Dhaka মঙ্গলবার, ২২ জুলাই ২০২৫, ৭ শ্রাবণ ১৪৩২ বঙ্গাব্দ

গণঅভ্যুত্থানের যোদ্ধাদের স্বপ্ন বাস্তবায়নে সবাই মিলে চেষ্টা করব : প্রধান উপদেষ্টা

নিজস্ব প্রতিবেদক : 

অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান উপদেষ্টা ও জাতীয় ঐকমত্য কমিশনের সভাপতি অধ্যাপক ড. মুহাম্মদ ইউনূস বলেন, গণঅভ্যুত্থানের যোদ্ধাদের আত্মত্যাগকে সার্থক করতে এবং তাদের স্বপ্ন বাস্তবায়নে সবাই মিলে সবরকম চেষ্টা করব।

শনিবার (১৫ ফেব্রুয়ারি) বিকেলে রাজধানীর বেইলি রোডের ফরেন সার্ভিস একাডেমিতে রাজনৈতিক দলগুলোর সঙ্গে জাতীয় ঐকমত্য কমিশনের প্রথম বৈঠকের প্রারম্ভিক বক্তব্যে তিনি এসব কথা বলেন।

ঐকমত্য কমিশনের সভাপতি বলেন, প্রতিজ্ঞা করি আমরা যেন গণঅভ্যুত্থানের যোদ্ধাদের আত্মত্যাগের প্রতি অসম্মান না জানাই। যে কারণে তারা আত্মত্যাগ করেছিল সেটা যেন পরবর্তী সব প্রজন্ম মনে রাখে, তাদের আত্মত্যাগ স্মরণ করে, তাদের আত্মত্যাগ সার্থক করার জন্য আমরা সবাই মিলে সবরকম চেষ্টা করবো তাদের সে স্বপ্ন যেন বাস্তবায়ন করতে পারি।

প্রধান উপদেষ্টা বলেন, তারা এ ত্যাগ না করলে অনেকের মনে প্রশ্ন থাকলেও জবাব খোঁজার আমাদের কোনো সুযোগ থাকতো না। প্রশ্ন আমাদের মনে যতটুকু ছিল, বহু বছর ধরে ছিল, সুযোগ পাইনি। অসংখ্য ছাত্র-জনতা আত্মত্যাগের বিনিময়ে আমরা সুযোগ পেয়েছি।

অন্তর্র্বতী সরকারের ৬ মাস পার হয়ে গেলো, প্রথম অধ্যায় শেষ। আজকের এ অনুষ্ঠানের মাধ্যমে দ্বিতীয় পর্বে প্রবেশ করলাম। প্রথম পর্ব ছিল প্রস্তুতি পর্ব। সে প্রস্তুতি পর্বের অনেক কিছু আপনাদের জানা। তার মধ্যে একটা বড় বিষয় ছিল প্রস্তুতি, যে স্বপ্নের পেছনে ছাত্র-জনতা আত্মত্যাগ করেছে সেটা সার্থক করতে আমরা যেন এমন একটা দেশ গড়তে পারি যেটা সুশৃঙ্খলভাবে চলবে। যে আইনি ও প্রাতিষ্ঠানিক কাঠামোর মাধ্যমে স্বৈরাচারী সরকার সুযোগ পেয়েছিল সেই কাঠামো থেকে যেন আমরা অন্যরূপে বেরিয়ে চলতে পারি।

তিনি বলেন, আমরা ছোটখাটো একটা হাডুডু খেলার জন্য আইন বানাই। ফুটবল খেলা তো বটেই, এটা আন্তর্জাতিক খেলা। সে আইন আমরা মেনে চলি, মেনে চলি বলেই খেলাটা খেলা হয় তামাশা হয় না। আইনগুলো এমনভাবে বানানো হয়েছে সবাই যেন উপভোগ করে। কিন্তু আমরা আমাদের দেশকে তামাশায় পরিণত করে ফেলেছি। আইন বলে কিছু নেই, নিয়ম বলে কিছু নেই। যারা আত্মত্যাগ করেছে তারা আমাদের নির্দেশ দিয়ে যাচ্ছে আমরা যেন সেসব আইনকানুন পাল্টে ফেলে নতুন বাংলাদেশের জন্য প্রস্তুত হই।

