ট হয় যখন দেখি প্রবাসীদের যাওয়া-আসা।

প্রধান উপদেষ্টা বলেন, আপনাদের যে প্রাপ্য, যে সম্মান, সেই সম্মান যেন জাতি দিতে পারে। সেই সম্মান দেয়ার জন্য আজকের প্রথম পদক্ষেপ হচ্ছে এটা। আমি আশা করি, আরও বহু রকমের পদক্ষেপ নেওয়া হবে, যাতে করে আপনারা এখানে এসে মনে করেন যে, আপনারা শান্তিতে আছেন, বাড়িতেই আছেন।

পাসপোর্ট বিষয়ে তিনি বলেন, পাসপোর্ট ছাপানোর কথা বলছেন, পাসপোর্ট ছাপাতে হবে কেন? এখন ই-পাসপোর্ট হবে। ছাপার দরকার নেই। পাসপোর্ট আপনার টেলিফোনে চলে আসবে। অফিসে যেতে হবে না। আমরা এখন সরকারি অফিসে যেতে চাই না। আমাদের বাড়িতে এসে দিয়ে যাবে। সরকারি অফিস মানে হলো যন্ত্রণা। এই যন্ত্রণার মধ্যে আমি কেন যাব।
অনুষ্ঠানে আইন ও প্রবাসী কল্যাণ উপদেষ্টা আসিফ নজরুল এবং আন্তর্জাতিক অভিবাসন সংস্থার (আইওএম) ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তারা উপস্থিত ছিলেন।