অধ্যাপক মুহাম্মদ ইউনূস বলেছেন, গত ৬ মাসে রাজনৈতিক দলের নেতাসহ সাধারণ মানুষের সমর্থন ছাড়াও পৃথিবীজুড়ে আমাদের প্রতি সমর্থন গড়ে উঠেছে। যে কারণে অপরপক্ষ সুবিধা করতে পারছে না। বহু গল্প ফাঁদছে, গল্প টেকাতে পারছে না। শেষ পর্যন্ত ট্রাম্পের হাতিয়ার, গল্প চালাতে গিয়ে চালাতে পারলো না।

তিনি বলেন, ছোট রাষ্ট্র বড় রাষ্ট্র, ধনী রাষ্ট্র ও মাঝারি রাষ্ট্র সবাই আমার পরিচিত, তাদের মধ্যে কোনো দ্বিধা নেই। তাদের ভাষা শুনলে আমার অবাক লাগে। তাদের সঙ্গে যখন কথা বলতে বসি তারা কোনো কিছু শোনার আগেই বলে কি লাগবে বলো। অভ্যন্তরীণ ও আন্তর্জাতিক সমর্থন ক্রমাগত বাড়ছে।

প্রধান উপদেষ্টা বলেন, অভ্যন্তরীণ ও আন্তর্জাতিক দুই সমর্থন থাকা সত্ত্বেও আমরা যদি নতুন বাংলাদেশ গড়ে তুলতে না পারি, এটা আমাদের কপালের দোষ ছাড়া আর কি বলবো। আমরা এই সুযোগ হারাতে চাই না।

আন্তর্জাতিক মহলেও আমাদের জিজ্ঞেস করে তোমাদের অর্থনৈতিকভাবে সহায়তা করতে পারি কিন্তু সংস্কারের ব্যাপারে আমরা সাহায্য করতে পারবো না।

আন্তর্জাতিক মহলের সমর্থন, সহায়তা এবং শুভেচ্ছা, এটা আমাদের জন্য মস্তবড় সম্পদ। কোনো কোনো শক্তিমান রাষ্ট্র এও বলেছে বাংলাদেশের উন্নয়নের জন্য সব ধরনের সহায়তা করবে।

জনপ্রিয় খবর

আবহাওয়া

গণঅভ্যুত্থানের যোদ্ধাদের স্বপ্ন বাস্তবায়নে সবাই মিলে চেষ্টা করব : প্রধান উপদেষ্টা

প্রকাশের সময় : ০৬:৫৫:২০ অপরাহ্ন, শনিবার, ১৫ ফেব্রুয়ারী ২০২৫

নিজস্ব প্রতিবেদক : 

অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান উপদেষ্টা ও জাতীয় ঐকমত্য কমিশনের সভাপতি অধ্যাপক ড. মুহাম্মদ ইউনূস বলেন, গণঅভ্যুত্থানের যোদ্ধাদের আত্মত্যাগকে সার্থক করতে এবং তাদের স্বপ্ন বাস্তবায়নে সবাই মিলে সবরকম চেষ্টা করব।

শনিবার (১৫ ফেব্রুয়ারি) বিকেলে রাজধানীর বেইলি রোডের ফরেন সার্ভিস একাডেমিতে রাজনৈতিক দলগুলোর সঙ্গে জাতীয় ঐকমত্য কমিশনের প্রথম বৈঠকের প্রারম্ভিক বক্তব্যে তিনি এসব কথা বলেন।

ঐকমত্য কমিশনের সভাপতি বলেন, প্রতিজ্ঞা করি আমরা যেন গণঅভ্যুত্থানের যোদ্ধাদের আত্মত্যাগের প্রতি অসম্মান না জানাই। যে কারণে তারা আত্মত্যাগ করেছিল সেটা যেন পরবর্তী সব প্রজন্ম মনে রাখে, তাদের আত্মত্যাগ স্মরণ করে, তাদের আত্মত্যাগ সার্থক করার জন্য আমরা সবাই মিলে সবরকম চেষ্টা করবো তাদের সে স্বপ্ন যেন বাস্তবায়ন করতে পারি।

প্রধান উপদেষ্টা বলেন, তারা এ ত্যাগ না করলে অনেকের মনে প্রশ্ন থাকলেও জবাব খোঁজার আমাদের কোনো সুযোগ থাকতো না। প্রশ্ন আমাদের মনে যতটুকু ছিল, বহু বছর ধরে ছিল, সুযোগ পাইনি। অসংখ্য ছাত্র-জনতা আত্মত্যাগের বিনিময়ে আমরা সুযোগ পেয়েছি।

অন্তর্র্বতী সরকারের ৬ মাস পার হয়ে গেলো, প্রথম অধ্যায় শেষ। আজকের এ অনুষ্ঠানের মাধ্যমে দ্বিতীয় পর্বে প্রবেশ করলাম। প্রথম পর্ব ছিল প্রস্তুতি পর্ব। সে প্রস্তুতি পর্বের অনেক কিছু আপনাদের জানা। তার মধ্যে একটা বড় বিষয় ছিল প্রস্তুতি, যে স্বপ্নের পেছনে ছাত্র-জনতা আত্মত্যাগ করেছে সেটা সার্থক করতে আমরা যেন এমন একটা দেশ গড়তে পারি যেটা সুশৃঙ্খলভাবে চলবে। যে আইনি ও প্রাতিষ্ঠানিক কাঠামোর মাধ্যমে স্বৈরাচারী সরকার সুযোগ পেয়েছিল সেই কাঠামো থেকে যেন আমরা অন্যরূপে বেরিয়ে চলতে পারি।

তিনি বলেন, আমরা ছোটখাটো একটা হাডুডু খেলার জন্য আইন বানাই। ফুটবল খেলা তো বটেই, এটা আন্তর্জাতিক খেলা। সে আইন আমরা মেনে চলি, মেনে চলি বলেই খেলাটা খেলা হয় তামাশা হয় না। আইনগুলো এমনভাবে বানানো হয়েছে সবাই যেন উপভোগ করে। কিন্তু আমরা আমাদের দেশকে তামাশায় পরিণত করে ফেলেছি। আইন বলে কিছু নেই, নিয়ম বলে কিছু নেই। যারা আত্মত্যাগ করেছে তারা আমাদের নির্দেশ দিয়ে যাচ্ছে আমরা যেন সেসব আইনকানুন পাল্টে ফেলে নতুন বাংলাদেশের জন্য প্রস্তুত হই।

অধ্যাপক মুহাম্মদ ইউনূস বলেছেন, গত ৬ মাসে রাজনৈতিক দলের নেতাসহ সাধারণ মানুষের সমর্থন ছাড়াও পৃথিবীজুড়ে আমাদের প্রতি সমর্থন গড়ে উঠেছে। যে কারণে অপরপক্ষ সুবিধা করতে পারছে না। বহু গল্প ফাঁদছে, গল্প টেকাতে পারছে না। শেষ পর্যন্ত ট্রাম্পের হাতিয়ার, গল্প চালাতে গিয়ে চালাতে পারলো না।

তিনি বলেন, ছোট রাষ্ট্র বড় রাষ্ট্র, ধনী রাষ্ট্র ও মাঝারি রাষ্ট্র সবাই আমার পরিচিত, তাদের মধ্যে কোনো দ্বিধা নেই। তাদের ভাষা শুনলে আমার অবাক লাগে। তাদের সঙ্গে যখন কথা বলতে বসি তারা কোনো কিছু শোনার আগেই বলে কি লাগবে বলো। অভ্যন্তরীণ ও আন্তর্জাতিক সমর্থন ক্রমাগত বাড়ছে।

প্রধান উপদেষ্টা বলেন, অভ্যন্তরীণ ও আন্তর্জাতিক দুই সমর্থন থাকা সত্ত্বেও আমরা যদি নতুন বাংলাদেশ গড়ে তুলতে না পারি, এটা আমাদের কপালের দোষ ছাড়া আর কি বলবো। আমরা এই সুযোগ হারাতে চাই না।

আন্তর্জাতিক মহলেও আমাদের জিজ্ঞেস করে তোমাদের অর্থনৈতিকভাবে সহায়তা করতে পারি কিন্তু সংস্কারের ব্যাপারে আমরা সাহায্য করতে পারবো না।

আন্তর্জাতিক মহলের সমর্থন, সহায়তা এবং শুভেচ্ছা, এটা আমাদের জন্য মস্তবড় সম্পদ। কোনো কোনো শক্তিমান রাষ্ট্র এও বলেছে বাংলাদেশের উন্নয়নের জন্য সব ধরনের সহায়তা করবে।